গাজীপুরের শিক্ষা by পলাশ আহসান
শুরু করতে চাই বিএনপি নেতা তরিকুল ইসলামের
কথা থেকে। গাজীপুরের নির্বাচন চলাকালে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন,
নির্বাচন যদি নূ্যনতম সুষ্ঠু হয় তাহলে বিএনপি প্রার্থী জিতবে ১ থেকে দেড়
লাখ ভোটে।
এমএ মান্নান জিতেছেন ১ লাখ ৬ হাজারের বেশি
ভোটের ব্যবধানে। এখন বোঝা যায়. নির্বাচন আসলে সুষ্ঠুই হচ্ছিল। বিএনপি
নেতারা শুধু শুধু ভয় পাচ্ছিলেন।
অবশ্য নির্বাচনে বিএনপির সব সময় নজর রাখার একটা ইতিবাচক দিকও আছে। আমরা বুঝলাম, সরকারের আচরণ কঠোরভাবে মনিটর করছে বিরোধী দল। যেটা একটা শক্তিশালী বিরোধী দলের কাজ। সে ক্ষেত্রে অবশ্য পর্যবেক্ষণ দায়িত্বশীল হতে হবে। যদি গাজীপুরের নির্বাচন এবং বিএনপির পর্যবেক্ষণ নিয়ে কথা বলি তাহলে বলতে হবে, 'সরকার ভোট ডাকাতির চেষ্টা করছে', 'জয় ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে', 'ভোটে জিততে গোয়েন্দা সংস্থার লোকজনকে ব্যবহার করছে সরকার'_ এ জাতীয় অসত্য কথা ছেঁটে ফেলতে হবে। নিজের ভয় অন্যের ওপর চাপিয়ে দেওয়া মোটেও দায়িত্বশীলতা নয়।
তবু মন্দের ভালো, সাংগঠনিকভাবে পর্যবেক্ষণের কাজটি শুরু হয়েছে। এখন থেকে নিশ্চয় বিরোধী দল আরও দায়িত্বশীল পর্যবেক্ষণ দেবে আমাদের। গাজীপুর নির্বাচনের আরেকটি প্রমাণিত সত্য হচ্ছে, 'সর্বোচ্চ ক্ষমতাধর হলো সাধারণ মানুষ।' নির্বাচনের শুরু থেকেই বোঝা যাচ্ছিল বিরোধীদলীয় প্রার্থী জিতবে। তার পরেও সরকারি দলের প্রার্থী যতটা না ভোটারদের কাছে গেছেন, তার চেয়ে বেশি গেছেন নানান নাটকে। কখনও জাহাঙ্গীর বিষয়ক নাটক, কখনও এরশাদের সমর্থন বিষয়ক নাটকে। শেষ পর্যন্ত বহাল থেকেছে সাধারণ মানুষের সিদ্ধান্ত। নাটকে শুধু শুধু সময় নষ্ট। যা হোক, সেটাও এই নির্বাচনের একটা গুরুত্বপূর্ণ দিক।
গাজীপুর নির্বাচনের পর আমার বারবার মনে হচ্ছে, আওয়ামী লীগের অবস্থা অনেকটা কাদম্বিনীর মতো_ মরিয়া প্রমাণ করিতে হইতেছে সে মরে নাই। একই ঘটনা বারবার ঘটছে। কারণ পরপর ৫ সিটি নির্বাচনে সরকারি দল হারায় আমাদের বুঝতে সহজ হয়েছে যে, আমরা আসলেই গণতন্ত্রের পথে হাঁটছি। কারণ, আমাদের মোটামুটি দায়িত্বশীল বিরোধী দল আছে। নির্বাচিত সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হচ্ছে। সাধারণ মানুষ প্রভাবমুক্ত হয়ে ভোট দিচ্ছে।
অথচ আমাদের নির্বাচনী সংস্কৃতি এমন ছিল না। স্থানীয় সরকারে তো নয়ই। স্থানীয় সরকারের পদটি দখল করার জন্য নির্বাচনের আগে বহু প্রার্থী সরকারি দলে যোগ দিত দলবল নিয়ে। ডিসি অফিসের সামনে মাস্তানরা বসে থাকত, যেন কোনো যোগ্য প্রার্থী মনোনয়নপত্র কিনতে না পারে। বর্তমান সরকারের শত শত সমালোচনা আছে হয়তো। কিন্তু এই ৫টি নির্বাচনের পর বলতেই হচ্ছে, মানুষের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা হয়েছে।
গাজীপুরের নির্বাচন যখন চলছিল, তখন বিএনপি নেতারা সংবাদ সম্মেলনে ভয়ের কথা বলছিলেন। একই কথা তারা বলছেন দু'বছর ধরে। এমনকি শব্দগুলোও মোটামুটি একই। এরই মধ্যে শব্দগুলো তাদের নিজস্ব হয়ে গেছে। এই যেমন 'ভোট ডাকাতি', 'ফলাফল ছিনতাই'। কিন্তু ফল প্রকাশের পর দেখা যাচ্ছে, তাদের ভয় অমূলক। বনের বাঘ আসলেই নেই। বিএনপিকে খাচ্ছে মনের বাঘে। এতগুলো ভালো নির্বাচনের পর আমরা বলতেই পারি, আওয়ামী লীগ আস্থা অর্জনের পথে অনেক দূর এগিয়েছে।
নির্বাচনে সেনা মোতায়েন না করার কারণে বারবার উষ্মা প্রকাশ করছিলেন বিএনপি নেতারা। একটি উৎসবমুখর নির্বাচনকে বারবার প্রশ্নবিদ্ধ করছিলেন। নির্বাচনে সেনা মোতায়েনও তো অনেকটা তত্ত্ব্বাবধায়ক সরকারের কাছ থেকে গণতন্ত্র নবায়ন করার মতো। সুশাসন ঝুঁকিপূর্ণ না হলে সেনা মোতায়েনের কী দরকার? গাজীপুরের নির্বাচনে সেনা মোতায়েন না করে বর্তমান ইসি ভাবমূর্তি বাড়িয়েছে গোটা দেশের।
স পলাশ আহসান :সাংবাদিক
অবশ্য নির্বাচনে বিএনপির সব সময় নজর রাখার একটা ইতিবাচক দিকও আছে। আমরা বুঝলাম, সরকারের আচরণ কঠোরভাবে মনিটর করছে বিরোধী দল। যেটা একটা শক্তিশালী বিরোধী দলের কাজ। সে ক্ষেত্রে অবশ্য পর্যবেক্ষণ দায়িত্বশীল হতে হবে। যদি গাজীপুরের নির্বাচন এবং বিএনপির পর্যবেক্ষণ নিয়ে কথা বলি তাহলে বলতে হবে, 'সরকার ভোট ডাকাতির চেষ্টা করছে', 'জয় ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে', 'ভোটে জিততে গোয়েন্দা সংস্থার লোকজনকে ব্যবহার করছে সরকার'_ এ জাতীয় অসত্য কথা ছেঁটে ফেলতে হবে। নিজের ভয় অন্যের ওপর চাপিয়ে দেওয়া মোটেও দায়িত্বশীলতা নয়।
তবু মন্দের ভালো, সাংগঠনিকভাবে পর্যবেক্ষণের কাজটি শুরু হয়েছে। এখন থেকে নিশ্চয় বিরোধী দল আরও দায়িত্বশীল পর্যবেক্ষণ দেবে আমাদের। গাজীপুর নির্বাচনের আরেকটি প্রমাণিত সত্য হচ্ছে, 'সর্বোচ্চ ক্ষমতাধর হলো সাধারণ মানুষ।' নির্বাচনের শুরু থেকেই বোঝা যাচ্ছিল বিরোধীদলীয় প্রার্থী জিতবে। তার পরেও সরকারি দলের প্রার্থী যতটা না ভোটারদের কাছে গেছেন, তার চেয়ে বেশি গেছেন নানান নাটকে। কখনও জাহাঙ্গীর বিষয়ক নাটক, কখনও এরশাদের সমর্থন বিষয়ক নাটকে। শেষ পর্যন্ত বহাল থেকেছে সাধারণ মানুষের সিদ্ধান্ত। নাটকে শুধু শুধু সময় নষ্ট। যা হোক, সেটাও এই নির্বাচনের একটা গুরুত্বপূর্ণ দিক।
গাজীপুর নির্বাচনের পর আমার বারবার মনে হচ্ছে, আওয়ামী লীগের অবস্থা অনেকটা কাদম্বিনীর মতো_ মরিয়া প্রমাণ করিতে হইতেছে সে মরে নাই। একই ঘটনা বারবার ঘটছে। কারণ পরপর ৫ সিটি নির্বাচনে সরকারি দল হারায় আমাদের বুঝতে সহজ হয়েছে যে, আমরা আসলেই গণতন্ত্রের পথে হাঁটছি। কারণ, আমাদের মোটামুটি দায়িত্বশীল বিরোধী দল আছে। নির্বাচিত সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হচ্ছে। সাধারণ মানুষ প্রভাবমুক্ত হয়ে ভোট দিচ্ছে।
অথচ আমাদের নির্বাচনী সংস্কৃতি এমন ছিল না। স্থানীয় সরকারে তো নয়ই। স্থানীয় সরকারের পদটি দখল করার জন্য নির্বাচনের আগে বহু প্রার্থী সরকারি দলে যোগ দিত দলবল নিয়ে। ডিসি অফিসের সামনে মাস্তানরা বসে থাকত, যেন কোনো যোগ্য প্রার্থী মনোনয়নপত্র কিনতে না পারে। বর্তমান সরকারের শত শত সমালোচনা আছে হয়তো। কিন্তু এই ৫টি নির্বাচনের পর বলতেই হচ্ছে, মানুষের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা হয়েছে।
গাজীপুরের নির্বাচন যখন চলছিল, তখন বিএনপি নেতারা সংবাদ সম্মেলনে ভয়ের কথা বলছিলেন। একই কথা তারা বলছেন দু'বছর ধরে। এমনকি শব্দগুলোও মোটামুটি একই। এরই মধ্যে শব্দগুলো তাদের নিজস্ব হয়ে গেছে। এই যেমন 'ভোট ডাকাতি', 'ফলাফল ছিনতাই'। কিন্তু ফল প্রকাশের পর দেখা যাচ্ছে, তাদের ভয় অমূলক। বনের বাঘ আসলেই নেই। বিএনপিকে খাচ্ছে মনের বাঘে। এতগুলো ভালো নির্বাচনের পর আমরা বলতেই পারি, আওয়ামী লীগ আস্থা অর্জনের পথে অনেক দূর এগিয়েছে।
নির্বাচনে সেনা মোতায়েন না করার কারণে বারবার উষ্মা প্রকাশ করছিলেন বিএনপি নেতারা। একটি উৎসবমুখর নির্বাচনকে বারবার প্রশ্নবিদ্ধ করছিলেন। নির্বাচনে সেনা মোতায়েনও তো অনেকটা তত্ত্ব্বাবধায়ক সরকারের কাছ থেকে গণতন্ত্র নবায়ন করার মতো। সুশাসন ঝুঁকিপূর্ণ না হলে সেনা মোতায়েনের কী দরকার? গাজীপুরের নির্বাচনে সেনা মোতায়েন না করে বর্তমান ইসি ভাবমূর্তি বাড়িয়েছে গোটা দেশের।
স পলাশ আহসান :সাংবাদিক
No comments