‘আগামী নির্বাচনে খালেদা বাদ -ইনু ’ ‘খুচরা পার্টির নেতা ইনু -রিপন’

তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেছেন, “২০১৯ সালে পরবর্তী সাধারণ নির্বাচনে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার অংশগ্রহণের সুযোগ থাকবে না।” শনিবার জাতীয় সংসদে জাসদ সভাপতি ইনু একথা বলেন। তিনি বলেন, “বেগম খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক ভবিষ্যত নির্ধারিত হয়ে  গেছে। সেটা হচ্ছে, আপনাকে রাজনীতির বাইরে থাকতে হবে। আদালতে দাঁড়াতে হবে। ২০১৯ সালে একটি নির্বাচন হবে। সেই নির্বাচনে গণতান্ত্রিক শক্তির সঙ্গে গণতান্ত্রিক শক্তির নির্বাচন হবে। এতে গণতন্ত্রের অচল মাল সচল হওয়ার কোনো সুযোগ নাই। আগুন সন্ত্রাসী খালেদা জিয়ার সেই নির্বাচনে অংশগ্রহণের কোনো সুযোগ থাকবে না।” ইনু বলেন, “অগণতান্ত্রিক শক্তিকে কোনোভাবে বাংলাদেশের রাজনীতিতে ঠাঁই দেয়া হবে না।” ইনু বলেন, “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাজারে নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছেন। কারণ দেশের সংবিধান ও জনগণের প্রতি তাঁর ভালবাসা রয়েছে। তিনি জনগণের দুঃখ-দুর্দশায় কাতর হন বলেই বাজার নিয়ন্ত্রণে সক্ষম হন। কিন্তু বেগম খালেদা জিয়া দেশ, দেশের জনগণ ও সংবিধানের প্রতি উদাসীন। তিনি চোখে ঠুলি পড়েছেন আর কানে তুলা দিয়েছেন বলেই জনগণের আর্তচিৎকার তার কানে পৌঁছেনি। তাই তিনি তার সময়ে বাজেট ও রোজায় বাজার নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়েছেন।” হাসানুল হক ইনু বলেন, “বেগম খালেদা জিয়া দেশের আইন, সংবিধান ও সংসদের প্রতি শ্রদ্ধাশীল নয়। তিনি সংসদে এসে সংসদ সদস্যদের বক্তব্য শোনেন না। তাই তিনি দেশের জনগণের সমস্যার কথা জানতে পারেন না। বেগম খালেদা জিয়া যখন ক্ষমতায় ছিলেন ৩৭৩ কার্য দিবসের মধ্যে মাত্র ১৯৫ দিন সংসদে হাজির ছিলেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন ক্ষমতায় ছিলেন যেমন সপ্তম সংসদে তিনি ২৯৮ দিন হাজির ছিলেন। নবম সংসদে ৩৩৬ দিন হাজির ছিলেন। আর দশম সংসদে ইতোমধ্যে ১০৫ দিন হাজির ছিলেন। বিরোধী দলে থাকায় অবস্থায় বেগম খালেদা জিয়া মাত্র ৩৮ দিন সংসদে হাজির ছিলেন। আর শেখ হাসিনা ১৮০ দিন হাজির ছিলেন।” ইনু বলেন, “শেখ হাসিনা বাজার নিয়ন্ত্রণ ও প্রবৃদ্ধি বাড়াতে সক্ষম হয়েছেন। কারণ তিনি সংসদে বসেন, সংসদ সদস্যদের মাধ্যমে জনগণের কথা শোনেন, মানুষের দুঃখ-দুর্দশার প্রতি নজর দেন, খালেদা জিয়া তা করেননি। খালেদা জিয়া জঙ্গি উৎপাদন করেছেন, উনি যুদ্ধাপরাধীদের পুরস্কৃত করেছেন, হত্যা-খুনের পরিকল্পনা করেছেন, শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা চালিয়েছেন এবং মিথ্যাচারের রাণী হওয়ার প্রচেষ্টা চালিয়েছেন। এখানেই শেখ হাসিনার সঙ্গে জঙ্গি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার পার্থক্য।”
‘খুচরা পার্টির নেতা ইনু’
তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুকে খুচরা পার্টির নেতা বলে অভিহিত করেছেন বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ও মুখপাত্র ড. আসাদুজ্জামান রিপন। তিনি বলেছেন, “খুচরা পার্টির নেতা ইনু বলেছেন, খালেদা জিয়ার জায়গা হবে কাশিমপুর কারাগারে। আমরা জানি না, তিনি কবে বিচারক হলেন।”   রিপন আরো বলেন, “বাংলাদেশের বোমাবাজি, সন্ত্রাসের জনক হচ্ছেন ইনুরা। তারাই এ দেশে হত্যা-সন্ত্রাসের অপরাজনীতি শুরু করেছিলেন। এই ইনুরাই শেখ মুজিবের শাসনকে সন্ত্রাসের মাধ্যমে ঝালাপালা করে দিয়েছিল।”   দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। আমেরিকার পররাষ্ট্র দফতর থেকে বৃহস্পতিবার প্রকাশিত মানবাধিকার প্রতিবেদনের কথা উল্লেখ করে রিপন বলেন, “মার্কিন পররাষ্ট্রসচিব জন কেরির বাংলাদেশের গণতন্ত্র, মানিবাধিকার, গণমাধ্যমের স্বাধীনতার যে চিত্র তুলে ধরেছেন, তাতে বাস্তব চিত্র ফুটে উঠেছে। প্রকৃত চিত্র আরো ভয়াবহ। দেশের জরুনি অবস্থা নেই, তারপরও গণমাধ্যমকর্মীরা নিজ থেকেই অনেক কিছু সেন্সর করেন। মিডিয়া যখন ভয়ভীতির মাধ্যমে কাজ করে তখন তা প্রকৃত গণমাধ্যম হতে পারে না।”   রিপন বলেন, “বর্তমানে যে সংসদ বহাল আছে তার মধ্যে ১৫৪ জন ফাও এমপি আছে। বাকি যারা আছে তারাকেউই ৫ ভাগেরও কম ভোট পেয়ে সংসদে গিয়েছেন। সে কারণে এসব ভোটারবিহীন এমপিরা নির্বাচনের কথা শুনলেই আঁতকে ওঠে। এই সংসদে কিছু লাফাঙ্গামার্কা এমপি আছে। যখন সরকার ও বিরোধী দলের মধ্যে সমঝোতার সম্ভাবনা দেখা দেয়, তখন সেই লাফাঙ্গা-বাঁচাল মার্কা এমপিরা আবোল-তাবোল বক্তব্য দিয়ে পরিবেশ উত্তপ্ত করে থাকে।”   বিএনপির মুখপাত্র বলেন, “ইনুরাই শেখ মুজিবের শাসনকে সন্ত্রাসের মাধ্যমে ঝালাপালা করে দিয়েছিল। যার কারণে দীর্ঘদিন গণতন্ত্রের জন্য রাজনীতি করলেও শেখ মুজিব একদলীয় বাকশাল শাসনের কলঙ্ক গায়ে মাখতে বাধ্য হয়েছিলেন। ৭৫ এর পর ইনুরাই বাংলাদেশের সেনাবাহিনীতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে। সে অপরাধে সে গ্রেফতারও হয়। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের বদান্যতায় তিনি আজও বেঁচে আছেন, রাজনীতি করছেন, ক্ষমতার ভাগবাটোয়ারার সুযোগ পাচ্ছেন। তা না হলে তার ফাঁসির কাষ্ঠে ঝোলার কথা।”   রিপন বলেন, “মূলত নিজেদের হীনস্বার্থ চরিতার্থ করতেই এই খুচরা পার্টির নেতারা নানারকম উস্কানিমূলক বক্তব্য দিয়ে দেশের রাজনীতি উত্তপ্ত করতে চায়। বিএনপি বিশেষ করে চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সম্পর্কে নানা ধরনের আবোল-তাবোল উত্তেজিত কথা বলে তারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে খুশি করতে চায়। কিন্তু আমরা বিশ্বাস করি, একটি বৃহৎ রাজনৈতিক দলের প্রধান হিসেবে, আওয়ামী লীগের সভানেত্রী হিসেবে শেখ হাসিনা এসব খুচরা নেতাদের বক্তব্যে সায় দেবেন না।”   ড. আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, “তিনি (প্রধানমন্ত্রী) বিরোধী দলের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা ও সমঝোতার মাধ্যমে দেশে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের পদক্ষেপ নেবেন। বিএনপিও এই খুচরা পার্টির নেতাদের আবোল-তাবোল উস্কানিমূলক বক্তব্যে উত্তেজিত হয়ে তাদের ফাঁদে পা দেবে না।”

No comments

Powered by Blogger.