বন্দর সেবায় ভ্যাট আদায়
রফতানির
ক্ষেত্রে বন্দর ব্যবহার ফি’র ওপর শতভাগ ভ্যাট অব্যাহতি থাকা সত্ত্বেও তা
আদায় করা কতটা যুক্তিযুক্ত, ভেবে দেখা প্রয়োজন। উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম বন্দর
কর্তৃপক্ষ সব মিলিয়ে ব্যবসায়ীদের ৬০ ধরনের সেবা প্রদান করে থাকে এবং এসব
সেবা ফি’র বিপরীতে ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপিত আছে, যা কেবল আমদানির ক্ষেত্রেই
প্রযোজ্য। জানা গেছে, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) থেকে প্রেরিত পত্রের
সুবাদে বর্তমানে সব ধরনের সেবা ফি’র বিপরীতে নতুন করে ভ্যাট আদায় করছে
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। এর ফলে আমদানি ও রফতানিকারক উভয়ের কাছ থেকেই
বন্দর সেবার ওপর ১৫ শতাংশ হারে ভ্যাট আদায় করা হচ্ছে। রফতানির ক্ষেত্রে
বন্দর কর্তৃপক্ষের ১৫ শতাংশ হারে ভ্যাট আদায় দেশের রফতানি খাতের বিকাশকে
বাধাগ্রস্ত করবে, এতে কোনো সন্দেহ নেই। মূলত রফতানি খাতকে উৎসাহিত করতেই
২০০৫ সালের ৯ জুন এনবিআর একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছিল, যেখানে বলা আছে- পণ্য
রফতানিতে বন্দর সেবা শতভাগ ভ্যাট অব্যাহতিপ্রাপ্ত। এ অবস্থায় রফতানিতে
বন্দর সেবার ওপর কেন ভ্যাট আদায় করা হচ্ছে, তা বোধগম্য নয়। দেশের রফতানি
খাতকে বিশেষ বিবেচনায় রাখা উচিত বলে আমরা মনে করি। এতে দেশের শিল্প খাত,
বিশেষ করে তৈরি পোশাক শিল্প উপকৃত হবে এবং তা দেশের অর্থনীতিকে গতিশীল করতে
সহায়ক ভূমিকা রাখবে। বলার অপেক্ষা রাখে না, গার্মেন্ট শিল্প দেশের প্রধান
রফতানি খাত।
জাতীয় অর্থনীতিতে এ শিল্পের অবদান বিশাল। ৩৫ থেকে ৪০ লাখ
মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টিকারী এ শিল্প নারীর কর্মসংস্থানে উল্লেখযোগ্য
অবদান রাখছে। সবচেয়ে বড় কথা, এ খাত আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে বাংলাদেশকে অনেক
দূর এগিয়ে নিয়েছে। আগামীতে এ শিল্পের আরও বিকাশ ঘটার সম্ভাবনাও উজ্জ্বল।
এমনিতেই দেশের পোশাক শিল্প নিয়ে দেশি-বিদেশি নানারকম ষড়যন্ত্র চলার অভিযোগ
রয়েছে। এ অবস্থায় বন্দর ব্যবহার ফি’র ওপর ভ্যাট আদায়ের নামে এ শিল্পের
বিকাশ বাধাগ্রস্ত করা হলে তা দুর্ভাবনার বিষয় বৈকি! পোশাক রফতানিতে
শীর্ষস্থানে উঠে আসার সুযোগ বাংলাদেশের রয়েছে, তবে এজন্য দরকার সহায়ক
পরিবেশ ও প্রণোদনা। এ বিবেচনায় তৈরি পোশাক শিল্পসহ অন্যান্য রফতানি পণ্যের
ক্ষেত্রে বন্দর ব্যবহার ফি’র ওপর ভ্যাট অব্যাহতি বহাল রাখা হবে, এটাই
প্রত্যাশা।
No comments