মামলাজট ও দীর্ঘসূত্রতা নিয়ে সংসদীয় কমিটির উদ্বেগ
আদালতে মামলা নিষ্পত্তি নিয়ে দীর্ঘ সময়
পার হয়ে যাচ্ছে। ফলে আদালতে মামলার জট বাড়ছে। এনিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে
সংসদীয় কমিটি। কমিটির বৈঠকে মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য বিশেষ উদ্যোগ
গ্রহণের সুপারিশ করা হয়েছে। বিশেষ করে চাঞ্চল্যকর মামলাগুলোর বিচারকাজের
অগ্রগতি সংসদীয় কমিটিকে নিয়মিত অবহিত করতে বলা হয়েছে। এ বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের
পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ২০১৫ সালের মধ্যেই চাঞ্চল্যকর ২১শে আগস্ট গ্রেনেড
হামলা মামলার নিষ্পত্তি হবে। গতকাল সংসদ সচিবালয়ে আইন বিচার ও সংসদবিষয়ক
মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন সুরঞ্জিত
সেনগুপ্ত। বৈঠকে কমিটির সদস্য মন্ত্রী আনিসুল হক, বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ মো.
তাজুল ইসলাম চৌধুরী, আবদুল মতিন খসরু, সাহারা খাতুন, মো. আবদুল মজিদ খান,
তালুকদার মো. ইউনুস ও সফুরা বেগম উপস্থিত ছিলেন। বিশেষ আমন্ত্রণে আইন
কমিশনের চেয়ারম্যান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক অংশ নেন। বৈঠক শেষে
সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেন, চাঞ্চল্যকর ২১শে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার
বিচারকাজ দ্রুত শেষ করতে প্রসিকিউশনকে ইস্কাটনে একটি দোতলা বাড়ি দেয়া
হয়েছে। ইতিমধ্যে ১০৩ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয়েছে। এজন্য সপ্তাহে
একদিনের পরিবর্তে ৩ দিন আদালতের কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। কমিটি ৫ দিন
আদালতের কার্যক্রম চালানোর সুপারিশ করেছে। তিনি আরও বলেন, এই মামলাটির
অগ্রগতি নিয়ে কমিটির প্রতিটি বৈঠকে অবহিত করার জন্য বলা হয়েছে। শুধু এই
মামলা নয়, চাঞ্চল্যকর অন্য মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তির উদ্যোগ নিতে বলা
হয়েছে। কমিটির সভাপতি বলেন, একটা মামলার রায় দেয়ার পরেই বিচারককে স্বাক্ষর
করতে দীর্ঘ সময় লেগে যায়। কমিটিকে মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, হাইকোর্ট বিভাগের
একটি মামলার মৌখিক রায় হওয়ার ৪ বছর পর পূর্ণাঙ্গ রায়ে স্বাক্ষর করা হয়েছে।
এভাবে দীর্ঘ সময় পর পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করা জনমনের মধ্যে হতাশা দেখা দেয়।
যেমনটি ঘটেছে যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লার ক্ষেত্রে। ফাঁসি কার্যকর হওয়ার ১১
মাস পর জানতে পারলো রিভিউ গ্রহণ করা হয়েছে। এর আগে অ্যাটর্নি জেনারেল তো
কত কথাই না বললেন। কামারুজ্জামানের মামলার রায়েও দ্রুত প্রকাশ করা উচিত।
বৈঠকে দেশের জেলা ও দায়রা জজ আদালত এবং উচ্চ আদালতের অনিষ্পন্ন হওয়া
মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তির বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। সারা দেশে নিম্ন
আদালতগুলোতে প্রায় ২৮ লাখ মামলা এবং হাইকোর্টে সোয়া তিন লাখ মামলা
বিচারাধীন। প্রচলিত বিচার ব্যবস্থায় প্রশাসনিক, অবকাঠামোগত ও আর্থিক
সংশ্লেষ না ঘটিয়ে শুধুমাত্র অভ্যন্তরীণ সংস্কারের মাধ্যমে দেশের বিরাজমান
মামলার জট নিরসন ও মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি সম্ভব বলে মনে করেন কমিটির
সদস্যরা। এ ব্যাপারে আইন কমিশনের চেয়ারম্যানের প্রস্তাবিত সুপারিশ এবং
স্থায়ী কমিটির পূর্বের আলোচিত ২৩টি প্রস্তাব কার্যকর করার তাগিদ দেয়া
হয়েছে।
যুগ্ম জেলা জজ আদালতে বেশি মামলা দায়ের
বৈঠকের সুপারিশে বলা হয়েছে, আর্থিক মূল্যমানের কারণে বর্তমানে যুগ্ম জেলা জজ আদালতে অধিকহারে মামলা দায়ের করা হচ্ছে। অথচ সহকারী ও সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে কম সংখ্যক মামলা দায়ের করা হচ্ছে। বর্তমানে জমির মূল্য বিবেচনায়ে সহকারী জজ ও সিনিয়র সহকারী জজ আদালতের আর্থিক এখতিয়ার যথাক্রমে ৪ লাখ থেকে বাড়িয়ে ১০ লাখ টাকা এবং ৬ লাখ থেকে বাড়িয়ে ২০ লাখ টাকা পুনঃনির্ধারণ করতে হবে। একই ভাবে জেলা জজের আপিলের আর্থিক এখতিয়ার ৫ লাখ টাকা হওয়ায় নিম্ন আদালতের অনেক মামলার রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্ট বিভাগে আপিল দায়ের করা হচ্ছে। জমির মূল্য বিবেচনায় জেলা জজের আপিলের আর্থিক এখতিয়ার ৫ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫০ লাখ টাকা পুনঃনির্ধারণ করতে হবে। এজন্য সিভিল কোর্টস অ্যাক্টের সেকশন ১৯ এবং ২১ সংশোধন করতে হবে। এরূপ সংশোধন করলে যুগ্ম জেলা জজ আদালতে মামলা দায়েরের অত্যধিক চাপ কমে সহকারী জজ ও সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে মামলা দায়ের হবে। একইভাবে হাইকোর্ট বিভাগের আপিল মামলা দায়েরের চাপ কমে জেলা জজ আদালতে মামলা দায়ের হবে। এছাড়া বৈঠকে বিচারকের পদ সৃষ্টির পাশাপাশি বিচারকের এজলাস, চেম্বার ও অফিস বাড়ানোর সুপারিশ করা হয়েছে।
যুগ্ম জেলা জজ আদালতে বেশি মামলা দায়ের
বৈঠকের সুপারিশে বলা হয়েছে, আর্থিক মূল্যমানের কারণে বর্তমানে যুগ্ম জেলা জজ আদালতে অধিকহারে মামলা দায়ের করা হচ্ছে। অথচ সহকারী ও সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে কম সংখ্যক মামলা দায়ের করা হচ্ছে। বর্তমানে জমির মূল্য বিবেচনায়ে সহকারী জজ ও সিনিয়র সহকারী জজ আদালতের আর্থিক এখতিয়ার যথাক্রমে ৪ লাখ থেকে বাড়িয়ে ১০ লাখ টাকা এবং ৬ লাখ থেকে বাড়িয়ে ২০ লাখ টাকা পুনঃনির্ধারণ করতে হবে। একই ভাবে জেলা জজের আপিলের আর্থিক এখতিয়ার ৫ লাখ টাকা হওয়ায় নিম্ন আদালতের অনেক মামলার রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্ট বিভাগে আপিল দায়ের করা হচ্ছে। জমির মূল্য বিবেচনায় জেলা জজের আপিলের আর্থিক এখতিয়ার ৫ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫০ লাখ টাকা পুনঃনির্ধারণ করতে হবে। এজন্য সিভিল কোর্টস অ্যাক্টের সেকশন ১৯ এবং ২১ সংশোধন করতে হবে। এরূপ সংশোধন করলে যুগ্ম জেলা জজ আদালতে মামলা দায়েরের অত্যধিক চাপ কমে সহকারী জজ ও সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে মামলা দায়ের হবে। একইভাবে হাইকোর্ট বিভাগের আপিল মামলা দায়েরের চাপ কমে জেলা জজ আদালতে মামলা দায়ের হবে। এছাড়া বৈঠকে বিচারকের পদ সৃষ্টির পাশাপাশি বিচারকের এজলাস, চেম্বার ও অফিস বাড়ানোর সুপারিশ করা হয়েছে।
No comments