২২ কোটি টাকার খাদ্য গবেষণাগার-ঘটা করে উদ্বোধন, তারপর ৯ মাস অলস
ভেজাল খাবারে বাজার যখন সয়লাব, তখন অলস
পড়ে আছে ২২ কোটি টাকার ন্যাশনাল ফুড সেফটি ল্যাবরেটরি। ৯ মাস আগে
অত্যাধুনিক এ খাদ্য গবেষণাগারটি উদ্বোধন করা হয়েছিল ঘটা করে। কিন্তু
নিয়োগবিধি না থাকায় জনবল পাওয়া যায়নি।
নিয়োগবিধি তৈরি করে
কবে নাগাদ গবেষণাগারটি কার্যকর করা যাবে, তা কেউ জানেন না। এ ব্যাপারে
জানতে চাইলে স্বাস্থ্যসচিব এম এম নিয়াজউদ্দিন কালের কণ্ঠকে বলেন,
'নিয়োগবিধি নিয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ও অর্থ মন্ত্রণালয় কাজ করছে। এ দুটো
মন্ত্রণালয় থেকে ছাড় পাওয়া গেলে দ্রুত তা চূড়ান্ত করা হবে। এরপর জনবল নিয়োগ
দিতে কোনো সমস্যা থাকবে না।'
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব আবদুস সোবহান সিকদার কালের কণ্ঠকে বলেন, 'প্রয়োজনীয় কাগজপত্র থাকলে নিয়োগবিধির অনুমোদন দিতে বিলম্ব হওয়ার কোনো কারণ নেই। আমি এই মুর্হূতে অফিসের বাইরে থাকায় এ সম্পর্কে বলতে পারছি না।'
বর্তমানে খাদ্যের ভেজাল পরীক্ষা-নিরীক্ষা হচ্ছে জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের পরীক্ষাগার পাবলিক হেলথ ল্যাবরেটরিতে। আধুনিক যন্ত্রপাতি না থাকার কারণে পুরনো এ ল্যাবরেটরিটিতে মানবস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর বিভিন্ন কেমিক্যাল, রাসায়নিক, পেসটিসাইড, কৃত্রিম রং এবং ফরমালিনের সংমিশ্রণ পরীক্ষা করা সম্ভব হচ্ছে না। এ বিষয়টিও খাদ্যের ভেজাল বৃদ্ধিতে পরোক্ষভাবে ভূমিকা রাখছে। এ অবস্থায় বাংলাদেশকে একটি আধুনিক গবেষণাগার প্রতিষ্ঠায় সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেয় ইউরোপীয় ইউনিয়ন।
২০০৯ সালে বাংলাদেশের খাদ্য নিরাপত্তার উন্নয়ন নামে একটি প্রকল্প নেওয়া হয়। প্রকল্পের আওতায় ন্যাশনাল ফুড সেফটি ল্যাবরেটরি প্রতিষ্ঠা করা হয় ২২ কোটি টাকা ব্যয়ে। রাজধানীর মহাখালীতে জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের মূল অফিস চত্বরে এই ল্যাবরেটরি। পুরনো ল্যাবরেটরির পাশেই অত্যাধুনিক ল্যাবরেটরি করা হয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের অর্থায়নে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (ফাও) প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে এই প্রকল্পটি চলছে। প্রকল্পের প্রথম পর্বের টাকা দিয়ে ল্যাবরেটরির যন্ত্রপাতি কেনা, স্থাপন থেকে শুরু করে কিছু লোকের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। দ্বিতীয় পর্বেও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহায়তা রয়েছে। এই পর্ব শেষে সরকারি অর্থে ল্যাবরেটরিটি চালাতে হবে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী রুহুল হক গত বছরের অক্টোবরে ল্যাবরেটরিটি উদ্বোধন করেন। এরপর খাদ্যমন্ত্রী ড. মো. আবদুর রাজ্জাক ল্যাবরেটরিটি পরিদর্শন করেন। ল্যাবরেটরিতে দেশি ও আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের উপস্থিতিতে বিভিন্ন উৎস থেকে সংগৃহীত আপেল, টমেটো, শুঁটকি মাছ, পামওয়েল ও সয়াবিন তেল, খাদ্যে কৃত্রিম রঙের নমুনা পরীক্ষার মাধ্যমে যন্ত্রপাতির কর্মক্ষমতা যাচাই করা হয়েছে। পানি ও চালে আর্সেনিক, হলুদে সীসা এবং চা ও সফট ড্রিংকসের ক্যাফেইন নমুনা পরীক্ষা চালু হয়েছে। এ ছাড়া পানির বায়োলজিক্যাল ও মাইক্রোবায়োলজিক্যাল নমুনা পরীক্ষা চালু হয়েছে। ন্যাশনাল ফুড সেফটি ল্যাবরেটরিতে সর্বাধুনিক প্রযুক্তির যন্ত্রপাতি স্থাপন করা হয়েছে। ল্যাবরেটরিতে জিসি, জিসিএমএস, এইচপিএলসি, এইচপিটিএলসি, এএএস, এলসিএমএস মেশিন স্থাপন করা হয়েছে। ল্যারেটরিটি পরীক্ষামূলকভাবে জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের ১৯ জন মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট দিয়ে চলছে। তাঁরা সবাই জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারী।
জনস্বাস্থ্য ইনস্টিউটের উপপরিচালক ও ন্যাশনাল ফুড সেফটি ল্যাবরেটরির চিফ এনালিস্ট ড. আবদুর রাজ্জাক বলেন, ল্যাবরেটরির মেশিনারিজ পরিচালনার জন্য কয়েকজন বায়োকেমিস্ট্রি, মাইক্রোবায়োলজি, ল্যাবরেটরি টেকনোলজিতে এমএস, পাবলিক হেলথে মাস্টার্স বা পিএইচডি ও ল্যাবরেটরি টেকনোলজিতে ডিপ্লোমাধারীদের পদায়ন করা হয়েছে। তাদের দেশে-বিদেশে বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে এবং প্রশিক্ষণ প্রক্রিয়া চালু রয়েছে। আরো দক্ষ জনবল পদায়নের জন্য নতুন অর্গানোগ্রাম অনুযায়ী পদ সৃষ্টির কাজ চলছে। বিষয়টি বর্তমানে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিবেচনায় রয়েছে।
জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে কালের কণ্ঠকে বলেন, জনবল ছাড়া প্রতিষ্ঠান চালু করা বাংলাদেশের সংস্কৃতিতে পরিণত হয়েছে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান চালু হচ্ছে জনবল ছাড়া। সরকারি হাসপাতালে বিভিন্ন যন্ত্রপাতি কেনা হচ্ছে যেগুলো চালানোর লোক নেই। ভেজাল খাদ্য থেকে সাধারণ মানুষকে রক্ষার জন্য গবেষণাগারটি দ্রুত কার্যকর করা উচিত। সাধারণ মানুষ খাবার নিয়ে খুব উদ্বেগের মধ্যে দিন কাটায়। কারণ খাদ্যে ভেজাল দিন দিনই বাড়ছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো খসড়ায় জনবল কাঠামোতে কয়টি পদ রয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ৫৯টি।
ল্যাবরেটরির গুটিকয়েক গবেষকের সঙ্গে আলোচনা করে নিয়োগবিধির বিষয়ে তাঁদের উদ্বেগ লক্ষ করা গেছে। তাঁরা জানিয়েছেন, নিয়োগবিধি চূড়ান্ত হওয়ার পর বাইরে থেকে লোক নিয়োগ দিয়ে এ গবেষণাগারটি কার্যকর করতে কয়েক বছর লেগে যাবে। যাঁরা বর্তমানে কর্মরত আছেন, তাঁরা দেশে-বিদেশে বিভিন্ন প্রশিক্ষণে অংশ নিচ্ছেন। তাঁদের দক্ষতা এবং প্রয়োজনীয় শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকলে জনবল নিয়োগের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত। তা হলেই গবেষণাগারটি দ্রুত কার্যকর করা সম্ভব। তা করা না হলে নতুন জনবল বাছাইয়ে অনেক সময় লাগবে। তাদের প্রশিক্ষণে লেগে যাবে আরো সময়।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব আবদুস সোবহান সিকদার কালের কণ্ঠকে বলেন, 'প্রয়োজনীয় কাগজপত্র থাকলে নিয়োগবিধির অনুমোদন দিতে বিলম্ব হওয়ার কোনো কারণ নেই। আমি এই মুর্হূতে অফিসের বাইরে থাকায় এ সম্পর্কে বলতে পারছি না।'
বর্তমানে খাদ্যের ভেজাল পরীক্ষা-নিরীক্ষা হচ্ছে জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের পরীক্ষাগার পাবলিক হেলথ ল্যাবরেটরিতে। আধুনিক যন্ত্রপাতি না থাকার কারণে পুরনো এ ল্যাবরেটরিটিতে মানবস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর বিভিন্ন কেমিক্যাল, রাসায়নিক, পেসটিসাইড, কৃত্রিম রং এবং ফরমালিনের সংমিশ্রণ পরীক্ষা করা সম্ভব হচ্ছে না। এ বিষয়টিও খাদ্যের ভেজাল বৃদ্ধিতে পরোক্ষভাবে ভূমিকা রাখছে। এ অবস্থায় বাংলাদেশকে একটি আধুনিক গবেষণাগার প্রতিষ্ঠায় সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেয় ইউরোপীয় ইউনিয়ন।
২০০৯ সালে বাংলাদেশের খাদ্য নিরাপত্তার উন্নয়ন নামে একটি প্রকল্প নেওয়া হয়। প্রকল্পের আওতায় ন্যাশনাল ফুড সেফটি ল্যাবরেটরি প্রতিষ্ঠা করা হয় ২২ কোটি টাকা ব্যয়ে। রাজধানীর মহাখালীতে জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের মূল অফিস চত্বরে এই ল্যাবরেটরি। পুরনো ল্যাবরেটরির পাশেই অত্যাধুনিক ল্যাবরেটরি করা হয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের অর্থায়নে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (ফাও) প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে এই প্রকল্পটি চলছে। প্রকল্পের প্রথম পর্বের টাকা দিয়ে ল্যাবরেটরির যন্ত্রপাতি কেনা, স্থাপন থেকে শুরু করে কিছু লোকের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। দ্বিতীয় পর্বেও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহায়তা রয়েছে। এই পর্ব শেষে সরকারি অর্থে ল্যাবরেটরিটি চালাতে হবে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী রুহুল হক গত বছরের অক্টোবরে ল্যাবরেটরিটি উদ্বোধন করেন। এরপর খাদ্যমন্ত্রী ড. মো. আবদুর রাজ্জাক ল্যাবরেটরিটি পরিদর্শন করেন। ল্যাবরেটরিতে দেশি ও আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের উপস্থিতিতে বিভিন্ন উৎস থেকে সংগৃহীত আপেল, টমেটো, শুঁটকি মাছ, পামওয়েল ও সয়াবিন তেল, খাদ্যে কৃত্রিম রঙের নমুনা পরীক্ষার মাধ্যমে যন্ত্রপাতির কর্মক্ষমতা যাচাই করা হয়েছে। পানি ও চালে আর্সেনিক, হলুদে সীসা এবং চা ও সফট ড্রিংকসের ক্যাফেইন নমুনা পরীক্ষা চালু হয়েছে। এ ছাড়া পানির বায়োলজিক্যাল ও মাইক্রোবায়োলজিক্যাল নমুনা পরীক্ষা চালু হয়েছে। ন্যাশনাল ফুড সেফটি ল্যাবরেটরিতে সর্বাধুনিক প্রযুক্তির যন্ত্রপাতি স্থাপন করা হয়েছে। ল্যাবরেটরিতে জিসি, জিসিএমএস, এইচপিএলসি, এইচপিটিএলসি, এএএস, এলসিএমএস মেশিন স্থাপন করা হয়েছে। ল্যারেটরিটি পরীক্ষামূলকভাবে জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের ১৯ জন মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট দিয়ে চলছে। তাঁরা সবাই জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারী।
জনস্বাস্থ্য ইনস্টিউটের উপপরিচালক ও ন্যাশনাল ফুড সেফটি ল্যাবরেটরির চিফ এনালিস্ট ড. আবদুর রাজ্জাক বলেন, ল্যাবরেটরির মেশিনারিজ পরিচালনার জন্য কয়েকজন বায়োকেমিস্ট্রি, মাইক্রোবায়োলজি, ল্যাবরেটরি টেকনোলজিতে এমএস, পাবলিক হেলথে মাস্টার্স বা পিএইচডি ও ল্যাবরেটরি টেকনোলজিতে ডিপ্লোমাধারীদের পদায়ন করা হয়েছে। তাদের দেশে-বিদেশে বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে এবং প্রশিক্ষণ প্রক্রিয়া চালু রয়েছে। আরো দক্ষ জনবল পদায়নের জন্য নতুন অর্গানোগ্রাম অনুযায়ী পদ সৃষ্টির কাজ চলছে। বিষয়টি বর্তমানে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিবেচনায় রয়েছে।
জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে কালের কণ্ঠকে বলেন, জনবল ছাড়া প্রতিষ্ঠান চালু করা বাংলাদেশের সংস্কৃতিতে পরিণত হয়েছে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান চালু হচ্ছে জনবল ছাড়া। সরকারি হাসপাতালে বিভিন্ন যন্ত্রপাতি কেনা হচ্ছে যেগুলো চালানোর লোক নেই। ভেজাল খাদ্য থেকে সাধারণ মানুষকে রক্ষার জন্য গবেষণাগারটি দ্রুত কার্যকর করা উচিত। সাধারণ মানুষ খাবার নিয়ে খুব উদ্বেগের মধ্যে দিন কাটায়। কারণ খাদ্যে ভেজাল দিন দিনই বাড়ছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো খসড়ায় জনবল কাঠামোতে কয়টি পদ রয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ৫৯টি।
ল্যাবরেটরির গুটিকয়েক গবেষকের সঙ্গে আলোচনা করে নিয়োগবিধির বিষয়ে তাঁদের উদ্বেগ লক্ষ করা গেছে। তাঁরা জানিয়েছেন, নিয়োগবিধি চূড়ান্ত হওয়ার পর বাইরে থেকে লোক নিয়োগ দিয়ে এ গবেষণাগারটি কার্যকর করতে কয়েক বছর লেগে যাবে। যাঁরা বর্তমানে কর্মরত আছেন, তাঁরা দেশে-বিদেশে বিভিন্ন প্রশিক্ষণে অংশ নিচ্ছেন। তাঁদের দক্ষতা এবং প্রয়োজনীয় শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকলে জনবল নিয়োগের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত। তা হলেই গবেষণাগারটি দ্রুত কার্যকর করা সম্ভব। তা করা না হলে নতুন জনবল বাছাইয়ে অনেক সময় লাগবে। তাদের প্রশিক্ষণে লেগে যাবে আরো সময়।
No comments