স্মৃতির জানালায় by নাসিম আহমেদ নাদভী
২১
জানুয়ারি ২০১০, কাকডাকা ভোর। আমার সিথানে রাখা ফোনটি থেকে থেকে বাজতে
থাকে। আড়মোড়া ভেঙে চোখ ফেরাতে দেখি তোমার জন্মদিনের বার্তা দিচ্ছে। ফোন
হাতে তুলে ত্বরিত জন্মদিনের শুভেচ্ছা লিখে পাঠানোর ঠিক পূর্বক্ষণে খেয়াল
হলো তুমি হাসপাতালে প্রাণপণ যুদ্ধ করে চলেছ দুরারোগ্য এক ব্যাধির সঙ্গে।
বার্তা পাঠানোর বোতাম থেকে আমার বৃদ্ধাঙ্গুলটি সরে গেল।
দমকা হাওয়ার মতো ক্ষণিক দাঁড়িয়ে মিষ্টি হাসি ঠোঁটে এঁকে আবার তেমনি ফেরত ছুট দিয়ে এ বাড়ি ও বাড়ি করে স্বজনদের খবরাখবর এখন আর করে না কেউ। সহকর্মী ও শিক্ষার্থীশূন্য কার্জন হলের একটি কক্ষে নিমগ্নচিত্তে একাকী কেউ গবেষণা করে না। রাত-বিরাতে তালাবদ্ধ ভবনের প্রাচীর টপকে কেউ ঘরে ফেরে না। গবেষণার ফল ও নতুন তত্ত্ব-উপাত্ত আবিষ্কার করে কেউ ছুটে আসে না স্বজনদের তা জানিয়ে দিতে। সন্তানসমদের দেশ তথা জাতির সার্বিক উন্নয়নে সম্পৃক্ত হওয়ার কথা, নানান দুর্যোগে হতদরিদ্র মানুষের পাশে দাঁড়ানোর কথা বলে না কেউ। নিজের ওপর অবিচল বিশ্বাস আর সততার সঙ্গে কাজ করে যাওয়ার তাগিদ দেয় না কেউ। প্রয়োজনবোধে সাঁতার কাটার কথাও কেউ বলে না। সাঁতার শেষে সুইমিংপুলের ধারে বসে কেউ গান শোনায় না। তোমার স্বপ্নে গড়া 'কর্মপরম্পরা' মাতৃহীন শিশুর মতো এদিক-ওদিক দৃষ্টি ফেরায় এই বুঝি তোমার দেখা পাব বলে।
তড়িঘড়ি তৈরি খাবার হাতে তুলে দিয়ে জোর দাবি নিয়ে কেউ বলে না 'খেতে হবে স্বাদ যা-ই হোক'। তোমাকে ঘিরে স্মৃতির মালা গাঁথা হয় এক অপূর্ণতা নিয়ে। আজও তাই হবে। অসংখ্য স্মৃতির ফুল আজও বাদ পড়ে মালা গাঁথায়। তোমার স্বজনরা যখন আদরভরা গলায় তোমাকে 'পিলুয়া' বলে ডাকতেন তখন আমারও ইচ্ছে হতো তোমাকে ওই নামে ডাকতে। জানি না কেন তা পারিনি।
যেখানেই থাকো ভালো থেকো, দূর থেকেই না হয় সবাইকে তোমার মতো কাজে নামার উৎসাহ জুগিও। শান্তিতে থেকো পিলুয়া!
চিত্রশিল্পী
দমকা হাওয়ার মতো ক্ষণিক দাঁড়িয়ে মিষ্টি হাসি ঠোঁটে এঁকে আবার তেমনি ফেরত ছুট দিয়ে এ বাড়ি ও বাড়ি করে স্বজনদের খবরাখবর এখন আর করে না কেউ। সহকর্মী ও শিক্ষার্থীশূন্য কার্জন হলের একটি কক্ষে নিমগ্নচিত্তে একাকী কেউ গবেষণা করে না। রাত-বিরাতে তালাবদ্ধ ভবনের প্রাচীর টপকে কেউ ঘরে ফেরে না। গবেষণার ফল ও নতুন তত্ত্ব-উপাত্ত আবিষ্কার করে কেউ ছুটে আসে না স্বজনদের তা জানিয়ে দিতে। সন্তানসমদের দেশ তথা জাতির সার্বিক উন্নয়নে সম্পৃক্ত হওয়ার কথা, নানান দুর্যোগে হতদরিদ্র মানুষের পাশে দাঁড়ানোর কথা বলে না কেউ। নিজের ওপর অবিচল বিশ্বাস আর সততার সঙ্গে কাজ করে যাওয়ার তাগিদ দেয় না কেউ। প্রয়োজনবোধে সাঁতার কাটার কথাও কেউ বলে না। সাঁতার শেষে সুইমিংপুলের ধারে বসে কেউ গান শোনায় না। তোমার স্বপ্নে গড়া 'কর্মপরম্পরা' মাতৃহীন শিশুর মতো এদিক-ওদিক দৃষ্টি ফেরায় এই বুঝি তোমার দেখা পাব বলে।
তড়িঘড়ি তৈরি খাবার হাতে তুলে দিয়ে জোর দাবি নিয়ে কেউ বলে না 'খেতে হবে স্বাদ যা-ই হোক'। তোমাকে ঘিরে স্মৃতির মালা গাঁথা হয় এক অপূর্ণতা নিয়ে। আজও তাই হবে। অসংখ্য স্মৃতির ফুল আজও বাদ পড়ে মালা গাঁথায়। তোমার স্বজনরা যখন আদরভরা গলায় তোমাকে 'পিলুয়া' বলে ডাকতেন তখন আমারও ইচ্ছে হতো তোমাকে ওই নামে ডাকতে। জানি না কেন তা পারিনি।
যেখানেই থাকো ভালো থেকো, দূর থেকেই না হয় সবাইকে তোমার মতো কাজে নামার উৎসাহ জুগিও। শান্তিতে থেকো পিলুয়া!
চিত্রশিল্পী
No comments