এক খামারেই দুধ বায়োগ্যাস, জৈব সার by প্রণব বল ও আবদুর রাজ্জাক
(ছবি:-১ পটিয়ার উত্তর চরলক্ষ্যা এলাকার একটি খামারে গরু পরিচর্যা করছেন কর্মীরা l ছবি: সৌরভ দাশ ছবি:-২ পটিয়ার পাঁচ শতাধিক দুধের খামারের মধ্যে অন্তত ৩৫০টিতে বায়োগ্যাস প্রকল্প করা হয়েছে। সেই গ্যাসে রান্না চলছে চরলক্ষ্যা এলাকার একটি বাড়িতে l ছবি: প্রথম আলো) শুরুটা
হয়েছিল চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার চরফরিদ গ্রামের আবু তাহেরের হাত ধরে।
অস্ট্রেলিয়ান (জার্সি) জাতের দুটি গাভি দিয়ে দুধের খামার শুরু করেছিলেন
তিনি। সেই খামার ধীরে ধীরে বড় হয়েছে, গাভি বেড়েছে, বেড়েছে দুধের
উৎপাদনও। তা দেখে আশপাশের অনেকেই দুধের খামার শুরু করলেন। এখন খামার থেকে
দুধ পাওয়ার পাশাপাশি বায়োগ্যাস প্রকল্প করে গ্যাস ও জৈব সার উৎপাদন করা
হচ্ছে। অর্থাৎ একটি খামার মানে একের ভেতরে তিন!
পটিয়ায় এখন পাঁচ শতাধিক দুধের খামারের মধ্যে অন্তত সাড়ে তিন শ খামারে বায়োগ্যাস প্রকল্প আছে। এসব খামার অনেক গ্রামের জীবনচিত্র পাল্টে দিয়েছে। শিক্ষিত যুবকেরাও এখন এমন খামার করতে এগিয়ে আসছেন। ফলে দিনে দিনে বাড়ছে খামারের সংখ্যা। কিছু সমস্যা থাকলেও খামার করে স্বাবলম্বী হওয়ার গল্প এখন পটিয়ার ঘরে ঘরে।
খামারের শুরু: ১৯৯১ সালের দিকে দুধের খামারের যাত্রা শুরু হয় পশ্চিম পটিয়া থেকে। যাঁর হাত ধরে শুরু, চরলক্ষ্যা ইউনিয়নের চরফরিদ গ্রামের সেই আবু তাহের জানালেন, তাঁর বাবা ছিলেন আদর্শ কৃষক। জমি চাষ ও দুধের জন্য তিনি ১৯৬৫-৬৬ সালের দিকেই ২০ থেকে ৩০টি দেশি গরু পালতেন। এইচএসসি পাস করে ১৯৭৭-৭৮ সালের দিকে আবু তাহের নিজেও কৃষিকাজ শুরু করেন। তাহের বলেন, ‘১৯৭৮ সালে নিজেদের গরুর চিকিৎসার জন্য একদিন চট্টগ্রাম পশুসম্পদ অফিসে গিয়েছিলাম। সেখানে ডাক্তার ঘোষ নামের একজন চিকিৎসকের সঙ্গে আলাপ হয়। তিনিই বিদেশি গাভি দিয়ে দুধের খামার করতে উৎসাহ দিলেন। তাঁর অনুপ্রেরণাতেই চট্টগ্রাম শেরশাহ কলোনির একটি খামার থেকে দুটি অস্ট্রেলিয়ান (জার্সি) জাতের গাভি কিনে খামার শুরু করি। সঙ্গে বাবার এতগুলো গরু পালনের অনুপ্রেরণা তো ছিলই।’ বললেন, ‘খামার করে আমি সফল হয়েছি। দুই ছেলে ও এক মেয়েকে পড়ালেখা করাচ্ছি।’
তাহেরের এই সাফল্য দেখেই মূলত দুধের খামার করার দিকে ঝুঁকে পড়েন অনেকে। পশ্চিম পটিয়ার চরলক্ষ্যা, চর পাথরঘাটা, বড় উঠান, শিকলবাহা এলাকায় খামারের সংখ্যা তুলনামূলক বেশি।
এল বায়োগ্যাস প্ল্যান্ট: অনেকের মতোই লাভের কথা ভেবে দুধের খামার করেন জুলধা গ্রামের হাজি মো. ইব্রাহিম। বায়োগ্যাস প্রকল্প এল তাঁর হাত ধরেই। সেই গল্প শোনালেন তিনি, ‘২০০৫ সালের দিকে টেলিভিশনের একটি প্রতিবেদনে গরুর গোবর ও নানা ধরনের বর্জ্য দিয়ে বায়োগ্যাস প্রকল্প তৈরি করা দেখেছিলাম। সেটা দেখেই আমারও এমন প্রকল্প করার কথা মাথায় আসে। তখন খামারের পাশাপাশি প্রায় আড়াই লাখ টাকা খরচ করে বায়োগ্যাস প্রকল্প করি।’ হাজি ইব্রাহিম জানালেন, প্রথমে নিজের রান্নার কাজে এই গ্যাস ব্যবহার করতেন। পরে আশপাশের ২০টি পরিবারে গ্যাসের সংযোগ দেন। তা থেকে প্রতি মাসে ২০ হাজার টাকা আয় হয় তাঁর। এ ছাড়া প্রকল্পে ব্যবহার করা গোবর থেকে যে জৈব সার হয়, তা বিক্রি করে মাসে ১০ হাজার টাকার বেশি আয় হয়।
সফলদের কয়েকজন: চরলক্ষ্যা এলাকার যুবক মো. বেলাল এইচএসসি পাস করে ২০০৭ সালে লেগে যান খামার ব্যবসায়। চারটি গাভি কিনে শুরু করেছিলেন। এখন সব মিলিয়ে তাঁর গরুর সংখ্যা এক শর কাছাকাছি। প্রতিদিন প্রায় ৫০০ লিটার দুধ হয় বেলাল ডেইরি ফার্ম নামের খামারে। প্রতিদিন দুই বেলা দুধ সংগ্রহ করে নিয়ে যান গোয়ালারা।
দেড় বছর আগে খামারের গোবর ব্যবহার করে বেলাল গড়ে তোলেন বায়োগ্যাস প্রকল্প। সম্প্রতি একদিন বেলালের বাড়ি গিয়ে দেখা গেল, সেই বায়োগ্যাসে বেলালের ঘরে জ্বলছে বাতি, চলছে চুলা। গ্যাস উৎপাদন শেষে ওই প্রকল্পের গোবর জৈব সার হিসেবে বিক্রি করেন তিনি।
আরেকজন সফল খামারি নাজিম উদ্দিন হায়দার। জানালেন, ‘২০০৫ সালে ৪৫ হাজার টাকায় অস্ট্রেলিয়ান জাতের একটি গাভি কিনেছিলাম। সেই গাভি থেকে তখন ১৫ লিটার দুধ পেতাম। পর্যায়ক্রমে গাভির সংখ্যা বেড়ে ৫০টি পর্যন্ত হয়। ২০১১ সালে ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে খামার করেছি। এখন শতাধিক অস্ট্রেলিয়ান গাভি আছে। প্রতিদিন প্রায় ৪০০ লিটার দুধ পাই।’ সবচেয়ে বড় বায়োগ্যাস প্রকল্পটি করছেন নাজিম উদ্দিনই। ওই প্রকল্প থেকে ১০০ পরিবার জ্বালানি গ্যাস পাবে।
শিক্ষিত তরুণেরাও এগিয়ে এসেছেন এ রকম খামার গড়তে। আট বছর আগে শিকলবাহার মো. ফোরকান কয়েকটি গরু নিয়ে শুরু করেন খামার। খামারের কাজ করতে করতেই স্নাতক পাস করেন। পাস করার পর আরও পুরোদমে ব্যবসায় নেমে পড়েন। তার এখন ১৫টি গাভি রয়েছে। পাশাপাশি একটি ভেটেরিনারি ওষুধের দোকানও গড়ে তুলেছেন তিনি। তবে সবকিছু ছাপিয়ে গেছে তাঁর কৃত্রিম প্রজননকেন্দ্রের আয়। ফোরকান বলেন, ‘আমি খামারের পাশাপাশি প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে কৃত্রিম প্রজননকেন্দ্র গড়ে তুলেছি। এই কেন্দ্রের আয় আমার বড় অবলম্বন।’
কিছু সমস্যা: উৎপাদিত দুধের বেশির ভাগই যায় চট্টগ্রামের বিভিন্ন মিষ্টির দোকানে। এর বাইরে পাঁচ হাজার লিটারের মতো যায় পটিয়ায় মিল্ক ভিটার দুগ্ধ শীতলীকরণ কেন্দ্রে। প্রতি লিটার দুধ ঘনত্বের তারতম্য অনুযায়ী ৪৬ থেকে ৫১ টাকায় বিক্রি হয়। তবে ঘণত্ব কম হলেও ওই দুধ লিটারপ্রতি ৩৫ টাকার বেশি বিক্রি হয়।
গ্রীষ্মকালে সমস্যায় পড়েন খামারিরা। ফলের মৌসুম হওয়ায় ওই সময় মিষ্টির চাহিদা কমে যায়। মিষ্টির দোকানগুলো ওই সময় দুধ কম কেনে। দুধের দাম পড়ে যায়। খামারিদের দাবি, ওই এলাকায় আরও কয়েকটি দুগ্ধ শীতলীকরণ কেন্দ্র করা হলে এ সমস্যার মুখে পড়তে হবে না তাঁদের। আরেকটি সমস্যা হলো, পর্যাপ্ত পশু চিকিৎসক নেই। তাই গরু রোগাক্রান্ত হলে ভোগান্তিতে পড়েন খামারিরা। চিকিৎসাসেবার অভাবে গরু মারাও যায়।
তাঁদের কথা: পটিয়া উপজেলা ভারপ্রাপ্ত প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা রাজীব চক্রবর্ত্তী চিকিৎসক সংকটের কথা স্বীকার করলেন। তিনি বললেন, ‘আমাদের হিসাবে চার শতাধিক খামার আছে। এসব খামারে দৈনিক গড়ে ৬০ হাজার লিটার দুধ হয়। ছোট খামারগুলো হয়তো আমাদের হিসাবে নেই।’ দুগ্ধ শীতলীকরণ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক ফরহাদুল আলম বলেন, ‘আমরা খামারিদের দুধ নেওয়ার পাশাপাশি চিকিৎসাসেবাও দিয়ে আসছি।’
পশ্চিম পটিয়া কর্ণফুলী ডেইরি অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. নাজিম উদ্দিন বলেন, ‘শুরুতে দু-একজন দেশের বাইরের গরু দিয়ে ঘরোয়াভাবে খামার করে। এখন প্রতিদিনই বাড়ছে খামারির সংখ্যা। পাঁচ শর বেশি খামার এখন রয়েছে। আশার কথা, শিক্ষিত যুবকেরা এখন এই খামারের দিকে ঝুঁকছে।’
পটিয়ায় এখন পাঁচ শতাধিক দুধের খামারের মধ্যে অন্তত সাড়ে তিন শ খামারে বায়োগ্যাস প্রকল্প আছে। এসব খামার অনেক গ্রামের জীবনচিত্র পাল্টে দিয়েছে। শিক্ষিত যুবকেরাও এখন এমন খামার করতে এগিয়ে আসছেন। ফলে দিনে দিনে বাড়ছে খামারের সংখ্যা। কিছু সমস্যা থাকলেও খামার করে স্বাবলম্বী হওয়ার গল্প এখন পটিয়ার ঘরে ঘরে।
খামারের শুরু: ১৯৯১ সালের দিকে দুধের খামারের যাত্রা শুরু হয় পশ্চিম পটিয়া থেকে। যাঁর হাত ধরে শুরু, চরলক্ষ্যা ইউনিয়নের চরফরিদ গ্রামের সেই আবু তাহের জানালেন, তাঁর বাবা ছিলেন আদর্শ কৃষক। জমি চাষ ও দুধের জন্য তিনি ১৯৬৫-৬৬ সালের দিকেই ২০ থেকে ৩০টি দেশি গরু পালতেন। এইচএসসি পাস করে ১৯৭৭-৭৮ সালের দিকে আবু তাহের নিজেও কৃষিকাজ শুরু করেন। তাহের বলেন, ‘১৯৭৮ সালে নিজেদের গরুর চিকিৎসার জন্য একদিন চট্টগ্রাম পশুসম্পদ অফিসে গিয়েছিলাম। সেখানে ডাক্তার ঘোষ নামের একজন চিকিৎসকের সঙ্গে আলাপ হয়। তিনিই বিদেশি গাভি দিয়ে দুধের খামার করতে উৎসাহ দিলেন। তাঁর অনুপ্রেরণাতেই চট্টগ্রাম শেরশাহ কলোনির একটি খামার থেকে দুটি অস্ট্রেলিয়ান (জার্সি) জাতের গাভি কিনে খামার শুরু করি। সঙ্গে বাবার এতগুলো গরু পালনের অনুপ্রেরণা তো ছিলই।’ বললেন, ‘খামার করে আমি সফল হয়েছি। দুই ছেলে ও এক মেয়েকে পড়ালেখা করাচ্ছি।’
তাহেরের এই সাফল্য দেখেই মূলত দুধের খামার করার দিকে ঝুঁকে পড়েন অনেকে। পশ্চিম পটিয়ার চরলক্ষ্যা, চর পাথরঘাটা, বড় উঠান, শিকলবাহা এলাকায় খামারের সংখ্যা তুলনামূলক বেশি।
এল বায়োগ্যাস প্ল্যান্ট: অনেকের মতোই লাভের কথা ভেবে দুধের খামার করেন জুলধা গ্রামের হাজি মো. ইব্রাহিম। বায়োগ্যাস প্রকল্প এল তাঁর হাত ধরেই। সেই গল্প শোনালেন তিনি, ‘২০০৫ সালের দিকে টেলিভিশনের একটি প্রতিবেদনে গরুর গোবর ও নানা ধরনের বর্জ্য দিয়ে বায়োগ্যাস প্রকল্প তৈরি করা দেখেছিলাম। সেটা দেখেই আমারও এমন প্রকল্প করার কথা মাথায় আসে। তখন খামারের পাশাপাশি প্রায় আড়াই লাখ টাকা খরচ করে বায়োগ্যাস প্রকল্প করি।’ হাজি ইব্রাহিম জানালেন, প্রথমে নিজের রান্নার কাজে এই গ্যাস ব্যবহার করতেন। পরে আশপাশের ২০টি পরিবারে গ্যাসের সংযোগ দেন। তা থেকে প্রতি মাসে ২০ হাজার টাকা আয় হয় তাঁর। এ ছাড়া প্রকল্পে ব্যবহার করা গোবর থেকে যে জৈব সার হয়, তা বিক্রি করে মাসে ১০ হাজার টাকার বেশি আয় হয়।
সফলদের কয়েকজন: চরলক্ষ্যা এলাকার যুবক মো. বেলাল এইচএসসি পাস করে ২০০৭ সালে লেগে যান খামার ব্যবসায়। চারটি গাভি কিনে শুরু করেছিলেন। এখন সব মিলিয়ে তাঁর গরুর সংখ্যা এক শর কাছাকাছি। প্রতিদিন প্রায় ৫০০ লিটার দুধ হয় বেলাল ডেইরি ফার্ম নামের খামারে। প্রতিদিন দুই বেলা দুধ সংগ্রহ করে নিয়ে যান গোয়ালারা।
দেড় বছর আগে খামারের গোবর ব্যবহার করে বেলাল গড়ে তোলেন বায়োগ্যাস প্রকল্প। সম্প্রতি একদিন বেলালের বাড়ি গিয়ে দেখা গেল, সেই বায়োগ্যাসে বেলালের ঘরে জ্বলছে বাতি, চলছে চুলা। গ্যাস উৎপাদন শেষে ওই প্রকল্পের গোবর জৈব সার হিসেবে বিক্রি করেন তিনি।
আরেকজন সফল খামারি নাজিম উদ্দিন হায়দার। জানালেন, ‘২০০৫ সালে ৪৫ হাজার টাকায় অস্ট্রেলিয়ান জাতের একটি গাভি কিনেছিলাম। সেই গাভি থেকে তখন ১৫ লিটার দুধ পেতাম। পর্যায়ক্রমে গাভির সংখ্যা বেড়ে ৫০টি পর্যন্ত হয়। ২০১১ সালে ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে খামার করেছি। এখন শতাধিক অস্ট্রেলিয়ান গাভি আছে। প্রতিদিন প্রায় ৪০০ লিটার দুধ পাই।’ সবচেয়ে বড় বায়োগ্যাস প্রকল্পটি করছেন নাজিম উদ্দিনই। ওই প্রকল্প থেকে ১০০ পরিবার জ্বালানি গ্যাস পাবে।
শিক্ষিত তরুণেরাও এগিয়ে এসেছেন এ রকম খামার গড়তে। আট বছর আগে শিকলবাহার মো. ফোরকান কয়েকটি গরু নিয়ে শুরু করেন খামার। খামারের কাজ করতে করতেই স্নাতক পাস করেন। পাস করার পর আরও পুরোদমে ব্যবসায় নেমে পড়েন। তার এখন ১৫টি গাভি রয়েছে। পাশাপাশি একটি ভেটেরিনারি ওষুধের দোকানও গড়ে তুলেছেন তিনি। তবে সবকিছু ছাপিয়ে গেছে তাঁর কৃত্রিম প্রজননকেন্দ্রের আয়। ফোরকান বলেন, ‘আমি খামারের পাশাপাশি প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে কৃত্রিম প্রজননকেন্দ্র গড়ে তুলেছি। এই কেন্দ্রের আয় আমার বড় অবলম্বন।’
কিছু সমস্যা: উৎপাদিত দুধের বেশির ভাগই যায় চট্টগ্রামের বিভিন্ন মিষ্টির দোকানে। এর বাইরে পাঁচ হাজার লিটারের মতো যায় পটিয়ায় মিল্ক ভিটার দুগ্ধ শীতলীকরণ কেন্দ্রে। প্রতি লিটার দুধ ঘনত্বের তারতম্য অনুযায়ী ৪৬ থেকে ৫১ টাকায় বিক্রি হয়। তবে ঘণত্ব কম হলেও ওই দুধ লিটারপ্রতি ৩৫ টাকার বেশি বিক্রি হয়।
গ্রীষ্মকালে সমস্যায় পড়েন খামারিরা। ফলের মৌসুম হওয়ায় ওই সময় মিষ্টির চাহিদা কমে যায়। মিষ্টির দোকানগুলো ওই সময় দুধ কম কেনে। দুধের দাম পড়ে যায়। খামারিদের দাবি, ওই এলাকায় আরও কয়েকটি দুগ্ধ শীতলীকরণ কেন্দ্র করা হলে এ সমস্যার মুখে পড়তে হবে না তাঁদের। আরেকটি সমস্যা হলো, পর্যাপ্ত পশু চিকিৎসক নেই। তাই গরু রোগাক্রান্ত হলে ভোগান্তিতে পড়েন খামারিরা। চিকিৎসাসেবার অভাবে গরু মারাও যায়।
তাঁদের কথা: পটিয়া উপজেলা ভারপ্রাপ্ত প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা রাজীব চক্রবর্ত্তী চিকিৎসক সংকটের কথা স্বীকার করলেন। তিনি বললেন, ‘আমাদের হিসাবে চার শতাধিক খামার আছে। এসব খামারে দৈনিক গড়ে ৬০ হাজার লিটার দুধ হয়। ছোট খামারগুলো হয়তো আমাদের হিসাবে নেই।’ দুগ্ধ শীতলীকরণ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক ফরহাদুল আলম বলেন, ‘আমরা খামারিদের দুধ নেওয়ার পাশাপাশি চিকিৎসাসেবাও দিয়ে আসছি।’
পশ্চিম পটিয়া কর্ণফুলী ডেইরি অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. নাজিম উদ্দিন বলেন, ‘শুরুতে দু-একজন দেশের বাইরের গরু দিয়ে ঘরোয়াভাবে খামার করে। এখন প্রতিদিনই বাড়ছে খামারির সংখ্যা। পাঁচ শর বেশি খামার এখন রয়েছে। আশার কথা, শিক্ষিত যুবকেরা এখন এই খামারের দিকে ঝুঁকছে।’
No comments