অবশেষে কাশ্মীরে ধর্মনিরপেক্ষ সরকার?
কংগ্রেসের ডাক শুনে তা হলে কি কাশ্মীরে ‘ধর্মনিরপেক্ষ সরকার’ হতে চলেছে? এই রাজনৈতিক জল্পনা উসকে দিয়েছে পিপলস ডেমোক্রেটিক পার্টিই (পিডিপি)। সরকার গঠনের প্রথম দাবিদার এই দলের মুখপাত্র নঈম আখতার গতকাল মঙ্গলবার বলেছেন, পিডিপি, কংগ্রেস ও ন্যাশনাল কনফারেন্সকে (এনসি) নিয়ে একটা মহাজোট সরকার গঠনও অন্যতম সম্ভাবনা। সরকার গঠনের স্বপ্নভঙ্গের আশঙ্কায় বিজেপি এই মহাজোটের সম্ভাবনায় বিচলিত ও বিরক্ত। তাদের জম্মুর নেতা বলি ভগত বলেছেন, এটা কংগ্রেসের একটা চাল। পিডিপি মুখপাত্র নঈম আখতার বলেছেন, মহাজোটের সরকার হলে তাতে তিন দলই (পিডিপি, কংগ্রেস ও ন্যাশনাল কনফারেন্স) শরিক হতে পারবে। এ ধরনের সরকার হলে তাতে রাজ্যের সব অঞ্চলের প্রতিনিধিত্ব থাকবে। সেই সরকার স্থায়ী হবে। বিজেপি মহাজোটের সরকার গঠনের কথাবার্তাকে ‘কংগ্রেসের চাল’ আখ্যা দিয়ে বলেছে, তারা রাজ্যে প্রাসঙ্গিক থাকতে এটি করছে। রাজ্যের বিজেপি সভাপতি যুগল কিশোর বলেছেন, এই প্রস্তাব জম্মুবিরোধী। তা ছাড়া বিজেপিকে বাদ দিয়ে সরকার গড়া সম্ভব নয়। বিজেপি-পিডিপি এই কাজিয়ায় বিজেপির দিকে ঝুঁকেছেন সাবেক বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা সাজ্জাদ লোন। তাঁর দল দুটি আসন জিতেছে। তিনি টুইট করেছেন, বিজেপির উপস্থিতি অস্বীকার করা যাবে না। রাজ্যে স্থায়ী সরকার গড়তে গেলে তাদের নিতেই হবে।
না হলে নতুন করে ভোট। নতুন বছরের প্রথম দিন রাজ্যে সরকার গঠনের সম্ভাবনা নিয়ে বিজেপি দেখা করছে রাজ্যপাল এন এন ভোরার সঙ্গে। তার এক দিন আগে, আজ বছরের শেষ দিনে ওই একই উদ্দেশ্যে রাজভবনে যাওয়ার কথা পিডিপির সভানেত্রী মেহবুবা মুফতির। বিজেপিকে বাদ দিয়ে মহাজোটের সরকার গঠনের ইঙ্গিত প্রথম দিয়েছিলেন এনসি নেতা সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ। ওমরের পর একই কথা বলেন কংগ্রেসের কাশ্মীরি নেতা গোলাম নবী আজাদ। এই সম্ভাবনার পেছনে অন্যতম প্রধান কারণ হলো, বিজেপির সঙ্গে হাত মেলানোর প্রশ্নে পিডিপির মধ্যেই দোলাচল। যাঁরা বিরোধী, তাঁরা মনে করছেন, বিজেপির সঙ্গে হাত মেলালে সরকার স্থিতিশীল হবে হয়তো, কিন্তু উপত্যকায় তাঁদের রাজনীতি করা কঠিন হয়ে যাবে। এই মহলের বক্তব্য, যে দলকে উপত্যকার মানুষ প্রত্যাখ্যান করেছে, তাদের সঙ্গে হাত মেলালে তাঁরাও প্রত্যাখ্যাত হবেন। যাঁরা পক্ষে, তাঁদের অভিমত, বিজেপিকে বাদ দিলে তাঁদের পক্ষে সরকার চালানো কঠিন হবে। কেন্দ্রীয় সহযোগিতা মিলবে না। তা ছাড়া জম্মুতে অসন্তোষের আগুন জ্বলবে। তার মোকাবিলা করাও নতুন সরকারের পক্ষে কঠিন হয়ে দাঁড়াবে। এই অদ্ভুত জাঁতাকলে পিষ্ট হচ্ছে পিডিপি নেতৃত্ব। দুই সম্ভাবনাতেই রয়েছে যুক্তি। কী করবে পিডিপি নেতৃত্ব? আজ বুধবার রাজ্যপালের সঙ্গে বৈঠকে তার আঁচ পাওয়ার সম্ভাবনা।
No comments