WE টিউব (লাইটস)! by শায়ের খান
সকাল সকাল এ ভুলে কোন লজ্জা নেই। আর বোম আঙ্কেল হলে তো কথাই নেই। ভুলে দিন শুরু, ভুলেই শেষ। ভোর ৫টায় ঘরের দরজায় টুক টুক করে টোকা দেন। খুলে দেখি আঙ্কেল। মুখে তর্জনি দিয়ে বলেন, ‘শ্ শ্ শ্। তোর আন্টি যেন না জানে। একটা হেল্প করবি?’ ফিসফিসিয়ে বলি, ‘কি?’ বলেন, ‘কাল ভুলে সুপার শপে টুথপেস্ট আর শেভিং জেল দুটোই ফেলে এসেছি। এখন তো আমার দুটোই দরকার। দেয়ার ইজ আ মিটিং। ঠাণ্ডা করি আঙ্কেলকে। ‘আমার দুটো নিয়ে যাও। একটু পরে দিয়ে যেও।’ ‘থ্যাঙ্কস’ বলে দুটো টিউব নিয়ে উধাও হন আঙ্কেল। আমি আবার বিছানায় গিয়ে পড়ি। পাশে কাফি ভাই উঠি উঠি করছেন। ঘণ্টাখানেক পর ফ্রেশেনিং কর্ম সেরে ফেরেন আঙ্কেল। এক হাতে দুই টিউব, আরেক হাত গালে। মুখ হা করে মুখ দিয়ে অনবরত ‘হা-হা’ করে হাঁপাচ্ছেন। পেস্ট আর জেলের টিউব ফেরত দিয়ে বলেন, ‘কোন টুথপেস্ট ব্যবহার করিসরে তুই? নামটা তো দেখলাম না।’ বলি, ‘আদি ও অকৃত্রিম কোলগেট।’ কয়লার ইঞ্জিনের মতো ‘হা-হা-হা’ শব্দ করতে করতে গালে হাত দিয়েই আবার উধাও আঙ্কেল। উঠে পড়েন কাফি ভাই। ঢুকে পড়েন বাথরুমে। আজ সকাল সকাল উনারও কি যেন ধান্ধাবাজি আছে, তাই এই আর্লি মর্নিং শেভ আর টুথব্রাশ ফায়ারিং। মেম আন্টির শব্দ পাই। হাঁটা আর গলা খাকারি। ব্রেকফাস্ট দিয়ে উনার কিচেন অ্যাকশন শুরু করবেন বোধ হয়। কার সাথে কথা বললেন যেন। সম্ভবত মিলিও উঠে এসেছে মায়ের সাথে। আমি বেডে গড়াগড়ি খাই। আজ কাজ নেই। স্বঘোষিত ছুটি। কাফি ভাই হঠাৎ বাথরুমের দরজা খুলে উঁকি দেন। বলেন, ‘মামা তো টুথপেস্ট একেবারে শেষ করে ফেলেছে রে। ব্রাশে কি লাগাব?’ বলি, ‘ঐ চিপে চুপে যা পাও তা দিয়েই ব্রাশ ফায়ার কর।’ কাফি ভাই তাই-ই করেন। ঠাস করে বাথরুমের দরজা বন্ধ করে ফেলেন আবার। আধা ঘণ্টা যায়নি, বাথরুমের দরজা দড়াম করে খুলে হঠাৎ আঙ্কেলের মতোই গালে হাত দিয়ে মুখে ‘হা-হা-হা’ শব্দ তুলে উদভ্রান্তের মতো দৌড় লাগান ডাইনিং রুমের দিকে। আমি কিছু বুঝে ওঠার আগেই আমার দরজা বন্ধ হয়ে ভেতর থেকে লক্ড হয়ে যায়। যা হচ্ছে হোক। ছুটির দিন। একটু গড়িয়ে নেই।
চোখ বন্ধ করেছি মাত্র, ডাইনিং রুমে যেন একটা মৃদু শোরগোল শুনতে পাই। কিছু বুঝে ওঠার আগেই আমার বন্ধ দরজায় দড়াম দড়াম ঘুষির শব্দ। সাথে মেম আন্টি আর মিলির অস্পষ্ট চিৎকার! তড়াক করে লাফ দিয়ে উঠে দরজা খুলি। সর্বনাশ। একি? মেম আন্টির রুদ্র মূর্তি। চিৎকার করে বলেন, ‘এ্যাই, তোর আঙ্কেল কে কি খাইয়েছিস ঠিক করে বল্।’ আন্টির ওপর আরেক স্কেল গলা চড়ায় মিলি, ‘কাফির অবস্থা তো আরও খারাপ!’ বলেই ওরা আবার ডাইনিং রুমে ছোটে। মানে? গিয়ে দেখি আঙ্কেল চেয়ারে গালে হাত দিয়ে বসে চামচ দিয়ে আধমরার মতো ঠাণ্ডা ক্ষির পায়েশ খাওয়ার চেষ্টা করছেন। মনে হচ্ছে ডেন্টাল পেশেন্ট। কিছুটা মেন্টাল-ও। আন্টি আদর করে বলছেন, ‘খাও, আরেক চামচ খাওয়ার চেষ্টা কর।’
আর ওদিকে ফ্রিজের সামনে তো ভয়াবহ অবস্থা। ফ্রিজ খোলা। কাফি ভাই ফ্লোরে বসে পাগলের মতো ফ্রিজের ভেতর হাত ঢুকিয়ে ভেতরের বাটি থেকে গপাগপ কয়েকটি রসগোল্লা গিলছেন আর মিলি ভেজা টিস্যু দিয়ে আস্তে আস্তে ওনার গাল মুছে দিচ্ছে। আমাকে দেখে প্রায় কেঁদেই ফেলেন কাফি ভাই। বলেন, ‘কল্লোল রে, তোর শেভিং ক্রিমটা কি গুলিস্তানের ফুটপাথ থেকে কিনেছিস নাকিরে ভাই? যত ঘষি, একটুও ফেনা ওঠে না। রেজারের টানে গালের ছাল উঠে গেছে রে!’ আর মেম আন্টি আকাশ ফাটিয়ে চিৎকার করে ওঠেন, ‘টুথপেস্টটা কতদিনের পুরনো অ্যাঁ? তোর আঙ্কেলের ঠোঁট থেকে গলা পর্যন্ত মোচড় দিচ্ছে?’ ‘গলা না, পেট পর্যন্ত’, কেঁদে কেঁদে কাফি ভাই বলেন আর তেতো পেটে আরেকটি রসগোল্লা চালান দেন।
ধপাস করে বসে পড়ি। মাথা চুলকাই। কিছুই বুঝে উঠতে পারি না। আমার টুথপেস্ট, শেভিং জেল, হেয়ার অয়েল সব-ই তো ব্র্যান্ডেড? হঠাৎ কি মনে হয়। গট ইট্! দৌড়ে গিয়ে প্রথমে কাফি ভাইয়ের আর তারপর আঙ্কেলের গাল শুঁকি। আর তার পরপরই দৌড়ে বাথরুমে গিয়ে আবার ফিরে আসি হাতে দু’টো টিউব নিয়ে। কাফি ভাইকে একটা টিউব দেখিয়ে বলি, ‘তুমি এটা দিয়ে শেভ করেছিলে!’ বাচ্চা ছেলের মতো কেঁদে ফেলে বলেন কাফি ভাই, ‘হ্যাঁ- অ্যাঁ- অ্যাঁ-!’ মিষ্টি মেশানো থাকায় সেটা ভেড়ার ‘ভ্যাঁ-অ্যা’র মতো শোনায়। এবার দৌড়ে বোম আঙ্কেলের সামনে আরেক টিউব তুলে বলি, ‘তুমি এটা দিয়ে দাঁত ব্রাশ করেছো?’ আঙ্কেল নির্লিপ্তের মতো গালে হাত রেখে কেবল মাথা ওঠান আর নামান। এবার চিৎকার করে আমি-ই বলে উঠি, ‘তো তোমরা টুথপেস্ট দিয়ে শেভ করবে আর শেভিং জেল দিয়ে দাঁত ব্রাশ করবে- তোমাদের পেট মোচড়াবে না তো কি মাথা মোচড়াবে?’ ইলেকট্রিক শখ খাওয়ার মতো মেম আন্টি, বোম আঙ্কেল, মিলি, আর কাফি ভাই আমার দিকে তাকান। কোরাসে বলে ওঠে সবাই, ‘অ্যাঁ- অ্যাঁ- অ্যাঁ?’
চোখ বন্ধ করেছি মাত্র, ডাইনিং রুমে যেন একটা মৃদু শোরগোল শুনতে পাই। কিছু বুঝে ওঠার আগেই আমার বন্ধ দরজায় দড়াম দড়াম ঘুষির শব্দ। সাথে মেম আন্টি আর মিলির অস্পষ্ট চিৎকার! তড়াক করে লাফ দিয়ে উঠে দরজা খুলি। সর্বনাশ। একি? মেম আন্টির রুদ্র মূর্তি। চিৎকার করে বলেন, ‘এ্যাই, তোর আঙ্কেল কে কি খাইয়েছিস ঠিক করে বল্।’ আন্টির ওপর আরেক স্কেল গলা চড়ায় মিলি, ‘কাফির অবস্থা তো আরও খারাপ!’ বলেই ওরা আবার ডাইনিং রুমে ছোটে। মানে? গিয়ে দেখি আঙ্কেল চেয়ারে গালে হাত দিয়ে বসে চামচ দিয়ে আধমরার মতো ঠাণ্ডা ক্ষির পায়েশ খাওয়ার চেষ্টা করছেন। মনে হচ্ছে ডেন্টাল পেশেন্ট। কিছুটা মেন্টাল-ও। আন্টি আদর করে বলছেন, ‘খাও, আরেক চামচ খাওয়ার চেষ্টা কর।’
আর ওদিকে ফ্রিজের সামনে তো ভয়াবহ অবস্থা। ফ্রিজ খোলা। কাফি ভাই ফ্লোরে বসে পাগলের মতো ফ্রিজের ভেতর হাত ঢুকিয়ে ভেতরের বাটি থেকে গপাগপ কয়েকটি রসগোল্লা গিলছেন আর মিলি ভেজা টিস্যু দিয়ে আস্তে আস্তে ওনার গাল মুছে দিচ্ছে। আমাকে দেখে প্রায় কেঁদেই ফেলেন কাফি ভাই। বলেন, ‘কল্লোল রে, তোর শেভিং ক্রিমটা কি গুলিস্তানের ফুটপাথ থেকে কিনেছিস নাকিরে ভাই? যত ঘষি, একটুও ফেনা ওঠে না। রেজারের টানে গালের ছাল উঠে গেছে রে!’ আর মেম আন্টি আকাশ ফাটিয়ে চিৎকার করে ওঠেন, ‘টুথপেস্টটা কতদিনের পুরনো অ্যাঁ? তোর আঙ্কেলের ঠোঁট থেকে গলা পর্যন্ত মোচড় দিচ্ছে?’ ‘গলা না, পেট পর্যন্ত’, কেঁদে কেঁদে কাফি ভাই বলেন আর তেতো পেটে আরেকটি রসগোল্লা চালান দেন।
ধপাস করে বসে পড়ি। মাথা চুলকাই। কিছুই বুঝে উঠতে পারি না। আমার টুথপেস্ট, শেভিং জেল, হেয়ার অয়েল সব-ই তো ব্র্যান্ডেড? হঠাৎ কি মনে হয়। গট ইট্! দৌড়ে গিয়ে প্রথমে কাফি ভাইয়ের আর তারপর আঙ্কেলের গাল শুঁকি। আর তার পরপরই দৌড়ে বাথরুমে গিয়ে আবার ফিরে আসি হাতে দু’টো টিউব নিয়ে। কাফি ভাইকে একটা টিউব দেখিয়ে বলি, ‘তুমি এটা দিয়ে শেভ করেছিলে!’ বাচ্চা ছেলের মতো কেঁদে ফেলে বলেন কাফি ভাই, ‘হ্যাঁ- অ্যাঁ- অ্যাঁ-!’ মিষ্টি মেশানো থাকায় সেটা ভেড়ার ‘ভ্যাঁ-অ্যা’র মতো শোনায়। এবার দৌড়ে বোম আঙ্কেলের সামনে আরেক টিউব তুলে বলি, ‘তুমি এটা দিয়ে দাঁত ব্রাশ করেছো?’ আঙ্কেল নির্লিপ্তের মতো গালে হাত রেখে কেবল মাথা ওঠান আর নামান। এবার চিৎকার করে আমি-ই বলে উঠি, ‘তো তোমরা টুথপেস্ট দিয়ে শেভ করবে আর শেভিং জেল দিয়ে দাঁত ব্রাশ করবে- তোমাদের পেট মোচড়াবে না তো কি মাথা মোচড়াবে?’ ইলেকট্রিক শখ খাওয়ার মতো মেম আন্টি, বোম আঙ্কেল, মিলি, আর কাফি ভাই আমার দিকে তাকান। কোরাসে বলে ওঠে সবাই, ‘অ্যাঁ- অ্যাঁ- অ্যাঁ?’
No comments