হেড ইনজুরি বা মাথার আঘাতে করণীয়
হেড ইনজুরি বলতে মাথার ত্বক, খুলি বা মস্তিষ্কে যেকোনো আঘাতকে বোঝায়। এ আঘাতে মাথার খুলি সামান্য ফুলে যেতে পারে কিংবা মারাত্মক ব্রেইন ইনজুরি হতে পারে। হেড ইনজুরি ক্লোজড কিংবা ওপেন হতে পারে।
• ক্লোজ হেড ইনজুরি হচ্ছে আপনার মাথায় কিছুর আঘাত পেলেন; কিন্তু বস্তুটি মাথার খুলিকে ভাঙেনি।
• ওপেন হেড ইনজুরি হলো মাথায় কোনো বস্তুর আঘাতের ফলে মাথার খুলি ভেঙে যাওয়া। বস্তুটি মাথার খুলি ভেঙে মস্তিষ্কে প্রবেশ করতে পারে। এটি দ্রুতবেগের গাড়িতে চড়লে দুর্ঘটনার কারণে হতে পারে। মাথায় গানশটের গুলি লেগেও হতে পারে।
হেড ইনজুরির মধ্যে রয়েছে
• কনকাশন- এ ক্ষেত্রে মস্তিষ্কে ঝাঁকি লাগে। আঘাতজনিত মস্তিষ্কের ইনজুরিতে এটি খুব সাধারণ ধরন।
• মাথার ত্বক কেটে যাওয়া।
• মাথার খুলি ফেটে যাওয়া।
হেড ইনজুরি রক্তপাত ঘটাতে পারে
• মস্তিষ্কের টিস্যুতে
• মস্তিষ্কের চার পাশের স্তরগুলোতে
(সাব অ্যারেকনয়েড হেমোরেজ, সাব ডুরাল হেমাটোমা, এক্সট্রা ডুরাল হেমাটোমা)
হেড ইনজুরি অবশ্যই একটি জরুরি অবস্থা। মাথায় আঘাত লাগলে যেকোনো রোগীকে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে বা হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যাওয়া উচিত।
কারণ
হেড ইনজুরির সাধারণ কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে-
• বাড়িতে, কর্মক্ষেত্রে, বাড়ির বাইরে কিংবা খেলাধুলা করার সময় দুর্ঘটনা।
• পড়ে যাওয়া।
• শারীরিক আঘাত।
• সড়ক দুর্ঘটনা।
বেশির ভাগ আঘাত গুরুতর নয়। কারণ খুলি মস্তিষ্ককে রক্ষা করে। আবার কিছুই ইনজুরি এতটা ভয়াবহ হয় যে, রোগীকে হাসপাতালে রাখার প্রয়োজন হয়।
উপসর্গ
হেড ইনজুরির কারণে মস্তিষ্কে রক্ত ক্ষরণ হতে পারে।
কিছু হেড ইনজুরিতে মস্তিষ্কের কাজ পরিবর্তিত হতে পারে। একে বলে ট্রমাটিক হেড ইনজুরি।
ফার্স্টএইড
ফার্স্টএইড একজন হেড ইনজুরির রোগীর জীবন বাঁচাতে পারে।
হেড ইনজুরির রোগীকে নিম্নলিখিত ক্ষেত্রে দ্রুত হাসপাতালে পাঠাতে হবে :
• যদি খুব ঘুম আসে
• যদি অস্বাভাবিক আচরণ করে
• যদি মারাত্মক মাথাব্যথা হয় কিংবা ঘাড় শক্ত হয়ে যায়।
• যদি চোখের তারা দুই রকম হয়।
• জ্ঞান হারিয়ে ফেলে।
• একবারের বেশি বমি হলে।
এরপর নিচের পদক্ষেপগুলো নিন-
• রোগীর শ্বাসপথ পরীক্ষা করুন। রোগীর ঠিকমতো শ্বাস-প্রশ্বাস হচ্ছে কি না দেখুন। প্রয়োজনে কৃত্রিম শ্বাস-প্রশ্বাস দিন।
• যদি রোগীর শ্বাস-প্রশ্বাস ও হৃদস্পন্দন স্বাভাবিক থাকে, কিন্তু রোগী অজ্ঞান থাকে, বুঝতে হবে তার স্পাইনাল ইনজুরি হয়েছে।
• রোগীর মাথা ও ঘাড়ের নিচে আপনার দু’হাত রাখুন। নড়াচড়া করবেন না।
• ক্ষত থেকে কোনো রক্তপাত হলে পরিষ্কার কাপড় দিয়ে ক্ষত চেপে রাখুন।
• যদি আঘাত মারাত্মক হয়, রোগীর মাথা নাড়াচাড়া করবেন না।
• যদি কাপড়টি রক্তে ভিজে যায়, সেটিকে সরিয়ে ফেলবেন না। এটির ওপর আরেকটি কাপড় রাখুন।
• যদি আপনি মনে করেন মাথার খুলি ভেঙে গেছে, তাহলে রক্তপাতের জায়গাটিতে সরাসরি চাপ দেবেন না।
• ক্ষত থেকে কোনো মরা টিস্যু সরাবেন না। ক্ষতটি জীবাণুমুক্ত গজ দিয়ে ঢেকে রাখবেন।
• যদি রোগী বমি করে তাহলে বমি যাতে শ্বাস পথে না যায় সে জন্য রোগীর মাথা, ঘাড় ও শরীর একদিকে কাৎ করে দেবেন।
• শিশুদের হেড ইনজুরি হলে সচরাচর একবার বমি করে। এটি তেমন সমস্যা নয়, তবে অবশ্যই চিকিৎসককে অবহিত করতে হয়।
• ফোলা জায়গায় বরফের সেঁক দেবেন।
কী করবেন না-
• মাথার ক্ষত গভীর হলে বা অধিক রক্তপাত হলে মাথা পরিষ্কার করবেন না।
• ক্ষত থেকে কোনো বস্তু সরিয়ে নেবেন না।
• প্রয়োজন ছাড়া রোগীকে নাড়াচাড়া করবেন না।
• রোগীকে বিমূঢ় অবস্থায় দেখলে ঝাঁকি দেবেন না।
লেখক : স্বাস্থ্য নিবন্ধকার, গল্পকার ও সহযোগী অধ্যাপক, অর্থোপেডিকস ও ট্রমা বিভাগ, ঢাকা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল। চেম্বার : পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার লিঃ, ২, ইংলিশ রোড, ঢাকা। ফোন: ০১৭১৬২৮৮৮৫৫
• ক্লোজ হেড ইনজুরি হচ্ছে আপনার মাথায় কিছুর আঘাত পেলেন; কিন্তু বস্তুটি মাথার খুলিকে ভাঙেনি।
• ওপেন হেড ইনজুরি হলো মাথায় কোনো বস্তুর আঘাতের ফলে মাথার খুলি ভেঙে যাওয়া। বস্তুটি মাথার খুলি ভেঙে মস্তিষ্কে প্রবেশ করতে পারে। এটি দ্রুতবেগের গাড়িতে চড়লে দুর্ঘটনার কারণে হতে পারে। মাথায় গানশটের গুলি লেগেও হতে পারে।
হেড ইনজুরির মধ্যে রয়েছে
• কনকাশন- এ ক্ষেত্রে মস্তিষ্কে ঝাঁকি লাগে। আঘাতজনিত মস্তিষ্কের ইনজুরিতে এটি খুব সাধারণ ধরন।
• মাথার ত্বক কেটে যাওয়া।
• মাথার খুলি ফেটে যাওয়া।
হেড ইনজুরি রক্তপাত ঘটাতে পারে
• মস্তিষ্কের টিস্যুতে
• মস্তিষ্কের চার পাশের স্তরগুলোতে
(সাব অ্যারেকনয়েড হেমোরেজ, সাব ডুরাল হেমাটোমা, এক্সট্রা ডুরাল হেমাটোমা)
হেড ইনজুরি অবশ্যই একটি জরুরি অবস্থা। মাথায় আঘাত লাগলে যেকোনো রোগীকে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে বা হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যাওয়া উচিত।
কারণ
হেড ইনজুরির সাধারণ কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে-
• বাড়িতে, কর্মক্ষেত্রে, বাড়ির বাইরে কিংবা খেলাধুলা করার সময় দুর্ঘটনা।
• পড়ে যাওয়া।
• শারীরিক আঘাত।
• সড়ক দুর্ঘটনা।
বেশির ভাগ আঘাত গুরুতর নয়। কারণ খুলি মস্তিষ্ককে রক্ষা করে। আবার কিছুই ইনজুরি এতটা ভয়াবহ হয় যে, রোগীকে হাসপাতালে রাখার প্রয়োজন হয়।
উপসর্গ
হেড ইনজুরির কারণে মস্তিষ্কে রক্ত ক্ষরণ হতে পারে।
কিছু হেড ইনজুরিতে মস্তিষ্কের কাজ পরিবর্তিত হতে পারে। একে বলে ট্রমাটিক হেড ইনজুরি।
ফার্স্টএইড
ফার্স্টএইড একজন হেড ইনজুরির রোগীর জীবন বাঁচাতে পারে।
হেড ইনজুরির রোগীকে নিম্নলিখিত ক্ষেত্রে দ্রুত হাসপাতালে পাঠাতে হবে :
• যদি খুব ঘুম আসে
• যদি অস্বাভাবিক আচরণ করে
• যদি মারাত্মক মাথাব্যথা হয় কিংবা ঘাড় শক্ত হয়ে যায়।
• যদি চোখের তারা দুই রকম হয়।
• জ্ঞান হারিয়ে ফেলে।
• একবারের বেশি বমি হলে।
এরপর নিচের পদক্ষেপগুলো নিন-
• রোগীর শ্বাসপথ পরীক্ষা করুন। রোগীর ঠিকমতো শ্বাস-প্রশ্বাস হচ্ছে কি না দেখুন। প্রয়োজনে কৃত্রিম শ্বাস-প্রশ্বাস দিন।
• যদি রোগীর শ্বাস-প্রশ্বাস ও হৃদস্পন্দন স্বাভাবিক থাকে, কিন্তু রোগী অজ্ঞান থাকে, বুঝতে হবে তার স্পাইনাল ইনজুরি হয়েছে।
• রোগীর মাথা ও ঘাড়ের নিচে আপনার দু’হাত রাখুন। নড়াচড়া করবেন না।
• ক্ষত থেকে কোনো রক্তপাত হলে পরিষ্কার কাপড় দিয়ে ক্ষত চেপে রাখুন।
• যদি আঘাত মারাত্মক হয়, রোগীর মাথা নাড়াচাড়া করবেন না।
• যদি কাপড়টি রক্তে ভিজে যায়, সেটিকে সরিয়ে ফেলবেন না। এটির ওপর আরেকটি কাপড় রাখুন।
• যদি আপনি মনে করেন মাথার খুলি ভেঙে গেছে, তাহলে রক্তপাতের জায়গাটিতে সরাসরি চাপ দেবেন না।
• ক্ষত থেকে কোনো মরা টিস্যু সরাবেন না। ক্ষতটি জীবাণুমুক্ত গজ দিয়ে ঢেকে রাখবেন।
• যদি রোগী বমি করে তাহলে বমি যাতে শ্বাস পথে না যায় সে জন্য রোগীর মাথা, ঘাড় ও শরীর একদিকে কাৎ করে দেবেন।
• শিশুদের হেড ইনজুরি হলে সচরাচর একবার বমি করে। এটি তেমন সমস্যা নয়, তবে অবশ্যই চিকিৎসককে অবহিত করতে হয়।
• ফোলা জায়গায় বরফের সেঁক দেবেন।
কী করবেন না-
• মাথার ক্ষত গভীর হলে বা অধিক রক্তপাত হলে মাথা পরিষ্কার করবেন না।
• ক্ষত থেকে কোনো বস্তু সরিয়ে নেবেন না।
• প্রয়োজন ছাড়া রোগীকে নাড়াচাড়া করবেন না।
• রোগীকে বিমূঢ় অবস্থায় দেখলে ঝাঁকি দেবেন না।
লেখক : স্বাস্থ্য নিবন্ধকার, গল্পকার ও সহযোগী অধ্যাপক, অর্থোপেডিকস ও ট্রমা বিভাগ, ঢাকা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল। চেম্বার : পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার লিঃ, ২, ইংলিশ রোড, ঢাকা। ফোন: ০১৭১৬২৮৮৮৫৫
No comments