ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর: সংরক্ষিত এলাকা অরক্ষিত
পাকা
দেয়ালের একাংশ দরজার মতো করে ভাঙা। সেখান দিয়ে যাওয়া-আসা করছিলেন মাঝবয়সী
এক লোক। বাড়ি তাঁর দেয়ালের ওপাশেই। সংরক্ষিত এলাকার ভেতর দিয়ে এভাবে
অবাধে যাতায়াত প্রসঙ্গে তাঁর নির্লিপ্ত জবাব, ‘ইটা অইল ফাঁড়ির একটা পথ।
তারাই (বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ) করি দিছইন!’
এই ‘ফাঁড়ি’ পথ হচ্ছে সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সীমানাপ্রাচীর ডিঙিয়ে চলাচল ব্যবস্থা। বিমানবন্দরটি আন্তর্জাতিক রূপ দেওয়ার পরও সীমানাপ্রাচীরের দক্ষিণ-পশ্চিম দিক কোনোভাবেই ‘ফাঁড়ি’ পথমুক্ত করা যাচ্ছে না। আশপাশের কয়েক গ্রামের মানুষ এখান দিয়ে যাতায়াত ছাড়াও গো-চারণের কাজও করছেন সীমানাপ্রাচীরের ভেতর সংরক্ষিত এলাকায়। এ অবস্থায় রানওয়ের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিলে বিমানবন্দরের নিজস্ব নিরাপত্তা বাহিনী তৎপরতা চালিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
নগরের উত্তরে বড়শালা এলাকায় ৬৭৪ একর জায়গা নিয়ে এ বিমানবন্দর। এর মধ্যে ২ হাজার ৯৪০ মিটার আয়তনের রানওয়ের নিরাপত্তায় পূর্ব, উত্তর ও দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে রয়েছে কাঁটাতারের প্রাচীর। রানওয়ের এক পাশ দিয়ে প্রবহমান একটি ছোট খালের কারণে উত্তর-পূর্ব দিকের ২৪০ ফুট প্রাচীর ধসে পড়েছে। দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে রয়েছে বাইশটিলা এলাকার কয়েকটি গ্রাম। এসব গ্রামের মানুষ সহজে যাতায়াত করতে ফাঁড়ির পথ ব্যবহার করেন।
বিমানবন্দর কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ১৯৯৩ সালে ‘সুপরিসর জাহাজ চলাচল উপযোগীকরণ’ প্রকল্প বাস্তবায়নের সঙ্গে বিমানবন্দরের সংরক্ষিত এলাকাও বর্ধিত করা হয়। পরবর্তী সময়ে বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করার পরিকল্পনায় ১৯৯৮ সালের ২০ ডিসেম্বর থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত অবকাঠামোগত উন্নয়নকাজ চলে। ২০০৭ সালের ৯ নভেম্বর লন্ডন থেকে দুবাই হয়ে ওসমানীতে অবতরণ করার মধ্য দিয়ে বিমানবন্দরটি আন্তর্জাতিক রূপ পায়।
আন্তর্জাতিক রূপান্তর পরিকল্পনায় তখন সালুটিকর এলাকার একাংশ অধিগ্রহণ করায় পাকা রাস্তাটিও সংরক্ষিত এলাকার অন্তর্ভুক্ত হয়। সীমানা বর্ধিত করে নতুন করে জমি অধিগ্রহণের পর থেকে দক্ষিণ-পশ্চিম দিকের কিছুটা প্রাচীরমুক্ত ছিল। ২০০১ সালে সংরক্ষিত এলাকা প্রাচীরবেষ্টিত করার পর ফাঁড়ির (সহজে যাতায়াত ব্যবস্থার স্থানীয় নাম) প্রচলন শুরুহয়।
সরেজমিনে দেখা গেছে, পূর্ব দিকের প্রাচীরের ধস ঠেকাতে স্থায়ী ব্যবস্থার জন্য খালে পাকা বক্স ড্রেন করছে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। কিন্তু দক্ষিণ-পশ্চিম দিকটা অনেকটা অরক্ষিত। সেখানে প্রাচীর ভেদ করে ফাঁড়ির পথ তৈরি করা হয়েছে, যা রানওয়ের নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। দক্ষিণ-পশ্চিম দিকের প্রাচীরের প্রথম দিকে ফাঁড়ির পথটি মহানগর পুলিশের বিমানবন্দর থানার সামনের মোড় থেকে। দেয়ালের নিচের মাটি সরিয়ে আসা-যাওয়ার এ পথ দিয়ে ভেতরে ঢুকলে রানওয়ে দেখা যায়। এ পথ দিয়ে মানুষের চলাচল বেশি হওয়ায় প্রাচীর ঘেঁষে গড়ে উঠেছে একটি মুদি দোকানও।
দ্বিতীয় পথটি ব্যবহার হচ্ছে জেলা পরিষদের উদ্যান এলাকা ও বাইশটিলা গ্রামের দিকে। সেখানে গিয়ে দেখা যায়, দেয়ালের নিচের মাটি সরিয়ে পথ করে গরু-ছাগল সংরক্ষিত এলাকায় নেওয়া হয়। কয়েকজন রাখাল বলেন, পশ্চিমে টিলার মতো একাংশ পেরিয়ে গরু প্রায়ই রানওয়ের কাছাকাছি চলে যায়। তখন নিরাপত্তাকর্মীরা গরু বের করে দেন।
বেশ বড় আকারের তৃতীয় পথটি বিমানবন্দরের পেছনে সালুটিকর সড়কের এক পাশে। প্রাচীর ভেঙে পড়ায় এ পথ ছোটখাটো রাস্তার মতো ব্যবহৃত হচ্ছে। সালুটিকরসহ আশপাশের বাসিন্দারা বলেন, বিমানবন্দরের সীমানা বর্ধিত করায় এলাকাবাসীর যাতায়াতের পুরোনো সড়কপথ সংরক্ষিত এলাকায় পড়ে যায়। এতে সালুটিকরের পশ্চিম দিকের অন্তত ছয়টি গ্রামের মানুষ যাতায়াত বিড়ম্বনায় পড়ে। তাই বাধ্য হয়ে তারা এ পথ ব্যবহার করছে।
এই পথ সংরক্ষিত এলাকার জন্য হুমকির হলেও বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় এ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তবে বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপক মো. হাফিজ আহমদ দাবি করেন, এ রকম কোনো পথ নেই। পরে তাঁকে সুনির্দিষ্ট করে জানালে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, বিচ্ছিন্নভাবে কিছু পথ থাকলেও থাকতে পারে। এগুলো দেখলে তাৎক্ষণিক বন্ধ করে দেওয়া হয়।
নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়া প্রসঙ্গে বিমানবন্দর ব্যবস্থাপক বলেন, প্রতিদিনই রুটিন করে অপারেশন (নিরাপত্তা পর্যবেক্ষণ) চলে। সংরক্ষিত এলাকায় নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার কারণ থাকলে অপারেশনে চিহ্নিত হয়।
এই ‘ফাঁড়ি’ পথ হচ্ছে সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সীমানাপ্রাচীর ডিঙিয়ে চলাচল ব্যবস্থা। বিমানবন্দরটি আন্তর্জাতিক রূপ দেওয়ার পরও সীমানাপ্রাচীরের দক্ষিণ-পশ্চিম দিক কোনোভাবেই ‘ফাঁড়ি’ পথমুক্ত করা যাচ্ছে না। আশপাশের কয়েক গ্রামের মানুষ এখান দিয়ে যাতায়াত ছাড়াও গো-চারণের কাজও করছেন সীমানাপ্রাচীরের ভেতর সংরক্ষিত এলাকায়। এ অবস্থায় রানওয়ের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিলে বিমানবন্দরের নিজস্ব নিরাপত্তা বাহিনী তৎপরতা চালিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
নগরের উত্তরে বড়শালা এলাকায় ৬৭৪ একর জায়গা নিয়ে এ বিমানবন্দর। এর মধ্যে ২ হাজার ৯৪০ মিটার আয়তনের রানওয়ের নিরাপত্তায় পূর্ব, উত্তর ও দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে রয়েছে কাঁটাতারের প্রাচীর। রানওয়ের এক পাশ দিয়ে প্রবহমান একটি ছোট খালের কারণে উত্তর-পূর্ব দিকের ২৪০ ফুট প্রাচীর ধসে পড়েছে। দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে রয়েছে বাইশটিলা এলাকার কয়েকটি গ্রাম। এসব গ্রামের মানুষ সহজে যাতায়াত করতে ফাঁড়ির পথ ব্যবহার করেন।
বিমানবন্দর কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ১৯৯৩ সালে ‘সুপরিসর জাহাজ চলাচল উপযোগীকরণ’ প্রকল্প বাস্তবায়নের সঙ্গে বিমানবন্দরের সংরক্ষিত এলাকাও বর্ধিত করা হয়। পরবর্তী সময়ে বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করার পরিকল্পনায় ১৯৯৮ সালের ২০ ডিসেম্বর থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত অবকাঠামোগত উন্নয়নকাজ চলে। ২০০৭ সালের ৯ নভেম্বর লন্ডন থেকে দুবাই হয়ে ওসমানীতে অবতরণ করার মধ্য দিয়ে বিমানবন্দরটি আন্তর্জাতিক রূপ পায়।
আন্তর্জাতিক রূপান্তর পরিকল্পনায় তখন সালুটিকর এলাকার একাংশ অধিগ্রহণ করায় পাকা রাস্তাটিও সংরক্ষিত এলাকার অন্তর্ভুক্ত হয়। সীমানা বর্ধিত করে নতুন করে জমি অধিগ্রহণের পর থেকে দক্ষিণ-পশ্চিম দিকের কিছুটা প্রাচীরমুক্ত ছিল। ২০০১ সালে সংরক্ষিত এলাকা প্রাচীরবেষ্টিত করার পর ফাঁড়ির (সহজে যাতায়াত ব্যবস্থার স্থানীয় নাম) প্রচলন শুরুহয়।
সরেজমিনে দেখা গেছে, পূর্ব দিকের প্রাচীরের ধস ঠেকাতে স্থায়ী ব্যবস্থার জন্য খালে পাকা বক্স ড্রেন করছে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। কিন্তু দক্ষিণ-পশ্চিম দিকটা অনেকটা অরক্ষিত। সেখানে প্রাচীর ভেদ করে ফাঁড়ির পথ তৈরি করা হয়েছে, যা রানওয়ের নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। দক্ষিণ-পশ্চিম দিকের প্রাচীরের প্রথম দিকে ফাঁড়ির পথটি মহানগর পুলিশের বিমানবন্দর থানার সামনের মোড় থেকে। দেয়ালের নিচের মাটি সরিয়ে আসা-যাওয়ার এ পথ দিয়ে ভেতরে ঢুকলে রানওয়ে দেখা যায়। এ পথ দিয়ে মানুষের চলাচল বেশি হওয়ায় প্রাচীর ঘেঁষে গড়ে উঠেছে একটি মুদি দোকানও।
দ্বিতীয় পথটি ব্যবহার হচ্ছে জেলা পরিষদের উদ্যান এলাকা ও বাইশটিলা গ্রামের দিকে। সেখানে গিয়ে দেখা যায়, দেয়ালের নিচের মাটি সরিয়ে পথ করে গরু-ছাগল সংরক্ষিত এলাকায় নেওয়া হয়। কয়েকজন রাখাল বলেন, পশ্চিমে টিলার মতো একাংশ পেরিয়ে গরু প্রায়ই রানওয়ের কাছাকাছি চলে যায়। তখন নিরাপত্তাকর্মীরা গরু বের করে দেন।
বেশ বড় আকারের তৃতীয় পথটি বিমানবন্দরের পেছনে সালুটিকর সড়কের এক পাশে। প্রাচীর ভেঙে পড়ায় এ পথ ছোটখাটো রাস্তার মতো ব্যবহৃত হচ্ছে। সালুটিকরসহ আশপাশের বাসিন্দারা বলেন, বিমানবন্দরের সীমানা বর্ধিত করায় এলাকাবাসীর যাতায়াতের পুরোনো সড়কপথ সংরক্ষিত এলাকায় পড়ে যায়। এতে সালুটিকরের পশ্চিম দিকের অন্তত ছয়টি গ্রামের মানুষ যাতায়াত বিড়ম্বনায় পড়ে। তাই বাধ্য হয়ে তারা এ পথ ব্যবহার করছে।
এই পথ সংরক্ষিত এলাকার জন্য হুমকির হলেও বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় এ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তবে বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপক মো. হাফিজ আহমদ দাবি করেন, এ রকম কোনো পথ নেই। পরে তাঁকে সুনির্দিষ্ট করে জানালে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, বিচ্ছিন্নভাবে কিছু পথ থাকলেও থাকতে পারে। এগুলো দেখলে তাৎক্ষণিক বন্ধ করে দেওয়া হয়।
নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়া প্রসঙ্গে বিমানবন্দর ব্যবস্থাপক বলেন, প্রতিদিনই রুটিন করে অপারেশন (নিরাপত্তা পর্যবেক্ষণ) চলে। সংরক্ষিত এলাকায় নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার কারণ থাকলে অপারেশনে চিহ্নিত হয়।
No comments