রেশমা খুন: চার কারণ নিয়ে অনুসন্ধানে পুলিশ by আল-আমিন
চারটি
কারণকে সামনে রেখে মিরপুরে কলেজছাত্রী আমিনা আক্তার রেশমা হত্যার ঘটনার
তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। পারিবারিক সমস্যা, সম্পত্তির বিরোধ ও নিহত রেশমার
মায়ের বিভিন্ন খাতে টাকা বিনিয়োগ এবং কলেজের এক সহপাঠীর সঙ্গে ঝগড়ার ঘটনাকে
কেন্দ্র করে রেশমা খুন হতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। নৃশংস
হত্যাকাণ্ডের শিকার মেধাবী ও বিনয়ী রেশমার এমন নির্মম মৃত্যুতে পরিবার,
প্রতিবেশী ও সহপাঠীদের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। সবার একটাই দাবি-
খুনিদের যেন শাস্তি হয়।
বৃহস্পতিবার দুপুরে মিরপুর থানাধীন রাইনখোলা ২ নম্বর রোডের চ-ব্লকের ২৬৫/২৬৩ নম্বর পাঁচতলা বাড়ির দ্বিতীয় তলার ফ্ল্যাট থেকে আমেনা আক্তার রেশমার গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের মর্গে পাঠায়। নিহত আমেনা মিরপুর বিসিআইসি কলেজের এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী ছিলেন। এ ঘটনায় কাউকে আটক করতে পারেনি পুলিশ।
সূত্র জানায়, হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নিহতের মা মরিয়ম বেগম বাদী হয়ে মিরপুর মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। নম্বর-৪৩। মামলায় অজ্ঞাতনামাদের আসামি করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, রহস্যময় ওই কলেজ ছাত্রীকে হত্যার বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে।
গতকাল রেশমার মিরপুরের রাইনখোলা বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, ওই বাড়িতে স্থানীয়দের ভিড়। নিহতের স্বজন ও সহপাঠীরা স্তদ্ধ। অনেকেই কান্নায় ভেঙে পড়েন। রেশমা অত্যন্ত বিনয়ী ও মেধাবী ছিলেন। কলেজ ও কোচিং বাদে তিনি কোথাও যেতেন না। সারাক্ষণ বাসায় থাকতেন। এমন একজন মেধাবী মেয়েকে কে বা কারা নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করলো তা ভাবতেই পারছেন না কেউ। নিহতের মা মরিয়ম বেগম শোকে স্তব্ধ। তিনি কথা বলা ভাষা হারিয়ে ফেলেছেন। শুধু কান্নাজড়িত কণ্ঠে জানালেন, তার মেয়ের হত্যাকারীদের যেন দ্রুত গ্রেপ্তার করা হয়। নিহতের সহপাঠী নাজনীন আক্তার রুপা কান্নাজড়িত কণ্ঠে জানান, বৃহস্পতিবার সকালে আমাকে ফোন করেছিল রেশমা। নতুন আরেকটি কোচিংয়ে ভর্তি হবে আমাকে জানিয়েছিল। শনিবার রেশমাকে আমি আমাদের বাড়িতে আসতে বলেছিলাম। কিন্তু, তার আগেই সে নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়ে পৃথিবী থেকে বিদায় নিলো। তিনি খুনিদের শাস্তি দাবি করেন। নিহতের পিতা আলমগীর হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ঘটনার সময় ফ্ল্যাটে কেউ ছিল না। ব্যক্তিগত কাজে আমি অফিসে চলে যায়। আর আমার স্ত্রী মরিয়ম বেগম মিরপুরে চলে যায়। এই ফাঁকে কে কারা তার মেয়েকে এমনভাবে মেরে ফেলেছে। তিনি দাবি করেন তার পরিবারের মধ্যে কোন পারিবারিক বিরোধ নেই
আলমগীর হোসেন আরও জানান, রেশমা যে কলেজে পড়তেন ওই কলেজের তার এক সহপাঠীর সঙ্গে ঝগড়া হয়। খাতায় লেখাকে কেন্দ্র করে ওই সহপাঠীর সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়। এরপর ওই সহপাঠী রেশমাকে চড় মারে। রেশমা ঘটনাটি তার কলেজের এক শিক্ষককে জানান। ওই শিক্ষক বিষয়টি মিটমাট করে দেন। এ বিষয়টিও পুলিশ তদন্তের মধ্যে রেখেছে। রেশমার বাবার অভিযোগের প্রেক্ষিতে ওই ছাত্রকেও সন্দেহ করছে পুলিশ।
তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নিহতের এক স্বজন জানান, নিহতের বাবা আলমগীরের আগে তিন বার বিয়ে হয়েছিল। মরিয়ম বেগম হচ্ছেন তার তৃতীয় স্ত্রী। আর মরিয়ম বেগমের আগে দুইবার বিয়ে হয়েছিল। আগের সংসারের তার দুই সন্তান আছে। আলমগীরের সঙ্গে তার স্ত্রী সম্পর্ক ভাল যাচ্ছিল না। তাদের মধ্যে পারিবারিক কলহ বিরাজ করছিল। এছাড়াও নিহতের মা মরিয়ম বেগম আলমগীরের কিছু সম্পত্তি তার আগের দুই সন্তানকে দান করে দেয়ার জন্য চাপ দিয়ে আসছিলেন। মরিয়মের আগের সংসারের সন্তানেরা বাবা গরিব হওয়ায় তিনি এ উদ্যোগ নিয়েছিলেন। এতে রাজি হননি আলমগীর হোসেন। এ নিয়েও তাদের মধ্যে বিরোধ ছিল। এছাড়াও মরিয়ম বেগম নতুন দুটি হাউজিং কোম্পানিতে প্রায় ৩০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেছিলেন। এতে ওই দুই কোম্পানির সদস্যদের সঙ্গে তার বিরোধ চলে আসছিল। ওই চারটি কারণ খতিয়ে দেখছে পুলিশ। সূত্র আরও জানান, রেশমা খুনের পর ফ্ল্যাট থেকে আগে বের হন তার বাবা। পরে বের হয় তার মা। রেশমার মা মরিয়ম বেগম ওই ফ্ল্যাটের বাহির থেকে তালা লাগিয়ে যান। পরে তিনি এসে দেখেন যে, তার মেয়ে নিথর দেহ মেঝেতে পড়ে ছিল। এরপর তিনি চিৎকার দিলে আশপাশের প্রতিবেশীরা ওই ফ্ল্যাটে যান। এ বিষয়টিকেও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
নিহত রেশমার নামাজে জানাজা স্থানীয় মসজিদে অনুষ্ঠিত হওয়ার পর মিরপুরের ১১ নম্বর কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মিরপুর থানার এসআই তৌহিদুল আরেফিন জানান, ওই কলেজ ছাত্রীর খুনের ঘটনা রহস্যজনক। নিহতের সব বিষয় নিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। খুব শিগগিরই খুনিদের গ্রেপ্তার ও আইনের আওতায় আনা হবে। তিনি আরও জানান, নিহতের পরিবারে যেমন পারিবারিক কলহ ছিল তার পাশাপাশি ওই পরিবারের লোকজনের সঙ্গে সঙ্গে কয়েক ব্যক্তির আর্থিক লেনদেন ছিল। সব বিষয় খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে তিনি জানান।
বৃহস্পতিবার দুপুরে মিরপুর থানাধীন রাইনখোলা ২ নম্বর রোডের চ-ব্লকের ২৬৫/২৬৩ নম্বর পাঁচতলা বাড়ির দ্বিতীয় তলার ফ্ল্যাট থেকে আমেনা আক্তার রেশমার গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের মর্গে পাঠায়। নিহত আমেনা মিরপুর বিসিআইসি কলেজের এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী ছিলেন। এ ঘটনায় কাউকে আটক করতে পারেনি পুলিশ।
সূত্র জানায়, হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নিহতের মা মরিয়ম বেগম বাদী হয়ে মিরপুর মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। নম্বর-৪৩। মামলায় অজ্ঞাতনামাদের আসামি করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, রহস্যময় ওই কলেজ ছাত্রীকে হত্যার বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে।
গতকাল রেশমার মিরপুরের রাইনখোলা বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, ওই বাড়িতে স্থানীয়দের ভিড়। নিহতের স্বজন ও সহপাঠীরা স্তদ্ধ। অনেকেই কান্নায় ভেঙে পড়েন। রেশমা অত্যন্ত বিনয়ী ও মেধাবী ছিলেন। কলেজ ও কোচিং বাদে তিনি কোথাও যেতেন না। সারাক্ষণ বাসায় থাকতেন। এমন একজন মেধাবী মেয়েকে কে বা কারা নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করলো তা ভাবতেই পারছেন না কেউ। নিহতের মা মরিয়ম বেগম শোকে স্তব্ধ। তিনি কথা বলা ভাষা হারিয়ে ফেলেছেন। শুধু কান্নাজড়িত কণ্ঠে জানালেন, তার মেয়ের হত্যাকারীদের যেন দ্রুত গ্রেপ্তার করা হয়। নিহতের সহপাঠী নাজনীন আক্তার রুপা কান্নাজড়িত কণ্ঠে জানান, বৃহস্পতিবার সকালে আমাকে ফোন করেছিল রেশমা। নতুন আরেকটি কোচিংয়ে ভর্তি হবে আমাকে জানিয়েছিল। শনিবার রেশমাকে আমি আমাদের বাড়িতে আসতে বলেছিলাম। কিন্তু, তার আগেই সে নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়ে পৃথিবী থেকে বিদায় নিলো। তিনি খুনিদের শাস্তি দাবি করেন। নিহতের পিতা আলমগীর হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ঘটনার সময় ফ্ল্যাটে কেউ ছিল না। ব্যক্তিগত কাজে আমি অফিসে চলে যায়। আর আমার স্ত্রী মরিয়ম বেগম মিরপুরে চলে যায়। এই ফাঁকে কে কারা তার মেয়েকে এমনভাবে মেরে ফেলেছে। তিনি দাবি করেন তার পরিবারের মধ্যে কোন পারিবারিক বিরোধ নেই
আলমগীর হোসেন আরও জানান, রেশমা যে কলেজে পড়তেন ওই কলেজের তার এক সহপাঠীর সঙ্গে ঝগড়া হয়। খাতায় লেখাকে কেন্দ্র করে ওই সহপাঠীর সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়। এরপর ওই সহপাঠী রেশমাকে চড় মারে। রেশমা ঘটনাটি তার কলেজের এক শিক্ষককে জানান। ওই শিক্ষক বিষয়টি মিটমাট করে দেন। এ বিষয়টিও পুলিশ তদন্তের মধ্যে রেখেছে। রেশমার বাবার অভিযোগের প্রেক্ষিতে ওই ছাত্রকেও সন্দেহ করছে পুলিশ।
তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নিহতের এক স্বজন জানান, নিহতের বাবা আলমগীরের আগে তিন বার বিয়ে হয়েছিল। মরিয়ম বেগম হচ্ছেন তার তৃতীয় স্ত্রী। আর মরিয়ম বেগমের আগে দুইবার বিয়ে হয়েছিল। আগের সংসারের তার দুই সন্তান আছে। আলমগীরের সঙ্গে তার স্ত্রী সম্পর্ক ভাল যাচ্ছিল না। তাদের মধ্যে পারিবারিক কলহ বিরাজ করছিল। এছাড়াও নিহতের মা মরিয়ম বেগম আলমগীরের কিছু সম্পত্তি তার আগের দুই সন্তানকে দান করে দেয়ার জন্য চাপ দিয়ে আসছিলেন। মরিয়মের আগের সংসারের সন্তানেরা বাবা গরিব হওয়ায় তিনি এ উদ্যোগ নিয়েছিলেন। এতে রাজি হননি আলমগীর হোসেন। এ নিয়েও তাদের মধ্যে বিরোধ ছিল। এছাড়াও মরিয়ম বেগম নতুন দুটি হাউজিং কোম্পানিতে প্রায় ৩০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেছিলেন। এতে ওই দুই কোম্পানির সদস্যদের সঙ্গে তার বিরোধ চলে আসছিল। ওই চারটি কারণ খতিয়ে দেখছে পুলিশ। সূত্র আরও জানান, রেশমা খুনের পর ফ্ল্যাট থেকে আগে বের হন তার বাবা। পরে বের হয় তার মা। রেশমার মা মরিয়ম বেগম ওই ফ্ল্যাটের বাহির থেকে তালা লাগিয়ে যান। পরে তিনি এসে দেখেন যে, তার মেয়ে নিথর দেহ মেঝেতে পড়ে ছিল। এরপর তিনি চিৎকার দিলে আশপাশের প্রতিবেশীরা ওই ফ্ল্যাটে যান। এ বিষয়টিকেও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
নিহত রেশমার নামাজে জানাজা স্থানীয় মসজিদে অনুষ্ঠিত হওয়ার পর মিরপুরের ১১ নম্বর কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মিরপুর থানার এসআই তৌহিদুল আরেফিন জানান, ওই কলেজ ছাত্রীর খুনের ঘটনা রহস্যজনক। নিহতের সব বিষয় নিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। খুব শিগগিরই খুনিদের গ্রেপ্তার ও আইনের আওতায় আনা হবে। তিনি আরও জানান, নিহতের পরিবারে যেমন পারিবারিক কলহ ছিল তার পাশাপাশি ওই পরিবারের লোকজনের সঙ্গে সঙ্গে কয়েক ব্যক্তির আর্থিক লেনদেন ছিল। সব বিষয় খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে তিনি জানান।
No comments