অভয়নগরে জলাবদ্ধতা- তিনটি বিলে বোরো চাষ অনিশ্চিত
যশোরের অভয়নগর উপজেলার বিলকপালিয়া, বিলকেদারিয়া ও উত্তর বিলের বেশির ভাগ অংশে এবার বোরো ধানের চাষ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। টেকা, শ্রী ও হরি নদে পলি জমে পানিনিষ্কাশিত না হওয়ায় বিলগুলোতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। মৌসুমের শেষ সময়েও কৃষক বিলগুলোতে সেচযন্ত্র দিয়ে পানি সেচে বোরো ধান আবাদের প্রাণান্তকর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বিলকপালিয়া, বিলকেদারিয়া এবং উত্তর বিলের বেশির ভাগ অংশে কোথাও হাঁটু আবার কোথাও কোমরসম পানি। বিলগুলোর ওপরের অংশে পানি কম থাকায় সেচযন্ত্র দিয়ে সেচে বোরো চাষ করা হচ্ছে। কিন্তু নিচের অংশে বেশি পানি রয়েছে। এ জন্য সেখানে সেচে বোরো চাষ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। কয়েকজন কৃষক জানান, ২০১৩ সালের জানুয়ারি মাসে বিলখুকশিয়ার জোয়ারাধার (টিআরএম-টাইডেল রিভার ম্যানেজমেন্ট) বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ২০১২ সালের মে মাসে বিলকপালিয়ায় জোয়ারাধার নির্মাণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়। কিন্তু বিলটিতে জোয়ারাধার চালু করতে পারেনি পানি উন্নয়ন বোর্ড। এ অবস্থায় এই অঞ্চলের পানিনিষ্কাশনের একমাত্র মাধ্যম মুক্তেশ্বরী, টেকা, শ্রী ও হরি নদে ব্যাপকহারে জমছে জোয়ারের সঙ্গে আসা পলি। তাঁরা জানান, ইতিমধ্যে পলি জমে নদীর বুক বিল থেকে উঁচু হয়ে গেছে। ফলে নদী দিয়ে পানিনিষ্কাশিত হচ্ছে না এবং সংলগ্ন বিলগুলোতে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। এতে ওই তিন বিলের প্রায় এক হাজার হেক্টর জমির ৭০০-৮০০ হেক্টরে বোরো চাষ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
বিলকপালিয়ায় ৩০ বিঘা জমি আছে উপজেলার কালিশাকুল গ্রামের কৃষক গুরুচাঁদ মণ্ডলের (৮২)। গত বছর তিনি সম্পূর্ণ জমিতে বোরো ধানের চাষ করেছিলেন। এবার তিনি এক ছটাক জমিতেও বোরো ধানের চারা রোপণ করতে পারেননি। তিনি বলেন, ‘গত বছর নদীর অবস্থা একটু ভালো ছিল। জল নেমে গিয়েছিল। এবার পলি পড়ে নদী ভরাট হয়ে যাওয়ায় জল সরছে না। এ জন্য এবার কোনো জমিতে বোরো ধান চাষ করতে পারছি না।’ একই গ্রামের গোপাল চন্দ্র মণ্ডল (৪৫) বলেন, ‘গত বছর ছয় বিঘা জমিতে বোরো চাষ করে ১৮০ মণ ধান পেয়েছিলাম। নদী দিয়ে না সরায় ওই জমিতে এখন কোমর সমান জল। ধানের চারা রোপণের সময় প্রায় শেষ। জমিতে এবার ধান হওয়ার কোনোই সম্ভাবনা নেই। কষ্টে বিলে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছি।’
উপজেলার দত্তগাতী গ্রামের কৃষক আবদুল আজিজ (৫৪) বলেন, ‘নদী পলিতে ভরাট হয়ে যাওয়ায় বিলে পানি ঢুকে আর বের হচ্ছে না। উত্তর বিলের ওপরের অংশে আমার তিন বিঘা জমি আছে। জমিতে দেড় হাত সমান পানি ছিল। পানি সেচে আমি এবার বোরো ধানের চাষ করছি।’ আড়পাড়া গ্রামের কৃষক সাদেক আলী সরদার (৪৫) বলেন, ‘বিলকেদারিয়ায় আমার ২২ কাঠা জমি আছে। গতবার পানি নেমে যাওয়ায় বোরো ধান চাষ করেছিলাম। এ বছর মৌসুম শেষ হওয়ার পথে। কিন্তু মোটেও পানি নামছে না। কীভাবে ধান চাষ করব বুঝতে পারছি না।’
কৃষি কার্যালয়ের কর্মকর্তা সূত্র জানায়, উপজেলায় এবার ১৪ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে আট হাজার হেক্টর জমিতে উচ্চফলনশীল (উফশী) এবং ৬ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে হাইব্রিড জাতের ধান চাষ হবে। এ পর্যন্ত ১৩ হাজার ৫৫০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চাষ হয়েছে। এর ৭ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে উফশী এবং ৬ হাজার ৫০ হেক্টর জমিতে হাইব্রিড জাতের ধান লাগানো হয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দীপক কুমার রায় বলেন, ‘আশা করছি, বিলগুলোর সব জমিতে বোরো ধানের চাষ হবে। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে জমি থেকে পানি সেচে ধান রোপণ করা সম্ভব হবে।’ তিনি বলেন, ‘পলি জমে নদী উঁচু হয়ে পড়েছে। বিল রয়েছে নিচু। এ জন্য জল বের হতে পারছে না। আমরা কৃষকদের বোরো আবাদের জন্য নানাভাবে উদ্বুদ্ধ করছি। অনেক কৃষক সেচযন্ত্র দিয়ে পানি সেচে বোরোর আবাদ করছেন। এবার ধানের দামও ভালো। কৃষক এবার চাষেই থাকবেন।’
সরেজমিনে দেখা গেছে, বিলকপালিয়া, বিলকেদারিয়া এবং উত্তর বিলের বেশির ভাগ অংশে কোথাও হাঁটু আবার কোথাও কোমরসম পানি। বিলগুলোর ওপরের অংশে পানি কম থাকায় সেচযন্ত্র দিয়ে সেচে বোরো চাষ করা হচ্ছে। কিন্তু নিচের অংশে বেশি পানি রয়েছে। এ জন্য সেখানে সেচে বোরো চাষ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। কয়েকজন কৃষক জানান, ২০১৩ সালের জানুয়ারি মাসে বিলখুকশিয়ার জোয়ারাধার (টিআরএম-টাইডেল রিভার ম্যানেজমেন্ট) বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ২০১২ সালের মে মাসে বিলকপালিয়ায় জোয়ারাধার নির্মাণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়। কিন্তু বিলটিতে জোয়ারাধার চালু করতে পারেনি পানি উন্নয়ন বোর্ড। এ অবস্থায় এই অঞ্চলের পানিনিষ্কাশনের একমাত্র মাধ্যম মুক্তেশ্বরী, টেকা, শ্রী ও হরি নদে ব্যাপকহারে জমছে জোয়ারের সঙ্গে আসা পলি। তাঁরা জানান, ইতিমধ্যে পলি জমে নদীর বুক বিল থেকে উঁচু হয়ে গেছে। ফলে নদী দিয়ে পানিনিষ্কাশিত হচ্ছে না এবং সংলগ্ন বিলগুলোতে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। এতে ওই তিন বিলের প্রায় এক হাজার হেক্টর জমির ৭০০-৮০০ হেক্টরে বোরো চাষ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
বিলকপালিয়ায় ৩০ বিঘা জমি আছে উপজেলার কালিশাকুল গ্রামের কৃষক গুরুচাঁদ মণ্ডলের (৮২)। গত বছর তিনি সম্পূর্ণ জমিতে বোরো ধানের চাষ করেছিলেন। এবার তিনি এক ছটাক জমিতেও বোরো ধানের চারা রোপণ করতে পারেননি। তিনি বলেন, ‘গত বছর নদীর অবস্থা একটু ভালো ছিল। জল নেমে গিয়েছিল। এবার পলি পড়ে নদী ভরাট হয়ে যাওয়ায় জল সরছে না। এ জন্য এবার কোনো জমিতে বোরো ধান চাষ করতে পারছি না।’ একই গ্রামের গোপাল চন্দ্র মণ্ডল (৪৫) বলেন, ‘গত বছর ছয় বিঘা জমিতে বোরো চাষ করে ১৮০ মণ ধান পেয়েছিলাম। নদী দিয়ে না সরায় ওই জমিতে এখন কোমর সমান জল। ধানের চারা রোপণের সময় প্রায় শেষ। জমিতে এবার ধান হওয়ার কোনোই সম্ভাবনা নেই। কষ্টে বিলে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছি।’
উপজেলার দত্তগাতী গ্রামের কৃষক আবদুল আজিজ (৫৪) বলেন, ‘নদী পলিতে ভরাট হয়ে যাওয়ায় বিলে পানি ঢুকে আর বের হচ্ছে না। উত্তর বিলের ওপরের অংশে আমার তিন বিঘা জমি আছে। জমিতে দেড় হাত সমান পানি ছিল। পানি সেচে আমি এবার বোরো ধানের চাষ করছি।’ আড়পাড়া গ্রামের কৃষক সাদেক আলী সরদার (৪৫) বলেন, ‘বিলকেদারিয়ায় আমার ২২ কাঠা জমি আছে। গতবার পানি নেমে যাওয়ায় বোরো ধান চাষ করেছিলাম। এ বছর মৌসুম শেষ হওয়ার পথে। কিন্তু মোটেও পানি নামছে না। কীভাবে ধান চাষ করব বুঝতে পারছি না।’
কৃষি কার্যালয়ের কর্মকর্তা সূত্র জানায়, উপজেলায় এবার ১৪ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে আট হাজার হেক্টর জমিতে উচ্চফলনশীল (উফশী) এবং ৬ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে হাইব্রিড জাতের ধান চাষ হবে। এ পর্যন্ত ১৩ হাজার ৫৫০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চাষ হয়েছে। এর ৭ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে উফশী এবং ৬ হাজার ৫০ হেক্টর জমিতে হাইব্রিড জাতের ধান লাগানো হয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দীপক কুমার রায় বলেন, ‘আশা করছি, বিলগুলোর সব জমিতে বোরো ধানের চাষ হবে। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে জমি থেকে পানি সেচে ধান রোপণ করা সম্ভব হবে।’ তিনি বলেন, ‘পলি জমে নদী উঁচু হয়ে পড়েছে। বিল রয়েছে নিচু। এ জন্য জল বের হতে পারছে না। আমরা কৃষকদের বোরো আবাদের জন্য নানাভাবে উদ্বুদ্ধ করছি। অনেক কৃষক সেচযন্ত্র দিয়ে পানি সেচে বোরোর আবাদ করছেন। এবার ধানের দামও ভালো। কৃষক এবার চাষেই থাকবেন।’
No comments