চীনের বিআরআইএ লাভবান হবে বাংলাদেশ, তবে...
সঠিক
পদক্ষেপ নিলে চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড কার্যক্রমের সুফল পেতে পারে
বাংলাদেশ। তবে, প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে গিয়ে বাংলাদেশ যেন চীনা ঋণের ফাঁদে
না পড়ে, সে বিষয়েও খেয়াল রাখতে হবে। প্রকল্প বাছাই ও বাস্তবায়ন, বিনিয়োগ,
ঋণের শর্ত- এসব বিষয় পরিষ্কার হওয়া দরকার। পাশাপাশি প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে
রাজনৈতিক সম্পর্ক রক্ষার ক্ষেত্রেও সতর্ক থাকা প্রয়োজন রয়েছে। রোববার
রাজধানীর একটি হোটেলে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) আয়োজিত ‘বেল্ট
অ্যান্ড রোড: তুলনামূলক অবস্থান থেকে বাংলাদেশের অবস্থান’ শীর্ষক
আন্তর্জাতিক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন। সিপিডির চেয়ারম্যান অধ্যাপক
রেহমান সোবহানের সভাপত্বিতে বক্তব্য রাখেন শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ
হুমায়ুন, পররাষ্ট্র সচিব এম শহীদুল হক, সিপিডির বিশেষ ফেলো দেবপ্রিয়
ভট্টাচার্য, চীনে নবনিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মাহবুব উজ জামান, চীনের
ইউনান অ্যাকাডেমি অব সোশ্যাল সায়েন্স ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ স্টাডিজের
অধ্যাপক চেং মিন, ভারতের রির্সাচ অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেম ফর ডেভেলপিং
কান্ট্রিসের মহাপরিচালক ড. শচীন চতুর্বেদী, সিপিডির ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য
সৈয়দ মঞ্জুর ইলাহী। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক
ড. ফাহমিদা খাতুন। সেমিনারে বাংলাদেশ, চীন, ভারত ও নেপালের বিশেষজ্ঞরা অংশ
নেন।
সেমিনারে বহুল আলোচিত চীনের ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভে’ বাংলাদেশের সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জগুলো তুলে ধরে বক্তারা জানান, ২০১৩ সালে এই উদ্যোগের সূচনা করে চীন। এটি ৭২টি দেশকে সংযুক্ত করবে। এই উদ্যোগ বাস্তবায়নে চীনের এক্সিম ও ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক ইতিমধ্যেই বিভিন্ন দেশের অবকাঠামো প্রকল্পে ১৯০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে। এই প্রকল্পে চীন-বাংলাদেশ এক হয়ে কাজ করলে লাভবান হবে দুই দেশই। তবে রয়েছে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ। ভুল পদক্ষেপে ফল হতে পারে নেতিবাচক। তাই বাংলাদেশকে সতর্ক পদক্ষেপের পরামর্শ অর্থনীতিবিদদের।
শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন বলেন, বিআরআই উচ্চপর্যায়ের সহযোগিতার একটি প্লাটফর্ম। এটি বাংলাদেশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ প্লাটফর্ম ব্যবহারের মাধ্যমে লাভবান হবে বাংলাদেশ। তিনি বলেন, কোনো দেশ একা উন্নয়ন করতে পারে না। যেহেতু আমাদের দেশের অর্থনীতিতে নানা ধরনের সমস্যা বিদ্যমান তাই অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও সাধারণ মানুষের জীবনমান উন্নয়নে বাংলাদেশ-চীন দুই দেশ যৌথভাবে পথচলার মধ্যদিয়ে ব্যাপক লাভবান হতে পারে। বিআরআই নিয়ে যখন চীনসহ অন্যান্য দেশের সঙ্গে আলোচনা হবে, তখন উইন-উইন পরিস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে। তিনি বলেন, চীন দেশের অবকাঠামো, জ্বালানি খাতে আঞ্চলিক সহযোগিতা লাগবে। বিআরআই এই সুযোগ নেয়ার ফোরাম হতে পারে।
সিপিডি চেয়ারম্যান অধ্যাপক রেহমান সোবহান বলেন, চীন বর্তমানে বিশ্ববাণিজ্যের নেতৃত্বে আছে। এর সঙ্গে অন্য দেশের সমন্বয় করে চলতে হবে। এটি এখন বিশ্ব অর্থনীতির নতুন ব্যবস্থা। এটা যেন উপনিবেশবাদের মতো না হয়, এটা যেন অংশীদারত্বের ভিত্তিতে হয়। এতে দক্ষিণ-দক্ষিণ সহযোগিতার সুযোগ আরো বাড়বে। তিনি বলেন, চীনের সঙ্গে বিআরআই প্রকল্পে যুক্ত হতে হলে চীনের অর্থনীতিটা বুঝে দর কষাকষি করতে হবে। কেননা যখন আমরা দর কষাকষি করব, তখন জাতীয় স্বার্থ সবার আগে বিবেচনা করতে হবে। আর সে জন্য গবেষণা প্রয়োজন। চীনের অর্থনীতিতে ভবিষ্যতে কী হচ্ছে, তাদের থিং ট্যাঙ্ক কী ভাবছে, সেজন্য বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে এরসঙ্গে পার্টনারশিপে যুক্ত করতে হবে। কেননা বিআরআই নিয়ে চীনে প্রচুর গবেষণা হয়েছে। বেল্ট অ্যান্ড রোডের অবকাঠামো নির্মাণে কোন দেশ কি পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করবে তা পরিষ্কার হওয়া জরুরি বলে মনে করেন সিপিডি’র চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, বিআরআই বাংলাদেশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। চীন বাংলাদেশে বিনিয়োগ করছে এবং ভবিষ্যতে বিনিয়োগ আরো বাড়বে। বিআরআইয়ের সুযোগ-সুবিধা নিয়ে ব্যাপক আলাপ-আলোচনা দরকার। তিনি বলেন, বিআরআইয়ের প্রকল্প বাস্তবায়নে অন্যদেশের সঙ্গে যেন দ্বি-পাক্ষিক সম্পর্ক নষ্ট না হয় সেদিকে নজর রাখতে হবে। প্রকল্পে বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশ যেন সমানভাবে উপকৃত হয় সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে। মনে রাখতে হবে, বিচার বিবেচনা ছাড়া প্রকল্প নিলে তা হিতে বিপরীত হতে পারে। একইসঙ্গে প্রকল্প হতে হবে বাংলাদেশের সক্ষমতা বিবেচনায়।
পররাষ্ট্রসচিব শহীদুল হক বলেন, বর্তমানে বিশ্ববাণিজ্যে ইন্দো-প্যাসিফিক, ইউরো-এশিয়া ও বিআরআই উদ্যোগ আছে। আমরা সব উদ্যোগের সঙ্গে যাব। কোনো ক্ষতিকর কিছুর সঙ্গে থাকব না। যখন আমরা এসব নিয়ে দর কষাকষি করব, তখন জাতীয় স্বার্থকে প্রাধান্য দেব।
সংলাপে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মঞ্জুর এলাহী বলেন, আমরা বাজার চাই, এটা সত্য। কিন্তু সবকিছু যাচাই বাছাই করে নেয়া উচিত।
মূল প্রবন্ধে ড. ফাহিমদা বলেন, বিআরআই-এর মাধ্যমে আমাদের যে প্রস্তাবগুলো দেয়া আছে আমরা তা নেব। কিন্তু খেয়াল রাখতে হবে এই অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও বিনিয়োগের শর্তগুলোর দিকে। দক্ষতা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার মাধ্যমে টেন্ডার থেকে শুরু করে পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করতে হবে। আমাদের লক্ষ্য রাখতে হবে, বিআরআই যে ঋণ দিচ্ছে সেই ঋণে সুদের হার যাতে কম হয়। আমরা কেন ৩ শতাংশ দেব? ঋণ যেন এক শতাংশের নিচে হয়। আমরা যাতে ঋণের ফাঁদে না পড়ি। আমাদের প্রধান উদ্দেশ্য হতে হবে রাজনীতির বাইরে গিয়ে অর্থনৈতিক উন্নয়ন করা।
সেমিনারে বহুল আলোচিত চীনের ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভে’ বাংলাদেশের সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জগুলো তুলে ধরে বক্তারা জানান, ২০১৩ সালে এই উদ্যোগের সূচনা করে চীন। এটি ৭২টি দেশকে সংযুক্ত করবে। এই উদ্যোগ বাস্তবায়নে চীনের এক্সিম ও ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক ইতিমধ্যেই বিভিন্ন দেশের অবকাঠামো প্রকল্পে ১৯০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে। এই প্রকল্পে চীন-বাংলাদেশ এক হয়ে কাজ করলে লাভবান হবে দুই দেশই। তবে রয়েছে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ। ভুল পদক্ষেপে ফল হতে পারে নেতিবাচক। তাই বাংলাদেশকে সতর্ক পদক্ষেপের পরামর্শ অর্থনীতিবিদদের।
শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন বলেন, বিআরআই উচ্চপর্যায়ের সহযোগিতার একটি প্লাটফর্ম। এটি বাংলাদেশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ প্লাটফর্ম ব্যবহারের মাধ্যমে লাভবান হবে বাংলাদেশ। তিনি বলেন, কোনো দেশ একা উন্নয়ন করতে পারে না। যেহেতু আমাদের দেশের অর্থনীতিতে নানা ধরনের সমস্যা বিদ্যমান তাই অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও সাধারণ মানুষের জীবনমান উন্নয়নে বাংলাদেশ-চীন দুই দেশ যৌথভাবে পথচলার মধ্যদিয়ে ব্যাপক লাভবান হতে পারে। বিআরআই নিয়ে যখন চীনসহ অন্যান্য দেশের সঙ্গে আলোচনা হবে, তখন উইন-উইন পরিস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে। তিনি বলেন, চীন দেশের অবকাঠামো, জ্বালানি খাতে আঞ্চলিক সহযোগিতা লাগবে। বিআরআই এই সুযোগ নেয়ার ফোরাম হতে পারে।
সিপিডি চেয়ারম্যান অধ্যাপক রেহমান সোবহান বলেন, চীন বর্তমানে বিশ্ববাণিজ্যের নেতৃত্বে আছে। এর সঙ্গে অন্য দেশের সমন্বয় করে চলতে হবে। এটি এখন বিশ্ব অর্থনীতির নতুন ব্যবস্থা। এটা যেন উপনিবেশবাদের মতো না হয়, এটা যেন অংশীদারত্বের ভিত্তিতে হয়। এতে দক্ষিণ-দক্ষিণ সহযোগিতার সুযোগ আরো বাড়বে। তিনি বলেন, চীনের সঙ্গে বিআরআই প্রকল্পে যুক্ত হতে হলে চীনের অর্থনীতিটা বুঝে দর কষাকষি করতে হবে। কেননা যখন আমরা দর কষাকষি করব, তখন জাতীয় স্বার্থ সবার আগে বিবেচনা করতে হবে। আর সে জন্য গবেষণা প্রয়োজন। চীনের অর্থনীতিতে ভবিষ্যতে কী হচ্ছে, তাদের থিং ট্যাঙ্ক কী ভাবছে, সেজন্য বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে এরসঙ্গে পার্টনারশিপে যুক্ত করতে হবে। কেননা বিআরআই নিয়ে চীনে প্রচুর গবেষণা হয়েছে। বেল্ট অ্যান্ড রোডের অবকাঠামো নির্মাণে কোন দেশ কি পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করবে তা পরিষ্কার হওয়া জরুরি বলে মনে করেন সিপিডি’র চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, বিআরআই বাংলাদেশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। চীন বাংলাদেশে বিনিয়োগ করছে এবং ভবিষ্যতে বিনিয়োগ আরো বাড়বে। বিআরআইয়ের সুযোগ-সুবিধা নিয়ে ব্যাপক আলাপ-আলোচনা দরকার। তিনি বলেন, বিআরআইয়ের প্রকল্প বাস্তবায়নে অন্যদেশের সঙ্গে যেন দ্বি-পাক্ষিক সম্পর্ক নষ্ট না হয় সেদিকে নজর রাখতে হবে। প্রকল্পে বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশ যেন সমানভাবে উপকৃত হয় সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে। মনে রাখতে হবে, বিচার বিবেচনা ছাড়া প্রকল্প নিলে তা হিতে বিপরীত হতে পারে। একইসঙ্গে প্রকল্প হতে হবে বাংলাদেশের সক্ষমতা বিবেচনায়।
পররাষ্ট্রসচিব শহীদুল হক বলেন, বর্তমানে বিশ্ববাণিজ্যে ইন্দো-প্যাসিফিক, ইউরো-এশিয়া ও বিআরআই উদ্যোগ আছে। আমরা সব উদ্যোগের সঙ্গে যাব। কোনো ক্ষতিকর কিছুর সঙ্গে থাকব না। যখন আমরা এসব নিয়ে দর কষাকষি করব, তখন জাতীয় স্বার্থকে প্রাধান্য দেব।
সংলাপে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মঞ্জুর এলাহী বলেন, আমরা বাজার চাই, এটা সত্য। কিন্তু সবকিছু যাচাই বাছাই করে নেয়া উচিত।
মূল প্রবন্ধে ড. ফাহিমদা বলেন, বিআরআই-এর মাধ্যমে আমাদের যে প্রস্তাবগুলো দেয়া আছে আমরা তা নেব। কিন্তু খেয়াল রাখতে হবে এই অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও বিনিয়োগের শর্তগুলোর দিকে। দক্ষতা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার মাধ্যমে টেন্ডার থেকে শুরু করে পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করতে হবে। আমাদের লক্ষ্য রাখতে হবে, বিআরআই যে ঋণ দিচ্ছে সেই ঋণে সুদের হার যাতে কম হয়। আমরা কেন ৩ শতাংশ দেব? ঋণ যেন এক শতাংশের নিচে হয়। আমরা যাতে ঋণের ফাঁদে না পড়ি। আমাদের প্রধান উদ্দেশ্য হতে হবে রাজনীতির বাইরে গিয়ে অর্থনৈতিক উন্নয়ন করা।
No comments