অজ্ঞতা ও অসচেতনতা ... by এমরানা আহমেদ
সুমি
আক্তার (১২)। শিশু হয়েও শিশুসুলভ উচ্ছলতা চেহারায় অস্পষ্ট। অবসাদ আর
ক্লান্তি যেন এই বয়সেই ঘিরে ধরেছে তাকে। শিশুটিকে এমন দেখাচ্ছে কেন? শিশুটি
যক্ষ্মায় আক্রান্ত। প্রচুর কাশি ছিল শিশুটির। প্রতিদিন সন্ধ্যায় শরীর
কাঁপিয়ে জ্বর আসত, থাকত সারারাত। আবার ভোরেই সেরে যেত জ্বর। খাবার খেতে
পারত না। মূলত এই কারণগুলোই যক্ষ্মা রোগের মূল লক্ষণ। এতদিন স্থানীয়
ডাক্তার দিয়ে বাবা-মা মেয়ের চিকিৎসা করিয়েছেন, রোগ ভালো হয়নি। তিন সপ্তাহের
বেশি কাশি হলেই কফ পরীক্ষা করাতে হয়_ এ রকম তথ্য সম্পর্কে কিছুই জানতেন না
শিশুটির বাবা-মা। পরিবারের অজ্ঞতার কারণে শিশুটি বিকলাঙ্গ হয়ে যেত পারত।
বেশি দেরি হলে শিশুটির মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারত। হোমনা উপজেলার রামকৃষ্ণপুর
গ্রামের ব্র্যাকের ব্রাঞ্চ অফিসের হেলথ, নিউট্রিশন অ্যান্ড পপুলেশন
প্রোগ্রামের ফিল্ড অর্গানাইজার মো. সুমন পাটোয়ারী জানান, ৮ জানুয়ারি থেকে
তার চিকিৎসা চলছে। চলবে ৬ মাসব্যাপী। ২০১৪ সালে কুমিল্লা জেলার হোমনা
উপজেলায় ৮ শিশু যক্ষ্মা রোগী পাওয়া গেছে। বর্তমানে তাদের চিকিৎসা চলছে।
হোমনা উপজেলায় জীবাণুযুক্ত যক্ষ্মা রোগী নির্ণয়ের হার ৮০ ভাগ। সব রোগী মিলে
১৮০ ভাগ। টার্গেট ২৫০। রোগী শনাক্তকরণে লক্ষ্যমাত্রার কাছাকাছি রয়েছে বলে
জানান সিনিয়র উপজেলা ম্যানেজার মো. শাহিনুর ইসলাম। তিনি জানান, যক্ষ্মার
লক্ষণযুক্ত সব শিশুকে কফ পরীক্ষার আওতায় আনতে হবে। যক্ষ্মায় আক্রান্ত শিশু
রোগীদের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে অধিক পরিমাণে
প্রচার-প্রচারণা চালাতে হবে। তবে এ বিষয়ে সচেতনতা বাড়বে এবং এতে দেশে
যক্ষ্মা রোগী শনাক্তের হারও বাড়বে বলে মনে করেন।।
সুমির মতো আমাদের দেশে অনেক শিশুই যক্ষ্মা রোগে ভোগে। কিন্তু পারিবারিক ও সামাজিক অজ্ঞতা ও অসচেতনতায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে এখনও দেশে শিশু যক্ষ্মা রোগী শনাক্তের হার কম। বাংলাদেশে মোট যক্ষ্মা রোগীর ৩ শতাংশ শিশু। যক্ষ্মা শুধু বড়দের আক্রান্ত করে না, শিশুরাও আক্রমণ হয়। বাংলাদেশে শিশুদের যক্ষ্মা এখনও একটি অবহেলিত বিষয়। বিশ্বের মোট যক্ষ্মা রোগীর ১০ শতাংশ শিশু, যাদের বয়স ১৫ বছরের নিচে। বিশ্বব্যাপী শিশুমৃত্যুর প্রথম ১০টি কারণের মধ্যে সংক্রামক রোগ যক্ষ্মা একটি।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলছেন, বড়দের যক্ষ্মা বেশির ভাগ ক্ষেত্রে কফ পরীক্ষা করলেই রোগটির জীবাণু পাওয়া যায়। কিন্তু শিশুদের যক্ষ্মার জীবাণু কফে থাকে না। পাকস্থলী থেকে নমুনা নিয়ে পরীক্ষা করা হলে জীবাণু শনাক্ত করা যায়। সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের শিশু বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. শাকিল আহমেদ বলেন, মাইকোব্যাকটেরিয়াম টিউবারকুলোসিস যক্ষ্মারোগের জীবাণু। এ থেকে সংক্রমিত বেশিরভাগ শিশুর যক্ষ্মারোগ হয় না। সংক্রমণের একমাত্র নমুনা হিসেবে হয়তো টিউবারকুলিন স্কিন টেস্ট পজিটিভ দেখায়। শরীরে জীবাণু ঢোকার পরও যদি রোগ প্রতিরোধ শক্তি সবল থাকে, তবে জীবাণু বংশবৃদ্ধি ঘটাতে পারে না। যেসব কারণে শিশুর ইমিউন সিস্টেম দুর্বল থাকে, সেসব ক্ষেত্রে বাচ্চা সহজে যক্ষ্মায় আক্রান্ত হয়। যেমন- অল্পবয়সী শিশু, অপুষ্টিতে ভোগা, হাম, হুপিং কাশি, এইচআইভি অসুখে পড়া। একই বাড়িতে অসংক্রামক স্মিয়ার পজিটিভ যক্ষ্মারোগী থাকলে বাচ্চার যক্ষ্মাক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। শিশুর ফুসফুস বা মেনিনজেস-মগজের আবরক-ঝিলি্লর যক্ষ্মা বেশি বিপদ ডেকে আনতে পারে। যক্ষ্মারোগে অস্থি, অস্থিসন্ধি, পেট, গলার গ্গ্ন্যান্ড, চোখ, কান, ত্বক প্রভৃতিতেও আক্রান্ত হতে পারে। তিনি আরও জানান, শিশুদের যক্ষ্মা রোগ নির্ণয় খুব কঠিন। প্রায় ক্ষেত্রে রোগের খুব স্পষ্ট লক্ষণ থাকে না। সচরাচর যেসব লক্ষণ দেখা যায় তার মধ্যে রয়েছে_ দীর্ঘদিন ধরে অল্প জ্বর, বিকেলের দিকে এই জ্বর কিছুটা বাড়ে, রাতে ঘাম দিয়ে ছেড়ে যায়; অনেক দিন ধরে কাশি, বিশেষ করে তা যদি ৩০ দিনের বেশি স্থায়ী হয়; খাওয়ায় অরুচি; ওজন কমে যাওয়া বা ওজন না বাড়া। ব্র্যাকের যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি সূত্রে জানা গেছে, সরকারের সহায়তায় ব্র্যাকসহ মোটি ২৮টি এনজিওর মাধ্যমে জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি পরিচালিত হচ্ছে। ব্র্যাকের যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির প্রোগ্রাম ম্যানেজার ড. শায়লা ইসলাম বলেন, শিশুদের যক্ষ্মা হচ্ছে_ এ বিষয়টি ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা দরকার। এ বিষয়ে মিডিয়ারও দায়িত্ব রয়েছে অনেক।
সুমির মতো আমাদের দেশে অনেক শিশুই যক্ষ্মা রোগে ভোগে। কিন্তু পারিবারিক ও সামাজিক অজ্ঞতা ও অসচেতনতায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে এখনও দেশে শিশু যক্ষ্মা রোগী শনাক্তের হার কম। বাংলাদেশে মোট যক্ষ্মা রোগীর ৩ শতাংশ শিশু। যক্ষ্মা শুধু বড়দের আক্রান্ত করে না, শিশুরাও আক্রমণ হয়। বাংলাদেশে শিশুদের যক্ষ্মা এখনও একটি অবহেলিত বিষয়। বিশ্বের মোট যক্ষ্মা রোগীর ১০ শতাংশ শিশু, যাদের বয়স ১৫ বছরের নিচে। বিশ্বব্যাপী শিশুমৃত্যুর প্রথম ১০টি কারণের মধ্যে সংক্রামক রোগ যক্ষ্মা একটি।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলছেন, বড়দের যক্ষ্মা বেশির ভাগ ক্ষেত্রে কফ পরীক্ষা করলেই রোগটির জীবাণু পাওয়া যায়। কিন্তু শিশুদের যক্ষ্মার জীবাণু কফে থাকে না। পাকস্থলী থেকে নমুনা নিয়ে পরীক্ষা করা হলে জীবাণু শনাক্ত করা যায়। সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের শিশু বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. শাকিল আহমেদ বলেন, মাইকোব্যাকটেরিয়াম টিউবারকুলোসিস যক্ষ্মারোগের জীবাণু। এ থেকে সংক্রমিত বেশিরভাগ শিশুর যক্ষ্মারোগ হয় না। সংক্রমণের একমাত্র নমুনা হিসেবে হয়তো টিউবারকুলিন স্কিন টেস্ট পজিটিভ দেখায়। শরীরে জীবাণু ঢোকার পরও যদি রোগ প্রতিরোধ শক্তি সবল থাকে, তবে জীবাণু বংশবৃদ্ধি ঘটাতে পারে না। যেসব কারণে শিশুর ইমিউন সিস্টেম দুর্বল থাকে, সেসব ক্ষেত্রে বাচ্চা সহজে যক্ষ্মায় আক্রান্ত হয়। যেমন- অল্পবয়সী শিশু, অপুষ্টিতে ভোগা, হাম, হুপিং কাশি, এইচআইভি অসুখে পড়া। একই বাড়িতে অসংক্রামক স্মিয়ার পজিটিভ যক্ষ্মারোগী থাকলে বাচ্চার যক্ষ্মাক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। শিশুর ফুসফুস বা মেনিনজেস-মগজের আবরক-ঝিলি্লর যক্ষ্মা বেশি বিপদ ডেকে আনতে পারে। যক্ষ্মারোগে অস্থি, অস্থিসন্ধি, পেট, গলার গ্গ্ন্যান্ড, চোখ, কান, ত্বক প্রভৃতিতেও আক্রান্ত হতে পারে। তিনি আরও জানান, শিশুদের যক্ষ্মা রোগ নির্ণয় খুব কঠিন। প্রায় ক্ষেত্রে রোগের খুব স্পষ্ট লক্ষণ থাকে না। সচরাচর যেসব লক্ষণ দেখা যায় তার মধ্যে রয়েছে_ দীর্ঘদিন ধরে অল্প জ্বর, বিকেলের দিকে এই জ্বর কিছুটা বাড়ে, রাতে ঘাম দিয়ে ছেড়ে যায়; অনেক দিন ধরে কাশি, বিশেষ করে তা যদি ৩০ দিনের বেশি স্থায়ী হয়; খাওয়ায় অরুচি; ওজন কমে যাওয়া বা ওজন না বাড়া। ব্র্যাকের যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি সূত্রে জানা গেছে, সরকারের সহায়তায় ব্র্যাকসহ মোটি ২৮টি এনজিওর মাধ্যমে জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি পরিচালিত হচ্ছে। ব্র্যাকের যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির প্রোগ্রাম ম্যানেজার ড. শায়লা ইসলাম বলেন, শিশুদের যক্ষ্মা হচ্ছে_ এ বিষয়টি ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা দরকার। এ বিষয়ে মিডিয়ারও দায়িত্ব রয়েছে অনেক।
No comments