সচেতন সাংবাদিক সমাজের ব্যানারে ওরা কারা?
স্টাফ রিপোর্টার: রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে সাংবাদিক নির্মূলের আহ্বান সংবলিত ব্যানার টাঙানো হয়েছে। গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবের উল্টো পাশে মৎস্য ভবন সংলগ্ন শিল্পকলা একাডেমীর প্রবেশ পথে, শাহবাগের জাতীয় জাদুঘরসহ বিভিন্ন স্থানে এ ব্যানার দেখা যায়। বুধবার সন্ধ্যায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের দ্বিতীয় গেটে সচেতন সাংবাদিক সমাজের নামে প্রথম এ ব্যানার চোখে পড়ে। পরে সাংবাদিকরা এটি খুলে নেন। ব্যানারে লেখা আছে ‘সাংবাদিকরা আইনের ঊর্ধ্বে নয়, বেআইনি সড়ক অবরোধ, গাড়ি ভাঙচুর ও বিনা কারণে পুলিশের ওপর আক্রমণ সমাজ সচেতন সাংবাদিকদের কাজ নয়, এদের চিহ্নিত করে নির্মূল করুন। ‘সচেতন সাংবাদিক সমাজ’।” তবে কারা এই সচেতন সাংবাদিক সমাজ তা জানা যায়নি। এ নিয়ে দিনভর আলোচনা হয় সাংবাদিক মহলে। ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন সংবাদকর্মী ও সাংবাদিক নেতারা। তারা ব্যানারওয়ালাদের কাপুরুষ আখ্যা দিয়ে সাহস থাকলে সামনে এসে নিজেদের পরিচয় খোলাসা করার আহ্বান জানান। সাংবাদিক নেতা ইকবাল সোবহান চৌধুরী বলেন, যারা নিজেদের পরিচয় দেয়ার সাহস রাখে না, এমন কাপুরুষদের টাঙানো ব্যানার নিয়ে কি মন্তব্য করবো? ব্যানারওয়ালারা কোনভাবেই সাংবাদিক নন মন্তব্য করে এ নেতা বলেন, একজন সাংবাদিক খুন হলে, নির্যাতনের শিকার হলে অন্য সহকর্মীরা ক্ষুব্ধ হবেন, এটা স্বাভাবিক। প্রতিকার না পেলে আন্দোলন করাটাও যৌক্তিক। সচেতন হলে ব্যানারওয়ালারাও এসব খুন-নির্যাতনের প্রতিবাদ করতেন। আসলে তারা সাংবাদিকই নন। ‘হয়তো এটা যাদের বিরুদ্ধে আমরা আন্দোলন করছি তাদেরই কাজ’- যোগ করেন এ নেতা। এসব ব্যানার সাংবাদিকদের চলমান আন্দোলনের বিরুদ্ধে একটি উদ্দেশ্যমূলক প্রচারণা বলে মত দেন তিনি। প্রবীণ সাংবাদিক, সম্পাদক আবেদ খান বলেন, ওরা কারা। আগে তাদের পরিচয় জানা দরকার।জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমদ বলেন, এটা কোন বিশেষ মহল থেকে করানো হচ্ছে। এর মাধ্যমে সংবাদিকদের চরিত্র হনন করে একটি মহল তাদের চলমান আন্দোলন বানচাল করতে চায়। দৈনিক আমাদের অর্থনীতি সম্পাদক নাঈমুল ইসলাম খান বলেন, নিজেদের সচেতন সাংবাদিক দাবিদার মুখগুলো আগে চেনা দরকার। তারা কোত্থেকে, কিভাবে এ ধারণা পেলো জানা জরুরি। তাদের সঙ্গে পরিচিত হতে পারলে উপকৃত হব। সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যা, সাংবাদিক নির্যাতন ও নতুন ওয়েজবোর্ড গঠনসহ নানা দাবিতে ফেব্রুয়ারি থেকে আন্দোলন করে আসছেন সাংবাদিক সমাজ। সমপ্রতি পুলিশ দ্বারা একাধিকবার সাংবাদিক নির্যাতন ও বিডি নিউজ অফিসে হামলার ঘটনা ঘটে। এর পরিপ্রেক্ষিতে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মঙ্গলবার সাংবাদিকদের পুলিশ থেকে নিরাপদ দূরত্বে থেকে সংবাদ সংগ্রহ করার পরামর্শ দেন। বুধবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পুলিশ আগের চেয়ে ভাল হয়েছে বলে মন্তব্য করেন। সরকারের দায়িত্বশীলদের এমন বুলি আর টাঙানো ব্যানারের মধ্যে যোগসূত্র খুঁজছেন অনেকে।
No comments