শিশুটির মৃত্যু এড়ানো যেত by প্রফেসর এমআর কবির
ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলনের জন্য বসানো গভীর
নলকূপের গর্তে শিশু জিহাদ অসতর্কতাবশত পড়ে যাওয়ার বিষয়টি বাংলাদেশে এই
প্রথম হলেও এ ধরনের দুর্ঘটনা বিভিন্ন দেশে বহুবার ঘটেছে। ওই সব তথ্য
বাংলাদেশের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার সঙ্গে যুক্ত বিশেষজ্ঞ এবং কর্মীর কম বেশি
অবগত থাকার কথা। আমাদের প্রত্যাশা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার সঙ্গে যুক্ত
কর্মী ও বিশেষজ্ঞরা জানা তথ্যের আলোকে বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া যে কোনো
দুর্যোগ-দুর্ঘটনা পরবর্তী পরিস্থিতি সফলভাবে মোকাবেলা করতে সক্ষম হবেন।
ইতিমধ্যে প্রাপ্ত তথ্য থেকে জানা যায়- বিভিন্ন দেশে শিশুরা যেসব গভীর খাদে বা গর্তে পড়েছে, সেগুলোর গভীরতা প্রায় ৫০, ১০০ বা ২০০ ফুট। ২০০ ফুটের বেশি গভীর খাদ বা গর্তে কোনো শিশু পড়েছে এমন তথ্য আমাদের জানা নেই। কাজেই এ কাজে নিয়োজিত সরকারি উদ্ধারকারী দলের প্রস্তুতি থাকে মোটামুটি ২০০ বা ২৫০ ফুট গভীরে পড়ে যাওয়া কাউকে উদ্ধার করার।
কোনো গভীর খাদ বা গর্তের গভীরতা যত বাড়তে থাকে অক্সিজেনের পরিমাণ ততো কমতে থাকে। কোনো শিশু বা এমনকি বয়স্ক কেউ গর্তে পড়ে গেলে গভীর খাদে অক্সিজেনের স্বল্পতার কারণে বেশি সময় বেঁচে থাকা কঠিন হয়ে পড়ে। গভীর খাদে পড়ে যাওয়ার পর শারীরিক সমস্যা ছাড়াও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ার কারণে শারীরিক বিভিন্ন সমস্যা বেড়ে যায়। সাধারণভাবে ওই অবস্থায় অলৌকিক কিছু না ঘটলে বা কৃত্রিম উপায়ে অক্সিজেন সরবরাহ না করা হলে একজন স্বাভাবিক মানুষের পক্ষে কয়েক ঘণ্টার বেশি বেঁচে থাকা সম্ভব নয়। পরিত্যক্ত থাকার কারণে শাহজাহানপুরের নলকূপের গর্তটিতে কার্বনডাই-অক্সাইডের পরিমাণ বেশি থাকার আশংকা রয়েছে- যা মানুষের শ্বাস-প্রশ্বাসের স্বাভাবিক কর্মকাণ্ডে ব্যাঘাত ঘটাবে। এছাড়া পরিত্যক্ত পাইপ বা গভীর গর্তে আরও অন্যান্য দূষিত পদার্থ থাকা স্বাভাবিক। উদ্ধারকারী দল শাহজাহানপুরে দুর্ঘটনাকবলিত শিশুটির অবস্থান দ্রুত নির্ণয় করতে পারেনি এবং একপর্যায়ে শিশুটিকে খুঁজে পেতে ব্যর্থ হয়। উদ্ধারকারী দলের আধুনিক প্রযুক্তিগত সক্ষমতা আরও বেশি থাকলে তারা অল্প সময়ে শিশুটির অবস্থান নির্ণয় করে অক্সিজেন ও আলোর ব্যবস্থাসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে পারত। উদ্ধার কাজে ব্যবহৃত আধুনিক যন্ত্রপাতি পরিচালনার জন্য পর্যাপ্ত দক্ষ জনবল না থাকলে আধুনিক যন্ত্রপাতি থাকা সত্ত্বেও উদ্ধার কাজে কাক্সিক্ষত সুফল মিলবে না।
গভীর নলকূপে মোটা পাইপের ব্যবহার অপরিহার্য হলে ভূমি থেকে কয়েক ফুট নিচে গর্তের ভেতরে আড়াআড়িভাবে কয়েকটি প্লেট যুক্ত করে দিলে বড় মাপের কোনো বস্তু ওই প্লেটে আটকে থাকবে। আগামীতে যাতে জিহাদের মতো অন্য কোনো শিশুকে করুণ পরিণতি বরণ করতে না হয়, সে জন্য উদ্ধার কাজে ব্যবহৃত হয় এমন পর্যাপ্ত আধুনিক যন্ত্রপাতি সংগ্রহ করে বিশেষভাবে দক্ষ জনবল গড়ে তুলতে হবে। উদ্ধারকারী দল যাতে ঘটনাস্থলে স্বল্পতম সময়ে পৌঁছতে পারে তা-ও নিশ্চিত করা দরকার। যুক্তরাষ্ট্রে ৯১১ নম্বরে ডায়াল করলে উদ্ধারকারী দল স্বল্পতম সময়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছতে পারে। আমাদের দেশেও এ ধরনের স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। এ ধরনের প্রস্তুতি না থাকলে ভূমিকম্পসহ অন্য যে কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বেড়ে যাবে।
যে কোনো দুর্যোগ মোকাবেলায় আধুনিক প্রযুক্তির পাশাপাশি দেশীয় প্রযুক্তি ব্যবহার করার পরীক্ষা-নিরীক্ষাও অব্যাহত রাখলে কী সুফল মিলবে তা জিহাদের উদ্ধারে আমরা লক্ষ্য করলাম।
প্রফেসর এমআর কবির : প্রো-ভিসি, এশিয়া প্যাসিফিক বিশ্ববিদ্যালয়
ইতিমধ্যে প্রাপ্ত তথ্য থেকে জানা যায়- বিভিন্ন দেশে শিশুরা যেসব গভীর খাদে বা গর্তে পড়েছে, সেগুলোর গভীরতা প্রায় ৫০, ১০০ বা ২০০ ফুট। ২০০ ফুটের বেশি গভীর খাদ বা গর্তে কোনো শিশু পড়েছে এমন তথ্য আমাদের জানা নেই। কাজেই এ কাজে নিয়োজিত সরকারি উদ্ধারকারী দলের প্রস্তুতি থাকে মোটামুটি ২০০ বা ২৫০ ফুট গভীরে পড়ে যাওয়া কাউকে উদ্ধার করার।
কোনো গভীর খাদ বা গর্তের গভীরতা যত বাড়তে থাকে অক্সিজেনের পরিমাণ ততো কমতে থাকে। কোনো শিশু বা এমনকি বয়স্ক কেউ গর্তে পড়ে গেলে গভীর খাদে অক্সিজেনের স্বল্পতার কারণে বেশি সময় বেঁচে থাকা কঠিন হয়ে পড়ে। গভীর খাদে পড়ে যাওয়ার পর শারীরিক সমস্যা ছাড়াও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ার কারণে শারীরিক বিভিন্ন সমস্যা বেড়ে যায়। সাধারণভাবে ওই অবস্থায় অলৌকিক কিছু না ঘটলে বা কৃত্রিম উপায়ে অক্সিজেন সরবরাহ না করা হলে একজন স্বাভাবিক মানুষের পক্ষে কয়েক ঘণ্টার বেশি বেঁচে থাকা সম্ভব নয়। পরিত্যক্ত থাকার কারণে শাহজাহানপুরের নলকূপের গর্তটিতে কার্বনডাই-অক্সাইডের পরিমাণ বেশি থাকার আশংকা রয়েছে- যা মানুষের শ্বাস-প্রশ্বাসের স্বাভাবিক কর্মকাণ্ডে ব্যাঘাত ঘটাবে। এছাড়া পরিত্যক্ত পাইপ বা গভীর গর্তে আরও অন্যান্য দূষিত পদার্থ থাকা স্বাভাবিক। উদ্ধারকারী দল শাহজাহানপুরে দুর্ঘটনাকবলিত শিশুটির অবস্থান দ্রুত নির্ণয় করতে পারেনি এবং একপর্যায়ে শিশুটিকে খুঁজে পেতে ব্যর্থ হয়। উদ্ধারকারী দলের আধুনিক প্রযুক্তিগত সক্ষমতা আরও বেশি থাকলে তারা অল্প সময়ে শিশুটির অবস্থান নির্ণয় করে অক্সিজেন ও আলোর ব্যবস্থাসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে পারত। উদ্ধার কাজে ব্যবহৃত আধুনিক যন্ত্রপাতি পরিচালনার জন্য পর্যাপ্ত দক্ষ জনবল না থাকলে আধুনিক যন্ত্রপাতি থাকা সত্ত্বেও উদ্ধার কাজে কাক্সিক্ষত সুফল মিলবে না।
গভীর নলকূপে মোটা পাইপের ব্যবহার অপরিহার্য হলে ভূমি থেকে কয়েক ফুট নিচে গর্তের ভেতরে আড়াআড়িভাবে কয়েকটি প্লেট যুক্ত করে দিলে বড় মাপের কোনো বস্তু ওই প্লেটে আটকে থাকবে। আগামীতে যাতে জিহাদের মতো অন্য কোনো শিশুকে করুণ পরিণতি বরণ করতে না হয়, সে জন্য উদ্ধার কাজে ব্যবহৃত হয় এমন পর্যাপ্ত আধুনিক যন্ত্রপাতি সংগ্রহ করে বিশেষভাবে দক্ষ জনবল গড়ে তুলতে হবে। উদ্ধারকারী দল যাতে ঘটনাস্থলে স্বল্পতম সময়ে পৌঁছতে পারে তা-ও নিশ্চিত করা দরকার। যুক্তরাষ্ট্রে ৯১১ নম্বরে ডায়াল করলে উদ্ধারকারী দল স্বল্পতম সময়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছতে পারে। আমাদের দেশেও এ ধরনের স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। এ ধরনের প্রস্তুতি না থাকলে ভূমিকম্পসহ অন্য যে কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বেড়ে যাবে।
যে কোনো দুর্যোগ মোকাবেলায় আধুনিক প্রযুক্তির পাশাপাশি দেশীয় প্রযুক্তি ব্যবহার করার পরীক্ষা-নিরীক্ষাও অব্যাহত রাখলে কী সুফল মিলবে তা জিহাদের উদ্ধারে আমরা লক্ষ্য করলাম।
প্রফেসর এমআর কবির : প্রো-ভিসি, এশিয়া প্যাসিফিক বিশ্ববিদ্যালয়
No comments