১৪ বছর পর মা-বাবাকে ফিরে পেলো রোকেয়া by চৌধুরী মুমতাজ আহমদ
২০০১
সাল। দেশজুড়ে তখন জাতীয় নির্বাচনের হাওয়া। মিছিলে-মিছিলে কাঁপছে
শহর-গ্রাম। বাতাসে বাতাসে ধানের শীষ, নৌকার স্লোগান উড়ছে। হ্যামিলনের
বাঁশিওয়ালার মতো মিছিলগুলো যেন টানছিল শিশুদেরও। এমনি এক মিছিল ঘর থেকে বের
করে এনেছিল ছয় বছর বয়সী শিশু রোকেয়াকে। তারপর তার আর ঘরে ফেরা হয়নি।
২০১৪ সালের ৩০শে মার্চ। ঢাকা অনলাইন গাইড নামে ফেসবুকের একটি পেজে চোখ পড়ে সিলেট রেলওয়ে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আলমগীর হোসেনের। অভিভাবকের সন্ধান চেয়ে পরিচয়হীন একটি মেয়ের বর্ণনা সেখানে। চোখ বুলান আলমগীর হোসেন। চমকে উঠেন, বর্ণনাটা যেন তার জানা কোন গল্পেরই। আলমগীর হোসেনের মনে হয়, বছর কয়েক আগে রোকেয়া নামের যে মেয়েটিকে নোয়াখালীর মাইজদি রেলওয়ে স্টেশনে পাওয়া গিয়েছিল তাকে হয়তো তিনি চেনেন। ফেসবুকের বর্ণনায় বলা হয়েছিল, মেয়েটি তার গ্রামের নাম বলতে পারে না। শুধু বাবা-মা সহ পরিবারের কয়েকজন সদস্যদের নাম জানা আছে তার। নামগুলো মিলিয়ে নিয়ে আলমগীর হোসেন বুঝতে পারেন মেয়েটিকে তিনি বাবা-মা’র সন্ধান দিতে পারবেন।
ফেসবুকসহ বিভিন্ন অনলাইন মাধ্যমে সন্ধান চেয়ে এ প্রচারণাটা চালিয়েছিলেন চাঁদপুরের হাজিগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা জাকির হোসেন বাবলু। ব্যবসায়ী ও আইনের ছাত্র জাকির হোসেন কয়েক মাস আগে জানতে পারেন পরিচয়হীন এক তরুণী আকুল হয়ে তার বাবা-মায়ের সন্ধান করছে। রোকেয়া নামের এ তরুণী তখন জাকির হোসেনেরই এক আত্মীয় চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জের ব্যবসায়ী সাহের আলীর বাসায় গৃহকর্মীর কাজ করছে। মেয়েটির আকুতি তার কানে পৌঁছার পর ভাবেন আহা যদি মেয়েটিকে তার বাবা-মায়ের কাছে ফিরিয়ে দেয়া যেত।
এবার গল্পগুলো এক সুতোয় বেঁধে নেয়া যাক। ২০০১ সালে মিছিলের পিছু ছুটতে গিয়ে পথ হারিয়ে ফেলে শিশু রোকেয়া। পথ হারিয়ে পথে ঘুরতে ঘুরতে পৌঁছে যায় চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনে। রোকেয়া ভাবে ট্রেনে উঠলে হয়তো সে পৌঁছে যেতে পারবে তার বাবা-মায়ের কাছে। উঠে পড়ে ট্রেনে। ট্রেন চলতে থাকে। একের পর এক স্টেশন পেরিয়ে ট্রেন পৌঁছে নোয়াখালীর মাইজদী রেলওয়ে স্টেশনে। ট্রেন থেকে নামে রোকেয়া। এ কোথায় এলো কিচ্ছু চেনে না। চেনা কাউকে দেখছে না। কারও কথাও বুঝতে পারছে না। কাঁদতে থাকে স্টেশনের এক কোনে। মেয়েটিকে কাঁদতে দেখে এগিয়ে আসেন মাঝবয়সী এক নারী। ওর নাম ঠিকানা জানতে চান। গড়গড় করে নাম বলে রোকেয়া। বলে, বাবার নাম সানু মিয়া, মায়ের নাম কোহিনূর বেগম, বড় বোনের নাম নূরজাহান, ছোট বোনের নাম সালেহা, আর সবার ছোট ভাই শামীম, যে রোকেয়ার আদরের কালা মিয়া। জানায়, ওর বাবা রাজমিস্ত্রি। তবে আটকে যায় ঠিকানা বলতে গিয়ে। ঠিকানা তো তার জানা নেই। ঘর আর আশপাশের দু’চার ঘর-এই ছিল তার গণ্ডি। সে সব তো আলাদা করে সে চেনে না। শুধু বলে বাড়ির পাশে পাহাড় আছে। মায়া হয় মাঝবয়সী সে নারীর, নিজের সঙ্গে নিয়ে যান তার বাসায়। সেখানে রোকেয়া ঘরের টুকটাক কাজ করতে থাকে। মাঝবয়সী ওই নারীকে নানী ডাকে রোকেয়া। আর তার দুই মেয়েকে খালা। শুরু হয় রোকেয়ার নতুন জীবন। এদিকে রোকেয়াকে খুঁজে না পেয়ে চারদিকে ছুটছেন রোকেয়ার বাবা চট্টগ্রামের খুলশি এলাকার বাসিন্দা সানু মিয়া। কোন খোঁজ না পেয়ে সাধারণ ডায়েরি করেন চট্টগ্রাম কোতোয়ালি থানায়। মা কোহিনূর মেয়ের শোকে পাগলপ্রায়। বাড়ি বাড়ি ঘুরতে থাকেন মেয়ের সন্ধানে।
একটু একটু করে বেড়ে উঠতে থাকে রোকেয়া। কয়েক বছর কাজ করার পর রোকেয়া চলে যায় বাড়ির ছোট মেয়ের শ্বশুরবাড়ি। সেখানেও কাজ করে কয়েক বছর। বাবা-মা, ভাই-বোনের জন্য মন আনচান করে রোকেয়ার। পালিয়ে আসে, বাবা-মায়ের সন্ধান করতে। কিন্তু কোথায় যাবে, ঠিকানা তো তার জানা নেই। পথের সন্ধান না পেয়ে রোকেয়া আশ্রয় নেয় সোনাপুরের হাজী বাড়িতে আবদুল মান্নানের বাসায়। সেখানে কয়েক বছর কাজ করার পর রোকেয়া চলে আসে চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার ব্যবসায়ী সাহের আলীর বাসায়। সব মিলিয়ে এভাবে কেটে যায় রোকেয়ার পরিচয়হীন ১৪ বছর। জাকির হোসেন বাবলু তখনই জানতে পারেন রোকেয়ার দুঃখের গল্প। সচেষ্ট হন মেয়েটিকে বাবা-মায়ের কাছে ফিরিয়ে দিতে। চিন্তা-ভাবনা করেন কীভাবে সাহায্য করবেন মেয়েটিকে। হঠাৎ মাথায় আসে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোকে কাজে লাগানোর। ২৮শে মার্চ তিনি প্রথম ফেসবুকসহ বিভিন্ন অনলাইন মাধ্যমে রোকেয়ার বাবা-মায়ের সন্ধান চেয়ে পোস্ট করেন। সঙ্গে তুলে দেন রোকেয়ার কাছ থেকে শোনা তার বৃত্তান্ত। অনেকেই যোগাযোগ করেন। কিন্তু মেলে না। কেউ কেউ দত্তকও নিতে চান। ৩০শে মার্চ ফেসবুকের পোস্টটি নজরে পড়ে সিলেট রেলওয়ে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আলমগীর হোসেনের। রোকেয়ার বর্ণনার সঙ্গে মিলে যায় তার এক হারিয়ে যাওয়া ভাগনির বর্ণনা। নামগুলো সব মিলে গেছে, আর মিলে গেছে বাড়ির পাশের পাহাড়। যোগাযোগ করেন জাকির হোসেনের সঙ্গে। আলমগীর হোসেনের বর্ণনা শুনে জাকির হোসেন বুঝতে পারেন তার চেষ্টা সফল হয়েছে। জাকির হোসেনের সঙ্গে আলাপের পর আলমগীর হোসেন খবর দেন তার চাচাতো বোন কোহিনূর বেগমের পরিবারের কাছে। ঠিক হয় ৩১শে জানুয়ারি রোকেয়াকে গিয়ে নিয়ে আসবেন রোকেয়ার বড় মামা মুর্শেদ আলম ও দুলাভাই মকবুল হোসেন। চট্টগ্রাম থেকে রওনা হন তারা। চাঁদপুরের হাজিগঞ্জ বড় মসজিদের সামনে রোকেয়াকে নিয়ে আসেন জাকির হোসেন। তুলে দেন মামা ও দুলাভাইর হাতে।
মানবজমিনের কথা হয় রোকেয়াকে মা-বাবার কাছে ফিরিয়ে দেয়ার নেপথ্য নায়ক জাকির হোসেন বাবলুর সঙ্গে। হারানো মেয়েকে তার বাবা-মায়ের কাছে ফিরিয়ে দিতে পেরে তিনি খুব আনন্দিত। বললেন, আনন্দের মাত্রা বলে বুঝানোর উপায় নেই। রোকেয়াকে ফিরে পেয়ে মা-বাবার আনন্দের যেন শেষ নেই। মা কোহিনূর বেগম তো কেবলই কাঁদছেন। মানবজমিনের সঙ্গে কথা হয় তার। তিনি বললেন, আল্লাহ আমার কান্না শুনেছেন। আমার মেয়েকে আমার কাছে ফিরিয়ে দিয়েছেন।
রোকেয়া এখন তার মা-বাবার কাছে চট্টগ্রামের খুলশির জালালাবাদ আবাসিক এলাকায়। তবে যে স্থান থেকে রোকেয়া হারিয়ে গিয়েছিল সেই আগের জায়গায় নয়, একটু দূরে এখন বাস সানু মিয়ার। ১৪ বছরে অনেক কিছুই বদলে গেছে। রোকেয়ার হারিয়ে যাওয়ার পর তার আরও দুই ভাই বোনের জন্ম হয়েছে। আর পৃথিবী ছেড়ে চলে গেছে তার আদরের ছোট ভাই কালা মিয়া।
২০১৪ সালের ৩০শে মার্চ। ঢাকা অনলাইন গাইড নামে ফেসবুকের একটি পেজে চোখ পড়ে সিলেট রেলওয়ে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আলমগীর হোসেনের। অভিভাবকের সন্ধান চেয়ে পরিচয়হীন একটি মেয়ের বর্ণনা সেখানে। চোখ বুলান আলমগীর হোসেন। চমকে উঠেন, বর্ণনাটা যেন তার জানা কোন গল্পেরই। আলমগীর হোসেনের মনে হয়, বছর কয়েক আগে রোকেয়া নামের যে মেয়েটিকে নোয়াখালীর মাইজদি রেলওয়ে স্টেশনে পাওয়া গিয়েছিল তাকে হয়তো তিনি চেনেন। ফেসবুকের বর্ণনায় বলা হয়েছিল, মেয়েটি তার গ্রামের নাম বলতে পারে না। শুধু বাবা-মা সহ পরিবারের কয়েকজন সদস্যদের নাম জানা আছে তার। নামগুলো মিলিয়ে নিয়ে আলমগীর হোসেন বুঝতে পারেন মেয়েটিকে তিনি বাবা-মা’র সন্ধান দিতে পারবেন।
ফেসবুকসহ বিভিন্ন অনলাইন মাধ্যমে সন্ধান চেয়ে এ প্রচারণাটা চালিয়েছিলেন চাঁদপুরের হাজিগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা জাকির হোসেন বাবলু। ব্যবসায়ী ও আইনের ছাত্র জাকির হোসেন কয়েক মাস আগে জানতে পারেন পরিচয়হীন এক তরুণী আকুল হয়ে তার বাবা-মায়ের সন্ধান করছে। রোকেয়া নামের এ তরুণী তখন জাকির হোসেনেরই এক আত্মীয় চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জের ব্যবসায়ী সাহের আলীর বাসায় গৃহকর্মীর কাজ করছে। মেয়েটির আকুতি তার কানে পৌঁছার পর ভাবেন আহা যদি মেয়েটিকে তার বাবা-মায়ের কাছে ফিরিয়ে দেয়া যেত।
এবার গল্পগুলো এক সুতোয় বেঁধে নেয়া যাক। ২০০১ সালে মিছিলের পিছু ছুটতে গিয়ে পথ হারিয়ে ফেলে শিশু রোকেয়া। পথ হারিয়ে পথে ঘুরতে ঘুরতে পৌঁছে যায় চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনে। রোকেয়া ভাবে ট্রেনে উঠলে হয়তো সে পৌঁছে যেতে পারবে তার বাবা-মায়ের কাছে। উঠে পড়ে ট্রেনে। ট্রেন চলতে থাকে। একের পর এক স্টেশন পেরিয়ে ট্রেন পৌঁছে নোয়াখালীর মাইজদী রেলওয়ে স্টেশনে। ট্রেন থেকে নামে রোকেয়া। এ কোথায় এলো কিচ্ছু চেনে না। চেনা কাউকে দেখছে না। কারও কথাও বুঝতে পারছে না। কাঁদতে থাকে স্টেশনের এক কোনে। মেয়েটিকে কাঁদতে দেখে এগিয়ে আসেন মাঝবয়সী এক নারী। ওর নাম ঠিকানা জানতে চান। গড়গড় করে নাম বলে রোকেয়া। বলে, বাবার নাম সানু মিয়া, মায়ের নাম কোহিনূর বেগম, বড় বোনের নাম নূরজাহান, ছোট বোনের নাম সালেহা, আর সবার ছোট ভাই শামীম, যে রোকেয়ার আদরের কালা মিয়া। জানায়, ওর বাবা রাজমিস্ত্রি। তবে আটকে যায় ঠিকানা বলতে গিয়ে। ঠিকানা তো তার জানা নেই। ঘর আর আশপাশের দু’চার ঘর-এই ছিল তার গণ্ডি। সে সব তো আলাদা করে সে চেনে না। শুধু বলে বাড়ির পাশে পাহাড় আছে। মায়া হয় মাঝবয়সী সে নারীর, নিজের সঙ্গে নিয়ে যান তার বাসায়। সেখানে রোকেয়া ঘরের টুকটাক কাজ করতে থাকে। মাঝবয়সী ওই নারীকে নানী ডাকে রোকেয়া। আর তার দুই মেয়েকে খালা। শুরু হয় রোকেয়ার নতুন জীবন। এদিকে রোকেয়াকে খুঁজে না পেয়ে চারদিকে ছুটছেন রোকেয়ার বাবা চট্টগ্রামের খুলশি এলাকার বাসিন্দা সানু মিয়া। কোন খোঁজ না পেয়ে সাধারণ ডায়েরি করেন চট্টগ্রাম কোতোয়ালি থানায়। মা কোহিনূর মেয়ের শোকে পাগলপ্রায়। বাড়ি বাড়ি ঘুরতে থাকেন মেয়ের সন্ধানে।
একটু একটু করে বেড়ে উঠতে থাকে রোকেয়া। কয়েক বছর কাজ করার পর রোকেয়া চলে যায় বাড়ির ছোট মেয়ের শ্বশুরবাড়ি। সেখানেও কাজ করে কয়েক বছর। বাবা-মা, ভাই-বোনের জন্য মন আনচান করে রোকেয়ার। পালিয়ে আসে, বাবা-মায়ের সন্ধান করতে। কিন্তু কোথায় যাবে, ঠিকানা তো তার জানা নেই। পথের সন্ধান না পেয়ে রোকেয়া আশ্রয় নেয় সোনাপুরের হাজী বাড়িতে আবদুল মান্নানের বাসায়। সেখানে কয়েক বছর কাজ করার পর রোকেয়া চলে আসে চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার ব্যবসায়ী সাহের আলীর বাসায়। সব মিলিয়ে এভাবে কেটে যায় রোকেয়ার পরিচয়হীন ১৪ বছর। জাকির হোসেন বাবলু তখনই জানতে পারেন রোকেয়ার দুঃখের গল্প। সচেষ্ট হন মেয়েটিকে বাবা-মায়ের কাছে ফিরিয়ে দিতে। চিন্তা-ভাবনা করেন কীভাবে সাহায্য করবেন মেয়েটিকে। হঠাৎ মাথায় আসে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোকে কাজে লাগানোর। ২৮শে মার্চ তিনি প্রথম ফেসবুকসহ বিভিন্ন অনলাইন মাধ্যমে রোকেয়ার বাবা-মায়ের সন্ধান চেয়ে পোস্ট করেন। সঙ্গে তুলে দেন রোকেয়ার কাছ থেকে শোনা তার বৃত্তান্ত। অনেকেই যোগাযোগ করেন। কিন্তু মেলে না। কেউ কেউ দত্তকও নিতে চান। ৩০শে মার্চ ফেসবুকের পোস্টটি নজরে পড়ে সিলেট রেলওয়ে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আলমগীর হোসেনের। রোকেয়ার বর্ণনার সঙ্গে মিলে যায় তার এক হারিয়ে যাওয়া ভাগনির বর্ণনা। নামগুলো সব মিলে গেছে, আর মিলে গেছে বাড়ির পাশের পাহাড়। যোগাযোগ করেন জাকির হোসেনের সঙ্গে। আলমগীর হোসেনের বর্ণনা শুনে জাকির হোসেন বুঝতে পারেন তার চেষ্টা সফল হয়েছে। জাকির হোসেনের সঙ্গে আলাপের পর আলমগীর হোসেন খবর দেন তার চাচাতো বোন কোহিনূর বেগমের পরিবারের কাছে। ঠিক হয় ৩১শে জানুয়ারি রোকেয়াকে গিয়ে নিয়ে আসবেন রোকেয়ার বড় মামা মুর্শেদ আলম ও দুলাভাই মকবুল হোসেন। চট্টগ্রাম থেকে রওনা হন তারা। চাঁদপুরের হাজিগঞ্জ বড় মসজিদের সামনে রোকেয়াকে নিয়ে আসেন জাকির হোসেন। তুলে দেন মামা ও দুলাভাইর হাতে।
মানবজমিনের কথা হয় রোকেয়াকে মা-বাবার কাছে ফিরিয়ে দেয়ার নেপথ্য নায়ক জাকির হোসেন বাবলুর সঙ্গে। হারানো মেয়েকে তার বাবা-মায়ের কাছে ফিরিয়ে দিতে পেরে তিনি খুব আনন্দিত। বললেন, আনন্দের মাত্রা বলে বুঝানোর উপায় নেই। রোকেয়াকে ফিরে পেয়ে মা-বাবার আনন্দের যেন শেষ নেই। মা কোহিনূর বেগম তো কেবলই কাঁদছেন। মানবজমিনের সঙ্গে কথা হয় তার। তিনি বললেন, আল্লাহ আমার কান্না শুনেছেন। আমার মেয়েকে আমার কাছে ফিরিয়ে দিয়েছেন।
রোকেয়া এখন তার মা-বাবার কাছে চট্টগ্রামের খুলশির জালালাবাদ আবাসিক এলাকায়। তবে যে স্থান থেকে রোকেয়া হারিয়ে গিয়েছিল সেই আগের জায়গায় নয়, একটু দূরে এখন বাস সানু মিয়ার। ১৪ বছরে অনেক কিছুই বদলে গেছে। রোকেয়ার হারিয়ে যাওয়ার পর তার আরও দুই ভাই বোনের জন্ম হয়েছে। আর পৃথিবী ছেড়ে চলে গেছে তার আদরের ছোট ভাই কালা মিয়া।
No comments