পবিত্র কোরআনের আলো-আল্লাহর আয়াতকে ক্ষুদ্র স্বার্থে ব্যবহার করা মহাপাপ
১৭৪. ইন্নাল্লাজিনা ইয়াকতুমুনা মা আনজালাল্লাহু মিনাল কিতাবি ওয়া ইশতারূনা বিহি সামানান কালিলা; উলায়িকা মা ইয়াকতুমুনা ফি বুতুনিহিম ইল্লান্নারা ওয়া লা ইউকালি্লমুহুমুল্লাহু ইয়াওমাল কিয়ামাতি ওয়া লা ইউজাক্কিহিম; ওয়া লাহুম আজাবুন আলীম।
১৭৫. উলায়িকাল্লাজিনাশ্ তারাউদ্দ্বালালাতা বিল হুদা ওয়াল আজাবা বিল মাগফিরাতি; ফামা আসবারাহুম আ'লান্নার।
১৭৬. জালিকা বিআন্নাল্লাহা নাজজালাল কিতাবা বিল হাক্ক; ওয়া ইন্নাল্লাজি নাখ্তালাফু ফিল কিতাবি লাফি শিক্বাকি্বম্ বায়ীদ। (সুরা বাকারা, আয়াত ১৭৪-১৭৬)
অনুবাদ : ১৭৪. যারা আল্লাহর অবতীর্ণ কিতাবের অংশবিশেষ গোপন করে এবং অল্পমূলে বা নিজেদের স্বার্থে তা বিক্রি করে, তারা এটা দিয়ে যে উপার্জন করে এবং আহার করে; এতে তাদের পেটের ভেতর আগুন ছাড়া আর কিছুই নয়, শেষ বিচারের দিন আল্লাহ তাদের সঙ্গে কথা বলবেন না, তাদের পবিত্রও করবেন না, এদের জন্য রয়েছে ভয়াবহ আজাব।
১৭৫. এরা হিদায়েতের বদলে গোমরাহির পথ কিনে নিয়েছে, ক্ষমার বদলে আজাব বেছে নিয়েছে, এরা নির্বিকারে আগুনে গিয়ে পড়ছে।
১৭৬. এটা এ জন্য যে, আল্লাহতায়ালা মানবজাতির জন্য আগে থেকেই সত্যসহকারে কিতাব নাজিল করে দিয়েছেন; যারা এ কিতাব নিয়ে মতবিরোধে লিপ্ত হয়েছে তারা সত্য ও ন্যায়ের পথ থেকে অনেক দূরে নিক্ষিপ্ত হয়ে গেছে।
ব্যাখ্যা : ওই আয়াতগুলোতে বিশেষ করে আল্লাহ কর্তৃক নাজিল করা কিতাবের অংশবিশেষ গোপনকারী, সত্য বিকৃতকারী বা জেনে-বুঝে অপব্যাখ্যা দানকারীদের ভয়াবহ পরিণতির কথা বলা হয়েছে। আয়াতগুলো নাজিল হয়েছে মূলত মুসলমানদের লক্ষ্য করেই, তবে ইহুদি ও খ্রিস্টান ধর্মবেত্তাদের উদাহরণের প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে। ইহুদি ও খ্রিস্টান আলেমরা এ রকম করে আসছিল। এভাবেই তাদের ধর্ম বিকৃত হয়েছে, অসত্যের সঙ্গে মিশে গেছে। আর এ কারণেই সেসব ধর্ম বাতিল ঘোষণা করে দিয়ে আল্লাহতায়ালা সব মানুষকে নবী মুহাম্মদ (সা.) কর্তৃক প্রচারিত ইসলাম ধর্মের ছায়াতলে আশ্রয় গ্রহণ করার আহ্বান জানিয়েছেন।
উলি্লখিত তিনটি আয়াতেই আল্লাহর আয়াত অল্পমূল্যে বিক্রয়কারী অর্থাৎ একে বিকৃত বা গোপন করে স্বার্থ উদ্ধারকারী, হিদায়াতের বিনিময়ে গোমরাহি ক্রয়কারী এবং ক্ষমার বিনিময়ে আজাবের পথ গ্রহণকারীদের কঠোরভাবে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। এখানে ধর্মকে কায়েমি স্বার্থরক্ষার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করার প্রবণতাটাকে কঠোরভাবে সমালোচনা করা হয়েছে এবং এর ভয়াবহ পরিণতির কথা স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়েছে। ধর্মের লেবাসধারীরা যুগে যুগে এ অপকর্ম করেছে ইসলাম ধর্মের ভেতর থেকেও। ধর্ম বা আল্লাহর কিতাব নিয়ে এ ধরনের গর্হিত ধারা চলতে পারে- এ আশঙ্কাই এ আয়াতগুলোতে ব্যক্ত হয়েছে।
অপ্রিয় হলেও সত্য, ধর্মকে ব্যবসার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করার প্রবণতা বর্তমান যুগে বেশ জোরেশোরেই চলছে। পৃথিবীর সর্বত্র এবং আমাদের দেশেও রাজনৈতিকভাবে এবং অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে ধর্মকে ব্যবহার করে কতিপয় ব্যক্তি ও গোষ্ঠীর ভাগ্য গড়ার চেষ্টা এখন বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। ক্ষমতা দখলের জন্য ইসলামী রাজনৈতিক দল এবং জনগণের অর্থ-সম্পদ লুটে নেওয়ার জন্য ইসলামী ব্যাংক-বীমা তৈরির হিড়িক পড়ে গেছে। ধর্মের নামে এসব বিকৃতি ও বিচ্যুতি রোধ করার লক্ষ্যেই এ আয়াতগুলোতে সতর্কবাণী দেওয়া হয়েছে।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
১৭৬. জালিকা বিআন্নাল্লাহা নাজজালাল কিতাবা বিল হাক্ক; ওয়া ইন্নাল্লাজি নাখ্তালাফু ফিল কিতাবি লাফি শিক্বাকি্বম্ বায়ীদ। (সুরা বাকারা, আয়াত ১৭৪-১৭৬)
অনুবাদ : ১৭৪. যারা আল্লাহর অবতীর্ণ কিতাবের অংশবিশেষ গোপন করে এবং অল্পমূলে বা নিজেদের স্বার্থে তা বিক্রি করে, তারা এটা দিয়ে যে উপার্জন করে এবং আহার করে; এতে তাদের পেটের ভেতর আগুন ছাড়া আর কিছুই নয়, শেষ বিচারের দিন আল্লাহ তাদের সঙ্গে কথা বলবেন না, তাদের পবিত্রও করবেন না, এদের জন্য রয়েছে ভয়াবহ আজাব।
১৭৫. এরা হিদায়েতের বদলে গোমরাহির পথ কিনে নিয়েছে, ক্ষমার বদলে আজাব বেছে নিয়েছে, এরা নির্বিকারে আগুনে গিয়ে পড়ছে।
১৭৬. এটা এ জন্য যে, আল্লাহতায়ালা মানবজাতির জন্য আগে থেকেই সত্যসহকারে কিতাব নাজিল করে দিয়েছেন; যারা এ কিতাব নিয়ে মতবিরোধে লিপ্ত হয়েছে তারা সত্য ও ন্যায়ের পথ থেকে অনেক দূরে নিক্ষিপ্ত হয়ে গেছে।
ব্যাখ্যা : ওই আয়াতগুলোতে বিশেষ করে আল্লাহ কর্তৃক নাজিল করা কিতাবের অংশবিশেষ গোপনকারী, সত্য বিকৃতকারী বা জেনে-বুঝে অপব্যাখ্যা দানকারীদের ভয়াবহ পরিণতির কথা বলা হয়েছে। আয়াতগুলো নাজিল হয়েছে মূলত মুসলমানদের লক্ষ্য করেই, তবে ইহুদি ও খ্রিস্টান ধর্মবেত্তাদের উদাহরণের প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে। ইহুদি ও খ্রিস্টান আলেমরা এ রকম করে আসছিল। এভাবেই তাদের ধর্ম বিকৃত হয়েছে, অসত্যের সঙ্গে মিশে গেছে। আর এ কারণেই সেসব ধর্ম বাতিল ঘোষণা করে দিয়ে আল্লাহতায়ালা সব মানুষকে নবী মুহাম্মদ (সা.) কর্তৃক প্রচারিত ইসলাম ধর্মের ছায়াতলে আশ্রয় গ্রহণ করার আহ্বান জানিয়েছেন।
উলি্লখিত তিনটি আয়াতেই আল্লাহর আয়াত অল্পমূল্যে বিক্রয়কারী অর্থাৎ একে বিকৃত বা গোপন করে স্বার্থ উদ্ধারকারী, হিদায়াতের বিনিময়ে গোমরাহি ক্রয়কারী এবং ক্ষমার বিনিময়ে আজাবের পথ গ্রহণকারীদের কঠোরভাবে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। এখানে ধর্মকে কায়েমি স্বার্থরক্ষার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করার প্রবণতাটাকে কঠোরভাবে সমালোচনা করা হয়েছে এবং এর ভয়াবহ পরিণতির কথা স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়েছে। ধর্মের লেবাসধারীরা যুগে যুগে এ অপকর্ম করেছে ইসলাম ধর্মের ভেতর থেকেও। ধর্ম বা আল্লাহর কিতাব নিয়ে এ ধরনের গর্হিত ধারা চলতে পারে- এ আশঙ্কাই এ আয়াতগুলোতে ব্যক্ত হয়েছে।
অপ্রিয় হলেও সত্য, ধর্মকে ব্যবসার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করার প্রবণতা বর্তমান যুগে বেশ জোরেশোরেই চলছে। পৃথিবীর সর্বত্র এবং আমাদের দেশেও রাজনৈতিকভাবে এবং অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে ধর্মকে ব্যবহার করে কতিপয় ব্যক্তি ও গোষ্ঠীর ভাগ্য গড়ার চেষ্টা এখন বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। ক্ষমতা দখলের জন্য ইসলামী রাজনৈতিক দল এবং জনগণের অর্থ-সম্পদ লুটে নেওয়ার জন্য ইসলামী ব্যাংক-বীমা তৈরির হিড়িক পড়ে গেছে। ধর্মের নামে এসব বিকৃতি ও বিচ্যুতি রোধ করার লক্ষ্যেই এ আয়াতগুলোতে সতর্কবাণী দেওয়া হয়েছে।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
No comments