আত্মঘাতী কাজ আর নয় by শেখ এইচ এম মোস্তাফিজ
ছোটবেলায় দেখেছি, রাজনৈতিক সব আন্দোলন ছিল সাধারণ মানুষের প্রাণের দাবি। সেই দাবি ক্রমেই ফুঁসে উঠত এবং সাধারণ নাগরিক রাস্তায় নেমে দাবির সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে তদানীন্তন সরকারগুলোকে দাবি আদায়ে বাধ্য করত। এই শতাব্দীতে এ 'আন্দোলন' নামক অস্ত্রটি কেন জানি ভোঁতা হয়ে গেছে, ভোঁতা হয়ে গেছে আমাদের অনুভূতি; আমাদের এখন হরতাল, অবরোধ, ককটেল, রাবার বুলেট ইত্যাদি আর ভয় লাগে না। তাই আন্দোলনে নতুন সংস্করণ গণপরিবহনে পেট্রোল বোমা আমাদের ভীত-সন্ত্রস্ত করতে পেরেছে। রাজনৈতিক আন্দোলনের এই নতুন সংস্করণ বা উদ্ভাবনকে আমরা হয়তো শেষ অস্ত্র বলতে পারি। কেননা এর পরের ধাপ হচ্ছে গৃহযুদ্ধ বা গেরিলা আক্রমণ।
কিন্তু এর মধ্যে আমাদের অর্থনৈতিক প্রধান চালিকাশক্তির সব নিয়ামক দুর্বল থেকে দুর্বলতর হচ্ছে। রফতানি আয়ের প্রধান পণ্য পোশাকশিল্প নেতিবাচক বৃদ্ধির দিকে এগোচ্ছে এবং সব শিল্প মুমূর্ষু হয়ে পড়ছে। অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে জিডিপির বার্ষিক লক্ষ্য পূরণের স্বপ্ন। ভীত-সন্ত্রস্ত খেটে খাওয়া মানুষগুলো হাত-পা বাঁধা অবস্থায় মুখ থুবড়ে পড়ছে। আমাদের রাজনীতির প্রধান উদ্দেশ্যই কি ক্ষমতায় যাওয়া? আমরা কি রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে জ্বালাও-পোড়াও নীতি থেকে কি বের হয়ে আসতে পারব না? জনগণকে কষ্ট না দিয়ে সত্যিই কি আমরা কোনো বিকল্প পন্থায় রাজনৈতিক আন্দোলন করতে পারছি না? এ প্রশ্নগুলোর উত্তর যদি 'না' হয়, তাহলে আমরা বলতে পারি, রাজনীতি করার অধিকার আমরা হারিয়ে ফেলছি। আমরা ক্রমেই জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছি।
রানা প্লাজার দুর্ঘটনার পর পোশাকশিল্প এমনিতেই বিরাট চাপের মুখে রয়েছে। প্রতিদিনকার নানা রকম চ্যালেঞ্জ নিয়ে আমাদের এই শিল্প এগিয়ে চলছে। তার ওপর যদি আমরা নেতিবাচক রাজনীতি চর্চা করতে থাকি, তাহলে শিল্পের সব পক্ষই ফুঁসে উঠবে যে কোনো সময় এবং সেটাকে সামাল দেওয়ার মতো রাজনীতির কোনো পক্ষই সামর্থ্য রাখে না বলে আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি। আন্তর্জাতিক ক্রেতারা ইতিমধ্যেই বিকল্প উৎস খুঁজতে শুরু করেছে এবং এই শিল্পের প্রতিযোগী দেশ তথা ভিয়েতনাম, ইন্দোনেশিয়া, ভারত ইত্যাদি দেশগুলোতে অস্বাভাবিক রফতানি আয়ের প্রবৃদ্ধি পরিলক্ষিত হচ্ছে। উলেল্গখ্য, ২০২১ সালের মধ্যে পোশাকশিল্পের ৫০ বিলিয়ন ডলার রফতানির স্বপ্ন দিন দিন বন্ধুর হয়ে যাচ্ছে। ক্রিকেট খেলাতে যেমন ওভার কমে গেলে রানরেট বেড়ে যায়, আমরাও অনুরূপ ভুল বোলিং করে রানরেট বাড়িয়ে ফেলছি। রাজনীতির এই দৈন্যদশা চলতে থাকলে আমরা ৫০ বিলিয়ন তো দূরের কথা, আমাদের বর্তমান অর্জন থেকে ক্রমাগত ঋণাত্মক বৃদ্ধির দিকে চলতে থাকব, যা কোনোক্রমে এ দেশের অর্থনীতির জন্য স্বাস্থ্যকর হবে না।
মূলত ভয়ের জায়গাটা হলো, জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি হচ্ছে আন্তর্জাতিক ক্রয়াদেশ পাওয়ার সুবর্ণ সময়। এ সময় এ রকম অনিশ্চয়তা চলতে থাকলে ক্রেতারা বিকল্প পথে অর্ডার দিয়ে দেবে। একেবারে হয়তো অর্ডারবিমুখ করবে না, কিন্তু এই ঋণাত্মক প্রবণতা আমাদের সারা বছর ভোগাবে। মূল শিল্পের পাশাপাশি পশ্চাৎপদ অন্য শিল্পগুলো দারুণ অসুবিধার মধ্যে পড়বে। রাজনীতিবিদদের কাছে হয়তো এই আন্দোলন ক্ষণিকের মনে হতে পারে; কিন্তু এর ব্যাপকতা ও প্রভাব সম্পর্কে আমাদের শিখিয়ে দেওয়ার কিছুই নেই। রাজনীতিবিদদের অনেকেই ব্যবসা-বাণিজ্য করেন। তারা খুব ভালোভাবেই জানেন যে এটা কতখানি আত্মঘাতী আন্দোলন।
পোশাকশিল্প উদ্যোক্তা
কিন্তু এর মধ্যে আমাদের অর্থনৈতিক প্রধান চালিকাশক্তির সব নিয়ামক দুর্বল থেকে দুর্বলতর হচ্ছে। রফতানি আয়ের প্রধান পণ্য পোশাকশিল্প নেতিবাচক বৃদ্ধির দিকে এগোচ্ছে এবং সব শিল্প মুমূর্ষু হয়ে পড়ছে। অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে জিডিপির বার্ষিক লক্ষ্য পূরণের স্বপ্ন। ভীত-সন্ত্রস্ত খেটে খাওয়া মানুষগুলো হাত-পা বাঁধা অবস্থায় মুখ থুবড়ে পড়ছে। আমাদের রাজনীতির প্রধান উদ্দেশ্যই কি ক্ষমতায় যাওয়া? আমরা কি রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে জ্বালাও-পোড়াও নীতি থেকে কি বের হয়ে আসতে পারব না? জনগণকে কষ্ট না দিয়ে সত্যিই কি আমরা কোনো বিকল্প পন্থায় রাজনৈতিক আন্দোলন করতে পারছি না? এ প্রশ্নগুলোর উত্তর যদি 'না' হয়, তাহলে আমরা বলতে পারি, রাজনীতি করার অধিকার আমরা হারিয়ে ফেলছি। আমরা ক্রমেই জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছি।
রানা প্লাজার দুর্ঘটনার পর পোশাকশিল্প এমনিতেই বিরাট চাপের মুখে রয়েছে। প্রতিদিনকার নানা রকম চ্যালেঞ্জ নিয়ে আমাদের এই শিল্প এগিয়ে চলছে। তার ওপর যদি আমরা নেতিবাচক রাজনীতি চর্চা করতে থাকি, তাহলে শিল্পের সব পক্ষই ফুঁসে উঠবে যে কোনো সময় এবং সেটাকে সামাল দেওয়ার মতো রাজনীতির কোনো পক্ষই সামর্থ্য রাখে না বলে আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি। আন্তর্জাতিক ক্রেতারা ইতিমধ্যেই বিকল্প উৎস খুঁজতে শুরু করেছে এবং এই শিল্পের প্রতিযোগী দেশ তথা ভিয়েতনাম, ইন্দোনেশিয়া, ভারত ইত্যাদি দেশগুলোতে অস্বাভাবিক রফতানি আয়ের প্রবৃদ্ধি পরিলক্ষিত হচ্ছে। উলেল্গখ্য, ২০২১ সালের মধ্যে পোশাকশিল্পের ৫০ বিলিয়ন ডলার রফতানির স্বপ্ন দিন দিন বন্ধুর হয়ে যাচ্ছে। ক্রিকেট খেলাতে যেমন ওভার কমে গেলে রানরেট বেড়ে যায়, আমরাও অনুরূপ ভুল বোলিং করে রানরেট বাড়িয়ে ফেলছি। রাজনীতির এই দৈন্যদশা চলতে থাকলে আমরা ৫০ বিলিয়ন তো দূরের কথা, আমাদের বর্তমান অর্জন থেকে ক্রমাগত ঋণাত্মক বৃদ্ধির দিকে চলতে থাকব, যা কোনোক্রমে এ দেশের অর্থনীতির জন্য স্বাস্থ্যকর হবে না।
মূলত ভয়ের জায়গাটা হলো, জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি হচ্ছে আন্তর্জাতিক ক্রয়াদেশ পাওয়ার সুবর্ণ সময়। এ সময় এ রকম অনিশ্চয়তা চলতে থাকলে ক্রেতারা বিকল্প পথে অর্ডার দিয়ে দেবে। একেবারে হয়তো অর্ডারবিমুখ করবে না, কিন্তু এই ঋণাত্মক প্রবণতা আমাদের সারা বছর ভোগাবে। মূল শিল্পের পাশাপাশি পশ্চাৎপদ অন্য শিল্পগুলো দারুণ অসুবিধার মধ্যে পড়বে। রাজনীতিবিদদের কাছে হয়তো এই আন্দোলন ক্ষণিকের মনে হতে পারে; কিন্তু এর ব্যাপকতা ও প্রভাব সম্পর্কে আমাদের শিখিয়ে দেওয়ার কিছুই নেই। রাজনীতিবিদদের অনেকেই ব্যবসা-বাণিজ্য করেন। তারা খুব ভালোভাবেই জানেন যে এটা কতখানি আত্মঘাতী আন্দোলন।
পোশাকশিল্প উদ্যোক্তা
No comments