এফবিআইকে ঘুষ দেয়ার কথা স্বীকার করলো রিজভি আহমেদ ওরফে সিজার
বাংলাদেশের প্রথম সারির একজন রাজনীতিকের গোপন তথ্য বের করতে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআইয়ের এক এজেন্টকে ঘুষ দিয়েছিলেন আরেক বাংলাদেশী রিজভি আহমেদ ওরফে সিজার (৩৫)। শুধু তা-ই নয়, এ পরিকল্পনায় জড়িত হয়েছিলেন আরেক মার্কিনি জোহানেস থ্যালার (৫১)। সিজারের প্রতিপক্ষের এক রাজনীতিকের বিরুদ্ধে এমন ষড়যন্ত্রে বিপুল পরিমাণ অর্থের লেনদেন নিয়ে দর কষাকষি হয় থ্যালার ও রিজভির মধ্যে। এতে বলা হয় তথ্য দেয়ার জন্য দিতে হবে ৪০০০০ ডলার। এর পর মাসে দিতে হবে ৩০ হাজার ডলার। এসব ঘটনা ঘটে ২০১১ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০১২ সালের মার্চ মাসের মধ্যে। ঘটনা পুরনো হলেও রিজভি ও থ্যালার তাদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ স্বীকার করেছেন ১৭ই অক্টোবর, শুক্রবার। আগামী ২৩শে জানুয়ারি এ মামলার রায় দেয়ার কথা। এ মামলায় বলা হয়েছে রিজভি আহমেদ ওরফে সিজার একজন বাংলাদেশী। তিনি ও জোহানেস থ্যালারের বসবাস যুক্তরাষ্ট্রের কানেকটিকাটে। শুক্রবার তাদের বিরুদ্ধে নিউ ইয়র্কের একটি ফেডারেল আদালতে শুনানি হয়। এ সময় দু’জনেই আনীত অভিযোগ স্বীকার করেন। তারা বলেন, বাংলাদেশে রিজভির বিরুদ্ধ দলীয় একজন প্রথম সারির রাজনৈতিক নেতার বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার তথ্য সংগ্রহের জন্য এফবিআইয়ের সাবেক এজেন্ট রবার্ট লুসতিয়িকের সঙ্গে তিনি যোগাযোগ করেন। এক্ষেত্রে ঘুষের আশ্রয় নেয়া হয়। যুক্তরাষ্ট্রের জাস্টিস ডিপার্টমেন্টের ক্রিমিনাল ডিভিশনের সহকারী এটর্নি জেনারেল লেসলি আর ক্যাল্ডওয়েল, নিউ ইয়র্কের সাউদার্ন ডিস্ট্রিক্টে যুক্তরাষ্ট্রের এটর্নি প্রিত ভারারা ও জাস্টিস ডিপার্টমেন্ট ইন্সপেক্টর জেনারেল মাইকেল ডি হরোউইটজ এ ঘোষণা দিয়েছেন। তারা বলেছেন, রিজভি আহমেদ ও থ্যালার স্বীকার করেছেন যে, ২০১১ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০১২ সালের মার্চের মধ্যে ওই রাজনীতিকের বিষয়ে অভ্যন্তরীণ, গোপনীয় দলিল ও অন্যান্য গোপনীয় বিষয় বের করে আনতে রিজভির কাছ থেকে ঘুষ নেন থ্যালার ও লুসতিয়িক। এক্ষেত্রে লুসতিয়িককে ঘুঁটি হিসেবে ব্যবহার করা হয়। কারণ তিনি তখন এফবিআইয়ের স্পেশাল এজেন্ট। ফলে রিজভির কাঙ্ক্ষিত তথ্য বের করে আনা তার পক্ষে সহজ। উল্লেখ্য, লুসতিয়িকের বন্ধু থ্যালাস। রিজভি আহমেদ ও থ্যালার স্বীকার করেছেন, রিজভি আহমেদ যে তথ্য চাইছেন সেই গোপনীয় তথ্য দিয়ে তার বিরুদ্ধ রাজনীতিককে ঘায়েল করতে সহায়তা করতে চুক্তিবদ্ধ হন থ্যালার। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের শুধু ওই রাজনীতিবিদেরই নয়, তার যেসব সহযোগী আছেন তাদেরও ক্ষতি করার উদ্দেশ্য ছিল রিজভির।
কিন্তু তাকে এ সব তথ্য দেয়ার ক্ষেত্রে তার কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করে নেয়ার ফন্দি আঁটে থ্যালার ও লুসতিয়িক। এ জন্য তারা নিজেদের মধ্যে বেশ কিছু টেক্সট মেসেজ বিনিময় করে। তাতে পরিষ্কার হয়ে ওঠে যে, তারা রিজভির কাছ থেকে কিভাবে অর্থ আদায়ের চেষ্টা করেছিল। ২০১২ সালের জানুয়ারি মাসের শেষের দিকে লুসতিয়িক জানতে পারে যে, কাঙ্ক্ষিত তথ্য সংগ্রহের জন্য রিজভি আহমেদ ব্যবহার করছে অন্য সোর্স। এ কথা জানার পর থ্যালারের কাছে একটি টেক্টস মেসেজ পাঠায় লুসতিয়িক। তাতে সে লেখে- আমি রিজভি আহমেদকে হত্যা করতে চাই। তুমি রিজভিকে বলো আমি তার কাঙ্ক্ষিত ব্যক্তির সিরিয়াল নাম্বার পেয়েছি। তা আমি তাড়াতাড়িই বের করে আনবো। এ মামলায় লুসতিয়িকের বিরুদ্ধে শুনানি হবে আগামী ১৭ই নভেম্বর।
No comments