চিরকুট-ফুটবলের ফায়দা by শাহাদুজ্জামান
বিশ্বকাপ ফুটবল শুরু হলে আমার ভেতর ঘুমিয়ে থাকা শিশুটিকে জেগে উঠতে দেখি। একটি বল নিয়ে কতিপয় মানুষের লড়াই দেখার জন্য শিশুদের মতো উদ্বেল হয়ে উঠি। দেখি পৃথিবীর নানা প্রান্তের মানুষেরাও আমার মতো শিশু হয়ে উঠেছে। স্টেডিয়ামে হাজার হাজার বুড়ো খোকা ভেঁপু বাজায়, রংবেরঙের কাপড় পরে নাচে।
ফুটবলকে ঘিরে পৃথিবীর মানুষের এই শিশু হয়ে ওঠার উৎসবকে সাম্প্রতিক কালের সমাজ-জীবনের একটি নতুনতর মাত্রা বলা যেতে পারে।
১৯৬৬ সালে ইংল্যান্ড যেবার বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন হলো সেবার ওই খবরটি ব্রিটেনের কোনো কাগজের সংবাদ শিরোনাম হয়নি, শিরোনাম ছিল রাজপরিবারের কোনো একজনের সন্তানলাভ। অথচ ২০১০-এ এসে সে চিত্র পাল্টে গেছে পুরোপুরি। এখন আফগানিস্তানে ব্রিটিশ সৈন্যের মৃত্যুর খবরকে পাশে ঠেলে পত্রিকার শিরোনাম হয় ব্রিটিশ খেলোয়াড় ডেভিড বেকহ্যামের দল থেকে পদত্যাগের সংবাদ। অর্ধশতাব্দীর মধ্যে ফুটবল এমন একটি পরাক্রমশালী খেলায় রূপান্তরিত হওয়ার পেছনে রয়েছে নানা আর্থ-সামাজিক, রাজনৈতিক প্রক্রিয়া। টিম লিসলে (দি ইকোনমিস্ট, সামার ২০১০ সংখ্যা) ফুটবলের সমাজতত্ত্বটি বোঝার চেষ্টা করেছেন। দেখা যাচ্ছে, ক্রিকেটের মতো আধুনিক ফুটবলও ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শক্তির হাত ধরে পৃথিবীর নানা দেশে পৌঁছেছে। আজকের ফুটবলের পরাশক্তি ব্রাজিলে এ খেলার সূত্রপাত ঘটিয়েছিল ব্রিটিশ নাবিকেরাই। তবে সাধারণভাবে গত শতাব্দীর প্রথমার্ধ পর্যন্ত ইউরোপের অভিজাত শ্রেণীর কাছে ফুটবল কোনো আগ্রহের ব্যাপার ছিল না। ফুটবল ছিল অন্ত্যজ মানুষের বিনোদনের বিষয়। ফুটবলকে ব্রিটেনে বলা হতো ‘গরিবের থিয়েটার’। টিকিট কেটে থিয়েটারে যাওয়ার সাধ্য যার নেই সে যায় ফুটবল স্টেডিয়ামে।
ফুটবলসহ অন্যান্য খেলাধুলার সঙ্গে একটা ঘোর রাজনৈতিক মাত্রা যুক্ত হয় পুঁজিবাদী ও সমাজতান্ত্রিক শিবিরের ঠান্ডা লড়াইয়ের যুগে। সমাজতান্ত্রিক বিশ্ব খেলাকে তাদের মর্যাদা রক্ষার লড়াইয়ের একটি উপলক্ষ করে তোলে এবং রীতিমতো কারখানার পণ্য উৎপাদনের মতো কঠোর প্রক্রিয়ায় খেলোয়াড় তৈরি করতে থাকে। খেলাধুলার বিশ্ব দরবারে পুঁজিবাদী দেশগুলোকে কঠোর চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দেয় সমাজতান্ত্রিক দেশগুলো। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে গিয়েই প্রথম পুঁজিবাদী বিশ্বের ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান এবং ধনাঢ্য ব্যক্তিরা খেলাধুলায় ব্যাপক বিনিয়োগ করতে শুরু করে। বিশেষ করে ফুটবলকে কেন্দ্র করে এক ব্যাপক ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ড শুরু করে ক্রীড়ামোদী জার্মান চর্মকার এডলফ ডাসলার প্রতিষ্ঠিত কোম্পানি অ্যাডিডাস।
বলাবাহুল্য, ফুটবলের উত্তরোত্তর এই জনপ্রিয়তার পেছনে যাতায়াত, গণমাধ্যম আর প্রযুক্তির ব্যাপক উন্নতিরও একটা সরাসরি সম্পর্ক রয়েছে। ১৯৩০-এর উরুগুয়ের বিশ্বকাপে নানা দেশের খেলোয়াড়েরা গিয়েছিল জাহাজে চড়ে, মাসখানেক সাগরে ভেসে। সেসব খেলার খবর পৃথিবীর অন্য প্রান্তে পৌঁছাতে পেরিয়ে যেত সপ্তাহ, মাস। এখন সরাসরি সম্প্রচারের মাধ্যমে শুধু ঘরের ভেতর আর রাস্তার মোড়ের টিভিস্ক্রিনেই নয়, মোবাইল ফোন আর আইফোনের মাধ্যমে খেলার প্রতি মুহূর্তের খবর পৌঁছে যাচ্ছে মানুষের পকেটে। ওদিকে কালে কালে ফুটবলের দর্শকের লিঙ্গীয় মাত্রায়ও একটা পরিবর্তন এসেছে। চল্লিশ ও পঞ্চাশের দশকে ইউরোপের ফুটবল স্টেডিয়ামের গ্যালারির ছবিতে দেখা যায় একচ্ছত্র পুরুষ দর্শকের উপস্থিতি। অথচ আজ গ্যালারির অর্ধেকটা দখল করে আছে নারীরা। ষাট ও সত্তরের দশকের নারী আন্দোলনের পরোক্ষ প্রভাবে লাভবান হয়েছে ফুটবলও। ফুটবলকে কেন্দ্র করে পুরুষদের একক আনন্দে যোগ দিয়েছে নারীরাও। সেই সঙ্গে ফুটবল একটি সম্মিলিত, আন্তর্জাতিক আবেগ প্রকাশের ক্ষেত্র হিসেবেও আবির্ভূত হয়েছে। মানুষ ক্রমশ ব্যক্তিকেন্দ্রিক হয়ে ওঠায়, আগের মতো ধর্ম বা রাজনৈতিক বিপ্লবজাতীয় কোনো বিষয়কে কেন্দ্র করে দলবদ্ধ হয়ে কিছু করার উপলক্ষ পৃথিবীতে কমে এসেছে। ফুটবল যেন মানুষকে যূথবদ্ধ হওয়ার সেই হারানো সুযোগটি ফিরিয়ে দিয়েছে। বিবিসি টেলিভিশনের একটি আলোচনা অনুষ্ঠানে দেখলাম বিতর্ক হচ্ছে, ব্রিটেনে ফুটবল স্টেডিয়াম এখন চার্চের জায়গা দখল করে নিয়েছে কি না এই নিয়ে। এভাবে নানা শর্তসাপেক্ষে ফুটবল ক্রমশ পরিণত হয়েছে এক বিশ্ব-ব্যাপারে।
সমাজতান্ত্রিক বিশ্বের পতনের পর ফুটবলের এই বিশ্ব-উৎসবে পরিণত হওয়াতে সবচেয়ে বেশি লাভবান হয়েছে ব্যবসায়ী দল। এখন আর ভিন্নমতাবলম্বীদের রাজনৈতিক মোকাবিলার স্বার্থে নয়, খেলাধুলায় ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগ নিছকই মুনাফার স্বার্থে। লোকেরা যখন ফুটবলের উন্মাদনায় থাকে তখন সে থাকে নাজুক, ছেলেমানুষ। আর যারা পুঁজির কারবারি তাদের জন্য এতগুলো ঘোরগ্রস্ত মানুষকে একসঙ্গে পাওয়া তো হাতে চাঁদ পাওয়ার মতো। ফুটবলের সবুজ মাঠ তাই ঘিরে থাকে লাল কোক আর ম্যাগডোনাল্ডসের বেষ্টনী। খাদ্য হিসেবে এগুলো যতই অস্বাস্থ্যকর হোক না কেন, টিভি ক্যামেরায় খেলোয়াড়দের বুট আর বলের দিকে চোখ রাখলে আপনি এদের নামগুলো দেখতেও বাধ্য হবেন। ওদিকে বিশ্বকাপকে ঘিরে সারা পৃথিবীতে চলছে হাজার হাজার ডলারের জুয়া। সাবান, শ্যাস্পু, মোবাইল ফোন কোম্পানি, ব্যাংক, টিভি চ্যানেল, এয়ারলাইনস তথা সবাই এসে যোগ দিয়েছে এই মুনাফার হরিলুটে। আকাশচুম্বি মূল্যে চলছে ফুটবলার কেনাবেচা। জানতে পারি, তারকা খেলোয়াড় রোনালদিনোর মাসিক উপার্জন বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ২০ কোটি।
ভাবছিলাম, ফুটবলকে ঘিরে পৃথিবীর মানুষের মনের অমল-ধবল পালে যে নির্মল হাওয়া লাগে, তাকে ব্যবহার করা যেত বিশ্বভাতৃত্ব আর সৌহার্দ্যের স্বার্থে। এই মিলনমেলাকে রাজনীতিবিদেরা সৃজনশীলভাবে ব্যবহার করতে পারতেন সংঘাতময় এই বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রক্রিয়ার কোনো একটি অংশ হিসেবে। কিন্তু তার নমুনা তো বিশেষ দেখতে পাই না। বরং বিশ্বকাপ আসরের পুরো ফায়দা লোটে বাণিজ্যবুদ্ধির শিরোমণিরা, জুয়াড়িরা। আমরা ভেঁপু বাজাই, আর্জেন্টিনা-ব্রাজিলের পতাকা নিয়ে মারামারি করি, আর ওদিকে নেপোয় মারে দই।
শাহাদুজ্জামান: কথাসাহিত্যিক।১৯৬৬ সালে ইংল্যান্ড যেবার বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন হলো সেবার ওই খবরটি ব্রিটেনের কোনো কাগজের সংবাদ শিরোনাম হয়নি, শিরোনাম ছিল রাজপরিবারের কোনো একজনের সন্তানলাভ। অথচ ২০১০-এ এসে সে চিত্র পাল্টে গেছে পুরোপুরি। এখন আফগানিস্তানে ব্রিটিশ সৈন্যের মৃত্যুর খবরকে পাশে ঠেলে পত্রিকার শিরোনাম হয় ব্রিটিশ খেলোয়াড় ডেভিড বেকহ্যামের দল থেকে পদত্যাগের সংবাদ। অর্ধশতাব্দীর মধ্যে ফুটবল এমন একটি পরাক্রমশালী খেলায় রূপান্তরিত হওয়ার পেছনে রয়েছে নানা আর্থ-সামাজিক, রাজনৈতিক প্রক্রিয়া। টিম লিসলে (দি ইকোনমিস্ট, সামার ২০১০ সংখ্যা) ফুটবলের সমাজতত্ত্বটি বোঝার চেষ্টা করেছেন। দেখা যাচ্ছে, ক্রিকেটের মতো আধুনিক ফুটবলও ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শক্তির হাত ধরে পৃথিবীর নানা দেশে পৌঁছেছে। আজকের ফুটবলের পরাশক্তি ব্রাজিলে এ খেলার সূত্রপাত ঘটিয়েছিল ব্রিটিশ নাবিকেরাই। তবে সাধারণভাবে গত শতাব্দীর প্রথমার্ধ পর্যন্ত ইউরোপের অভিজাত শ্রেণীর কাছে ফুটবল কোনো আগ্রহের ব্যাপার ছিল না। ফুটবল ছিল অন্ত্যজ মানুষের বিনোদনের বিষয়। ফুটবলকে ব্রিটেনে বলা হতো ‘গরিবের থিয়েটার’। টিকিট কেটে থিয়েটারে যাওয়ার সাধ্য যার নেই সে যায় ফুটবল স্টেডিয়ামে।
ফুটবলসহ অন্যান্য খেলাধুলার সঙ্গে একটা ঘোর রাজনৈতিক মাত্রা যুক্ত হয় পুঁজিবাদী ও সমাজতান্ত্রিক শিবিরের ঠান্ডা লড়াইয়ের যুগে। সমাজতান্ত্রিক বিশ্ব খেলাকে তাদের মর্যাদা রক্ষার লড়াইয়ের একটি উপলক্ষ করে তোলে এবং রীতিমতো কারখানার পণ্য উৎপাদনের মতো কঠোর প্রক্রিয়ায় খেলোয়াড় তৈরি করতে থাকে। খেলাধুলার বিশ্ব দরবারে পুঁজিবাদী দেশগুলোকে কঠোর চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দেয় সমাজতান্ত্রিক দেশগুলো। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে গিয়েই প্রথম পুঁজিবাদী বিশ্বের ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান এবং ধনাঢ্য ব্যক্তিরা খেলাধুলায় ব্যাপক বিনিয়োগ করতে শুরু করে। বিশেষ করে ফুটবলকে কেন্দ্র করে এক ব্যাপক ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ড শুরু করে ক্রীড়ামোদী জার্মান চর্মকার এডলফ ডাসলার প্রতিষ্ঠিত কোম্পানি অ্যাডিডাস।
বলাবাহুল্য, ফুটবলের উত্তরোত্তর এই জনপ্রিয়তার পেছনে যাতায়াত, গণমাধ্যম আর প্রযুক্তির ব্যাপক উন্নতিরও একটা সরাসরি সম্পর্ক রয়েছে। ১৯৩০-এর উরুগুয়ের বিশ্বকাপে নানা দেশের খেলোয়াড়েরা গিয়েছিল জাহাজে চড়ে, মাসখানেক সাগরে ভেসে। সেসব খেলার খবর পৃথিবীর অন্য প্রান্তে পৌঁছাতে পেরিয়ে যেত সপ্তাহ, মাস। এখন সরাসরি সম্প্রচারের মাধ্যমে শুধু ঘরের ভেতর আর রাস্তার মোড়ের টিভিস্ক্রিনেই নয়, মোবাইল ফোন আর আইফোনের মাধ্যমে খেলার প্রতি মুহূর্তের খবর পৌঁছে যাচ্ছে মানুষের পকেটে। ওদিকে কালে কালে ফুটবলের দর্শকের লিঙ্গীয় মাত্রায়ও একটা পরিবর্তন এসেছে। চল্লিশ ও পঞ্চাশের দশকে ইউরোপের ফুটবল স্টেডিয়ামের গ্যালারির ছবিতে দেখা যায় একচ্ছত্র পুরুষ দর্শকের উপস্থিতি। অথচ আজ গ্যালারির অর্ধেকটা দখল করে আছে নারীরা। ষাট ও সত্তরের দশকের নারী আন্দোলনের পরোক্ষ প্রভাবে লাভবান হয়েছে ফুটবলও। ফুটবলকে কেন্দ্র করে পুরুষদের একক আনন্দে যোগ দিয়েছে নারীরাও। সেই সঙ্গে ফুটবল একটি সম্মিলিত, আন্তর্জাতিক আবেগ প্রকাশের ক্ষেত্র হিসেবেও আবির্ভূত হয়েছে। মানুষ ক্রমশ ব্যক্তিকেন্দ্রিক হয়ে ওঠায়, আগের মতো ধর্ম বা রাজনৈতিক বিপ্লবজাতীয় কোনো বিষয়কে কেন্দ্র করে দলবদ্ধ হয়ে কিছু করার উপলক্ষ পৃথিবীতে কমে এসেছে। ফুটবল যেন মানুষকে যূথবদ্ধ হওয়ার সেই হারানো সুযোগটি ফিরিয়ে দিয়েছে। বিবিসি টেলিভিশনের একটি আলোচনা অনুষ্ঠানে দেখলাম বিতর্ক হচ্ছে, ব্রিটেনে ফুটবল স্টেডিয়াম এখন চার্চের জায়গা দখল করে নিয়েছে কি না এই নিয়ে। এভাবে নানা শর্তসাপেক্ষে ফুটবল ক্রমশ পরিণত হয়েছে এক বিশ্ব-ব্যাপারে।
সমাজতান্ত্রিক বিশ্বের পতনের পর ফুটবলের এই বিশ্ব-উৎসবে পরিণত হওয়াতে সবচেয়ে বেশি লাভবান হয়েছে ব্যবসায়ী দল। এখন আর ভিন্নমতাবলম্বীদের রাজনৈতিক মোকাবিলার স্বার্থে নয়, খেলাধুলায় ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগ নিছকই মুনাফার স্বার্থে। লোকেরা যখন ফুটবলের উন্মাদনায় থাকে তখন সে থাকে নাজুক, ছেলেমানুষ। আর যারা পুঁজির কারবারি তাদের জন্য এতগুলো ঘোরগ্রস্ত মানুষকে একসঙ্গে পাওয়া তো হাতে চাঁদ পাওয়ার মতো। ফুটবলের সবুজ মাঠ তাই ঘিরে থাকে লাল কোক আর ম্যাগডোনাল্ডসের বেষ্টনী। খাদ্য হিসেবে এগুলো যতই অস্বাস্থ্যকর হোক না কেন, টিভি ক্যামেরায় খেলোয়াড়দের বুট আর বলের দিকে চোখ রাখলে আপনি এদের নামগুলো দেখতেও বাধ্য হবেন। ওদিকে বিশ্বকাপকে ঘিরে সারা পৃথিবীতে চলছে হাজার হাজার ডলারের জুয়া। সাবান, শ্যাস্পু, মোবাইল ফোন কোম্পানি, ব্যাংক, টিভি চ্যানেল, এয়ারলাইনস তথা সবাই এসে যোগ দিয়েছে এই মুনাফার হরিলুটে। আকাশচুম্বি মূল্যে চলছে ফুটবলার কেনাবেচা। জানতে পারি, তারকা খেলোয়াড় রোনালদিনোর মাসিক উপার্জন বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ২০ কোটি।
ভাবছিলাম, ফুটবলকে ঘিরে পৃথিবীর মানুষের মনের অমল-ধবল পালে যে নির্মল হাওয়া লাগে, তাকে ব্যবহার করা যেত বিশ্বভাতৃত্ব আর সৌহার্দ্যের স্বার্থে। এই মিলনমেলাকে রাজনীতিবিদেরা সৃজনশীলভাবে ব্যবহার করতে পারতেন সংঘাতময় এই বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রক্রিয়ার কোনো একটি অংশ হিসেবে। কিন্তু তার নমুনা তো বিশেষ দেখতে পাই না। বরং বিশ্বকাপ আসরের পুরো ফায়দা লোটে বাণিজ্যবুদ্ধির শিরোমণিরা, জুয়াড়িরা। আমরা ভেঁপু বাজাই, আর্জেন্টিনা-ব্রাজিলের পতাকা নিয়ে মারামারি করি, আর ওদিকে নেপোয় মারে দই।
zaman567@yahoo.com
No comments