পবিত্র কোরআনের আলো-সব নবী-রাসুলরা সৎকর্মশীল ছিলেন
১০১. রাব্বি কাদ আ-তাইতানী মিনাল মুলকি
ওয়া আল্লামতানী মিন তা'বীলিল আহা-দীছি ফা-তিরাস সামা-ওয়া-তি ওয়াল আরদি,
আনতা ওয়ালিয়্যী ফিদ দুন্য়া ওয়াল আ-খিরাতি, তাওয়াফ্ফানী মুসলিমান ওয়া
আলহিকনী বিস সা-লিহীন।
১০২. যা-লিকা মিন আম্বা-ইল গাইবি নূহীহি ইলাইকা, ওয়া মা- কুনতা লাদাইহিম ইয আজমা'ঊ- আমরাহুম ওয়া হুম য়ামকুরূন। সুরা ইউসুফ।
অনুবাদ : ১০১. হে রব, তুমি আমাকে রাজত্বেও অংশগ্রহণের নেয়ামত দান করেছ এবং স্বপ্ন-ব্যাখ্যার বিশেষ জ্ঞান দ্বারাও আমাকে ধন্য করেছ। হে আসমান ও জমিনের স্রষ্টা, তুমিই দুনিয়ায় আমার অভিভাবক এবং আখিরাতেও। মুসলমান অবস্থায় আমার মৃত্যু নসিব করো এবং আমাকে সৎকর্মশীলদের অন্তর্ভুক্ত করো।* ১০২. (হে নবী,) এগুলো অদৃশ্যের খবর, যা আমি তোমাকে অহির মাধ্যমে জানাচ্ছি।* তুমি তাদের কাছে ছিলে না, যখন তারা (ইউসুফের ভাইয়েরা) নিজেদের সিদ্ধান্ত স্থির করেছিল এবং চক্রান্ত করছিল।
তাফসির : * ইউসুফ (আ.) বিচক্ষণতার সঙ্গে অতীতের স্মৃতিচারণা শেষে নিজের ঈর্ষণীয়, সুখী-শান্তিময় ও সম্মানজনক অবস্থানকে আল্লাহ তায়ালার বিশেষ রহমত ও নেয়ামত বলে স্বীকার করে যে দোয়া করেছিলেন, তাতে নিজেকে 'মুসলমান' অবস্থায় মৃত্যু নসিব কামনার পাশাপাশি 'সালেহ' অর্থাৎ খাঁটি ও পূর্ণাঙ্গ সৎ বান্দা হওয়ার প্রার্থনা করেছেন। এই প্রার্থনা আল্লাহর প্রতি শোকরগোজারির অংশ। কারণ, সব নবী-রাসুলই 'সালেহ' ছিলেন। তাঁরা সব ধরনের গুনাহ থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত ছিলেন। দোয়ায় তিনি 'মুসলমান' অবস্থায় নিজের মৃত্যু নসিব কামনা করেছেন। এর তাৎপর্য হলো, নবী-রাসুলরা তো অবশ্যই, এমনকি বুজুর্গ প্রত্যেক বান্দার বৈশিষ্ট্যই হলো তারা দুনিয়া ও আখিরাতে যত উঁচু মর্যাদায়ই অবস্থান করুন না কেন, কোনো পরিস্থিতিতেই অহংকারের আচরণ করেন না। সব অবস্থায়ই তারা তা ছিনিয়ে নেওয়া অথবা হ্রাস হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করেন। প্রাপ্ত নিয়ামত আরো বাড়ানোর জন্য আল্লাহর পথে তৎপরতা পরিচালনা করেন, যাতে মৃত্যু পর্যন্ত তা অটুট থাকে। ইউসুফ (আ.)-এর দোয়ায় মুসলমান অবস্থায় মৃত্যুবরণ এবং সালেহ হিসেবে গণ্য হওয়ার মোনাজাত এই মহান বৈশিষ্ট্যেরই অংশ।
* সুরা ইউসুফের শুরুতেই উল্লেখ করা হয়েছে, কেন এ সুরাটি নাজিল হলো। একদল কাফের বনি ইসরাইল কিভাবে মিসরে এলো এবং ইউসুফ (আ.)-এর ইতিহাস জানতে চাওয়ার জবাবে পুরো সুরাটি নাজিল হয় এবং এতে সেই সব ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণ উল্লেখ করা হয়েছে। সুরার শেষ পর্যায়ে এসে এখানে আল্লাহ তায়ালা ফলাফল জানাচ্ছেন। তা হলো এভাবে- ইউসুফের ঘটনা হাজার বছর আগের। তোমার জন্য তা অবশ্যই অদৃশ্যের খবর। কারণ তুমি তখন সেখানে উপস্থিত ছিলে না। তোমার কোনো নির্দিষ্ট শিক্ষক নেই। কোনো বিদ্যালয়-বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনাও করোনি। জন্মের পর থেকে এখনো তুমি মিসর বা ফিলিস্তিনেও গমন করোনি। তা ছাড়া সেই ইতিহাস কারো জানাও নেই। তুমি এখন যে ঘটনার বর্ণনা দিচ্ছ, তা আমি তোমাকে অহির মাধ্যমে জানাচ্ছি। এ ঘটনার বিষয়ে জ্ঞান অর্জনের বিকল্প কোনো উপায় বা সূত্র নেই। প্রশ্নকারীদের উত্তর দেওয়া হয়েছে। তাদের উচিত হলো, ইমান আনা। এর পরও তারা ইমান আনবে না। তোমাকে নবী হিসেবে বিশ্বাস করবে না। তবু হতাশ হওয়ার কিছু নেই। তোমার দায়িত্ব আল্লাহর পথে দাওয়াত দেওয়া। সাফল্য দান করার বিষয়টি আল্লাহর এখতিয়ারভুক্ত।
তাফসিরে ইবনে কাছির ও মাআরেফুল কোরআন অবলম্বনে হাসানুল কাদির
অনুবাদ : ১০১. হে রব, তুমি আমাকে রাজত্বেও অংশগ্রহণের নেয়ামত দান করেছ এবং স্বপ্ন-ব্যাখ্যার বিশেষ জ্ঞান দ্বারাও আমাকে ধন্য করেছ। হে আসমান ও জমিনের স্রষ্টা, তুমিই দুনিয়ায় আমার অভিভাবক এবং আখিরাতেও। মুসলমান অবস্থায় আমার মৃত্যু নসিব করো এবং আমাকে সৎকর্মশীলদের অন্তর্ভুক্ত করো।* ১০২. (হে নবী,) এগুলো অদৃশ্যের খবর, যা আমি তোমাকে অহির মাধ্যমে জানাচ্ছি।* তুমি তাদের কাছে ছিলে না, যখন তারা (ইউসুফের ভাইয়েরা) নিজেদের সিদ্ধান্ত স্থির করেছিল এবং চক্রান্ত করছিল।
তাফসির : * ইউসুফ (আ.) বিচক্ষণতার সঙ্গে অতীতের স্মৃতিচারণা শেষে নিজের ঈর্ষণীয়, সুখী-শান্তিময় ও সম্মানজনক অবস্থানকে আল্লাহ তায়ালার বিশেষ রহমত ও নেয়ামত বলে স্বীকার করে যে দোয়া করেছিলেন, তাতে নিজেকে 'মুসলমান' অবস্থায় মৃত্যু নসিব কামনার পাশাপাশি 'সালেহ' অর্থাৎ খাঁটি ও পূর্ণাঙ্গ সৎ বান্দা হওয়ার প্রার্থনা করেছেন। এই প্রার্থনা আল্লাহর প্রতি শোকরগোজারির অংশ। কারণ, সব নবী-রাসুলই 'সালেহ' ছিলেন। তাঁরা সব ধরনের গুনাহ থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত ছিলেন। দোয়ায় তিনি 'মুসলমান' অবস্থায় নিজের মৃত্যু নসিব কামনা করেছেন। এর তাৎপর্য হলো, নবী-রাসুলরা তো অবশ্যই, এমনকি বুজুর্গ প্রত্যেক বান্দার বৈশিষ্ট্যই হলো তারা দুনিয়া ও আখিরাতে যত উঁচু মর্যাদায়ই অবস্থান করুন না কেন, কোনো পরিস্থিতিতেই অহংকারের আচরণ করেন না। সব অবস্থায়ই তারা তা ছিনিয়ে নেওয়া অথবা হ্রাস হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করেন। প্রাপ্ত নিয়ামত আরো বাড়ানোর জন্য আল্লাহর পথে তৎপরতা পরিচালনা করেন, যাতে মৃত্যু পর্যন্ত তা অটুট থাকে। ইউসুফ (আ.)-এর দোয়ায় মুসলমান অবস্থায় মৃত্যুবরণ এবং সালেহ হিসেবে গণ্য হওয়ার মোনাজাত এই মহান বৈশিষ্ট্যেরই অংশ।
* সুরা ইউসুফের শুরুতেই উল্লেখ করা হয়েছে, কেন এ সুরাটি নাজিল হলো। একদল কাফের বনি ইসরাইল কিভাবে মিসরে এলো এবং ইউসুফ (আ.)-এর ইতিহাস জানতে চাওয়ার জবাবে পুরো সুরাটি নাজিল হয় এবং এতে সেই সব ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণ উল্লেখ করা হয়েছে। সুরার শেষ পর্যায়ে এসে এখানে আল্লাহ তায়ালা ফলাফল জানাচ্ছেন। তা হলো এভাবে- ইউসুফের ঘটনা হাজার বছর আগের। তোমার জন্য তা অবশ্যই অদৃশ্যের খবর। কারণ তুমি তখন সেখানে উপস্থিত ছিলে না। তোমার কোনো নির্দিষ্ট শিক্ষক নেই। কোনো বিদ্যালয়-বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনাও করোনি। জন্মের পর থেকে এখনো তুমি মিসর বা ফিলিস্তিনেও গমন করোনি। তা ছাড়া সেই ইতিহাস কারো জানাও নেই। তুমি এখন যে ঘটনার বর্ণনা দিচ্ছ, তা আমি তোমাকে অহির মাধ্যমে জানাচ্ছি। এ ঘটনার বিষয়ে জ্ঞান অর্জনের বিকল্প কোনো উপায় বা সূত্র নেই। প্রশ্নকারীদের উত্তর দেওয়া হয়েছে। তাদের উচিত হলো, ইমান আনা। এর পরও তারা ইমান আনবে না। তোমাকে নবী হিসেবে বিশ্বাস করবে না। তবু হতাশ হওয়ার কিছু নেই। তোমার দায়িত্ব আল্লাহর পথে দাওয়াত দেওয়া। সাফল্য দান করার বিষয়টি আল্লাহর এখতিয়ারভুক্ত।
তাফসিরে ইবনে কাছির ও মাআরেফুল কোরআন অবলম্বনে হাসানুল কাদির
No comments