আদালত চত্বরে শ্লীলতাহানি-চার পুলিশ ও সোর্সের বিরুদ্ধে মামলা তদন্ত করবে ডিবি
ঢাকা মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালত চত্বরে পুলিশ ক্লাবে এক নারীর শ্লীলতাহানির ঘটনায় অবশেষে থানার সেকেন্ড অফিসারসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা নিয়েছে কোতোয়ালি থানা। মামলার বাদী নির্যাতিতার মা। গতকাল বৃহস্পতিবার মামলার তদন্তভার মহানগর গোয়েন্দা পুলিশে (ডিবি) ন্যস্ত করা হয়েছে।
পুলিশ জানায়, বুধবার রাত ৮টায় থানায় মামলাটি করা হলেও মূলত এটি নথিভুক্ত হয় রাত ২টার দিকে। আসামিরা হচ্ছেন থানার সেকেন্ড অফিসার (অপারেশন) এসআই নাজমুল হুদা, এএসআই জামান, পুলিশের সোর্স বাবু ও অজ্ঞাতপরিচয় দুই পুলিশ সদস্য। বাদী এই দুজনের নাম-পরিচয় বলতে না পারলেও তাঁরা যে পুলিশ সদস্য সে ব্যাপারে স্পষ্টভাবে এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।
শ্লীলতাহানির এ ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির প্রধান এডিসি মারুফ হোসেন সরদার গতকাল কালের কণ্ঠকে জানান, বাদী এজাহারে যাঁদের পরিচয় উল্লেখ করতে পারেননি তদন্তে তাঁদের পরিচয় পাওয়া গেছে। বুধবার রাতেই তিনি তদন্ত প্রতিবেদন উপপুলিশ কমিশনারের কাছে জমা দিয়েছেন।
উপপুলিশ কমিশনার (লালবাগ) হারুন অর রশিদ বলেন, 'তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়া গেছে। তবে তদন্তের স্বার্থে তা এই মুহূর্তে প্রকাশ করা যাচ্ছে না। অন্যদিকে এজাহারের ভিত্তিতে অভিযুক্ত এসআই নাজমুল হুদাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। বাকিদের পরিচয় পাওয়া গেলেও এজাহারে তাঁদের নাম না থাকায় তাৎক্ষণিক কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তবে অপরাধীরা কেউ ছাড়া পাবেন না।'
মামলার এজাহারে যা বলা হয়েছে (অনেকটা হুবহু তুলে ধরা হলো) : আমি নিম্নস্বাক্ষরকারী আপনার থানায় উপস্থিত হয়ে জানাচ্ছি যে গত ২৯ মে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে আমার মেয়েসহ ২৭ কোর্ট হাউস স্ট্রিটে (দোতলা) কোর্ট হাজতের পশ্চিম পাশের ঠিকানায় মুহুরির কাছে যাই মেয়ের পক্ষে তার স্বামীর নির্যাতনের বিরুদ্ধে মামলা করতে। পরবর্তী সময়ে সকাল ১০টার দিকে আমার স্বামী মোটরসাইকেলযোগে সেখানে আসেন। অনুমানিক সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ১ নম্বর আসামি বাবু (পুলিশের ইনফরমার) উক্ত চেম্বারে আসে। বাবু আমার স্বামীর পূর্বপরিচিত হওয়ায় সে নানা বিষয়ে আমার স্বামীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে চলে যায়। দুপুর ১২টার দিকে মুহুরি আমাদের জানান যে আজ মামলা দায়ের করা যাবে না। আগামীকাল সকাল ৯টার মধ্যে আসতে হবে। আমি, মেয়ে ও আমার স্বামী আনুমানিক দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ওই চেম্বার থেকে সিএমএম কোর্টের সামনের গেট দিয়ে মোটরসাইকেলযোগে বের হওয়ার সময় বাবু ও সাদা পোশাকধারী নিজেকে সাব-ইন্সপেক্টর পরিচয় দিয়ে পথরোধ করে। বাবু আমাদের দেখিয়ে দিয়ে বলে, এরা মোটরসাইকেল চোর। এরা মহিলাদের দিয়ে, মেয়ে-বউ দিয়ে চুরি করে। এই বলে আমাদের মোটরসাইকেলের চাবি কেড়ে নিতে চায়। সেটা নিতে না পারায় আমাদের সহকারে মোটরসাইকেল ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। এরপর আরো কয়েকজন পুলিশ সেখানে এসে আমার মেয়ে ও স্বামীকে পুলিশ ক্লাবের কলাপসিবল গেটের ভেতরে নিয়ে গেট আটকে দুজনকে দুই রুমে আটকে রাখে। আমাকে গেটের ভেতরে যেতে দেয় না। এ সময় কোতোয়ালি থানার সেকেন্ড অফিসার নাজমুল হুদা আমার স্বামীকে চড়, লাথি, ঘুষি মারে ও চোখে দুই হাত দিয়ে খামচি মেরে চোখ উপড়ে ফেলতে চায়। এ সময় তাঁর চোখে রক্তাক্ত জখম হয়। নাজমুল হুদা আমার স্বামীর গলায় থাকা ১ ভরি ওজনের স্বর্ণের চেইন ও হাতে থাকা সোনালি রঙের বিদেশ থেকে আনা হাতঘড়ি কেড়ে নেয়। এ সময় আমার মেয়ে অন্য কক্ষ থেকে চিৎকার করে বলে- মা, দুই পুলিশ (আসামি পুলিশ সদস্য জামান ও গোঁফওয়ালা আরেক পুলিশ সদস্য) আমার গায়ে হাত দিয়েছে। আমি তখন বাইরে থেকে চিৎকার করে মেয়ে ও স্বামীকে বাঁচাতে বললে উপস্থিত আইনজীবীরা এসে পুলিশদের গেট খুলতে বলেন। পুলিশ গেট খুললে আমার মেয়ে দৌড়ে বের হয়ে আসে এবং জানায় যে তার গলায় থাকা স্বর্ণের চেইন গোঁফওয়ালা পুলিশ জোর করে কেড়ে নিয়েছে। চিৎকার শুনে কোতোয়ালি থানার ওসি সালাহউদ্দিন ও আরো চার/পাঁচজন পুলিশ এসে আমাকে, আমার মেয়ে ও আমার স্বামীকে ভ্যানে করে থানায় নিয়ে যায় এবং আমার স্বামীকে হাজতে আটকে রাখে। আমাদের মোটরসাইকেলটি তালাহীন অবস্থায় কোর্ট এলাকায় থাকায় আনুমানিক ৪টার দিকে আমি মেয়েসহ মোটরসাইকেলে তালা দেওয়ার জন্য কোর্ট এলাকায় আসি। এ সময় জামান ও অজ্ঞাতপরিচয় ওই গোঁফওয়ালা পুলিশ সদস্য পুনরায় আমাদের গালাগালিসহ মারধর করে। আমার চিৎকার শুনে কোর্ট এলাকায় উপস্থিত আইনজীবী ও সাংবাদিকরা এগিয়ে এলে তাঁদেরও ওরা মারধর করে। পরবর্তী সময়ে বিকেল ৫টার দিকে আমাকে ও আমার মেয়েসহ সাহায্যকারী দুই আইনজীবীকে পুলিশ তাদের ভ্যানে করে কোতোয়ালি থানায় নিয়ে আসে। এ সময় আমার মেয়ের ওপর শারীরিক নির্যাতন এবং আমার স্বামীকে মারধর করার বিষয়ে মামলা করতে চাইলে ওসি সাহেব না আসা পর্যন্ত মামলা নেওয়া যাবে না বলে ডিউটি অফিসার জানান। আমার মেয়ে ও আমাকে মহিলা পুলিশ দিয়ে থানার ভেতরের একটি কক্ষে ঘেরাও করে রাখা হয়। বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে বিভিন্ন মিডিয়ার সাংবাদিকরা থানায় উপস্থিত হন। বিকেল ৬টার দিকে আইন ও সালিশ কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক সুলতানা কামাল দুজন সহকর্মীসহ থানায় আসেন এবং আমাদের তাঁর জিম্মায় নিয়ে নেন। এরপর তিনি আমাদের ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসেন এবং আমার স্বামীর চিকিৎসা করিয়ে আমাদের বাসায় পৌঁছে দেন। আমি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত থাকায় মামলা করতে সামান্য বিলম্ব হলো।
শ্লীলতাহানির এ ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির প্রধান এডিসি মারুফ হোসেন সরদার গতকাল কালের কণ্ঠকে জানান, বাদী এজাহারে যাঁদের পরিচয় উল্লেখ করতে পারেননি তদন্তে তাঁদের পরিচয় পাওয়া গেছে। বুধবার রাতেই তিনি তদন্ত প্রতিবেদন উপপুলিশ কমিশনারের কাছে জমা দিয়েছেন।
উপপুলিশ কমিশনার (লালবাগ) হারুন অর রশিদ বলেন, 'তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়া গেছে। তবে তদন্তের স্বার্থে তা এই মুহূর্তে প্রকাশ করা যাচ্ছে না। অন্যদিকে এজাহারের ভিত্তিতে অভিযুক্ত এসআই নাজমুল হুদাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। বাকিদের পরিচয় পাওয়া গেলেও এজাহারে তাঁদের নাম না থাকায় তাৎক্ষণিক কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তবে অপরাধীরা কেউ ছাড়া পাবেন না।'
মামলার এজাহারে যা বলা হয়েছে (অনেকটা হুবহু তুলে ধরা হলো) : আমি নিম্নস্বাক্ষরকারী আপনার থানায় উপস্থিত হয়ে জানাচ্ছি যে গত ২৯ মে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে আমার মেয়েসহ ২৭ কোর্ট হাউস স্ট্রিটে (দোতলা) কোর্ট হাজতের পশ্চিম পাশের ঠিকানায় মুহুরির কাছে যাই মেয়ের পক্ষে তার স্বামীর নির্যাতনের বিরুদ্ধে মামলা করতে। পরবর্তী সময়ে সকাল ১০টার দিকে আমার স্বামী মোটরসাইকেলযোগে সেখানে আসেন। অনুমানিক সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ১ নম্বর আসামি বাবু (পুলিশের ইনফরমার) উক্ত চেম্বারে আসে। বাবু আমার স্বামীর পূর্বপরিচিত হওয়ায় সে নানা বিষয়ে আমার স্বামীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে চলে যায়। দুপুর ১২টার দিকে মুহুরি আমাদের জানান যে আজ মামলা দায়ের করা যাবে না। আগামীকাল সকাল ৯টার মধ্যে আসতে হবে। আমি, মেয়ে ও আমার স্বামী আনুমানিক দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ওই চেম্বার থেকে সিএমএম কোর্টের সামনের গেট দিয়ে মোটরসাইকেলযোগে বের হওয়ার সময় বাবু ও সাদা পোশাকধারী নিজেকে সাব-ইন্সপেক্টর পরিচয় দিয়ে পথরোধ করে। বাবু আমাদের দেখিয়ে দিয়ে বলে, এরা মোটরসাইকেল চোর। এরা মহিলাদের দিয়ে, মেয়ে-বউ দিয়ে চুরি করে। এই বলে আমাদের মোটরসাইকেলের চাবি কেড়ে নিতে চায়। সেটা নিতে না পারায় আমাদের সহকারে মোটরসাইকেল ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। এরপর আরো কয়েকজন পুলিশ সেখানে এসে আমার মেয়ে ও স্বামীকে পুলিশ ক্লাবের কলাপসিবল গেটের ভেতরে নিয়ে গেট আটকে দুজনকে দুই রুমে আটকে রাখে। আমাকে গেটের ভেতরে যেতে দেয় না। এ সময় কোতোয়ালি থানার সেকেন্ড অফিসার নাজমুল হুদা আমার স্বামীকে চড়, লাথি, ঘুষি মারে ও চোখে দুই হাত দিয়ে খামচি মেরে চোখ উপড়ে ফেলতে চায়। এ সময় তাঁর চোখে রক্তাক্ত জখম হয়। নাজমুল হুদা আমার স্বামীর গলায় থাকা ১ ভরি ওজনের স্বর্ণের চেইন ও হাতে থাকা সোনালি রঙের বিদেশ থেকে আনা হাতঘড়ি কেড়ে নেয়। এ সময় আমার মেয়ে অন্য কক্ষ থেকে চিৎকার করে বলে- মা, দুই পুলিশ (আসামি পুলিশ সদস্য জামান ও গোঁফওয়ালা আরেক পুলিশ সদস্য) আমার গায়ে হাত দিয়েছে। আমি তখন বাইরে থেকে চিৎকার করে মেয়ে ও স্বামীকে বাঁচাতে বললে উপস্থিত আইনজীবীরা এসে পুলিশদের গেট খুলতে বলেন। পুলিশ গেট খুললে আমার মেয়ে দৌড়ে বের হয়ে আসে এবং জানায় যে তার গলায় থাকা স্বর্ণের চেইন গোঁফওয়ালা পুলিশ জোর করে কেড়ে নিয়েছে। চিৎকার শুনে কোতোয়ালি থানার ওসি সালাহউদ্দিন ও আরো চার/পাঁচজন পুলিশ এসে আমাকে, আমার মেয়ে ও আমার স্বামীকে ভ্যানে করে থানায় নিয়ে যায় এবং আমার স্বামীকে হাজতে আটকে রাখে। আমাদের মোটরসাইকেলটি তালাহীন অবস্থায় কোর্ট এলাকায় থাকায় আনুমানিক ৪টার দিকে আমি মেয়েসহ মোটরসাইকেলে তালা দেওয়ার জন্য কোর্ট এলাকায় আসি। এ সময় জামান ও অজ্ঞাতপরিচয় ওই গোঁফওয়ালা পুলিশ সদস্য পুনরায় আমাদের গালাগালিসহ মারধর করে। আমার চিৎকার শুনে কোর্ট এলাকায় উপস্থিত আইনজীবী ও সাংবাদিকরা এগিয়ে এলে তাঁদেরও ওরা মারধর করে। পরবর্তী সময়ে বিকেল ৫টার দিকে আমাকে ও আমার মেয়েসহ সাহায্যকারী দুই আইনজীবীকে পুলিশ তাদের ভ্যানে করে কোতোয়ালি থানায় নিয়ে আসে। এ সময় আমার মেয়ের ওপর শারীরিক নির্যাতন এবং আমার স্বামীকে মারধর করার বিষয়ে মামলা করতে চাইলে ওসি সাহেব না আসা পর্যন্ত মামলা নেওয়া যাবে না বলে ডিউটি অফিসার জানান। আমার মেয়ে ও আমাকে মহিলা পুলিশ দিয়ে থানার ভেতরের একটি কক্ষে ঘেরাও করে রাখা হয়। বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে বিভিন্ন মিডিয়ার সাংবাদিকরা থানায় উপস্থিত হন। বিকেল ৬টার দিকে আইন ও সালিশ কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক সুলতানা কামাল দুজন সহকর্মীসহ থানায় আসেন এবং আমাদের তাঁর জিম্মায় নিয়ে নেন। এরপর তিনি আমাদের ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসেন এবং আমার স্বামীর চিকিৎসা করিয়ে আমাদের বাসায় পৌঁছে দেন। আমি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত থাকায় মামলা করতে সামান্য বিলম্ব হলো।
No comments