টাইগারপাসে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা- মেয়েকে ছেড়ে চলে গেলেন বাবা
মোটরসাইকেল যোগে সকালে মেয়েকে কলেজে দিয়ে আসা এবং ছুটি শেষে আবার নিয়ে আসা- এটি ছিল ব্যবসায়ী মো. আলী আজগর টিটুর (৫০) নিত্যদিনের রুটিন। ছুটির পর আর বাবার জন্য অপেক্ষায় থাকতে হবে না মেয়ে আন্নিকে। প্রতিদিনের মতো বাবা ও মেয়ে আর এক সাথে বাসায়ও ফিরবে না। গতকাল সোমবার বেলা ৩ টার দিকে মোটরসাইকেল করে মেয়ে আন্নিকে নিয়ে কলেজ থেকে বাসায় ফেরার পথে লালখানবাজার এলাকায় মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় আলী আজর টিটু নিহত হন। এতে তার কলেজ পড়ুয়া মেয়ে মোছাম্মৎ আন্নি (১৮) গুরুতর আহত হয়েছে। সে এখন আগ্রাবাদস্থ চট্টগ্রাম মা ও শিশু জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। দুর্ঘটনার পর ওই সড়কে এক ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ ছিল।
জানা গেছে, নিহত আলী আজগর টিটু পেশায় একজন ব্যবসায়ী। তিনি ডবলমুরিং থানাধীন মোহাম্মদ আলীর পুত্র। ব্যবসা ছাড়াও টিটু বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদলের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন। আর আহত আন্নি দেওয়ানহাট সিটি কর্পোরেশন কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। তিন বোনের মধ্যে আন্নি সবার বড়।
গতকাল এ দুর্ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়লে টিটুর স্বজনদের কান্নায় পুরো এলাকা ভারী হয়ে উঠে। এলাকাবাসীর মধ্যে নেমে আসে শোকের ছায়া।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে দায়িত্বরত পুলিশ নায়েক জাহাঙ্গীর জানান, সোমবার বেলা তিনটার দিকে আলী আজগর টিটু মেয়েকে নিয়ে মোটর সাইকেলযোগে বাসায় ফেরার সময় লালখানবাজার ও টাইগারপাসের মাঝামাঝি স্থানে এ দুর্ঘটনা ঘটে। চট্টগ্রাম ওয়াসার পানিবাহী একটি গাড়ির সাথে তাদের মোটর সাইকেলের সংঘর্ষ হয়। এতে টিটু ও তার মেয়ে আন্নি গুরুতর আহত হন। আহতাবস্থায় তাদের চমেক হাসপাতালে আনা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক টিটুকে মৃত ঘোষণা করেন। আহত মেয়ে আন্নিকে আহত অবস্থায় নগরীর অন্যত্র হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করানো হয়।
জানা গেছে, মো. আলী আজগর টিটুর রাজনৈতিক কোন পদবী না থাকলেও ডবলমুরিং থানা যুবদলের সক্রিয় নেতা হিসাবে তার পরিচিতি ছিল। গতকাল তার মৃত্যুর খবর পেয়ে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের অনেক নেতাকর্মী হাসপাতালে ছুটে যান। এ ঘটনায় মহানগর বিএনপির সভাপতি আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর পক্ষ থেকে শোকবার্তা প্রেরণ করা হয়েছে। এদিকে আজ মঙ্গলবার বাদ জোহর নগরীর বায়তুশ শরফ জামে মসজিদ প্রাঙ্গণে মরহুমের নামাজে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে লাশ দাফন করা হবে বলে জানানো হয়েছে।
No comments