গাড়িতে আগুন, দগ্ধ ৩ ককটেল বিস্ফোরণ, আতঙ্ক- ২০ দলের হরতাল আজ
বিরোধী
জোটের ডাকা আজকের সকাল-সন্ধ্যা হরতাল সামনে রেখে গতকাল রাজধানীতে গাড়িতে
অগ্নিসংযোগ ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এছাড়া হরতালের সমর্থনে মিছিল বের
করলে ২০ দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে বিভিন্ন জেলায় পুলিশের সংঘর্ষ ঘটে।
বিশৃঙ্খলা এড়াতে ঢাকার রাস্তায় নামানো হয়েছে বিজিবি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর
সদস্যরা রাজধানী ঢাকাসহ দেশজুড়ে সতর্ক অবস্থান নিয়েছে। গাজীপুরে সমাবেশ
করতে না দেয়ার প্রতিবাদ এবং গয়েশ্বর চন্দ্র রায়সহ দলের নেতাকর্মীদের
মুক্তির দাবিতে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট এ হরতাল ডেকেছে। আওয়ামী লীগ
সরকার দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতা গ্রহণের পর এটি বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয়
জোটের ডাকা দ্বিতীয় হরতাল। এর আগে বিচারপতিদের অভিশংসন আইন পাসের প্রতিবাদে
বিএনপির তরফে একদিন হরতাল পালন করা হয়। পুলিশ, হাসপাতাল ও প্রত্যক্ষদর্শী
সূত্র জানায়, হরতালের আগের দিন সন্ধ্যায় রাজধানীর পল্টন মোড়ে পার্কিং করা
সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বহনকারী (ঢাকা মেট্রো স-১১-০১০১) একটি বাসে
দুর্বৃত্তরা আগুন দেয়। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে
আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। খবর পেয়ে পুলিশও ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। এছাড়া সন্ধ্যা
পৌনে ৬টার দিকে নয়াপল্টনের জোনাকি হলের সামনে একাধিক ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়
দুর্বৃত্তরা। একই সময় পুরান ঢাকার নয়াবাজার এলাকায় হরতালের সমর্থনে একটি
মিছিল বের করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবির। এসময় তারা দু’টি
ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। একই সময়ে খিলক্ষেতের কুড়িল বিশ্বেরোডে একটি মিছিল বের
করে ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীরা। এসময় তারা রাস্তায় কয়েকটি বাস ভাঙচুর করে।
এদিকে দুপুর ২টার দিকে হরতালের সমর্থনে ছাত্রশিবির নেতাকর্মীরা মহাখালী
কলেরা হাসপাতালের গেট থেকে একটি মিছিল বের করে। এসময় পুলিশ ওই মিছিলটি
ছত্রভঙ্গ করতে চাইলে তারা পুলিশের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এতে উভয়
পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। রাস্তায় তারা কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করে।
তবে কাউকে আটক করতে পারেনি পুলিশ। রাত ৮টার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায়
একাধিক ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। রাতে মিরপুরের কাজীপাড়ায় একটি সিএনজি
অটোরিকশাতে পেট্রলবোমা ছুড়ে মারে দুর্বৃত্তরা। এতে একই পরিবারের তিনজন
অগ্নিদগ্ধ হন। গুরুতর আহত অবস্থায় তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি
করা হয়েছে। আহত তানজিমুল হক জানান, সিএনজি অটোরিকশাযোগে মা ও বোনসহ তারা
মিরপুরে যাচ্ছিলেন। এসময় কাজীপাড়া এলাকায় দুর্বৃত্তরা পেট্রলবোমা ছুড়ে
মারলে অটোরিকশায় আগুন ধরে যায়। অগ্নিদগ্ধ হন তানজিমুল ও অটোরিকশায় থাকা তার
মা শামসুন্নাহার, বোন অনিতা। এদিকে হরতালে অপ্রীতিকর ঘটনা ও বিশৃঙ্খলা
এড়াতে রাজধানীতে বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। রোববার সন্ধ্যা ৬টার দিকে
রাজধানীতে বিজিবি মোতায়ন করা হয়। এছাড়া আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় টহল জোরদার করেছেন। রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ এলাকা ও
মোড়ে মোড়ে দাঙ্গা পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। হরতাল মোকাবিলা করতে
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা জলকামান, রায়ট কারসহ বিভিন্ন সরঞ্জামাদি
প্রস্তুত রাখা হয়েছে। বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা সাদা পোশাকে
বিভিন্ন এলাকায় নজরদারি করছেন। ঢাকা মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (মিডিয়া)
মাসুদুর রহমান জানান, হরতালের নামে রাস্তায় কেউ বিশৃঙ্খলা করতে চাইলে তাদের
বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
হরতাল বানচাল করতে গণগ্রেপ্তার চালাচ্ছে সরকার: বিএনপি
এদিকে সোমবারের হরতাল বানচাল করতে সরকার দেশব্যাপী বিরোধী জোটের নেতাকর্মীদের গণগ্রেপ্তার চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত যুগ্ম মহাসচিব রিজভী আহমেদ। গতকাল বিকালে নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন। রিজভী আহমেদ বলেন, একদলীয় দুঃশাসন নিশ্চিত করতেই ক্ষমতাসীন অবৈধ সরকার দেশব্যাপী গণগ্রেপ্তার অভিযান শুরু করেছে। বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের নেতাদের বাসায় তল্লাশি চালাচ্ছে। কিন্তু এতে তারা পার পাবে না। অতীতেও কোন স্বৈরাচার পার পায়নি। এ অবৈধ সরকারও পাবে না। সন্ধ্যা পর্যন্ত রাজধানী মালিবাগ, বংশাল, খিলগাঁও, আদাবর, গেন্ডারিয়া, মাদারীপুর, নোয়াখালী, খুলনা মহানগর, পটুয়াখালী, ময়মনসিংহ ও মুন্সীগঞ্জসহ সারা দেশে শতাধিক নেতাকর্মী গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। দেশবাসীকে শান্তিপূর্ণ হরতাল পালনের আহ্বান জানিয়ে রিজভী আহমেদ বলেন, আমরা বলতে চাই, সোমবার সারা দেশে সর্বাত্মক হরতাল হবে। সকাল-সন্ধ্যা হরতালে গাড়ি-ঘোড়া চলবে না। অফিস-আদালত চলবে না। দেশের গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনা ও দেশের সম্পদ রক্ষার দাবিতে এই হরতাল ডাকা হয়েছে। তবে সংবাদপত্র বহনকারী গাড়ি, এম্বুলেন্স, ওষুধের দোকান, ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি, খাবার গাড়িসহ জরুরি সেবাপ্রদানকারী সংস্থার গাড়ি হরতালের আওতামুক্ত থাকবে। এছাড়া চট্টগ্রামের লালদীঘি ময়দানে গাউসুল আজম সম্মেলন উপলক্ষে ওই এলাকা হরতালের আওতামুক্ত থাকবে বলে জানান তিনি। ওদিকে ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সভাপতি রাজীব আহসান ও সাধারণ সম্পাদক মো. আকরামুল হাসান এক বিবৃতিতে দেশের সকল জেলা ও থানা ইউনিট এবং দেশবাসীকে হরতাল সফল করার আহবান জানিয়েছেন। এদিকে হরতালের সমর্থনে গতকাল বিকালে রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় মিছিল বের করেছে ছাত্রদল। ইঞ্জিনিয়ার ইঞ্জিনিয়ার্স ইস্টিটিউশন এলাকায় হরতালের সমর্থনে বিক্ষোভ মিছিল করে ছাত্রদল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা। পান্থপথ এলাকায় হরতালের সমর্থনে মিছিল বের করে তেজগাঁও কলেজ ছাত্রদল। এছাড়া কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে হরতালের সমর্থনে মিছিলটি একটি মিছিল বের ছাত্রদল।
হরতাল বানচাল করতে গণগ্রেপ্তার চালাচ্ছে সরকার: বিএনপি
এদিকে সোমবারের হরতাল বানচাল করতে সরকার দেশব্যাপী বিরোধী জোটের নেতাকর্মীদের গণগ্রেপ্তার চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত যুগ্ম মহাসচিব রিজভী আহমেদ। গতকাল বিকালে নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন। রিজভী আহমেদ বলেন, একদলীয় দুঃশাসন নিশ্চিত করতেই ক্ষমতাসীন অবৈধ সরকার দেশব্যাপী গণগ্রেপ্তার অভিযান শুরু করেছে। বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের নেতাদের বাসায় তল্লাশি চালাচ্ছে। কিন্তু এতে তারা পার পাবে না। অতীতেও কোন স্বৈরাচার পার পায়নি। এ অবৈধ সরকারও পাবে না। সন্ধ্যা পর্যন্ত রাজধানী মালিবাগ, বংশাল, খিলগাঁও, আদাবর, গেন্ডারিয়া, মাদারীপুর, নোয়াখালী, খুলনা মহানগর, পটুয়াখালী, ময়মনসিংহ ও মুন্সীগঞ্জসহ সারা দেশে শতাধিক নেতাকর্মী গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। দেশবাসীকে শান্তিপূর্ণ হরতাল পালনের আহ্বান জানিয়ে রিজভী আহমেদ বলেন, আমরা বলতে চাই, সোমবার সারা দেশে সর্বাত্মক হরতাল হবে। সকাল-সন্ধ্যা হরতালে গাড়ি-ঘোড়া চলবে না। অফিস-আদালত চলবে না। দেশের গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনা ও দেশের সম্পদ রক্ষার দাবিতে এই হরতাল ডাকা হয়েছে। তবে সংবাদপত্র বহনকারী গাড়ি, এম্বুলেন্স, ওষুধের দোকান, ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি, খাবার গাড়িসহ জরুরি সেবাপ্রদানকারী সংস্থার গাড়ি হরতালের আওতামুক্ত থাকবে। এছাড়া চট্টগ্রামের লালদীঘি ময়দানে গাউসুল আজম সম্মেলন উপলক্ষে ওই এলাকা হরতালের আওতামুক্ত থাকবে বলে জানান তিনি। ওদিকে ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সভাপতি রাজীব আহসান ও সাধারণ সম্পাদক মো. আকরামুল হাসান এক বিবৃতিতে দেশের সকল জেলা ও থানা ইউনিট এবং দেশবাসীকে হরতাল সফল করার আহবান জানিয়েছেন। এদিকে হরতালের সমর্থনে গতকাল বিকালে রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় মিছিল বের করেছে ছাত্রদল। ইঞ্জিনিয়ার ইঞ্জিনিয়ার্স ইস্টিটিউশন এলাকায় হরতালের সমর্থনে বিক্ষোভ মিছিল করে ছাত্রদল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা। পান্থপথ এলাকায় হরতালের সমর্থনে মিছিল বের করে তেজগাঁও কলেজ ছাত্রদল। এছাড়া কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে হরতালের সমর্থনে মিছিলটি একটি মিছিল বের ছাত্রদল।
No comments