কে হায় 'রাস্তা' খুঁড়ে... by একরামুল হক শামীম
রূপসী বাংলার কবি জীবনানন্দ দাশ 'হায় চিল'
কবিতায় লিখেছেন, 'কে হায় হৃদয় খুঁড়ে বেদনা জাগাতে ভালোবাসে'। হৃদয় খুঁড়ে
বেদনা জাগাতে চাওয়া লোকজনের সংখ্যা হিসাব করে বলা কঠিন।
নিয়মের বেড়াজালে পড়ে কিংবা স্মৃতি রোমন্থনের তাড়নায় কাউকে কাউকে হয়তো হৃদয়
খুঁড়ে বেদনা জাগাতে হয়। খুলে দিতে হয় হৃদয়ের ঝাঁপি। সেখানে টুপ করে এসে
হাজির হয় পুরনো বেদনারা। জীবনানন্দ এখন থাকলে ঢাকার কিছু রাস্তা দেখে
অনুভূতিকে স্থান দিতে পারতেন কবিতার পঙ্ক্তিতে। কবিতার লাইন হয়তো হতো এমন_
'কে হায় রাস্তা খুঁড়ে কাদা জাগাতে ভালোবাসে!' ইতিবাচক আলোচনায় বিশ্বাসীরা
বলে বসতে পারেন, কাদা মাটি নিয়েই তো এই আমাদের দেশ। মাঝে মধ্যে তো মাটির
সোঁদা গন্ধ টের পাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় কাজ সেরে রাখা যায়। এমনিতেই রাজধানী
ঢাকাকে বলা হয় ইট-পাথরের নগরী। অভিযোগ রয়েছে, ইট-পাথরের জঞ্জালে থাকতে
থাকতে হৃদয়ের সূক্ষ্ম অনুভূতিগুলোকে হারাতে বসেছে এই নগরীর বাসিন্দারা।
তাহলে তো বলাই যায়, মাঝে মধ্যে নগরীর মানুষের সামনে কাদামাটি হাজির করে
দেওয়া মন্দ কাজ না। সেই কাজটিই তো করছেন রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি বিশেষজ্ঞরা। তবে
কিঞ্চিৎ সমস্যা হলো, রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি বিশেষজ্ঞরা বড্ড বেশি
বর্ষাপ্রেমিক!
বর্ষা মৌসুম এলেই বিভিন্ন রাস্তায় খোঁড়াখুঁড়ির তোড়জোড় শুরু হয়। রাস্তা খুঁড়ে দুই পাশে মাটির স্তূপ করে রাখা হয়। পাশেই থাকে বড় বড় পাইপ। কর্মযজ্ঞের যেন শেষ নেই। বৃষ্টি এলে সেই কর্মযজ্ঞে বাঁধা পড়ে। আশপাশের স্তূপকৃত মাটি আর বৃষ্টির পানি মিশে তৈরি হয় ত্রাহি অবস্থা। পথচারীদের জন্য সে অন্যরকম বিপত্তি। তাই বলে কেবল পথচারীদের কথা ভেবে রাস্তার সংস্কার কাজ থামিয়ে দেওয়া তো চলবে না। যুক্তি আসতে পারে, রাস্তা সংস্কারে আর বর্ষা-হেমন্ত কী! কাকতালীয় কারণে হয়তো কেবল বর্ষাতেই সব কাজ পড়ে যায়।
বর্ষা মৌসুমে রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি করে কাদাপানিতে একাকার করে রাখা প্রসঙ্গে সম্প্রতি এক বন্ধুর সঙ্গে আলাপ হলো। তিনি অনেকটা মজা করেই বললেন, বর্ষাকালে বৃষ্টিতে ভিজে মাটি নরম হয়। এ জন্যই হয়তো বর্ষাকালে রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি হয় বেশি। কাজ করতে সুবিধা হয়। তাছাড়া বৃষ্টি নামলে কাজ ফাঁকি দেওয়ার সুযোগও থাকে। জানি না এ ব্যাখ্যা কতটা ঠিক। তবে সাম্প্রতিক সময়ে যারা রাজধানীর ব্যাস্ততম এলাকা ফার্মগেটে গিয়েছেন তারা হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছেন বষায় রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ির মর্ম। ওভারব্রিজের পাশের রাস্তা কাদামাটিতে একাকার।
যারা রাস্তার সংস্কার কাজ করেন তারা এত বর্ষাপ্রেমিক কেন? এর পেছনে নাকি মোক্ষম কারণ রয়েছে। তবে অবশ্যই সেটি প্রকৃতিপ্রেম নয়। 'জুন ফাইনাল' কাণ্ড নাকি এর জন্য দায়ী। প্রশ্ন উঠতে পারে, কী সেই 'জুন ফাইনাল' কাণ্ড। এর সঙ্গে অর্থবছরের হিসাব জড়িত। একটি অর্থবছর জুলাই মাসে শুরু হয়ে পরবর্তী ক্যালেন্ডার বছরের জুন মাসে শেষ হয়। ফলে যখন একটি অর্থবছরে রাস্তা সংস্কারের জন্য অর্থ বরাদ্দ করা হয়, সেটি পরবর্তী জুন মাসের মধ্যে শেষ করতে হয়। আমলাতান্ত্রিক নানা জটিলতা ও ফাইল-ফিতার দৌরাত্ম্যে প্রায় সময়ই প্রকল্প পাস করতে দেরি হয়ে যায়। এ জন্য অর্থবছরের শেষ দিকে অনেক কাজ জমে যায়। তখন জুন মাসের দিকে রাস্তা সংস্কারের অনেক কাজ শুরু হয়। বর্ষপঞ্জির হিসাবে জুন মাসে বর্ষা মৌসুম পড়ে যায়। কী আর করা! কাদামাটির রাস্তায় হেঁটে জুন ফাইনাল কাণ্ডের কিছু দায় পথচারীকেই নিতে নয়।
বর্ষা মৌসুম এলেই বিভিন্ন রাস্তায় খোঁড়াখুঁড়ির তোড়জোড় শুরু হয়। রাস্তা খুঁড়ে দুই পাশে মাটির স্তূপ করে রাখা হয়। পাশেই থাকে বড় বড় পাইপ। কর্মযজ্ঞের যেন শেষ নেই। বৃষ্টি এলে সেই কর্মযজ্ঞে বাঁধা পড়ে। আশপাশের স্তূপকৃত মাটি আর বৃষ্টির পানি মিশে তৈরি হয় ত্রাহি অবস্থা। পথচারীদের জন্য সে অন্যরকম বিপত্তি। তাই বলে কেবল পথচারীদের কথা ভেবে রাস্তার সংস্কার কাজ থামিয়ে দেওয়া তো চলবে না। যুক্তি আসতে পারে, রাস্তা সংস্কারে আর বর্ষা-হেমন্ত কী! কাকতালীয় কারণে হয়তো কেবল বর্ষাতেই সব কাজ পড়ে যায়।
বর্ষা মৌসুমে রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি করে কাদাপানিতে একাকার করে রাখা প্রসঙ্গে সম্প্রতি এক বন্ধুর সঙ্গে আলাপ হলো। তিনি অনেকটা মজা করেই বললেন, বর্ষাকালে বৃষ্টিতে ভিজে মাটি নরম হয়। এ জন্যই হয়তো বর্ষাকালে রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি হয় বেশি। কাজ করতে সুবিধা হয়। তাছাড়া বৃষ্টি নামলে কাজ ফাঁকি দেওয়ার সুযোগও থাকে। জানি না এ ব্যাখ্যা কতটা ঠিক। তবে সাম্প্রতিক সময়ে যারা রাজধানীর ব্যাস্ততম এলাকা ফার্মগেটে গিয়েছেন তারা হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছেন বষায় রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ির মর্ম। ওভারব্রিজের পাশের রাস্তা কাদামাটিতে একাকার।
যারা রাস্তার সংস্কার কাজ করেন তারা এত বর্ষাপ্রেমিক কেন? এর পেছনে নাকি মোক্ষম কারণ রয়েছে। তবে অবশ্যই সেটি প্রকৃতিপ্রেম নয়। 'জুন ফাইনাল' কাণ্ড নাকি এর জন্য দায়ী। প্রশ্ন উঠতে পারে, কী সেই 'জুন ফাইনাল' কাণ্ড। এর সঙ্গে অর্থবছরের হিসাব জড়িত। একটি অর্থবছর জুলাই মাসে শুরু হয়ে পরবর্তী ক্যালেন্ডার বছরের জুন মাসে শেষ হয়। ফলে যখন একটি অর্থবছরে রাস্তা সংস্কারের জন্য অর্থ বরাদ্দ করা হয়, সেটি পরবর্তী জুন মাসের মধ্যে শেষ করতে হয়। আমলাতান্ত্রিক নানা জটিলতা ও ফাইল-ফিতার দৌরাত্ম্যে প্রায় সময়ই প্রকল্প পাস করতে দেরি হয়ে যায়। এ জন্য অর্থবছরের শেষ দিকে অনেক কাজ জমে যায়। তখন জুন মাসের দিকে রাস্তা সংস্কারের অনেক কাজ শুরু হয়। বর্ষপঞ্জির হিসাবে জুন মাসে বর্ষা মৌসুম পড়ে যায়। কী আর করা! কাদামাটির রাস্তায় হেঁটে জুন ফাইনাল কাণ্ডের কিছু দায় পথচারীকেই নিতে নয়।
No comments