আরেকজন আফ্রিদি কি আসবে?
(পাকিস্তান ভক্ত-সমর্থকের কাছে আফ্রিদির অবস্থান সবার ওপরে! ফাইল ছবি) তিনি
‘কাঁচা প্রতিভা’! পরিপক্বতার বড্ড অভাব। নিজের উইকেট প্রতিপক্ষের হাতে
বিলিয়ে দিয়ে আসা নিয়মিত ঘটনা। ক্রিকেটের ব্যাকরণের ধার ধারেন না! বল
উড়িয়ে সীমানা পার করতেই যত আগ্রহ! শহীদ আফ্রিদিকে নিয়ে সমালোচকেরা এমন
অনেক কথাই বলবেন। সমালোচকদের খাতায় তিনি খারাপ নাম্বার পেতে পারেন, তবে
দর্শক-সমর্থকের খাতায় কিন্তু ‘এ-প্লাস’! ‘আপনি কার খেলা দেখতে মাঠে
যান?’ কিংবা ‘আপনার জীবনে কার খেলা সবচেয়ে বেশি আনন্দ
দিয়েছে’—পাকিস্তানের দর্শক-সমর্থকের ওপর যদি এমন জরিপ করা হয়, সবাইকে
টপকে শীর্ষে থাকবেন আফ্রিদিই। ক্রিকেটীয় প্রতিভা, কীর্তি অর্জনে ঢের
এগিয়ে থাকবেন ইমরান খান, ওয়াসিম আকরাম, ওয়াকার ইউনিসের মতো কিংবদন্তিরা।
কিন্তু দর্শকপ্রিয়তায় আফ্রিদির ধারেকাছেও যে তাঁরা নেই! পাকিস্তানের
রাস্তা-ঘাট, বিলবোর্ড, টিভি বিজ্ঞাপন—সব জায়গায়ই আফ্রিদির একচেটিয়া
দাপট। শ্যাম্পু, ব্যাংকিং থেকে শুরু করে ত্বক ফর্সাকারী ক্রিম এমনকি
বাচ্চাদের চুইংগামের বিজ্ঞাপনে আফ্রিদির জয়জয়াকর। করাচির এক শীর্ষ
বিজ্ঞাপনী সংস্থার কর্মী কামিল আহমেদ বললেন, ‘আফ্রিদি হয়তো সব সময় তারকা
পারফর্মার নন, তবুও সে তারকা।’ আফ্রিদির ফ্যাশন অনুসরণ করে পাকিস্তানের
অগুনতি তরুণ। পাড়া-মহল্লায় লাখ লাখ শিশু-কিশোর অনুকরণ করে আফ্রিদির
ব্যাটিং স্টাইল, তাদের লক্ষ্য থাকে দৃষ্টিসীমার বাইরে বল পাঠিয়ে দেওয়া!
আফ্রিদিকে নিয়ে পাকিস্তানে নির্মিত হয় চলচ্চিত্র। গ্যালারিতে মেয়েরা
প্ল্যাকার্ডে লিখে নিয়ে আসে, ‘আফ্রিদি, প্লিজ ম্যারি মি!’ ২০০৪ সালে
বিয়ের পোশাকে মাঠে হাজির দুই মেয়ে। যতক্ষণ আফ্রিদির সঙ্গে দেখা হয়নি,
ততক্ষণ তারা মাঠ ছাড়েনি! অনেক বলে-কয়ে আফ্রিদি তাদের ফিরিয়েছিলেন।
আফ্রিদির আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয়েছিল লেগ স্পিনার হিসেবে। ওয়ানডে ক্যারিয়ারে বোলিং পরিসংখ্যানটাও বেশ সমৃদ্ধ। ৩৮৯ ম্যাচে নিয়েছেন ৩৯১ উইকেট। অথচ অধিকাংশ দর্শক মাঠে যান আফ্রিদির বোলিং নয়, তাঁর ধুমধাড়াক্কা ব্যাটিং দেখতেই। ১৯৯৬ সালে কেনিয়ায় ত্রিদেশীয় সিরিজে চোট পাওয়া মুশতাক আহমেদের বদলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে থাকা অনূর্ধ্ব-১৯ দল থেকে উড়িয়ে আনা হয়েছিল আফ্রিদিকে। ১৬ বছর বয়সী লেগ স্পিনার ক্রিকেট-বিশ্বকে চমকে দেন সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতেই। নেটে আফ্রিদির ব্যাটিং দেখে অধিনায়ক সাঈদ আনোয়ার শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তাঁকে নামিয়ে দিয়েছিলেন ওয়ানডাউনে। প্রথমবার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ব্যাট করতে নেমেই ৩৭ বলে সেঞ্চুরির অবিশ্বাস্য কীর্তি!
এর পর থেকেই আফ্রিদির বোলিংয়ের চেয়ে ব্যাটিং দেখাটাই উপভোগ্য হয়ে ওঠে দর্শকের কাছে। দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ডের কিছুদিন পর একটা মজার ঘটনা ঘটেছিল। ১৯৯৬ সালের নভেম্বরে পেশোয়ারে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় ওয়ানডেতে এভার্টন মাতাম্বানাডজো নামের এক অখ্যাত পেসারের বলে ডাক মেরে ফিরেছিলেন। গ্যালারিতে তখন দর্শকদের চিৎকার— ‘এটা পরীক্ষামূলক বল ছিল, আফ্রিদিকে আবার ব্যাট করতে দাও!’
পাকিস্তানে গ্রেট খেলোয়াড়ের অভাব নেই। তবুও কেন সবাইকে টপকে দীর্ঘদিন ধরে আফ্রিদির আকাশচুম্বি জনিপ্রয়তা? পাকিস্তানি ক্রিকেট লেখক ও ইতিহাসবিদ ওসমান সামিউদ্দিন বিষয়টির ব্যাখ্যা দিলেন এভাবে, ‘তিনি এমন সময় খেলেছেন যখন ইলেকট্রনিক মিডিয়ার ব্যাপক দাপট। মিডিয়া তাঁকে দর্শকের কাছে এমনভাবে নিয়ে গেছে, ইমরান খান-ওয়াসিম আকরামরাও তাঁর পেছনে পড়ে গেছেন!’
কোচের আদেশ উপেক্ষা করা, কোচ কিংবা সতীর্থের সঙ্গে বিবাদে জড়িয়ে পড়া, নিয়মশৃঙ্খলার ধার না–ধারা, অবসর নিয়ে নাটক—কত বিতর্ক আফ্রিদিকে নিয়ে। সব সময় চলেছেন নিজের মতো করেই। তবুও আফ্রিদির জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়েনি, বরং দিনে দিনে বেড়েছে! আফ্রিদি বললেন, ‘আমি খুবই সৌভাগ্যবান যে সমর্থকেরা অন্য যে কারও চেয়ে আমাকে বেশি ভালোবাসেন। আমি সব সময়ই দেশ ও সমর্থকদের জন্য খেলতে চেয়েছি।’
ওয়ানডে ইতিহাসের সর্বোচ্চ ছক্কার (৩৪২) মালিক কদিন আগে নিশ্চিত করেছেন, বিশ্বকাপের পর আর খেলবেন না ওয়ানডে। তাঁর এ অবসরের পর একটি প্রশ্ন বেশ উচ্চকিত—পাকিস্তান ক্রিকেটে এমন জনপ্রিয় খেলোয়াড় কি আর আসবে? এএফপি অবলম্বনে।
আফ্রিদির আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয়েছিল লেগ স্পিনার হিসেবে। ওয়ানডে ক্যারিয়ারে বোলিং পরিসংখ্যানটাও বেশ সমৃদ্ধ। ৩৮৯ ম্যাচে নিয়েছেন ৩৯১ উইকেট। অথচ অধিকাংশ দর্শক মাঠে যান আফ্রিদির বোলিং নয়, তাঁর ধুমধাড়াক্কা ব্যাটিং দেখতেই। ১৯৯৬ সালে কেনিয়ায় ত্রিদেশীয় সিরিজে চোট পাওয়া মুশতাক আহমেদের বদলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে থাকা অনূর্ধ্ব-১৯ দল থেকে উড়িয়ে আনা হয়েছিল আফ্রিদিকে। ১৬ বছর বয়সী লেগ স্পিনার ক্রিকেট-বিশ্বকে চমকে দেন সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতেই। নেটে আফ্রিদির ব্যাটিং দেখে অধিনায়ক সাঈদ আনোয়ার শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তাঁকে নামিয়ে দিয়েছিলেন ওয়ানডাউনে। প্রথমবার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ব্যাট করতে নেমেই ৩৭ বলে সেঞ্চুরির অবিশ্বাস্য কীর্তি!
এর পর থেকেই আফ্রিদির বোলিংয়ের চেয়ে ব্যাটিং দেখাটাই উপভোগ্য হয়ে ওঠে দর্শকের কাছে। দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ডের কিছুদিন পর একটা মজার ঘটনা ঘটেছিল। ১৯৯৬ সালের নভেম্বরে পেশোয়ারে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় ওয়ানডেতে এভার্টন মাতাম্বানাডজো নামের এক অখ্যাত পেসারের বলে ডাক মেরে ফিরেছিলেন। গ্যালারিতে তখন দর্শকদের চিৎকার— ‘এটা পরীক্ষামূলক বল ছিল, আফ্রিদিকে আবার ব্যাট করতে দাও!’
পাকিস্তানে গ্রেট খেলোয়াড়ের অভাব নেই। তবুও কেন সবাইকে টপকে দীর্ঘদিন ধরে আফ্রিদির আকাশচুম্বি জনিপ্রয়তা? পাকিস্তানি ক্রিকেট লেখক ও ইতিহাসবিদ ওসমান সামিউদ্দিন বিষয়টির ব্যাখ্যা দিলেন এভাবে, ‘তিনি এমন সময় খেলেছেন যখন ইলেকট্রনিক মিডিয়ার ব্যাপক দাপট। মিডিয়া তাঁকে দর্শকের কাছে এমনভাবে নিয়ে গেছে, ইমরান খান-ওয়াসিম আকরামরাও তাঁর পেছনে পড়ে গেছেন!’
কোচের আদেশ উপেক্ষা করা, কোচ কিংবা সতীর্থের সঙ্গে বিবাদে জড়িয়ে পড়া, নিয়মশৃঙ্খলার ধার না–ধারা, অবসর নিয়ে নাটক—কত বিতর্ক আফ্রিদিকে নিয়ে। সব সময় চলেছেন নিজের মতো করেই। তবুও আফ্রিদির জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়েনি, বরং দিনে দিনে বেড়েছে! আফ্রিদি বললেন, ‘আমি খুবই সৌভাগ্যবান যে সমর্থকেরা অন্য যে কারও চেয়ে আমাকে বেশি ভালোবাসেন। আমি সব সময়ই দেশ ও সমর্থকদের জন্য খেলতে চেয়েছি।’
ওয়ানডে ইতিহাসের সর্বোচ্চ ছক্কার (৩৪২) মালিক কদিন আগে নিশ্চিত করেছেন, বিশ্বকাপের পর আর খেলবেন না ওয়ানডে। তাঁর এ অবসরের পর একটি প্রশ্ন বেশ উচ্চকিত—পাকিস্তান ক্রিকেটে এমন জনপ্রিয় খেলোয়াড় কি আর আসবে? এএফপি অবলম্বনে।
No comments