মোদি–নওয়াজ উষ্ণ বৈঠক: সন্ত্রাস নির্মূলে সহযোগিতার অঙ্গীকার
উফায় করমর্দন করছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ (বাঁয়ে) |
বন্ধ
হয়ে যাওয়া আলোচনা আবার শুরু করা এবং দক্ষিণ এশিয়া থেকে সন্ত্রাস
নির্মূলে একে অপরকে সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দিয়ে অনুষ্ঠিত হলো ভারতের
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের
মধ্যকার বৈঠক। যুক্তরাষ্ট্র এই বৈঠককে স্বাগত জানিয়েছে। খবর এনডিটিভি ও
দ্য হিন্দুর।
রাশিয়ার উফায় গতকাল শুক্রবার দুই নেতার বহুল আলোচিত দ্বিপক্ষীয় এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকের গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়, পাকিস্তানে যেতে নওয়াজের আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছেন নরেন্দ্র মোদি। আগামী বছরে পাকিস্তানের ইসলামাবাদে অনুষ্ঠেয় সার্ক সম্মেলনে যাচ্ছেন মোদি। প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর সেটিই হবে তাঁর প্রথম পাকিস্তান সফর।
ব্রিকস ও সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশনের (এসসিও) সম্মেলনে যোগ দিতে দুই নেতাই রাশিয়ায়। সেই সম্মেলন চলাকালেই দ্বিপক্ষীয় পার্শ্ববৈঠক সারেন মোদি-নওয়াজ। প্রায় এক ঘণ্টা ধরে চলে এই বৈঠক। উষ্ণ করমর্দনের মধ্য দিয়েই শুরু হয় আলোচনা। বৈঠক শেষে সবাইকে অবাক করে দিয়ে দুই পররাষ্ট্রসচিব ভারতের এস জয়শঙ্কর এবং পাকিস্তানের আইজাজ আহমেদ চৌধুরী একসঙ্গে গণমাধ্যমের সামনে হাজির হন যৌথ বিবৃতি পড়তে।
যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, সন্ত্রাস নির্মূলে দুই দেশের নিরাপত্তা উপদেষ্টাদের মধ্যে বৈঠক, জ্যেষ্ঠ সামরিক কর্মকর্তাদের মধ্যে ঘন ঘন আলোচনার মতো বেশ কয়েকটি মোড় পরিবর্তনকারী বিষয় আলোচিত হয়েছে। বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল এবং পাকিস্তানের নিরাপত্তা উপদেষ্টা সারতাজ আজিজ ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে সন্ত্রাসবাদ নিয়ে বৈঠক করবেন। বিবৃতিতে বলা হয়, ‘দুই পক্ষই মুম্বাইয়ের সন্ত্রাসী হামলার বিচারের প্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে সম্মত হয়। দুই পক্ষই এ বিষয়ে সম্মত হয় যে, শান্তি ও উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে দুই দেশের সমান দায়দায়িত্ব রয়েছে। আর তা নিশ্চিত করতে উভয় পক্ষই বিদ্যমান সব বিষয়ে আলোচনা করতে প্রস্তুত।’
দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর প্রধানদের মধ্যে দ্রুত একটি আলোচনার আয়োজন করতেও সম্মত হয় দুই পক্ষ। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে দুই দেশে আটকে থাকা সব জেলে এবং তাদের মাছ ধরা নৌকা ছেড়ে দেওয়ারও সিদ্ধান্ত হয় বৈঠকে।
বিবৃতির একটি বড় বৈশিষ্ট্য, সেখানে দুই নেতার মধ্যে কাশ্মীর নিয়ে আলোচনার কোনো প্রসঙ্গ নেই। বৈঠকে শরিফও এই প্রসঙ্গটি তোলেননি। পাকিস্তানের বিশ্লেষকেরা একে নওয়াজের জন্য ‘সাহসী আচরণ’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রসচিব আইজাজ আহমেদ চৌধুরী বলেন, ‘অত্যন্ত আন্তরিক পরিবেশে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়। দুই নেতা সব ধরনের সন্ত্রাসের নিন্দা জানিয়েছেন।’
গত বছরের মে মাসে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নরেন্দ্র মোদির শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন নওয়াজ। এরপর দুই নেতার মধ্যে গতকাল প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হলো। দুই চিরবৈরী প্রতিবেশীর মধ্যে কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণরেখায় উত্তেজনা দেখা দেওয়ার পর ২০১৩ সালের জানুয়ারি থেকে শান্তি আলোচনা বন্ধ আছে। তখন থেকে কাশ্মীর সীমান্তে ছোট-বড় সংঘর্ষ চলে আসছে। সেই প্রসঙ্গ তুলে মোদি-নওয়াজ বৈঠকের সমালোচনা করেছে ভারতের বিরোধী দল কংগ্রেস। দলটির মুখপাত্র মিম আফজাল বলেন, ‘যুদ্ধবিরতি চলাকালে নিয়ন্ত্রণরেখায় পাকিস্তান ভারতের এক সেনাসদস্যকে হত্যা করেছে। আর মোদি বৈঠক করছেন নওয়াজ শরিফের সঙ্গে। এটি সেই সরকার, যারা পাকিস্তানকে উচিত শিক্ষা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল।’ তবে বিজেপি নেতা এম জে আকবর এই বৈঠককে যুগান্তকারী হিসেবে চিহ্নিত করে বলেছেন, পাকিস্তান এই প্রথমবারের মতো সন্ত্রাসবাদকে আমাদের ধারায় সংজ্ঞায়িত করেছে।’
জম্মু ও কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ এই বৈঠককে স্বাগত জানিয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের অভিনন্দন: যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র বিভাগের মুখপাত্র জন কারবি গতকাল নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে মোদি-নওয়াজ বৈঠককে স্বাগত জানিয়ে বলেন, ‘দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা প্রশমনে তাঁদের নেওয়া যেকোনো উদ্যোগকে আমরা স্বাগত জানাই। এটা আমাদের দীর্ঘদিনের অবস্থান।’
মার্কিন মুখপাত্র বলেন, ‘আমরা চাই দুই দেশের মধ্যকার উত্তেজনা কমে আসুক। দুটি দেশ তাদের মধ্যকার সমস্যা দ্বিপক্ষীয়ভাবে সমাধান করবে, এটাই আমাদের প্রত্যাশা।’
১০টি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়
১. অমীমাংসিত ইস্যু নিয়ে আলোচনায় মতৈক্য
২. সন্ত্রাসের নিন্দা করলেন মোদি ও শরিফ
৩. সন্ত্রাস নির্মূলে সহযোগিতার অঙ্গীকার
৪. মুম্বাই হামলার বিচার ত্বরান্বিত করতে সম্মতি
৫. মুম্বাই হামলার অভিযুক্তদের কথা রেকর্ডের নমুনা পাঠাতে রাজি পাকিস্তান
৬. সার্ক সম্মেলনে যোগ দিতে নওয়াজের আমন্ত্রণ গ্রহণ মোদির
৭. নিরাপত্তা উপদেষ্টারা সন্ত্রাসবাদ নিয়ে বৈঠক করবেন
৮. সীমান্তরক্ষী বাহিনী প্রধানদের বৈঠক হবে
৯. আটক জেলেদের ১৫ দিনের মধ্যে ছেড়ে দিতে মতৈক্য
১০. ধর্মীয় সন্ত্রাসবাদ নিয়ে আলোচনায় মতৈক্য
রাশিয়ার উফায় গতকাল শুক্রবার দুই নেতার বহুল আলোচিত দ্বিপক্ষীয় এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকের গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়, পাকিস্তানে যেতে নওয়াজের আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছেন নরেন্দ্র মোদি। আগামী বছরে পাকিস্তানের ইসলামাবাদে অনুষ্ঠেয় সার্ক সম্মেলনে যাচ্ছেন মোদি। প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর সেটিই হবে তাঁর প্রথম পাকিস্তান সফর।
ব্রিকস ও সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশনের (এসসিও) সম্মেলনে যোগ দিতে দুই নেতাই রাশিয়ায়। সেই সম্মেলন চলাকালেই দ্বিপক্ষীয় পার্শ্ববৈঠক সারেন মোদি-নওয়াজ। প্রায় এক ঘণ্টা ধরে চলে এই বৈঠক। উষ্ণ করমর্দনের মধ্য দিয়েই শুরু হয় আলোচনা। বৈঠক শেষে সবাইকে অবাক করে দিয়ে দুই পররাষ্ট্রসচিব ভারতের এস জয়শঙ্কর এবং পাকিস্তানের আইজাজ আহমেদ চৌধুরী একসঙ্গে গণমাধ্যমের সামনে হাজির হন যৌথ বিবৃতি পড়তে।
যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, সন্ত্রাস নির্মূলে দুই দেশের নিরাপত্তা উপদেষ্টাদের মধ্যে বৈঠক, জ্যেষ্ঠ সামরিক কর্মকর্তাদের মধ্যে ঘন ঘন আলোচনার মতো বেশ কয়েকটি মোড় পরিবর্তনকারী বিষয় আলোচিত হয়েছে। বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল এবং পাকিস্তানের নিরাপত্তা উপদেষ্টা সারতাজ আজিজ ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে সন্ত্রাসবাদ নিয়ে বৈঠক করবেন। বিবৃতিতে বলা হয়, ‘দুই পক্ষই মুম্বাইয়ের সন্ত্রাসী হামলার বিচারের প্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে সম্মত হয়। দুই পক্ষই এ বিষয়ে সম্মত হয় যে, শান্তি ও উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে দুই দেশের সমান দায়দায়িত্ব রয়েছে। আর তা নিশ্চিত করতে উভয় পক্ষই বিদ্যমান সব বিষয়ে আলোচনা করতে প্রস্তুত।’
দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর প্রধানদের মধ্যে দ্রুত একটি আলোচনার আয়োজন করতেও সম্মত হয় দুই পক্ষ। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে দুই দেশে আটকে থাকা সব জেলে এবং তাদের মাছ ধরা নৌকা ছেড়ে দেওয়ারও সিদ্ধান্ত হয় বৈঠকে।
বিবৃতির একটি বড় বৈশিষ্ট্য, সেখানে দুই নেতার মধ্যে কাশ্মীর নিয়ে আলোচনার কোনো প্রসঙ্গ নেই। বৈঠকে শরিফও এই প্রসঙ্গটি তোলেননি। পাকিস্তানের বিশ্লেষকেরা একে নওয়াজের জন্য ‘সাহসী আচরণ’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রসচিব আইজাজ আহমেদ চৌধুরী বলেন, ‘অত্যন্ত আন্তরিক পরিবেশে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়। দুই নেতা সব ধরনের সন্ত্রাসের নিন্দা জানিয়েছেন।’
গত বছরের মে মাসে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নরেন্দ্র মোদির শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন নওয়াজ। এরপর দুই নেতার মধ্যে গতকাল প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হলো। দুই চিরবৈরী প্রতিবেশীর মধ্যে কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণরেখায় উত্তেজনা দেখা দেওয়ার পর ২০১৩ সালের জানুয়ারি থেকে শান্তি আলোচনা বন্ধ আছে। তখন থেকে কাশ্মীর সীমান্তে ছোট-বড় সংঘর্ষ চলে আসছে। সেই প্রসঙ্গ তুলে মোদি-নওয়াজ বৈঠকের সমালোচনা করেছে ভারতের বিরোধী দল কংগ্রেস। দলটির মুখপাত্র মিম আফজাল বলেন, ‘যুদ্ধবিরতি চলাকালে নিয়ন্ত্রণরেখায় পাকিস্তান ভারতের এক সেনাসদস্যকে হত্যা করেছে। আর মোদি বৈঠক করছেন নওয়াজ শরিফের সঙ্গে। এটি সেই সরকার, যারা পাকিস্তানকে উচিত শিক্ষা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল।’ তবে বিজেপি নেতা এম জে আকবর এই বৈঠককে যুগান্তকারী হিসেবে চিহ্নিত করে বলেছেন, পাকিস্তান এই প্রথমবারের মতো সন্ত্রাসবাদকে আমাদের ধারায় সংজ্ঞায়িত করেছে।’
জম্মু ও কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ এই বৈঠককে স্বাগত জানিয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের অভিনন্দন: যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র বিভাগের মুখপাত্র জন কারবি গতকাল নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে মোদি-নওয়াজ বৈঠককে স্বাগত জানিয়ে বলেন, ‘দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা প্রশমনে তাঁদের নেওয়া যেকোনো উদ্যোগকে আমরা স্বাগত জানাই। এটা আমাদের দীর্ঘদিনের অবস্থান।’
মার্কিন মুখপাত্র বলেন, ‘আমরা চাই দুই দেশের মধ্যকার উত্তেজনা কমে আসুক। দুটি দেশ তাদের মধ্যকার সমস্যা দ্বিপক্ষীয়ভাবে সমাধান করবে, এটাই আমাদের প্রত্যাশা।’
১০টি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়
১. অমীমাংসিত ইস্যু নিয়ে আলোচনায় মতৈক্য
২. সন্ত্রাসের নিন্দা করলেন মোদি ও শরিফ
৩. সন্ত্রাস নির্মূলে সহযোগিতার অঙ্গীকার
৪. মুম্বাই হামলার বিচার ত্বরান্বিত করতে সম্মতি
৫. মুম্বাই হামলার অভিযুক্তদের কথা রেকর্ডের নমুনা পাঠাতে রাজি পাকিস্তান
৬. সার্ক সম্মেলনে যোগ দিতে নওয়াজের আমন্ত্রণ গ্রহণ মোদির
৭. নিরাপত্তা উপদেষ্টারা সন্ত্রাসবাদ নিয়ে বৈঠক করবেন
৮. সীমান্তরক্ষী বাহিনী প্রধানদের বৈঠক হবে
৯. আটক জেলেদের ১৫ দিনের মধ্যে ছেড়ে দিতে মতৈক্য
১০. ধর্মীয় সন্ত্রাসবাদ নিয়ে আলোচনায় মতৈক্য
No comments