অস্বাভাবিক!
১০
মাস বয়সী আলিয়া সালিম। জন্মের সময় ওজন ছিল ৪ কেজি। চার মাস বয়স থেকে
অস্বাভাবিকভাবে তার ওজন বাড়তে শুরু করে। এখন তার ওজন প্রায় উনিশ কেজি। যা ৬
বছরের শিশুর স্বাভাবিক ওজনের সমান। প্রয়োজনীয় চিকিৎসা করার সামর্থ্য নেই
তার দরিদ্র পরিবারের। আলিয়ার পিতা-মাতা একই রকম ওজন সমস্যায় এর আগে একটি
সন্তান হায়িয়েছেন। সেই সন্তান মারা যায় মাত্র দেড় বছর বয়সে। ভারতের ঝাড়খণ্ড
নিবাসী ওই পরিবারের ঘটনা উঠে এসেছে ডেইলি মেইলের প্রতিবেদনে। আলিয়ার
পিতা-মাতা তার স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বিগ্ন। একই সমস্যায় যেহেতু আগে আরেকটি
সন্তান হারিয়েছেন তাই শঙ্কাটা একটু বেশি। আলিয়ার মা শাবাদা পারভিন (২৫)
বলেন, আলিয়ার ওজন বৃদ্ধি হওয়া শুরু হওয়ার পর প্রতি দু’সপ্তাহে তাকে নতুন
পোশাক কিনে দিতে হয়। তার পিতা মোহাম্মাদ সালিম (২৮) বলেন, আমরা আমাদের
সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি। কিন্তু আমাদের সামর্থ্য শুধু স্থানীয় হাসপাতালে
তাকে নিয়ে যাওয়া পর্যন্ত। গ্রামের ডাক্তাররা স্পষ্ট করে বলতে পারেননি আলিয়া
আসলে কি সমস্যায় ভুগছে। পরে রাচি শহরে এক ডাক্তার দেখাতে নিয়ে গিয়েছিল
আলিয়ার পিতা-মাতা। ওই ডাক্তার দেখার পর অন্য আরেক শহরে যাওয়ার পরামর্শ দেন।
কিন্তু আর্থিক সামর্থ্য না থাকায় তারা সেখানে নিয়ে যেতে পারেননি আলিয়াকে।
তবে সম্প্রতি দিল্লির অদূরে ফোর্টিস হাসপাতালে ড. কৃশান শুঘকে দেখানোর
ব্যবস্থা করতে পেরেছেন তারা। ড. কৃশান বলছেন, এটা অতিশয় স্থূলতা বা হরমোনাল
ভারসাম্যহীনতা হতে পারে। তবে সুষ্ঠু রোগ নির্ণয়ের জন্য আরও কিছু
পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা প্রয়োজন। এরপরই চিকিৎসা প্রক্রিয়া নির্ধারণ করা যাবে।
আলিয়ার অতিরিক্ত ওজনের কারণে বেগ পেতে হয় পারভিনকে। নিজের সন্তানকে
বেশিক্ষণ কোলে রাখতে পারেন না তিনি। রাতে প্রায়ই ঘুমের মধ্যে জেগে ওঠে
আলিয়া। মাঝে মাঝে শ্বাসকষ্ট হয় তার। পারভিন ও সালিমের আরেকটি ৫ বছরের ছেলে
আছে। ওজনের দিক দিয়ে সে স্বাভাবিক। আর্থিক সমস্যার কারণে তাকে স্কুলে
পাঠাতে পারেননি তারা। আর এই আর্থিক অসচ্ছলতার কারণেই তারা আরও বেশি
উদ্বিগ্ন। আলিয়াকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে পারবেন কিনা তা
নিয়ে সংশয়ের দোলাচালে দিনাতিপাত করছেন তারা।
No comments