তদন্ত কর্মকর্তার কারিশমা: চার্জশিটে মৃত চেয়ারম্যানও জীবিত
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার
বিদ্যাকুট ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুর রউফ (৭৩) মরেও বেঁচে আছেন।
তাকে জীবন্ত করে রাখার এই কারিশমা দেখিয়েছেন পুলিশ ব্যুরো ইনভেস্টিগেশনের
(পিবিআই) ইন্সপেক্টর হারুন অর রশিদ। দেশের বাইরে থাকা লোকও হয়েছে সাক্ষী।
আবার সাক্ষী দেননি এমন ২৪ জনকে সাক্ষী বানিয়েছেন তিনি। টাকা না দেয়ায় একটি
হত্যা মামলায় নিরপরাধ লোকজনকে ফাঁসিয়েছেন এই তদন্তকারী কর্মকর্তা এমন
অভিযোগ করেছেন ওই মামলার একজন আসামি নবীনগরের বিদ্যাকুট ইউনিয়নের সাবেক
চেয়ারম্যান আবদুল হান্নান ভূঁইয়া। সেখানকার শিবপুর ইউনিয়নের বাঘাউড়া গ্রামে
২০১৫ সালের ১৩ই ফেব্রুয়ারি রাতে আল আমিন (২২) খুনের ঘটনা ঘটে। শ্বাসরোধ
করে হত্যার অভিযোগ এনে পরদিন তার পিতা কসবার খাড়েরা ইউনিয়নের সোনারগাঁও
গ্রামের জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বাদী হয়ে ১০ জনকে এজাহারনামীয় এবং ২-৩ জনকে
অজ্ঞাত দেখিয়ে নবীনগর থানায় হত্যা মামলা করেন। এই মামলায় পার্শ্ববর্তী
সেমন্তঘর গ্রামের আবদুল হান্নান ভূঁইয়া, তার ছেলে পলাশ (ইফতেখার মাহমুদ)সহ ৫
জনকেও আসামি করা হয়। হত্যা মামলাটির সর্বশেষ তদন্ত করে পিবিআই। এর আগে
প্রথমে সিআইডি এবং এরপর গোয়েন্দা পুলিশ মামলাটির তদন্ত করে আদালতে
অভিযোগপত্র জমা দেয়। এই দুটি সংস্থার তদন্তেই প্রকাশ পায় আবদুল হান্নান
ভূঁইয়ার সঙ্গে আল আমিনের ভগ্নিপতি জাকির হোসেনের জমিজমা সংক্রান্ত পূর্ব
বিরোধ রয়েছে। আবদুল হান্নানকে শায়েস্তা করতে নিজের শ্যালককে হত্যা করে
জাকির হোসেন। এরপর আবদুল হান্নান এবং তার ছেলেসহ ১০ জনকে হত্যা মামলায়
ফাঁসিয়ে দেয়। দুটি সংস্থার অভিযোগপত্রে বলা হয় ঘটনার আগের দিন ২০১৫ সালের
১৩ই ফেব্রুয়ারি নিহতের স্ত্রী ইতির নানির বাড়িতে দাওয়াত খেতে যায় আল আমিনের
ভগ্নিপতি জাকির ও তার সহযোগী শাওন, বিল্লাল ও মোবারক। খাওয়ার পর জাকির
ইতিকে ঘুমের ওষুধ মিশ্রিত দুটি শিঙ্গাড়া খেতে দিয়ে আল আমিনকে নিয়ে পাশের
বাড়িতে নাছির ফকিরের মাহফিলে চলে যায়। সেখান থেকে ফেরার পথে তাকে হত্যা
করে। এরপর লাশ গ্রামের একজনের বাড়িতে ফাঁস দিয়ে ঝুলিয়ে রাখে। দীর্ঘ তদন্ত,
সাক্ষ্য-প্রমাণ এবং সাক্ষীদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির প্রেক্ষিতে
সিআইডি এবং গোয়েন্দা পুলিশ জাকির হোসেন (৩৮), তার সহযোগী বিল্লাল (৩৭),
শাওন ওরফে রানা (৪২), মোবারক মিয়া (৩৬) এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত বলে অভিযোগপত্র
দেয়। অন্যদিকে পিবিআই এ ৪ জনকে নির্দোষ বলে তাদের অভিযোগপত্রে উল্লেখ করে। এ
বছরের ৯ই এপ্রিল আদালতে এই চার্জশিট দেন পিবিআই ইন্সপেক্টর হারুন অর রশিদ।
এই অভিযোগপত্রের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে ধরে গতকাল ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন আবদুল হান্নান ভূঁইয়া। পিবিআই’র দেয়া অভিযোগপত্রকে অদ্ভুত বলে আখ্যায়িত করে তিনি জানান- পিবিআই’র তদন্তকারী কর্মকর্তা মোট ৩৯ জনের জবানবন্দি গ্রহণ করেন। তাদের মধ্যে বিদ্যাকুট ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুর রউফ (৭৩) অন্যতম। ২০১৮ সালের ২রা নভেম্বর আবদুর রউফ ইন্তেকাল করলেও সাক্ষী হিসেবে তার জবানবন্দি নেয়ার তারিখ দেখানো হয়েছে ২০১৯ সালের ৩১শে জানুয়ারি। অর্থাৎ তার মৃত্যুর ২ মাস ২৯ দিন পর তার জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়। মেরাকুটা গ্রামের অজন্ত কুমার ভদ্র (৬৬) এর সাক্ষ্য গ্রহণের তারিখও দেখানো হয়েছে ২০১৯ সালের ৩১শে জানুয়ারি। কিন্তু তিনি বৈধ পাসপোর্টে ২০১৯ সালের ৯ই জানুয়ারি ভারত যান। সেখান থেকে দেশে ফেরেন ৮ই ফেব্রুয়ারি। আরো ২৪ জন সাক্ষী আদালতে এফিডেভিট জমা দিয়েছেন এই বলে যে তারা পিবিআই’র ওই কর্মকর্তার কাছে কোনো রকম সাক্ষীই দেননি। তাদের কয়েকজন হচ্ছেন শিবপুর ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান শাহিন সরকার, সাবেক ইউপি সদস্য মকবুল হোসেন, বিদ্যাকুটের বর্তমান ইউপি সদস্য শফিকুল আলম, অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মো. মোস্তফা, সাবেক ইউপি সদস্য তৌহিদুল ইসলাম, ডাক্তার নাছির উদ্দিন, সাবেক ইউপি সদস্য আলহাজ রফিকুল ইসলাম, আলহাজ কিতাব আলী, আলহাজ রেজেক মিয়া। তাছাড়া সিআইডি’র তদন্তে ঘটনায় জড়িত বলে প্রাথমিকভাবে নাম এসেছিল এমন ৬ জন কানু মিয়া, রহিজ মিয়া, সুদন মিয়া, দারু মিয়া, মজনু মিয়া ও মন্নান মিয়াকে পিবিআই কর্মকর্তা সাক্ষী হিসেবে দেখিয়েছেন। এই ৬ জনের মধ্যে ৪ জনই সিআইডি এবং গোয়েন্দা পুলিশের দেয়া অভিযোগপত্রের ৪ আসামির আত্মীয়স্বজন। সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয় ২০ লাখ টাকা ঘুষ না দেয়ার কারণেই পিবিআই কর্মকর্তা মনগড়া এই অভিযোগপত্র দিয়েছেন। তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআই ইন্সপেক্টর হারুন অর রশিদ প্রথমে আবদুল হান্নান ভূঁইয়াকে গ্রেপ্তার করার পর তার বড় ছেলের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা নেন। যার সাক্ষী শহরতলীর বিয়াল্লিশ্বর এলাকার আরভী হোটেলের মালিক আরিফ মিয়া। এরপর তদন্তে প্রকাশিত আসামি বিল্লাল মিয়াকে গ্রেপ্তার করার কথা বলে এ বছরের ২০শে ফেব্রুয়ারি আরো ১০ হাজার টাকা নেন। এরপর ২১শে মার্চ পিবিআই কর্মকর্তা হারুন তাকে ফোন করে শহরের কাউতলীস্থ হোটেল বায়েজীদে যেতে বলেন। সেখানে যাওয়ার পর তিনি তাকে বলেন-‘পূর্বের মতো সিএস (চার্জশিট) দিতে ২০ লাখ টাকা লাগবে। এই টাকা ডিআইজিসহ সকল ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণকে দিতে হবে। টাকা না দিলে পূর্বের মতো সিএস দিতে পারবো না। কারণ বাদীপক্ষে জোর তদবীর আছে।’ সংবাদ সম্মেলনে পিবিআই কর্মকর্তা হারুন অর রশিদ খানের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা এবং ন্যায় বিচার প্রার্থনা করেন আবদুল হান্নান ভূঁইয়া। তার বিরুদ্ধে পুলিশ মহাপরিদর্শকসহ বিভিন্ন সংস্থার প্রধানের কাছে ইতিপূর্বে লিখিত অভিযোগ দেয়ার কথাও জানান তিনি। বর্তমানে জামালপুরে কর্মরত অভিযুক্ত পিবিআইয়ের কর্মকর্তা হারুন অর রশিদ বলেন, নথিপত্র আমার হাতে নেই। না দেখে বলতে পারবো না। টাকা দাবি করার বিষয়ে বলেন, অভিযোগপত্র দিলে কতজন কত কিছুই বলে। মৃত ও দেশের বাইরে থাকা ব্যক্তিদের সাক্ষ্য গ্রহণের বিষয়ে তিনি বলেন, তাদের স্বাক্ষর রয়েছে।
এই অভিযোগপত্রের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে ধরে গতকাল ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন আবদুল হান্নান ভূঁইয়া। পিবিআই’র দেয়া অভিযোগপত্রকে অদ্ভুত বলে আখ্যায়িত করে তিনি জানান- পিবিআই’র তদন্তকারী কর্মকর্তা মোট ৩৯ জনের জবানবন্দি গ্রহণ করেন। তাদের মধ্যে বিদ্যাকুট ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুর রউফ (৭৩) অন্যতম। ২০১৮ সালের ২রা নভেম্বর আবদুর রউফ ইন্তেকাল করলেও সাক্ষী হিসেবে তার জবানবন্দি নেয়ার তারিখ দেখানো হয়েছে ২০১৯ সালের ৩১শে জানুয়ারি। অর্থাৎ তার মৃত্যুর ২ মাস ২৯ দিন পর তার জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়। মেরাকুটা গ্রামের অজন্ত কুমার ভদ্র (৬৬) এর সাক্ষ্য গ্রহণের তারিখও দেখানো হয়েছে ২০১৯ সালের ৩১শে জানুয়ারি। কিন্তু তিনি বৈধ পাসপোর্টে ২০১৯ সালের ৯ই জানুয়ারি ভারত যান। সেখান থেকে দেশে ফেরেন ৮ই ফেব্রুয়ারি। আরো ২৪ জন সাক্ষী আদালতে এফিডেভিট জমা দিয়েছেন এই বলে যে তারা পিবিআই’র ওই কর্মকর্তার কাছে কোনো রকম সাক্ষীই দেননি। তাদের কয়েকজন হচ্ছেন শিবপুর ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান শাহিন সরকার, সাবেক ইউপি সদস্য মকবুল হোসেন, বিদ্যাকুটের বর্তমান ইউপি সদস্য শফিকুল আলম, অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মো. মোস্তফা, সাবেক ইউপি সদস্য তৌহিদুল ইসলাম, ডাক্তার নাছির উদ্দিন, সাবেক ইউপি সদস্য আলহাজ রফিকুল ইসলাম, আলহাজ কিতাব আলী, আলহাজ রেজেক মিয়া। তাছাড়া সিআইডি’র তদন্তে ঘটনায় জড়িত বলে প্রাথমিকভাবে নাম এসেছিল এমন ৬ জন কানু মিয়া, রহিজ মিয়া, সুদন মিয়া, দারু মিয়া, মজনু মিয়া ও মন্নান মিয়াকে পিবিআই কর্মকর্তা সাক্ষী হিসেবে দেখিয়েছেন। এই ৬ জনের মধ্যে ৪ জনই সিআইডি এবং গোয়েন্দা পুলিশের দেয়া অভিযোগপত্রের ৪ আসামির আত্মীয়স্বজন। সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয় ২০ লাখ টাকা ঘুষ না দেয়ার কারণেই পিবিআই কর্মকর্তা মনগড়া এই অভিযোগপত্র দিয়েছেন। তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআই ইন্সপেক্টর হারুন অর রশিদ প্রথমে আবদুল হান্নান ভূঁইয়াকে গ্রেপ্তার করার পর তার বড় ছেলের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা নেন। যার সাক্ষী শহরতলীর বিয়াল্লিশ্বর এলাকার আরভী হোটেলের মালিক আরিফ মিয়া। এরপর তদন্তে প্রকাশিত আসামি বিল্লাল মিয়াকে গ্রেপ্তার করার কথা বলে এ বছরের ২০শে ফেব্রুয়ারি আরো ১০ হাজার টাকা নেন। এরপর ২১শে মার্চ পিবিআই কর্মকর্তা হারুন তাকে ফোন করে শহরের কাউতলীস্থ হোটেল বায়েজীদে যেতে বলেন। সেখানে যাওয়ার পর তিনি তাকে বলেন-‘পূর্বের মতো সিএস (চার্জশিট) দিতে ২০ লাখ টাকা লাগবে। এই টাকা ডিআইজিসহ সকল ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণকে দিতে হবে। টাকা না দিলে পূর্বের মতো সিএস দিতে পারবো না। কারণ বাদীপক্ষে জোর তদবীর আছে।’ সংবাদ সম্মেলনে পিবিআই কর্মকর্তা হারুন অর রশিদ খানের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা এবং ন্যায় বিচার প্রার্থনা করেন আবদুল হান্নান ভূঁইয়া। তার বিরুদ্ধে পুলিশ মহাপরিদর্শকসহ বিভিন্ন সংস্থার প্রধানের কাছে ইতিপূর্বে লিখিত অভিযোগ দেয়ার কথাও জানান তিনি। বর্তমানে জামালপুরে কর্মরত অভিযুক্ত পিবিআইয়ের কর্মকর্তা হারুন অর রশিদ বলেন, নথিপত্র আমার হাতে নেই। না দেখে বলতে পারবো না। টাকা দাবি করার বিষয়ে বলেন, অভিযোগপত্র দিলে কতজন কত কিছুই বলে। মৃত ও দেশের বাইরে থাকা ব্যক্তিদের সাক্ষ্য গ্রহণের বিষয়ে তিনি বলেন, তাদের স্বাক্ষর রয়েছে।
No comments