সামরিক আদালত গঠন অসাংবিধানিক হবে
পাকিস্তানে জঙ্গিদের সামরিক আদালতে বিচারের সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছেন সাবেক আলোচিত প্রধান বিচারপতি ইফতেখার মোহাম্মদ চৌধুরী। তিনি ওই আদালত গঠন ‘অসাংবিধানিক’ হবে বলে অভিমত দিয়েছেন। খবর এএফপি ও ডনের। সন্ত্রাসবাদে যুক্তদের সামরিক আদালতে বিচারের অতিসাম্প্রতিক সিদ্ধান্তটি মানবাধিকারকর্মীদের প্রশ্নের মুখে পড়েছে। পেশোয়ারের স্কুলে তালেবানের রক্তক্ষয়ী হামলার পর সর্বদলীয় রাজনৈতিক ও সামরিক নেতৃত্বের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়। বিচারপতি ইফতেখার গতকাল মঙ্গলবার ইসলামাবাদে গণমাধ্যমের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে বলেন, সামরিক আদালত অবৈধ এবং অসাংবিধানিক। পাকিস্তানের সংবিধানের মৌলিক কাঠামো একটি স্বাধীন বিচার বিভাগের নিশ্চয়তা দিয়েছে। স্বাধীন বিচার বিভাগ থাকাকালে সামরিক আদালত প্রতিষ্ঠিত হতে পারে না। সাবেক এই প্রধান বিচারপতি বলেন, সংবিধানের মৌলিক ভিত্তিকে চ্যালেঞ্জ করে এমন কোনো সংশোধনী আনা এবং আইন তৈরি করা যাবে না। ১৯৯৯ সালে পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট সামরিক আদালত স্থাপনকে অবৈধ ও অসাংবিধানিক বলে ঘোষণা করেছিল।
তবে দেশটির রাজনৈতিক নেতৃত্ব প্রস্তাবিত বিশেষ আদালতকে সাংবিধানিক বৈধতা দেওয়ার জন্য সংবিধান সংশোধনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পাকিস্তানের পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ সিনেটের কয়েকজন সদস্যও সামরিক আদালত স্থাপনের বিরুদ্ধে উচ্চকণ্ঠ হয়েছেন। পাকিস্তান পিপলস পার্টির নেতা মিয়া রাজা রব্বানি গতকাল সিনেটে দেওয়া বক্তৃতায় অতীতের উদাহরণ টেনে বলেন, ‘১৯৭৭ এবং ১৯৯৮ সালে এ ধরনের আদালত গঠন হলেও তা অবৈধ ঘোষিত হয়েছিল। সামরিক আদালত স্থাপন করলেই সন্ত্রাসবাদ নির্মূল হবে না—এ মন্তব্য করে সিনেটর বলেন, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ধর্মকে ব্যবহার করার ফলেই সন্ত্রাসীদের উত্থান হয়েছে। তবে সামরিক আদালত নিয়ে এসব বিরোধিতার মুখে গতকাল প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ বলেছেন, বিশেষ আদালত জাতীয় কর্মপরিকল্পনার অংশ। বিশেষ সমস্যার জন্যই বিশেষ সমাধান হিসেবে এটি গঠন করা হবে। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জাতীয় কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নের অগ্রগতি মূল্যায়ন করতে একটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন।
No comments