ঘর-মন-জানালা আশা আপু
তখন কোন ক্লাসে পড়ি, আজ অনেক ভেবেও তা মনে
করতে পারি না। তবে ওই দিন নানাবাড়ির পাশের মনোহারী দোকানি রাসেল মামার
কথাটা আজও যেন মনে খোদাই করে রাখা আছে। রাসেল মামা বলেছিল, ‘আশা আপুর সঙ্গে
তোর বিয়ে।’
এই কথা শুনে আমি কাঁদতে কাঁদতে মায়ের কাছে
রাসেল মামার নামে নালিশ করেছিলাম। আশা আপু আমার কাঁদার কারণ জানতে পেরেছিল
কিনা আমি জানি না। তবে এরপর আর আমার আশা আপুর সঙ্গে দেখা হয়নি। আপুদের
বাড়ির কারও সঙ্গে কখনো দেখা হলে সবার আগে মনে পড়ত তার কথা। আর মনে পড়ত
রাসেল মামার ওই দিনের কথাটাও। এরপর কেটে গেছে অনেক বছর। আমি শৈশব পেরিয়ে
কৈশোরে পা ফেলেছি। কৈশোর পেরিয়ে এখন আমি পূর্ণ যুবক। স্বাভাবিকভাবেই জীবনের
অনেক কিছুই এখন আমার মনে দোলা দিয়ে যায়। আমার বসন্ত ভালো লাগে, শরৎ ভালো
লাগে, হেমন্ত ভালো লাগে, ভালো লাগে বর্ষা। এবার বর্ষার শুরুতেই হঠাৎ আশা
আপুর সঙ্গে দেখা। ঠিক কতো বছর পর মনে করতে পারি না। এত দিন পর দেখা, তাকে
আমার চেনার কথা নয়। কিন্তু তাকে সহজেই চিনে ফেললাম পাশে তার মা থাকায়। আর
আমি আমার সঙ্গে থাকা মায়ের আড়ালে চলে গিয়ে আশা আপুকে প্রাণ ভরে দেখলাম। কী
চমৎকার তার কথা বলার ভঙ্গি, অভিভূত করা হাসি আর অপরূপ স্নিগ্ধতা। ইচ্ছে
করছিল শৈশবের মতো করে তার সঙ্গে একটু বৃষ্টিতে ভিজি। আকাশে তখন একটু-আধটু
মেঘের আনাগোনা। আর আমার মনে রাসেল মামার ওই কথাটার ঘূর্ণিপাক।
তোফায়েল আহমেদ, সরিষাবাড়ী, জামালপুর।
তোফায়েল আহমেদ, সরিষাবাড়ী, জামালপুর।
No comments