রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রে অর্থায়নে তিন ফরাসি ব্যাংকের অস্বীকৃতি
অর্থায়ন
সংকটে ভুগতে থাকা বাংলাদেশের রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রে বিনিয়োগ করতে
অস্বীকৃতি জানিয়েছে তিন ফরাসি ব্যাংক। কয়লাভিত্তিক রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের
জন্য প্রস্তাবিত জায়গা সুন্দরবনের কাছাকাছি হওয়ায় পরিবেশবিদরা এর তীব্র
বিরোধিতা করছেন। একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ প্রকল্পটি ন্যূনতম পরিবেশগত ও
সামাজিক মানদণ্ডের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ। এ খবর দিয়েছে বৃটেনের প্রভাবশালী
দৈনিক দ্য গার্ডিয়ান। খবরে বলা হয়েছে, ছয় মাস আগে নরওয়ের দুইটি পেনশন তহবিল
কর্তৃপক্ষ ভারতের ন্যাশনাল থার্মাল পাওয়ার কর্পোরেশন (এনটিপিসি) থেকে
নিজেদের বিনিয়োগ উঠিয়ে নিয়েছে। প্রসঙ্গত, রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্প
নির্মাণ করছে এনটিপিসি। গত ৬ই জুন বাংলাদেশ সফরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী
নরেন্দ্র মোদি রামপালের ১৩২০ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্পটি
অনুমোদন করেন। সে সময় তিনি দাবি করেন, বাংলাদেশের আইন ও প্রবিধান অনুযায়ী
রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে অগ্রগতি হচ্ছে। আমরা বাংলাদেশে ও ভারতে
বিদ্যুৎ খাতে একসঙ্গে আরও অনেক কিছু করতে পারবো।
২০১২ সালে স্বাক্ষরিত একটি চুক্তি অনুযায়ী, ভারতের সর্ববৃহৎ কয়লা-বিদ্যুৎ কোমপানি এনটিপিসি (রাষ্ট্রায়ত্ত) বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে মিলিতভাবে খুলনা বিভাগে ওই বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করবে। পরিবেশবিদরা এ প্রকল্পের ব্যাপারে বেশ উদ্বিগ্ন। কেননা, বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবনের চেয়ে ১০ মাইলেরও কম দূরত্বে এটি অবস্থিত। এ বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের জন্য বনের ভেতর দিয়ে নদীতে জাহাজ চলাচল এবং খনন বৃদ্ধি পাবে, ফলে বাড়বে বায়ু ও পানি দূষণ। অবনতি ঘটবে সুন্দরবনের পরিবেশের। মোদির ঢাকা সফরের আগেই পরিবেশবিদরা বাংলাদেশ-ভারতের নেতাদের কাছে প্রকল্পটি বন্ধের আহ্বান জানান। ২১শে মে তেল-গ্যাস-খনিজ সমপদ ও বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি ঢাকার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সমাবেশ আয়োজন করে। সেখানে সংগঠনের সাধারণ সমপাদক ঘোষণা দেন, প্রকল্পটি বন্ধ না হলে, তারা দেশব্যাপী আন্দোলন ছড়িয়ে দেবেন। গত ৫ই জুন সুন্দরবন রক্ষা জাতীয় কমিটি, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন, বাংলাদেশ পরিবেশ আইনজীবী সমিতি, পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনসহ বেশ কয়েকটি সংগঠন নতুন করে প্রকল্পটি বন্ধের আহ্বান জানায়।
গার্ডিয়ানের খবরে বলা হয়েছে, পরিবেশবিদদের আশঙ্কা একেবারেই উড়িয়ে দেয়ার মতো নয়। দিল্লিভিত্তিক সেন্টার ফর সাইয়েন্স অ্যান্ড এনভারনমেন্ট-এর গ্রিন প্রজেক্ট রেটিং ভারতের সকল কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের পরিবেশগত রেটিং প্রকাশ করে। সর্বসমক্ষে প্রাপ্য ও প্রাথমিক কিছু তথ্য দিয়ে ওই রেটিং প্রকাশ করা হয়। কিন্তু এরপরও উঠে এসেছে মোটামুটি উদ্বেগজনক একটি চিত্র। ভারতে এনটিপিসি ২৫টি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র পরিচালনা করে। আরও নয়টি যৌথ প্রকল্পও পরিচালিত হয় এনটিপিসি’র হাতে। রেটিং অনুযায়ী, পরিবেশ মানদণ্ডে ছয়টি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র সর্বনিম্ন অবস্থায় রয়েছে। সর্বোচ্চ রেটিং যেখানে নির্ধারণ করা হয়েছে ৮০ শতাংশ। সেখানে ওই বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর স্কোর ছিল মাত্র ১৬-২৮ শতাংশ।
গত মাসে তিনটি ফরাসি ব্যাংক ঘোষণা দেয় তারা এ প্রকল্পে অর্থায়ন করবে না। এর মধ্যে ক্রেডিট অ্যাগ্রিকোল ব্যাংকের টেকসই উন্নয়ন বিভাগের বৈশ্বিক প্রধান স্টানিসলাস পোতিয়ের বলেন, বাংলাদেশের রামপাল কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে অর্থায়ন করবে না ক্রেডিট অ্যাগ্রিকোল এসএ গ্রুপ। আমাদের মধ্যস্থতা নীতিমালা ও প্রকল্প সংশ্লিষ্ট ঝুঁকি বিবেচনায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। আরেকটি ব্যাংক সোসিয়েতে জেনেরালে’র টেকসই উন্নয়ন, সামাজিক ও পরিবেশগত দায়বদ্ধতা বিষয়ক পরিচালক জিন-মিশেল মেপুইজ বলেন, সোসিয়েতে জেনারালে বাংলাদেশের খুলনার রামপালে অবস্থিত কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্পে কোন ধরনের আর্থিক অ্যাডভাইজরি সেবা দেয় না। বর্তমানে সেখানে অর্থায়নের বিষয়েও চিন্তা করছে না। প্যারিসে অনুষ্ঠেয় জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলনের অন্যতম কর্পোরেট সপন্সর বিএনপি পারিবাস ব্যাংকও রামপাল প্রকল্পে অর্থায়ন করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।
আর্থিক খাত অনুসরণ করে এমন কয়েকটি সংগঠনের জোট- ব্যাংক ট্রাক, একুয়েটর প্রিন্সিপলসের (আর্থিক খাতে পরিবেশগত ও সামাজিক ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা পরিকাঠামো) অধীনে রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ওপর একটি বিশ্লেষণী প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। সে প্রতিবেদনের সারসংক্ষেপে বলা হয়েছে, রামপাল প্রকল্পের ডিজাইন, পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে মারাত্মক ঘাটতি প্রকাশ পেয়েছে বিশ্লেষণীতে। এ ছাড়া প্রকল্পটি একুয়েটর প্রিন্সিপলসের ন্যূনতম সামাজিক ও পরিবেশগত মানদণ্ড ও ইন্টারন্যাশনাল ফিন্যান্স কর্পোরেশনের পারফরম্যান্স স্ট্যান্ডার্ডসের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ।
গার্ডিয়ানের খবরে আরও বলা হয়েছে, ন্যূনতম মানদণ্ড অর্জন করতে ব্যর্থ হওয়ায় রামপাল প্রকল্পে বিনিয়োগ করতে উৎসাহী নয় আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো। ১৫০ কোটি ডলারের ওই প্রকল্পের ৭০ শতাংশ অর্থায়নই ঋণ থেকে হবে বলে আশা করা হচ্ছে। বাকি ৩০ শতাংশ অর্থায়ন বাংলাদেশ ও ভারত সমানভাবে করবে। কিন্তু বাংলাদেশ পরিকল্পনা কমিশন এ অর্থায়নের অনুমোদন দিতে রাজি হয়নি। সংস্থাটি বলেছে, এ প্রকল্প বাংলাদেশের বর্তমান নীতির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। এমনকি প্রকল্পের অর্থায়ন ও মালিকানাও পরিষ্কার নয়। এর ফলে প্রকল্পে বাংলাদেশের ১৫ শতাংশ অর্থায়নের বিষয়টিও অনিশ্চিত হয়ে গেছে। আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে, প্রথম বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য অর্থায়ন এখনও নিশ্চিত না হলেও, বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড ইতিমধ্যেই দ্বিতীয় কেন্দ্রের জন্য জমি অধিগ্রহণ শুরু করে দিয়েছে।
২০১২ সালে স্বাক্ষরিত একটি চুক্তি অনুযায়ী, ভারতের সর্ববৃহৎ কয়লা-বিদ্যুৎ কোমপানি এনটিপিসি (রাষ্ট্রায়ত্ত) বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে মিলিতভাবে খুলনা বিভাগে ওই বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করবে। পরিবেশবিদরা এ প্রকল্পের ব্যাপারে বেশ উদ্বিগ্ন। কেননা, বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবনের চেয়ে ১০ মাইলেরও কম দূরত্বে এটি অবস্থিত। এ বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের জন্য বনের ভেতর দিয়ে নদীতে জাহাজ চলাচল এবং খনন বৃদ্ধি পাবে, ফলে বাড়বে বায়ু ও পানি দূষণ। অবনতি ঘটবে সুন্দরবনের পরিবেশের। মোদির ঢাকা সফরের আগেই পরিবেশবিদরা বাংলাদেশ-ভারতের নেতাদের কাছে প্রকল্পটি বন্ধের আহ্বান জানান। ২১শে মে তেল-গ্যাস-খনিজ সমপদ ও বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি ঢাকার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সমাবেশ আয়োজন করে। সেখানে সংগঠনের সাধারণ সমপাদক ঘোষণা দেন, প্রকল্পটি বন্ধ না হলে, তারা দেশব্যাপী আন্দোলন ছড়িয়ে দেবেন। গত ৫ই জুন সুন্দরবন রক্ষা জাতীয় কমিটি, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন, বাংলাদেশ পরিবেশ আইনজীবী সমিতি, পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনসহ বেশ কয়েকটি সংগঠন নতুন করে প্রকল্পটি বন্ধের আহ্বান জানায়।
গার্ডিয়ানের খবরে বলা হয়েছে, পরিবেশবিদদের আশঙ্কা একেবারেই উড়িয়ে দেয়ার মতো নয়। দিল্লিভিত্তিক সেন্টার ফর সাইয়েন্স অ্যান্ড এনভারনমেন্ট-এর গ্রিন প্রজেক্ট রেটিং ভারতের সকল কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের পরিবেশগত রেটিং প্রকাশ করে। সর্বসমক্ষে প্রাপ্য ও প্রাথমিক কিছু তথ্য দিয়ে ওই রেটিং প্রকাশ করা হয়। কিন্তু এরপরও উঠে এসেছে মোটামুটি উদ্বেগজনক একটি চিত্র। ভারতে এনটিপিসি ২৫টি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র পরিচালনা করে। আরও নয়টি যৌথ প্রকল্পও পরিচালিত হয় এনটিপিসি’র হাতে। রেটিং অনুযায়ী, পরিবেশ মানদণ্ডে ছয়টি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র সর্বনিম্ন অবস্থায় রয়েছে। সর্বোচ্চ রেটিং যেখানে নির্ধারণ করা হয়েছে ৮০ শতাংশ। সেখানে ওই বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর স্কোর ছিল মাত্র ১৬-২৮ শতাংশ।
গত মাসে তিনটি ফরাসি ব্যাংক ঘোষণা দেয় তারা এ প্রকল্পে অর্থায়ন করবে না। এর মধ্যে ক্রেডিট অ্যাগ্রিকোল ব্যাংকের টেকসই উন্নয়ন বিভাগের বৈশ্বিক প্রধান স্টানিসলাস পোতিয়ের বলেন, বাংলাদেশের রামপাল কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে অর্থায়ন করবে না ক্রেডিট অ্যাগ্রিকোল এসএ গ্রুপ। আমাদের মধ্যস্থতা নীতিমালা ও প্রকল্প সংশ্লিষ্ট ঝুঁকি বিবেচনায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। আরেকটি ব্যাংক সোসিয়েতে জেনেরালে’র টেকসই উন্নয়ন, সামাজিক ও পরিবেশগত দায়বদ্ধতা বিষয়ক পরিচালক জিন-মিশেল মেপুইজ বলেন, সোসিয়েতে জেনারালে বাংলাদেশের খুলনার রামপালে অবস্থিত কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্পে কোন ধরনের আর্থিক অ্যাডভাইজরি সেবা দেয় না। বর্তমানে সেখানে অর্থায়নের বিষয়েও চিন্তা করছে না। প্যারিসে অনুষ্ঠেয় জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলনের অন্যতম কর্পোরেট সপন্সর বিএনপি পারিবাস ব্যাংকও রামপাল প্রকল্পে অর্থায়ন করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।
আর্থিক খাত অনুসরণ করে এমন কয়েকটি সংগঠনের জোট- ব্যাংক ট্রাক, একুয়েটর প্রিন্সিপলসের (আর্থিক খাতে পরিবেশগত ও সামাজিক ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা পরিকাঠামো) অধীনে রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ওপর একটি বিশ্লেষণী প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। সে প্রতিবেদনের সারসংক্ষেপে বলা হয়েছে, রামপাল প্রকল্পের ডিজাইন, পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে মারাত্মক ঘাটতি প্রকাশ পেয়েছে বিশ্লেষণীতে। এ ছাড়া প্রকল্পটি একুয়েটর প্রিন্সিপলসের ন্যূনতম সামাজিক ও পরিবেশগত মানদণ্ড ও ইন্টারন্যাশনাল ফিন্যান্স কর্পোরেশনের পারফরম্যান্স স্ট্যান্ডার্ডসের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ।
গার্ডিয়ানের খবরে আরও বলা হয়েছে, ন্যূনতম মানদণ্ড অর্জন করতে ব্যর্থ হওয়ায় রামপাল প্রকল্পে বিনিয়োগ করতে উৎসাহী নয় আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো। ১৫০ কোটি ডলারের ওই প্রকল্পের ৭০ শতাংশ অর্থায়নই ঋণ থেকে হবে বলে আশা করা হচ্ছে। বাকি ৩০ শতাংশ অর্থায়ন বাংলাদেশ ও ভারত সমানভাবে করবে। কিন্তু বাংলাদেশ পরিকল্পনা কমিশন এ অর্থায়নের অনুমোদন দিতে রাজি হয়নি। সংস্থাটি বলেছে, এ প্রকল্প বাংলাদেশের বর্তমান নীতির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। এমনকি প্রকল্পের অর্থায়ন ও মালিকানাও পরিষ্কার নয়। এর ফলে প্রকল্পে বাংলাদেশের ১৫ শতাংশ অর্থায়নের বিষয়টিও অনিশ্চিত হয়ে গেছে। আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে, প্রথম বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য অর্থায়ন এখনও নিশ্চিত না হলেও, বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড ইতিমধ্যেই দ্বিতীয় কেন্দ্রের জন্য জমি অধিগ্রহণ শুরু করে দিয়েছে।
No comments