পৃথিবীর চেয়ে বড় হীরা!

জীবনে কত বড় আকারের হীরা দেখেছেন আপনি? অথবা একটি হীরক খণ্ডের আকার কত বড় হতে পারে বলে ধারণা আপনার? ধারণা যা-ই হোক, জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা এবার মাথা ঘুরে যাওয়ার মতো তথ্য দিয়েছেন। বিজ্ঞানীরা পৃথিবীর প্রায় দ্বিগুণ আকার ও আট গুণ ভরবিশিষ্ট একটি গ্রহ আবিষ্কার করেছেন।


তাঁদের মতে, গ্রহটির ভরের অন্তত এক-তৃতীয়াংশই হীরার, যা পৃথিবীর ভরের তিন গুণের সমান। হীরার তৈরি গ্রহ এর আগেও শনাক্ত করেছেন বিজ্ঞানীরা। তবে সূর্যের মতো নক্ষত্রের চারপাশে ঘূর্ণায়মান 'হীরক গ্রহ' এটিই প্রথম। এমনকি যে নক্ষত্রকে কেন্দ্র করে গ্রহটি ঘুরছে, খালি চোখেই তা দেখতে পাওয়ার সুযোগ রয়েছে পৃথিবীর মানুষের।
জ্যোতির্বিজ্ঞান-বিষয়ক সাময়িকী অ্যাস্ট্রোফিজিক্যাল জার্নাল লেটারসের সর্বশেষ সংখ্যায় 'হীরক গ্রহ'-সংক্রান্ত তথ্য ছাপা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক নিক্কু মধুসূদন ও ফ্রান্সের তুলুজ শহরের রিসার্চ ইনস্টিটিউট ইন অ্যাস্ট্রোফিজিকস অ্যান্ড প্ল্যানেটোলজির গবেষক অলিভিয়ের মসি যৌথভাবে এ গ্রহ আবিষ্কার করেছেন। তাঁরা গ্রহটির নাম দিয়েছেন '৫৫ ক্রেনসি ই'। পৃথিবী থেকে ৪০ আলোকবর্ষ দূরের '৫৫ ক্রেনসি' নামের নক্ষত্রকে কেন্দ্র করে ঘুরছে গ্রহটি। আমাদের আকাশগঙ্গা ছায়াপথের খুব কাছেই এই নক্ষত্রের অবস্থান।
৫৫ ক্রেনসি ই-কে ২০০৪ সালে আবিষ্কার করা হয়। বিজ্ঞানীরা জানান, পৃথিবীর প্রায় দ্বিগুণ ব্যাসার্ধ ও আট গুণ ভরবিশিষ্ট গ্রহটি প্রধানত হীরা ও গ্রাফাইটের মতো কার্বন দিয়ে তৈরি। সঙ্গে লোহা, সিলিকন কার্বাইড ও সিলিকাও রয়েছে। পানি ও পাথরের পরিবর্তে গ্রহের উপরিভাগ হীরায় তৈরি হয়েছে। গ্রহটির ভরের অন্তত এক-তৃতীয়াংশই হীরা বলে দাবি করছেন গবেষকরা। গ্রহটি এত দ্রুত আবর্তিত হয় যে প্রতি ১৮ ঘণ্টায় কেন্দ্রীয় নক্ষত্রের চারপাশে একবার প্রদক্ষিণ শেষ করে সেটি। গ্রহটি কেন্দ্রীয় নক্ষত্রের এতই কাছে অবস্থান করছে যে এর উপরিভাগের তাপমাত্রা তিন হাজার ৯০০ ডিগ্রি ফারেনহাইটের (দুই হাজার ১০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস) কাছাকাছি থাকে। ফলে সেখানে প্রাণের অস্তিত্ব প্রায় অসম্ভব বলে ধরে নেওয়া হয়েছে। সূত্র : এএমএসএনবিসি।

No comments

Powered by Blogger.