ছয় বছরে অভ্যন্তরীণ কোন্দলে বিএনপির ৩৪ খুন
বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দলে গত ছয় বছরে অন্তত ৩৪ জন মারা গেছেন। এর মধ্যে ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর দলীয় কোন্দলে বিএনপির একজন কর্মী মারা যান। আর এ বছর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর গত ১১ মাসে দলীয় কোন্দলে বিএনপির পাঁচজন মারা গেছেন। ছয় বছরে বিএনপি-সমর্থক পাঁচজন জনপ্রতিনিধি খুন হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে আওয়ামী লীগের হাতে চারজন নিহত হওয়ার অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়া দলটির অভ্যন্তরীণ কোন্দলে মারা যান একজন। বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ক্ষমতার বাইরে থাকায় নিজেদের কোন্দল কম হলেও তা উপেক্ষা করার মতো নয়। বিরোধী দলে থেকেও নিজেরা এই ছয় বছরে ৩৪৪ বার অভ্যন্তরীণ সংঘর্ষে জড়িয়েছে। এসব সংঘর্ষে আহত ব্যক্তির সংখ্যা চার হাজার ৭৬২। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রথম আলোকে বলেন, গণতান্ত্রিক চর্চা যেভাবে হওয়া উচিত ছিল, সেভাবে হচ্ছে না। এ কারণে সংঘাত-সহিংসতা ও হত্যাকাণ্ড বাড়ছে। সরকারি দলের পাশাপাশি বিএনপির দলীয় কোন্দলে খুনোখুনির প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সবাই এই সমাজের মানুষ। এই রাজনীতিতে অভ্যস্ত। তবে দলীয় কোন্দল বলা হলেও অনেক ঘটনার পেছনে সরকার ও গোয়েন্দা সংস্থার ইন্ধন থাকে।
নিহত জনপ্রতিনিধিরা: ২০১০ সালের ৮ অক্টোবর দলীয় মিছিলে নেতৃত্ব দেওয়ার সময় নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলা চেয়ারম্যান ও বিএনপির নেতা সানাউল্লাহ নূরকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে। চার বছর ধরে এই মামলার কথিত তদন্ত চলছে। যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার নির্বাসখোলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও বিএনপির নেতা শওকত আলী খুন হন ২০১০ সালের ১৬ নভেম্বর। অভিযোগপত্র থেকে আওয়ামী লীগের নেতাদের নাম বাদ দেওয়ায় বাদী নারাজি দেওয়ার পর আদালত পুনঃ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। ২০১৩ সালের ১৮ ডিসেম্বর টাঙ্গাইলের দাইন্যা ইউনিয়ন পরিষদের তিনবার নির্বাচিত চেয়ারম্যান ও সদর উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি রফিকুল ইসলাম ফারুককে শহরের বটতলা বাজারে গুলি করে হত্যা করা হয়। এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগের কয়েক নেতাসহ আরও কয়েকজনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হয়েছে।
গত ২৮ অক্টোবর ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডু উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও দৌলতপুর ইউপির চেয়ারম্যান আবুল হোসেনকে ইউনিয়ন পরিষদ ভবনের সামনে দখলপুর বাজারে শত শত লোকের সামনে বোমা মেরে ও জবাই করে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। মামলার এজাহারভুক্ত আসামিরা স্থানীয় আওয়ামী লীগের। কুমারখালী উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও জগন্নাথপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মুন্সী রশিদুর রহমান ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে বিএনপির দলীয় কোন্দলে খুন হন। এ ছাড়া লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও হাজীপাড়া ইউপির চেয়ারম্যান ওমর ফারুককে এ বছরের শুরুতে অপহরণ করা হয়। তাঁর খোঁজ বা লাশ কোনোটাই পাওয়া যায়নি।
মামলা নিয়েও রাজনীতি: গত বছরের ২৫ অক্টোবর কক্সবাজারের চকরিয়ায় আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও পুলিশের ত্রিমুখী সংঘর্ষে স্থানীয় বিএনপির দুই নেতা সাইফুল ইসলাম ও মিজানুর রহমান নিহত হন। এই দুটি ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে চকরিয়া থানায় দুটি মামলা করে। গত ২৩ মে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল হওয়ার পর জানা যায়, স্থানীয় বিএনপির ৪৬ নেতা-কর্মী মামলার আসামি। এ ঘটনায় বিস্ময় প্রকাশ করে নিহত সাইফুলের বাবা মোকতার আহমদ বলেন, ‘এটা বিচারের নামে প্রহসন। পুলিশ ও আওয়ামী লীগের কর্মীরা হত্যা করে মামলা দিয়েছে বিএনপির নেতাদের বিরুদ্ধে। এর বিচার আল্লাহ করবে।’
নিহত মিজানের মা নূরজাহান বেগম বলেন, ‘আমি কারও বিরুদ্ধে মামলা করিনি। এখন শুনতে পেলাম, আসামিরা বিএনপির নেতা-কর্মী।’
একই জেলায় গত ২৯ নভেম্বর আওয়ামী লীগ, পুলিশ ও বিএনপির নেতা-কর্মীদের ত্রিমুখী সংঘর্ষে বিএনপির নেতা জাকের হোছাইনের হত্যা মামলায় স্থানীয় বিএনপির নেতা-কর্মীদের আসামি করা হয়েছে।
বিএনপির নেতা ও পৌরসভার মেয়র নুরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিএনপির নেতা-কর্মীদের হত্যা করে বিএনপির নেতা-কর্মীদের আসামি করার মতো হাস্যকর ঘটনায় আমাদের উচ্চ আদালতে যেতে হচ্ছে।’
{প্রতিবেদনে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন: একরামুল হক ও গাজী ফিরোজ (চট্টগ্রাম), আব্দুল কুদ্দুস, কক্সবাজার, উজ্জ্বল মেহেদী (সিলেট), আবুল কালাম আজাদ (রাজশাহী), মজিবর রহমান খান (ঠাকুরগাঁও), দেবাশীষ সাহা রায় (শেরপুর), আনোয়ার হোসেন (চাঁপাইনবাবগঞ্জ), এনামুল হক (সিরাজগঞ্জ), আবদুল মোমিন (মানিকগঞ্জ), তৌহিদী হাসান (কুষ্টিয়া) ও মাসুদ রানা (গাজীপুর)।}
নিহত জনপ্রতিনিধিরা: ২০১০ সালের ৮ অক্টোবর দলীয় মিছিলে নেতৃত্ব দেওয়ার সময় নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলা চেয়ারম্যান ও বিএনপির নেতা সানাউল্লাহ নূরকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে। চার বছর ধরে এই মামলার কথিত তদন্ত চলছে। যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার নির্বাসখোলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও বিএনপির নেতা শওকত আলী খুন হন ২০১০ সালের ১৬ নভেম্বর। অভিযোগপত্র থেকে আওয়ামী লীগের নেতাদের নাম বাদ দেওয়ায় বাদী নারাজি দেওয়ার পর আদালত পুনঃ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। ২০১৩ সালের ১৮ ডিসেম্বর টাঙ্গাইলের দাইন্যা ইউনিয়ন পরিষদের তিনবার নির্বাচিত চেয়ারম্যান ও সদর উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি রফিকুল ইসলাম ফারুককে শহরের বটতলা বাজারে গুলি করে হত্যা করা হয়। এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগের কয়েক নেতাসহ আরও কয়েকজনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হয়েছে।
গত ২৮ অক্টোবর ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডু উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও দৌলতপুর ইউপির চেয়ারম্যান আবুল হোসেনকে ইউনিয়ন পরিষদ ভবনের সামনে দখলপুর বাজারে শত শত লোকের সামনে বোমা মেরে ও জবাই করে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। মামলার এজাহারভুক্ত আসামিরা স্থানীয় আওয়ামী লীগের। কুমারখালী উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও জগন্নাথপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মুন্সী রশিদুর রহমান ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে বিএনপির দলীয় কোন্দলে খুন হন। এ ছাড়া লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও হাজীপাড়া ইউপির চেয়ারম্যান ওমর ফারুককে এ বছরের শুরুতে অপহরণ করা হয়। তাঁর খোঁজ বা লাশ কোনোটাই পাওয়া যায়নি।
মামলা নিয়েও রাজনীতি: গত বছরের ২৫ অক্টোবর কক্সবাজারের চকরিয়ায় আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও পুলিশের ত্রিমুখী সংঘর্ষে স্থানীয় বিএনপির দুই নেতা সাইফুল ইসলাম ও মিজানুর রহমান নিহত হন। এই দুটি ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে চকরিয়া থানায় দুটি মামলা করে। গত ২৩ মে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল হওয়ার পর জানা যায়, স্থানীয় বিএনপির ৪৬ নেতা-কর্মী মামলার আসামি। এ ঘটনায় বিস্ময় প্রকাশ করে নিহত সাইফুলের বাবা মোকতার আহমদ বলেন, ‘এটা বিচারের নামে প্রহসন। পুলিশ ও আওয়ামী লীগের কর্মীরা হত্যা করে মামলা দিয়েছে বিএনপির নেতাদের বিরুদ্ধে। এর বিচার আল্লাহ করবে।’
নিহত মিজানের মা নূরজাহান বেগম বলেন, ‘আমি কারও বিরুদ্ধে মামলা করিনি। এখন শুনতে পেলাম, আসামিরা বিএনপির নেতা-কর্মী।’
একই জেলায় গত ২৯ নভেম্বর আওয়ামী লীগ, পুলিশ ও বিএনপির নেতা-কর্মীদের ত্রিমুখী সংঘর্ষে বিএনপির নেতা জাকের হোছাইনের হত্যা মামলায় স্থানীয় বিএনপির নেতা-কর্মীদের আসামি করা হয়েছে।
বিএনপির নেতা ও পৌরসভার মেয়র নুরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিএনপির নেতা-কর্মীদের হত্যা করে বিএনপির নেতা-কর্মীদের আসামি করার মতো হাস্যকর ঘটনায় আমাদের উচ্চ আদালতে যেতে হচ্ছে।’
{প্রতিবেদনে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন: একরামুল হক ও গাজী ফিরোজ (চট্টগ্রাম), আব্দুল কুদ্দুস, কক্সবাজার, উজ্জ্বল মেহেদী (সিলেট), আবুল কালাম আজাদ (রাজশাহী), মজিবর রহমান খান (ঠাকুরগাঁও), দেবাশীষ সাহা রায় (শেরপুর), আনোয়ার হোসেন (চাঁপাইনবাবগঞ্জ), এনামুল হক (সিরাজগঞ্জ), আবদুল মোমিন (মানিকগঞ্জ), তৌহিদী হাসান (কুষ্টিয়া) ও মাসুদ রানা (গাজীপুর)।}
No comments