একজন সেলিম-কর্মী থেকে গার্মেন্ট মালিক by ফজলুল হক রোমান
প্রচণ্ড
আত্মবিশ্বাস, শ্রম আর মেধা কাজে লাগিয়ে মাত্র তিন বছরে মুশফিকুর রহমান
সেলিম নামে এক যুবক সামান্য গার্মেন্টকর্মী থেকে নিজেই এখন গার্মেন্ট
ফ্যাক্টরির মালিক। এক মাসের বেতনের টাকা দিয়ে মাত্র একটি সুইং মেশিন কিনে
২০১১ সালের ২৪ জুলাই স্ত্রী সাজেদা বেগমকে সাথে নিয়ে শুরু করেন পথচলা।
নেত্রকোনা-মদনপুর সড়কের বনুয়া পাড়ায় তারই প্রতিষ্ঠিত শিমু অ্যান্ড সাজ্জাদ
ফ্যাশন ওয়্যার। এখানে বর্তমানে কাজ করছেন ২৫ জন শ্রমিক। তাদের মধ্যে ২২ জন
নারী ও তিনজন পুরুষ কর্মী রয়েছেন। এই গার্মেন্টের তৈরী পোশাক এখন রফতানি
হচ্ছে ইউরোপে।
উদীয়মান গার্মেন্ট ফ্যাক্টরীর মালিক মুশফিকুর রহমানের পথচলায় সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয় ঢাকা আহছানিয়া মিশন নেত্রকোনা শাখা। তাদের দেয়া ক্ষুদ্রঋণ প্রকল্পের আওতায় প্রথম দফা দেয়া হয় ৫০ হাজার টাকা। দ্বিতীয় বার ৮০ হাজার ও তৃতীয় কিস্তিতে দেয়া হয় এক লাখ টাকা। মুশফিকুর রহমান সেলিম ঢাকায় তৈরী পোশাক কারখানায় প্রথমে সামান্য কর্মী হিসেবে কাজে যোগদান করেন। পরে প্রডাকশন ম্যানেজার হিসেবে একাধিক গার্মেন্ট ফ্যাক্টরিতে কাজ করার সুবাদে অভিজ্ঞতা অর্জন করেন। ওই সময় তিনি স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন, কিভাবে নিজের চেষ্টায় গার্মেন্ট ফ্যাক্টরি গড়ে তোলা যায়। সেই ভাবনা থেকে ১৪ বছরের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে অবশেষে নিজ এলাকায় ক্ষুদ্র পরিসরে গড়ে তোলেন ফ্যাশন ওয়্যার নামে একটি গার্মেন্ট ফ্যাক্টরি।
শিমু অ্যান্ড সাজ্জাদ ফ্যাশন ওয়্যারে পরিদর্শনে গিয়ে এই প্রতিবেদক দেখতে পান সবাই কাজে ব্যস্ত। বাইরে থেকে বোঝার উপায় নেই জেলা শহরের অতি সন্নিকটে গড়ে ওঠা এ ফ্যাশন ওয়্যারে আন্তর্জাতিক মানের পোশাক তৈরি হচ্ছে। দেখা যায়, আধাপাকা মোটামুটি বড় সাইজের একটি টিনশেড ঘরে ছিমছাম পরিবেশে নারীকর্মীরা আপন মনে কাজ করছেন। আগে যারা মানুষের বাসায় ঝিয়ের কাজ করতেন তারা এখানে কাজের সুযোগ পেয়ে স্বাবলম্বী হয়ে উঠেছেন। তাদের সন্তানেরা এখন স্কুলে যায়। কাজের ধরন ও যোগ্যতানুসারে প্রতিজন তিন হাজার থেকে ঊর্ধ্বে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত মাসিক বেতন পেয়ে থকেন।
কথা হয় শিমু অ্যান্ড সাজ্জাদ ফ্যাশন ওয়্যারের কর্ণধার মুশফিকুর রহমান সেলিমের সাথে। দুই ছেলে ও এক মেয়ের বাবা তিনি। আত্মবিশ্বাসী সেলিম সামান্য গার্মেন্টকর্মী থেকে বর্তমান পর্যায়ে উঠে আসার পেছনের গল্প অকপটে তুলে ধরেন। শুরুতে মাত্র একটি সুইং মেশিন নিয়ে যাত্রা শুরু করলেও বর্তমানে ১৬টি স্ইুং মেশিন, কাঞ্চা, পিট অব দ্য আর্ম, অভার লক, টু নিটল, বাটন হল, স্নœাভ বাটন ও কাটিংসহ ২৫টির মতো মেশিন রয়েছে, যা প্রয়োজনীয় চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল বলা চলে। প্রতিদিন গড়ে ২০০ পিচ প্যান্ট, প্রতি মাসে প্রায় ছয় হাজার পিচ তৈরী হয়ে থাকে। এ পোশাক বিক্রি বাবদ মাসিক আয় হয়ে থাকে প্রায় দুই লাখ ২৫ হাজার টাকা। আর কর্মীদের বেতনভাতা বাবদ প্রদান করা হয় এক লাখ ৮০ হাজার টাকা। একজন কর্মী হিসেবে তিনি নিজেও ২০ হাজার টাকা বেতন নিয়ে থাকেন। সব খরচ বাদে মাসিক মুনাফা অর্জিত হয়ে থাকে অন্তত ৫০ হাজার টাকা। এখানকার তৈরী পোশাকের মধ্যে বিশেষ করে বিভিন্ন কালারের গ্যাবডিন প্যান্ট ভারত, দুবাই, কাতার, ইতালিসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে প্রচুর চাহিদা থাকায় তা রফতানিও হচ্ছে। কিন্তু পর্যাপ্ত পুঁজির অভাবে প্যান্ট তৈরীর পর ফিনিশিংয়ের জন্য ঢাকায় পাঠাতে হয়। এতে ব্যয় বৃদ্ধির ফলে লভ্যাংশ কমে যায়। এ ছাড়া ক্ষুদ্র পরিসরে তৈরি বলে সরাসরি রফতানি করতে না পারায় সাপ্লায়ার ও বায়ারদের মাধ্যমে সরবরাহ করতে হয়। ফলে লাভের বড় একটা অংশ তাদের পকেটে চলে যায়। প্রয়োজনীয় পুঁজির অভাবে সম্ভাবনাময় এ ফ্যাশন ওয়্যার বৃহৎ প্রকল্পে এগিয়ে নেয়া সম্ভব হচ্ছে না। এ জন্য কোনো বাণিজ্যিক ব্যাংকের প্রয়োজনীয় অর্থ সহায়তার মাধ্যমে এর অগ্রযাত্রা এগিয়ে নিতে পারে ক্ষুদ্র পরিসর থেকে বৃহৎ শিল্প পরিসরে। সেই সাথে অধিকহারে দরিদ্র নারীদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির সম্ভাবনাও রয়েছে। তেমনিভাবে সরকারের রাজস্ব আয়ও বৃদ্ধি পেতে পারে অনেকাংশে।
মুশফিকুর রহমান সেলিম জানান, সমস্যা বলতে একটাই। তা হলো, অর্থের অভাবে এ ফ্যাশন শিল্পকে এগিয়ে নেয়া সম্ভব হচ্ছে না। যদিও আমাদের তৈরী প্যান্ট দেশের বাইরে প্রচুর চাহিদা রয়েছে। কিন্তু ক্ষুদ্র পরিসরে ব্যাপক চাহিদা পূরণ কিছুতেই সম্ভব হচ্ছে না। এ জন্য কোনো ব্যাংক থেকে প্রয়োজনীয় ঋণ সহায়তা পেলে বেশি মেশিন ও সরঞ্জামাদি কিনে স্থানীয়ভাবেই পুরো কাজ করা গেলে একটি সম্পূর্ণ গার্মেন্ট হিসেবে এটি প্রতিষ্ঠা লাভ করতে পারে।
ঢাকা আহছানিয়া মিশনের ক্ষুদ্রঋণ প্রকল্পের নেত্রকোনা সদর এরিয়া ব্যবস্থাপক মো: রুহুল আমিন এ প্রতিবেদককে বলেন, গ্রামীণ দরিদ্র উদ্যোক্তাদের কার্যক্রমে ক্ষুদ্রঋণ সহায়তায় জেলার নেত্রকোনা সদর, বারহাট্টা ও পূর্বধলা উপজেলায় কার্যক্রম চলছে। গ্রামীণ ুদ্রঋণ, ক্ষুদ্র উদ্যোগ ঋণ, কৃষি, মওসুমি ও হতদরিদ্রের মধ্যে এ ঋণ সহায়তা প্রদান করা হয়ে থাকে। জেলার দরিদ্র উদ্যোক্তাদের মধ্যে সহজ শর্তে প্রায় পাঁচ কোটি টাকার ঋণ প্রদান করা হয়েছে।
উদীয়মান গার্মেন্ট ফ্যাক্টরীর মালিক মুশফিকুর রহমানের পথচলায় সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয় ঢাকা আহছানিয়া মিশন নেত্রকোনা শাখা। তাদের দেয়া ক্ষুদ্রঋণ প্রকল্পের আওতায় প্রথম দফা দেয়া হয় ৫০ হাজার টাকা। দ্বিতীয় বার ৮০ হাজার ও তৃতীয় কিস্তিতে দেয়া হয় এক লাখ টাকা। মুশফিকুর রহমান সেলিম ঢাকায় তৈরী পোশাক কারখানায় প্রথমে সামান্য কর্মী হিসেবে কাজে যোগদান করেন। পরে প্রডাকশন ম্যানেজার হিসেবে একাধিক গার্মেন্ট ফ্যাক্টরিতে কাজ করার সুবাদে অভিজ্ঞতা অর্জন করেন। ওই সময় তিনি স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন, কিভাবে নিজের চেষ্টায় গার্মেন্ট ফ্যাক্টরি গড়ে তোলা যায়। সেই ভাবনা থেকে ১৪ বছরের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে অবশেষে নিজ এলাকায় ক্ষুদ্র পরিসরে গড়ে তোলেন ফ্যাশন ওয়্যার নামে একটি গার্মেন্ট ফ্যাক্টরি।
শিমু অ্যান্ড সাজ্জাদ ফ্যাশন ওয়্যারে পরিদর্শনে গিয়ে এই প্রতিবেদক দেখতে পান সবাই কাজে ব্যস্ত। বাইরে থেকে বোঝার উপায় নেই জেলা শহরের অতি সন্নিকটে গড়ে ওঠা এ ফ্যাশন ওয়্যারে আন্তর্জাতিক মানের পোশাক তৈরি হচ্ছে। দেখা যায়, আধাপাকা মোটামুটি বড় সাইজের একটি টিনশেড ঘরে ছিমছাম পরিবেশে নারীকর্মীরা আপন মনে কাজ করছেন। আগে যারা মানুষের বাসায় ঝিয়ের কাজ করতেন তারা এখানে কাজের সুযোগ পেয়ে স্বাবলম্বী হয়ে উঠেছেন। তাদের সন্তানেরা এখন স্কুলে যায়। কাজের ধরন ও যোগ্যতানুসারে প্রতিজন তিন হাজার থেকে ঊর্ধ্বে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত মাসিক বেতন পেয়ে থকেন।
কথা হয় শিমু অ্যান্ড সাজ্জাদ ফ্যাশন ওয়্যারের কর্ণধার মুশফিকুর রহমান সেলিমের সাথে। দুই ছেলে ও এক মেয়ের বাবা তিনি। আত্মবিশ্বাসী সেলিম সামান্য গার্মেন্টকর্মী থেকে বর্তমান পর্যায়ে উঠে আসার পেছনের গল্প অকপটে তুলে ধরেন। শুরুতে মাত্র একটি সুইং মেশিন নিয়ে যাত্রা শুরু করলেও বর্তমানে ১৬টি স্ইুং মেশিন, কাঞ্চা, পিট অব দ্য আর্ম, অভার লক, টু নিটল, বাটন হল, স্নœাভ বাটন ও কাটিংসহ ২৫টির মতো মেশিন রয়েছে, যা প্রয়োজনীয় চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল বলা চলে। প্রতিদিন গড়ে ২০০ পিচ প্যান্ট, প্রতি মাসে প্রায় ছয় হাজার পিচ তৈরী হয়ে থাকে। এ পোশাক বিক্রি বাবদ মাসিক আয় হয়ে থাকে প্রায় দুই লাখ ২৫ হাজার টাকা। আর কর্মীদের বেতনভাতা বাবদ প্রদান করা হয় এক লাখ ৮০ হাজার টাকা। একজন কর্মী হিসেবে তিনি নিজেও ২০ হাজার টাকা বেতন নিয়ে থাকেন। সব খরচ বাদে মাসিক মুনাফা অর্জিত হয়ে থাকে অন্তত ৫০ হাজার টাকা। এখানকার তৈরী পোশাকের মধ্যে বিশেষ করে বিভিন্ন কালারের গ্যাবডিন প্যান্ট ভারত, দুবাই, কাতার, ইতালিসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে প্রচুর চাহিদা থাকায় তা রফতানিও হচ্ছে। কিন্তু পর্যাপ্ত পুঁজির অভাবে প্যান্ট তৈরীর পর ফিনিশিংয়ের জন্য ঢাকায় পাঠাতে হয়। এতে ব্যয় বৃদ্ধির ফলে লভ্যাংশ কমে যায়। এ ছাড়া ক্ষুদ্র পরিসরে তৈরি বলে সরাসরি রফতানি করতে না পারায় সাপ্লায়ার ও বায়ারদের মাধ্যমে সরবরাহ করতে হয়। ফলে লাভের বড় একটা অংশ তাদের পকেটে চলে যায়। প্রয়োজনীয় পুঁজির অভাবে সম্ভাবনাময় এ ফ্যাশন ওয়্যার বৃহৎ প্রকল্পে এগিয়ে নেয়া সম্ভব হচ্ছে না। এ জন্য কোনো বাণিজ্যিক ব্যাংকের প্রয়োজনীয় অর্থ সহায়তার মাধ্যমে এর অগ্রযাত্রা এগিয়ে নিতে পারে ক্ষুদ্র পরিসর থেকে বৃহৎ শিল্প পরিসরে। সেই সাথে অধিকহারে দরিদ্র নারীদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির সম্ভাবনাও রয়েছে। তেমনিভাবে সরকারের রাজস্ব আয়ও বৃদ্ধি পেতে পারে অনেকাংশে।
মুশফিকুর রহমান সেলিম জানান, সমস্যা বলতে একটাই। তা হলো, অর্থের অভাবে এ ফ্যাশন শিল্পকে এগিয়ে নেয়া সম্ভব হচ্ছে না। যদিও আমাদের তৈরী প্যান্ট দেশের বাইরে প্রচুর চাহিদা রয়েছে। কিন্তু ক্ষুদ্র পরিসরে ব্যাপক চাহিদা পূরণ কিছুতেই সম্ভব হচ্ছে না। এ জন্য কোনো ব্যাংক থেকে প্রয়োজনীয় ঋণ সহায়তা পেলে বেশি মেশিন ও সরঞ্জামাদি কিনে স্থানীয়ভাবেই পুরো কাজ করা গেলে একটি সম্পূর্ণ গার্মেন্ট হিসেবে এটি প্রতিষ্ঠা লাভ করতে পারে।
ঢাকা আহছানিয়া মিশনের ক্ষুদ্রঋণ প্রকল্পের নেত্রকোনা সদর এরিয়া ব্যবস্থাপক মো: রুহুল আমিন এ প্রতিবেদককে বলেন, গ্রামীণ দরিদ্র উদ্যোক্তাদের কার্যক্রমে ক্ষুদ্রঋণ সহায়তায় জেলার নেত্রকোনা সদর, বারহাট্টা ও পূর্বধলা উপজেলায় কার্যক্রম চলছে। গ্রামীণ ুদ্রঋণ, ক্ষুদ্র উদ্যোগ ঋণ, কৃষি, মওসুমি ও হতদরিদ্রের মধ্যে এ ঋণ সহায়তা প্রদান করা হয়ে থাকে। জেলার দরিদ্র উদ্যোক্তাদের মধ্যে সহজ শর্তে প্রায় পাঁচ কোটি টাকার ঋণ প্রদান করা হয়েছে।
No comments