কাশ্মীর জট কাটছে না
জম্মু-কাশ্মীরের জট কীভাবে কাটবে, বছরের শেষ দিনেও তা হেঁয়ালি থেকে গেল। আজ নতুন বছরের প্রথম দিনেও যে তা কাটবে, তেমন কোনো ইঙ্গিত নেই। ১৯ জানুয়ারির মধ্যে রাজ্যে নতুন সরকার গঠিত হতে হবে। না হলে রাজ্যপালের শাসন (দেশের বাকি অঞ্চলে যা কিনা রাষ্ট্রপতির শাসন বলে পরিচিত) জারি হবে। পিডিপির প্রধান মেহবুবা মুফতি গতকাল বুধবার সকালে জম্মুতে (শীতকালীন রাজধানী) রাজ্যপাল এন এন ভোরার সঙ্গে দেখা করেন। এক ঘণ্টা পর সেখান থেকে বেরিয়ে যেসব কথা বলেন, তাতে হেঁয়ালি কাটার কোনো ইঙ্গিত নেই। বরং সেসব কথার অনেক রকম ব্যাখ্যা হচ্ছে। যেমন, মেহবুবা বলেছেন, পিডিপির প্রধান লক্ষ্য যেনতেন প্রকারে গরিষ্ঠতা জোটানো নয়। প্রধান লক্ষ্য এমন একটা সরকার গড়া, যা রাজ্যের সব অঞ্চলের মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটাতে পারবে। এ মন্তব্যের ব্যাখ্যায় মনে হতে পারে, মেহবুবা মুফতির গলায় যেন বিজেপির সুর। কেননা, বিজেপিই বলে আসছে, তাদের বাদ দিয়ে সরকার গড়া হলে জম্মু উপেক্ষিত হবে। কারণ, বিজেপির ২৫টি আসনই জম্মুতে জেতা। এরই পাশাপাশি মেহবুবা বলেছেন, তাঁদের কাছে ৫৫ বিধায়কের সমর্থন রয়েছে। কিন্তু তাঁরা চান একটা স্থায়ী সরকার গড়ে মানুষের সমস্যার সমাধান করতে। প্রশ্ন উঠছে, মেহবুবা ৫৫ সংখ্যাটির উল্লেখ কেন করলেন? তার মানে কি তাঁরা ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ সরকার গড়ার পথেই চলেছেন, যে সরকারে কংগ্রেস ও ন্যাশনাল কনফারেন্সও (এনসি) থাকবে।
কারণ, পিডিপির ২৮, কংগ্রেসের ১২ ও এনসির ১৫ আসনের যোগফল ৫৫! বিজেপির সঙ্গে হাত মেলালে সংখ্যাটা হয় ৫৩। অবশ্য তার সঙ্গে সাজ্জাদ লোনের পিপলস কনফারেন্সের দুজনকে ধরলে সংখ্যাটা আবার ৫৫ হয়ে যায়। বিজেপি অবশ্যই আশা ছাড়ছে না। তারা পিডিপির ওপর চাপ অব্যাহত রেখেছে। তারা এটা বেশ ভালোই বোঝাতে পেরেছে, তাদের সরকারে না নিলে পিডিপির পক্ষে ছয় বছর শাসন করা কঠিন হবে। পিডিপিও তা জানে। বিজেপি প্রশ্নে পিডিপিতে যেমন উথালপাতাল চলছে, সরকারের শরিক হওয়ার তাগিদে বিজেপির মধ্যেও তেমন বাড়ছে অসহিষ্ণুতা। জম্মুর বিধায়কেরা চাপ দিচ্ছেন, বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতারা যেন মুখ্যমন্ত্রিত্বের প্রশ্নে পিডিপির ওপর অহেতুক চাপ সৃষ্টি না করেন। সে ক্ষেত্রে তাঁদের বাইরে রেখে সরকার গঠনের উদ্যোগ গতি পাবে। গতকালের খবর, বিজেপি মুখ্যমন্ত্রী ভাগাভাগির দাবি থেকে সরে এসে ছয় বছরই মুফতি মহম্মদ সাঈদকে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে মেনে নিতে রাজি। কিন্তু বিজেপির সাহচার্য নিয়ে পিডিপি এখনো দ্বিধাবিভক্ত। বিজেপির সঙ্গ না নিতে শ্রীনগরে মিছিলও বেরোচ্ছে। কংগ্রেসের নেতা সইফুদ্দিন সোজও গতকাল রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করেন।
No comments