রোহিঙ্গা শিবিরে যৌনতার ফাঁদ
বাংলাদেশে
রোহিঙ্গা উদ্বাস্তু শিবিরে নারীলোভীদের লোলুপ দৃষ্টি। তারা জাল বিছিয়েছে।
তার ফাঁদে ধরা পড়ছে রোহিঙ্গা টিনেজ মেয়েরা। তাদেরকে নামানো হচ্ছে যৌন
ব্যবসায়। বিদেশীরা চাহিবামাত্র এমন টিনেজ মেয়েকে সরবরাহ করা হচ্ছে। বিবিসির
এক অনুসন্ধানে এসব তথ্য প্রকাশ পেয়েছে। এ বিষয়ে প্রামাণ্য আকারে একটি
বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বিবিসি। তাতে বলা হয়েছে, রোহিঙ্গা
উদ্বাস্তু শিবিরের টিনেজ মেয়ে, যুবতী বা নারীদের পাচার করা হচ্ছে। এমনই
একজন টিনেজার আনোয়ারা ৯১৪)। তার পরিবারের সবাইকে হত্যা করেছে মিয়ানমারের
সেনাবাহিনী। এখানে এসে আশ্রয় নেয়ার পর সে সহায়তার জন্য রাস্তায় দাঁড়িয়ে
ছিল। এ বিষয়ে আনোয়ারা বলে, কয়েকজন নারী একটি ভ্যানে করে এলো আমার কাছে।
তারা আমার কাছে জানতে চাইলো আমি তাদের সঙ্গে যেতে চাই কিনা। অসহায় থাকায়
তাদের প্রস্তাব গ্রহণ করি আমি। আমাকে তাদের গাড়িতে তোলা হয়। প্রতিশ্রুতি
দেয়া হয় আমাকে নিরাপদ ও উন্নত একটি জীবন উপহার দেবে তারা। কিন্তু তার
পরিবর্তে আমাকে কক্সবাজার শহরের কাছে একটি স্থানে নিয়ে যায় তারা। এর পর
বেশি সময় যায় নি। একদিন দুটি ছেলেকে নিয়ে আসে তারা। আমার রুমে ঢুকিয়ে দেয়
তাদেরকে। ওই দু’টি ছেলের একজন আমাকে ছুরি দেখায়। আমার পেটে ঘুষি মারে।
প্রহার করে। কারণ, আমি তাদেরকে সহযোগিতা করছিলাম না। এরপর ওই দুটি ছেলে
আমাকে ধর্ষণ করে। এতে আমার কোনো সম্মতি ছিল না। ওদিকে আশপাশের শিবিরগুলোতেও
পাচারের কাহিনী মিলছে। এক্ষেত্রে প্রধান শিকার হলো নারী ও শিশু। তাদেরকে
প্রলোভন দেয়া হচ্ছে শিবির থেকে বেরিয়ে আসতে। বিভিন্ন কাজের প্রলোভন দেয়া
হচ্ছে। যৌন ব্যবসায় নামার প্রস্তাব দেয়া হচ্ছে। সেখানে অলাভজনক গ্রুপ
ফাউন্ডেশন সেন্টিনেলের সঙ্গে বিবিসির একটি টিম শিশুদের বিপথগামী করার
বিরুদ্ধে প্রশিক্ষণ ও সহায়তা দিচ্ছে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে। বিবিসির
অনুসন্ধানে শিশু ও অভিভাবকরা বলেছেন, তাদেরকে বিদেশে চাকরির প্রস্তাব দেয়া
হচ্ছে। রাজধানী ঢাকায় হোটেল স্টাফ, রান্নার সহকারী সহ বাসাবাড়ির কাজের
প্রস্তাব দেয়া হচ্ছে। উদ্বাস্তু শিবিরজুড়ে চলছে এক অরাজকতা। শিশুদের যৌন
ব্যবসায় নামানোর এটাই হলো সবচেয়ে বড় সুযোগ। যেসব পরিবার কঠিন অবস্থায় আছে
তাদের কাছে উন্নত জীবনের প্রস্তাব যাচ্ছে। তারা তা লুফেও নিচ্ছে। মাসুদা
নামের ১৪ বছর বয়সী একটি বালিকা পাচারের শিকার হয়েছিল। তাকে এখন সহায়তা
দিচ্ছে একটি স্থানীয় দাতব্য সংস্থা। মাসুদা বলেছে, আমার জীবনে কি ঘটতে
যাচ্ছে তা আমি জানতাম। যে নারী আমাকে কাজের প্রস্তাব দিয়েছিল সবাই তাকে
চেনে। সবাই জানে সে লোকজনকে যৌন ব্যবসা চালায়। লোকজনকে অর্থের বিনিময়ে
শারীরিক সম্পর্কের সুযোগ করে দেয়। দীর্ঘদিন ধরে এখানে বসবাস করছে সে। সেও
একজন রোহিঙ্গা নারী। এতসব জানার পরও আমার কাছে কোনো বিকল্প ছিল না। কারণ,
এখানে তো আমার আর কিছুই নেই। আমার পরিবার অদৃশ্য হয়ে গেছে। আমার কাছে কোনো
অর্থ নেই। মিয়ানমারে আমাকে ধর্ষণ করা হয়েছে। তারপরও মিয়ানমারে বনের ভিতর
ভাই ও বোনদের সঙ্গে আমি খেলা করতাম। এখন আমি ভুলেই গিয়েছি কিভাবে খেলতে হয়।
অনেক শিশু এভাবে হারিয়ে গেছে। তাদের কোনো খোঁজ পাচ্ছেন না অনেক পিতামাতা। তারা আতঙ্কে এখন শুধু কাঁদেন। আবার কেউ এটাকেই মেনে নিয়েছেন। একজন মা বলেছেন, এই উদ্বাস্তু শিবিরের বাইরে যেকোনো জায়গায় জীবন উন্নততর।
কিন্তু এসব শিশুকে কোথায়, কারা নিয়ে গেছে? এমন প্রশ্ন আসতেই পারে। এ তথ্য উদঘাটনের জন্য বিবিসির অনুসন্ধানী টিম ছদ্মবেশ ধারণ করে। তারা সম্প্রতি বাংলাদেশে আসা বিদেশী হিসেবে নিজেদের পরিচয় দেন। শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করার জন্য সুযোগ খুঁজতে থাকেন। উদ্দেশ্য, সত্যিই শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের জন্য রোহিঙ্গা শিশুদের ব্যবহার করা হয় কিনা তা প্রামাণ্য আকারে উপস্থাপন করা। এ জন্য টিমের সদস্যরা ৪৮ ঘন্টার মধ্যেই কক্সবাজারের ছোট ছোট হোটেল ও সৈকতের কটেজ মালিকদের কাছে পেয়ে যান স্থানীয়ভাবে যৌন ব্যবসার দালালদের বেশ কিছু নাম্বার। আগে থেকেই অনুসন্ধানকারীরা পুলিশকে বিষয়টি অবহিত করে রাখে। এরপর যোগাযোগ করেন ওই দালালদের সঙ্ঙেগ। তাদের কাছে জানতে চাওয়া হয় তাদের হাতে একজন বিদেশীর সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপনের জন্য কোন মেয়ে আছে কিনা, বিশেষ করে রোহিঙ্গা। জবাবে একজন দালাল বলে, আমাদের কাছে অনেক তরুণী আছে। কিন্তু আপনারা কেন রোহিঙ্গা মেয়ে খুঁজছেন? ওরা তো নোংরা হয়।
রোহিঙ্গা নারীদের এভাবেই দেখা হয়। মনে করা হয়, তারা সবচেয়ে সস্তা। তাদের চাহিদা কম। এ জন্য বিভিন্ন রকম দালালের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। অল্প সময়ের মধ্যে অনেক মেয়ের ছবি আসতে থাকে। তাদের বয়স ১৩ থেকে ১৭ বছরের মধ্যে। যে পরিমাণ মেয়ের ছবি দেখানো হয়েছে এবং বলা হয়েছে তাদের হাতে আছে তা বিস্ময়কর। দালালরা বলে, ছবির মেয়েদের যদি তাদের পছন্দ না হয় তাহলে আরো অনেক মেয়ে আছে। এসব মেয়ের বেশির ভাগই বসবাস করে দালালদের পরিবারের সঙ্গে। যখন তাদের কোনো খদ্দের থাকে না তখন তারা ওই পরিবারে রান্নাবান্না ও পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার কাজ করে। অনুসন্ধানকারীদের জানানো হয়, ‘আমরা এসব মেয়ে বেশিদিন আমাদের সঙ্গে রাখি না। এসব মেয়ের কাছে শুধু বাংলাদেশী পুরুষরাই আসে। অল্প সময় পরেই এতে তাদের বিতৃষ্ণা চলে আসে। তবে কিশোরী মেয়েদের চাহিদা আছে’। এসব তথ্য রেকর্ড করে স্থানীয় পুলিশের কাছে প্রামাণ্য হিসেবে উপস্থাপন করেছেন অনুসন্ধানকারীরা। এরপরই দালালকে সনাক্ত করে পুলিশ। তাদেরই একজন কর্মকর্তা বলেন ‘আমি তাকে চিনি। তাকে আমি ভালভাবে চিনি’। তবে এর মাধ্যমে কি বুঝাতে চাইলেন ওই পুলিশ কর্মকর্তা তা পরিষ্কার নয়। এক পর্যায়ে ওই দালালকে ফোন করেন অনুসন্ধানকারীরা। তার কাছে কক্সবাজারের একটি অভিজাত হোটেলে দুটি মেয়েকে পৌঁছে দেয়ার জন্য বলা হয় স্থানীয় সময় রাত আটটায়। এ সময় ছদ্মবেশ ধারণকারী খদ্দের, যিনি হলেন ফাউন্ডেশন সেন্টিনেলের একজন সদস্য, তিনি ওই হোটেলের বাইরে অপেক্ষা করতে থাকে দোভাষী সহ। পাশেই ছদ্মবেশে অপেক্ষায় থাকে পুলিশ কর্মকর্তারা। রাত আটটার কাছাকাছি দালাল ও ছদ্মবেশধারণকারী খদ্দেরের মধ্যে ফোনে কথা হয়। এ সময় দালাল তার খদ্দেরকে হোটেল থেকে বের হয়ে আসতে বলে। কিন্তু খদ্দের তা প্রত্যাখ্যান করেন। ফলে দালালই একজন ড্রাইভার দিয়ে দু’জন কিশোরীকে পাঠিয়ে দেয় হোটেলে। এরপর অর্থ পরিশোধ হয়। এ সময় খদ্দের জানতে চান, আজকের রাতটা যদি ভাল কাটে তাহলে আমরা কি আরো আপনাদের এই সেবা পেতে পারি? এ সময় চালক সম্মতিসূচক মাথা নাড়ান। টাকা হস্তান্তর হওয়ার পরই পুলিশ সদস্যরা এগিয়ে যান। চালককে গ্রেপ্তার করা হয়। উদ্ধার করা হয় ওই দুই কিশোরীকে। এর মধ্যে একজন উদ্বাস্তু শিবিরে ফেরত যেতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। অন্যজন সামাজিক সেবা নিচ্ছেন।
অনেক শিশু এভাবে হারিয়ে গেছে। তাদের কোনো খোঁজ পাচ্ছেন না অনেক পিতামাতা। তারা আতঙ্কে এখন শুধু কাঁদেন। আবার কেউ এটাকেই মেনে নিয়েছেন। একজন মা বলেছেন, এই উদ্বাস্তু শিবিরের বাইরে যেকোনো জায়গায় জীবন উন্নততর।
কিন্তু এসব শিশুকে কোথায়, কারা নিয়ে গেছে? এমন প্রশ্ন আসতেই পারে। এ তথ্য উদঘাটনের জন্য বিবিসির অনুসন্ধানী টিম ছদ্মবেশ ধারণ করে। তারা সম্প্রতি বাংলাদেশে আসা বিদেশী হিসেবে নিজেদের পরিচয় দেন। শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করার জন্য সুযোগ খুঁজতে থাকেন। উদ্দেশ্য, সত্যিই শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের জন্য রোহিঙ্গা শিশুদের ব্যবহার করা হয় কিনা তা প্রামাণ্য আকারে উপস্থাপন করা। এ জন্য টিমের সদস্যরা ৪৮ ঘন্টার মধ্যেই কক্সবাজারের ছোট ছোট হোটেল ও সৈকতের কটেজ মালিকদের কাছে পেয়ে যান স্থানীয়ভাবে যৌন ব্যবসার দালালদের বেশ কিছু নাম্বার। আগে থেকেই অনুসন্ধানকারীরা পুলিশকে বিষয়টি অবহিত করে রাখে। এরপর যোগাযোগ করেন ওই দালালদের সঙ্ঙেগ। তাদের কাছে জানতে চাওয়া হয় তাদের হাতে একজন বিদেশীর সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপনের জন্য কোন মেয়ে আছে কিনা, বিশেষ করে রোহিঙ্গা। জবাবে একজন দালাল বলে, আমাদের কাছে অনেক তরুণী আছে। কিন্তু আপনারা কেন রোহিঙ্গা মেয়ে খুঁজছেন? ওরা তো নোংরা হয়।
রোহিঙ্গা নারীদের এভাবেই দেখা হয়। মনে করা হয়, তারা সবচেয়ে সস্তা। তাদের চাহিদা কম। এ জন্য বিভিন্ন রকম দালালের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। অল্প সময়ের মধ্যে অনেক মেয়ের ছবি আসতে থাকে। তাদের বয়স ১৩ থেকে ১৭ বছরের মধ্যে। যে পরিমাণ মেয়ের ছবি দেখানো হয়েছে এবং বলা হয়েছে তাদের হাতে আছে তা বিস্ময়কর। দালালরা বলে, ছবির মেয়েদের যদি তাদের পছন্দ না হয় তাহলে আরো অনেক মেয়ে আছে। এসব মেয়ের বেশির ভাগই বসবাস করে দালালদের পরিবারের সঙ্গে। যখন তাদের কোনো খদ্দের থাকে না তখন তারা ওই পরিবারে রান্নাবান্না ও পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার কাজ করে। অনুসন্ধানকারীদের জানানো হয়, ‘আমরা এসব মেয়ে বেশিদিন আমাদের সঙ্গে রাখি না। এসব মেয়ের কাছে শুধু বাংলাদেশী পুরুষরাই আসে। অল্প সময় পরেই এতে তাদের বিতৃষ্ণা চলে আসে। তবে কিশোরী মেয়েদের চাহিদা আছে’। এসব তথ্য রেকর্ড করে স্থানীয় পুলিশের কাছে প্রামাণ্য হিসেবে উপস্থাপন করেছেন অনুসন্ধানকারীরা। এরপরই দালালকে সনাক্ত করে পুলিশ। তাদেরই একজন কর্মকর্তা বলেন ‘আমি তাকে চিনি। তাকে আমি ভালভাবে চিনি’। তবে এর মাধ্যমে কি বুঝাতে চাইলেন ওই পুলিশ কর্মকর্তা তা পরিষ্কার নয়। এক পর্যায়ে ওই দালালকে ফোন করেন অনুসন্ধানকারীরা। তার কাছে কক্সবাজারের একটি অভিজাত হোটেলে দুটি মেয়েকে পৌঁছে দেয়ার জন্য বলা হয় স্থানীয় সময় রাত আটটায়। এ সময় ছদ্মবেশ ধারণকারী খদ্দের, যিনি হলেন ফাউন্ডেশন সেন্টিনেলের একজন সদস্য, তিনি ওই হোটেলের বাইরে অপেক্ষা করতে থাকে দোভাষী সহ। পাশেই ছদ্মবেশে অপেক্ষায় থাকে পুলিশ কর্মকর্তারা। রাত আটটার কাছাকাছি দালাল ও ছদ্মবেশধারণকারী খদ্দেরের মধ্যে ফোনে কথা হয়। এ সময় দালাল তার খদ্দেরকে হোটেল থেকে বের হয়ে আসতে বলে। কিন্তু খদ্দের তা প্রত্যাখ্যান করেন। ফলে দালালই একজন ড্রাইভার দিয়ে দু’জন কিশোরীকে পাঠিয়ে দেয় হোটেলে। এরপর অর্থ পরিশোধ হয়। এ সময় খদ্দের জানতে চান, আজকের রাতটা যদি ভাল কাটে তাহলে আমরা কি আরো আপনাদের এই সেবা পেতে পারি? এ সময় চালক সম্মতিসূচক মাথা নাড়ান। টাকা হস্তান্তর হওয়ার পরই পুলিশ সদস্যরা এগিয়ে যান। চালককে গ্রেপ্তার করা হয়। উদ্ধার করা হয় ওই দুই কিশোরীকে। এর মধ্যে একজন উদ্বাস্তু শিবিরে ফেরত যেতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। অন্যজন সামাজিক সেবা নিচ্ছেন।
No comments