চকরিয়ায় বন্যায় ও বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ৬ জনের মৃত্যু

টানা বৃষ্টিতে কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলায় বন্যা দেখা দিয়েছে। ছবিটি আজ পেকুয়া উপজেলা পরিষদ থেকে তোলা। ছবি: প্রথম আলো
টানা বৃষ্টিতে কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলায় বন্যা দেখা দিয়েছে। ছবিটি আজ পেকুয়া উপজেলা পরিষদ থেকে তোলা। ছবি: প্রথম আলো
কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলায় আজ শনিবার টানা বৃষ্টিতে সৃষ্ট বন্যার পানিতে ভেসে গিয়ে এবং বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। বন্যার পানিতে এখনো বন্দী রয়েছে চকরিয়া ও পেকুয়া উপজেলার কয়েক লাখ মানুষ। প্রশাসন ও স্বেচ্ছাসেবীদের পক্ষ থেকে দুর্গত এলাকায় ত্রাণ তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।
টানা বৃষ্টিতে কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলায় বন্যা দেখা দিয়েছে। ছবিটি আজ পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে তোলা। ছবি: প্রথম আলো
টানা বৃষ্টিতে কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলায় বন্যা দেখা দিয়েছে। ছবিটি আজ পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে তোলা। ছবি: প্রথম আলো
চকরিয়া উপজেলায় আজ সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত ছয়জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তারা হলো কাকারা ইউনিয়নের প্রপার কাকারা এলাকার ফরহাদ রেজার ছেলে কাউছার রহিম (১৩), ডুলাহাজারা ইউনিয়নের ছগিরশাহ কাটা গ্রামের মোহাম্মদ আলম (২৭), ঢেমুশিয়া ইউনিয়নের আম্মারডেরা এলাকার মোজাম্মেল হকের ছেলে মোহাম্মদ আসিব (৭), কৈয়ারবিল ইউনিয়নে চারবছরের অজ্ঞাত একটি শিশু, ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের হিন্দুপাড়ার মনতোষ দাশের স্ত্রী সুবর্ণা দাশ (৩০) ও ডুলাহাজারা ইউনিয়নের ডুমখালী এলাকার কামাল উদ্দিন (৩৫)। তাঁদের মধ্যে সুবর্ণা দাশ ও কামাল উদ্দিন বৈদ্যুতিক শকে মারা গেছেন। অন্যরা বন্যার পানিতে ভেসে গিয়ে মারা যায়।
কক্সবাজারের সহকারী পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল, চকরিয়া) মো. মাসুদ আলম এই ছয়জনের মৃত্যুর খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে ঘর। তাই কলাগাছের তৈরি ভেলায় করে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সরিয়ে নিচ্ছেন এক গৃহবধূ। ছবিটি আজ পেকুয়া উপজেলার বলিরপাড়া এলাকা থেকে তোলা। ছবি: এস এম হানিফ, চকরিয়া
বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে ঘর। তাই কলাগাছের তৈরি ভেলায় করে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সরিয়ে নিচ্ছেন এক গৃহবধূ। ছবিটি আজ পেকুয়া উপজেলার বলিরপাড়া এলাকা থেকে তোলা। ছবি: এস এম হানিফ, চকরিয়া
এ দিকে আজ দুপুরে পেকুয়া উপজেলা পরিষদে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলা পরিষদ ভবনে প্রায় এক হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। পাশের কলেজ ও স্কুল ভবনে আশ্রয় নিয়েছে আরও অন্তত দুই হাজার মানুষ।
পেকুয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাফায়েত আজিজ বলেন, উপজেলার ৪৩টি আশ্রয়কেন্দ্রসহ বিভিন্ন উঁচু ভবনে প্রায় দেড় লাখ মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। পানিবন্দী অবস্থায় আছে ৭০ হাজারের বেশি মানুষ। তাদের কাছে নৌকায় করে ত্রাণসামগ্রী পাঠানো হচ্ছে। ওষুধপত্রও দেওয়া হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, পানিতে আটকে পড়া লোকজনের মধ্যে বিশুদ্ধ পানির সংকট রয়েছে।
পেকুয়া উপজেলা পরিষদ ভবনে আশ্রয় নিয়েছে অনেকে। ছবি: এস এম হানিফ, চকরিয়া
পেকুয়া উপজেলা পরিষদ ভবনে আশ্রয় নিয়েছে অনেকে। ছবি: এস এম হানিফ, চকরিয়া
উপজেলা পরিষদ ভবনে আশ্রয় নেওয়া কামাল হোসেন (৪৮) নামের এক এক ব্যক্তি জানান, সেখানে বিশুদ্ধ খাবার পানি পাওয়া যাচ্ছে না।
চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাহেদুল ইসলাম জানান, চকরিয়া উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। অনেক স্থান থেকে পানি নামতে শুরু করেছে। তবে উপকূলীয় সাতটি ইউনিয়নে অন্তত ৩০ হাজার মানুষ এখনো পানিবন্দী অবস্থায় রয়েছে। সেখানে ত্রাণ তৎপরতা অব্যাহত আছে।

No comments

Powered by Blogger.