চট্টগ্রাম-দোহাজারী পথে ঝুঁকিপূর্ণ ৩৭ রেলসেতু by একরামুল হক
চট্টগ্রাম-দোহাজারী রেলপথের বোয়ালখালীর হারগেজি খালের ওপর নির্মিত সেতুটি ১৯ জুন ভেঙে পড়ে। ১০ বছরের বেশি সময় ধরে ঝুঁকিপূর্ণ ছিল সেতুটি l প্রথম আলো |
চট্টগ্রাম-দোহাজারী
রেলপথে হারগেজি খালের ভেঙে পড়া সেতুর মতো আরও ৩৭টি ঝুঁকিপূর্ণ সেতু
রয়েছে। এসব সেতুর কোনো কোনোটি ১০ বছরেরও বেশি সময় ধরে ঝুঁকিপূর্ণ
অবস্থায় রয়েছে। রেলওয়ের প্রকৌশলীরা দাবি করছেন, এসব সেতুর নির্মাণ ও
সংস্কারের জন্য চার বছর আগে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দেওয়া
হলেও তারা চুক্তি মানেনি। নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ না করে প্রতিষ্ঠানটি চলে
যাওয়ায় এই পথে এখন ট্রেন চলাচলই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। ১৯ জুন
চট্টগ্রাম-দোহাজারী রেলপথের বোয়ালখালী এলাকায় হারগেজি খালের সেতু ভেঙে
পানিতে পড়ে যায় তেলবাহী ট্রেনের তিনটি ওয়াগন। সেতুটি ১০ বছরের বেশি সময় ধরে
ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। ৩০ ফুট দৈর্ঘ্যের এই সেতুটি ভেঙে নতুন করে নির্মাণের জন্য
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চুক্তিবদ্ধ ছিল। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটি এই সেতুসহ ৩৭টি
সেতুর নির্মাণ বা সংস্কার কোনোটাই করেনি বলে জানান রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের
মহাব্যবস্থাপক মো. মোজাম্মেল হক।
চট্টগ্রামের বোয়ালখালীতে তেলবাহী ট্রেন দুর্ঘটনায় প্রায় ৭০ হাজার লিটার ফার্নেস অয়েল হারগেজি খালে পড়ে যায়। কর্ণফুলী নদীর সঙ্গে সংযুক্ত এই খালে জোয়ার-ভাটার প্রভাব থাকায় তেল নদীতে ছড়িয়ে পড়ে। পরে কর্ণফুলী নদী হয়ে মাছের প্রাকৃতিক প্রজননক্ষেত্র হালদা নদীতেও ছড়িয়ে পড়ে ফার্নেস অয়েল। পানিদূষণের পাশাপাশি ওই এলাকার পরিবেশের জন্য হুমকির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে ছড়িয়ে পড়া এই তেল।
রেলওয়ে সূত্র জানায়, সাড়ে ৪০ কিলোমিটার দীর্ঘ চট্টগ্রাম-দোহাজারী রেলপথের ছোট-বড় ৬০টি সেতু নির্মাণ ও সংস্কারের জন্য ২০১১ সালের ১১ মে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এনটি-আরপি জয়েন্টভেঞ্চারকে ১৩ কোটি ৯৯ লাখ টাকার কার্যাদেশ দেওয়া হয়। প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে রেল কর্তৃপক্ষের চুক্তি অনুযায়ী, তিন বছরের মধ্যে সব কটি সেতুর সংস্কারকাজ শেষ করার কথা ছিল। কিন্তু দুই বছর ১০ মাসে মাত্র ২৩টি সেতুর সংস্কারকাজ শেষ করতে পারে প্রতিষ্ঠানটি। তখনো বাকি ৩৭টি সেতুর কাজ শুরুই করেনি প্রতিষ্ঠানটি।
জানতে চাইলে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক মো. মোজাম্মেল হক প্রথম আলোকে বলেন, ‘এনটি-আরপি জয়েন্টভেঞ্চার তিন বছরের মধ্যে ৬০টি সেতুর নির্মাণ ও সংস্কার শেষ করবে বলে চুক্তি করেছিল। তিন বছরে তারা কেবল এক-তৃতীয়াংশ কাজ করেছে। বড় সেতুগুলোর ধারে-কাছেও যায়নি। যে কারণে ১৯ জুন বোয়ালখালী হারগেজি খালের ওপর সেতুটি ভেঙে গেছে।’
পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক জানান, কাজ শেষ না করে উল্টো রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে মামলা করে। আইনি জটিলতাসহ বিভিন্ন কারণে ঝুঁকিপূর্ণ সেতুগুলো ঠিক করা যায়নি। ইতিমধ্যে স্থগিতাদেশের মেয়াদ শেষ হয়েছে। শিগগিরই সেতু সংস্কারে নতুন করে দরপত্র আহ্বান করা হবে।
রেলওয়ে সূত্র জানায়, এনটি-আরপি জয়েন্টভেঞ্চার ২০১৪ সালের ২১ এপ্রিল পর্যন্ত ছোট আকারের ২৩টি সেতুর সংস্কারকাজ শেষ করে। ওই সময়ের মধ্যে আরও ৩৭টি সেতুর কাজ শুরুই করা হয়নি। অথচ চুক্তির মেয়াদ শেষ হতে বাকি ছিল মাত্র প্রায় সোয়া দুই মাস। এ কারণে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ গত বছরের ২১ এপ্রিল ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটিকে বহিষ্কার করে এবং জামানতের ৫ শতাংশ (৭০ লাখ টাকা) কেটে রাখার সিদ্ধান্ত নেয়। এর বিরুদ্ধে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান গত বছরের মে মাসে হাইকোর্টে রিট করে। টাকা কেটে রাখার রেলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে হাইকোর্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষে ছয় মাসের স্থগিতাদেশ দেন।
চুক্তিবদ্ধ হওয়ার পরও কাজ কেন করা হয়নি জানতে গত বুধবার ফোনে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মতিঝিল কার্যালয়ে যোগাযোগ করা হয়। এক ব্যক্তি নিজেকে মোহাম্মদ জাহিদ পরিচয় দিয়ে প্রতিষ্ঠানের আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলতে বলেন।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের আইনজীবী শরীফ হুমায়ুন কবির বলেন, রেলওয়ে থেকে তাঁর মক্কেল পূর্ণ সহযোগিতা পায়নি। এ ছাড়া রেলওয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটিকে জরিমানা করে ৭০ লাখ টাকা নিয়ে গেছে। হাইকোর্ট রেলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ছয় মাসের স্থগিতাদেশ দিয়েছিলেন। তবে তার মেয়াদ আর বাড়াননি। ফলে নতুন করে দরপত্র আহ্বান করতে রেলওয়ের কোনো সমস্যা নেই।
চট্টগ্রামের বোয়ালখালীতে তেলবাহী ট্রেন দুর্ঘটনায় প্রায় ৭০ হাজার লিটার ফার্নেস অয়েল হারগেজি খালে পড়ে যায়। কর্ণফুলী নদীর সঙ্গে সংযুক্ত এই খালে জোয়ার-ভাটার প্রভাব থাকায় তেল নদীতে ছড়িয়ে পড়ে। পরে কর্ণফুলী নদী হয়ে মাছের প্রাকৃতিক প্রজননক্ষেত্র হালদা নদীতেও ছড়িয়ে পড়ে ফার্নেস অয়েল। পানিদূষণের পাশাপাশি ওই এলাকার পরিবেশের জন্য হুমকির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে ছড়িয়ে পড়া এই তেল।
রেলওয়ে সূত্র জানায়, সাড়ে ৪০ কিলোমিটার দীর্ঘ চট্টগ্রাম-দোহাজারী রেলপথের ছোট-বড় ৬০টি সেতু নির্মাণ ও সংস্কারের জন্য ২০১১ সালের ১১ মে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এনটি-আরপি জয়েন্টভেঞ্চারকে ১৩ কোটি ৯৯ লাখ টাকার কার্যাদেশ দেওয়া হয়। প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে রেল কর্তৃপক্ষের চুক্তি অনুযায়ী, তিন বছরের মধ্যে সব কটি সেতুর সংস্কারকাজ শেষ করার কথা ছিল। কিন্তু দুই বছর ১০ মাসে মাত্র ২৩টি সেতুর সংস্কারকাজ শেষ করতে পারে প্রতিষ্ঠানটি। তখনো বাকি ৩৭টি সেতুর কাজ শুরুই করেনি প্রতিষ্ঠানটি।
জানতে চাইলে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক মো. মোজাম্মেল হক প্রথম আলোকে বলেন, ‘এনটি-আরপি জয়েন্টভেঞ্চার তিন বছরের মধ্যে ৬০টি সেতুর নির্মাণ ও সংস্কার শেষ করবে বলে চুক্তি করেছিল। তিন বছরে তারা কেবল এক-তৃতীয়াংশ কাজ করেছে। বড় সেতুগুলোর ধারে-কাছেও যায়নি। যে কারণে ১৯ জুন বোয়ালখালী হারগেজি খালের ওপর সেতুটি ভেঙে গেছে।’
পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক জানান, কাজ শেষ না করে উল্টো রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে মামলা করে। আইনি জটিলতাসহ বিভিন্ন কারণে ঝুঁকিপূর্ণ সেতুগুলো ঠিক করা যায়নি। ইতিমধ্যে স্থগিতাদেশের মেয়াদ শেষ হয়েছে। শিগগিরই সেতু সংস্কারে নতুন করে দরপত্র আহ্বান করা হবে।
রেলওয়ে সূত্র জানায়, এনটি-আরপি জয়েন্টভেঞ্চার ২০১৪ সালের ২১ এপ্রিল পর্যন্ত ছোট আকারের ২৩টি সেতুর সংস্কারকাজ শেষ করে। ওই সময়ের মধ্যে আরও ৩৭টি সেতুর কাজ শুরুই করা হয়নি। অথচ চুক্তির মেয়াদ শেষ হতে বাকি ছিল মাত্র প্রায় সোয়া দুই মাস। এ কারণে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ গত বছরের ২১ এপ্রিল ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটিকে বহিষ্কার করে এবং জামানতের ৫ শতাংশ (৭০ লাখ টাকা) কেটে রাখার সিদ্ধান্ত নেয়। এর বিরুদ্ধে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান গত বছরের মে মাসে হাইকোর্টে রিট করে। টাকা কেটে রাখার রেলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে হাইকোর্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষে ছয় মাসের স্থগিতাদেশ দেন।
চুক্তিবদ্ধ হওয়ার পরও কাজ কেন করা হয়নি জানতে গত বুধবার ফোনে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মতিঝিল কার্যালয়ে যোগাযোগ করা হয়। এক ব্যক্তি নিজেকে মোহাম্মদ জাহিদ পরিচয় দিয়ে প্রতিষ্ঠানের আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলতে বলেন।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের আইনজীবী শরীফ হুমায়ুন কবির বলেন, রেলওয়ে থেকে তাঁর মক্কেল পূর্ণ সহযোগিতা পায়নি। এ ছাড়া রেলওয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটিকে জরিমানা করে ৭০ লাখ টাকা নিয়ে গেছে। হাইকোর্ট রেলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ছয় মাসের স্থগিতাদেশ দিয়েছিলেন। তবে তার মেয়াদ আর বাড়াননি। ফলে নতুন করে দরপত্র আহ্বান করতে রেলওয়ের কোনো সমস্যা নেই।
No comments