সু চির কাছে প্রত্যাশা কি বাড়াবাড়ি?
অং সান সু চি |
বীরদের
সবাই চায়, সবাই শ্রদ্ধা করে। তাঁদের পক্ষেই সমাজ পরিবর্তন আনা সম্ভব বলে
সবার বিশ্বাস। তাই তাঁদের নিয়ে সবার স্বপ্ন। মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থী
নেত্রী অং সান সু চির ক্ষেত্রে তাই। কিন্তু প্রত্যাশা পূরণ করতে পারছেন না
তিনি। তাই প্রশ্ন জাগে, তাঁর কাছে কি বিশ্ববাসীর প্রত্যাশা বাড়াবাড়ি রকমের
বেশি?
বছরের পর বছর ধরে অনেক পশ্চিমাদের চোখে সু চি এক বীর নারী। স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের পক্ষের এবং জান্তাবিরোধী অহিংস আন্দোলনের এক মূর্ত প্রতীক হিসেবে তাঁর ভূয়সী প্রশংসা রয়েছে। গৃহবন্দী থাকাকালে সু চিকে দেখা বিবিসির সাংবাদিক জিল ম্যাকগাইভারিংয়ের ভাষ্যে, ওই সময় এক অদম্য সাহসী নারীকে (সু চি) দেখেছেন তিনি, দাবির পক্ষে যিনি ছিলেন অনড়। যুক্তরাজ্যে থাকা স্বামী-সন্তানের সঙ্গে মিলিত হতে দেশ ত্যাগ করতে পর্যন্ত নারাজ ছিলেন তিনি। ওই দিনগুলোতে সু চি ছিলেন একজন মহীয়সী নারী। এরপর ধীরে ধীরে মিয়ানমারের পরিস্থিতি বদলাতে শুরু করে। সু চি আবার সাধারণ মানুষে রূপান্তরিত হয়েছেন।
মিয়ানমারে, বিশেষ করে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের ওপর নিপীড়ন, গোষ্ঠীটির সদস্যদের দলে দলে দেশত্যাগ, সাগরে ভাসমান জীবন—এসব অমানবিক দৃশ্য বিশ্ববিবেককে নাড়া দিয়েছে। এ নিয়ে পশ্চিমা দেশসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় সরব। কিন্তু সু চি চুপ।
রোহিঙ্গা বিষয়ে সু চির এই নীরবতা নিয়ে প্রকাশ্যে তাঁর সমালোচনা করেছেন শান্তিতে আরেক নোবেলজয়ী দালাই লামা। তাঁর ভাষ্য, সু চির সঙ্গে একান্ত বৈঠকে রোহিঙ্গাদের প্রসঙ্গ দুবার তুলেছেন তিনি। তখন সু চি তাঁকে বলেছেন, বিষয়টি খুবই জটিল। তারপরও দালাই লামার প্রত্যাশা ছিল, এ বিষয়ে সু চি কিছু একটা করতে পারবেন।
দালাই লামার মতো সবারই প্রত্যাশা, রোহিঙ্গা বিষয়ে সু চি কিছু বলুক। একটা অবস্থান গ্রহণ করুক।
কিন্তু সবাইকে হতাশ করেছেন সু চি। রোহিঙ্গাদের নিয়ে নিশ্চুপ তিনি। বিষয়টি নিয়ে তাঁর নিজের অবস্থানও অস্পষ্ট। জান্তার অভ্যন্তরীণ দমন-পীড়ন নিয়েও আগের মতো কিছু বলছেন না তিনি। এখনো মিয়ানমারে অনেক উদারপন্থী রাজনীতিক, মুক্তমনা সাংবাদিক, ছাত্রনেতা জেলের ঘানি টানছেন। জান্তা নিয়ন্ত্রিত সরকার বার বার প্রতিশ্রুতি দিয়েও তাঁদের মুক্তি দিচ্ছে না। গণতন্ত্রের লেবাস পরে প্রভাবশালী সামরিক কর্মকর্তারাই এখনো জনগণের কাঁধে সওয়ার হয়ে হাসিল করে যাচ্ছে নিজ নিজ স্বার্থ। এরপরও সু চি কেন নীরব?
উত্তরে অনেকেই বলেন, ভোট হারাতে চান না এনএলডি দলের নেত্রী। এসব নিয়ে কথা বললে নিজ দেশেই তাঁর রাজনৈতিকভাবে নিঃশেষ হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হতে পারে।
সম্প্রতি চীন সফর করেছেন সু চি। তাঁর এই সফরকে ঐতিহাসিক বলে বর্ণনা করা হয়েছে। একদলীয় শাসনের বিরুদ্ধে কথা বলায় সেখানকার কারাগারে আছেন শান্তিতে আরেক নোবেলজয়ী লি জিয়াবো। তাঁর জন্য সু চি কোনো কথা বলেছেন বলে জানা যায় না। অথচ, এই সু চিই নাকি গণতন্ত্রের প্রতীক! রাজনৈতিক স্বার্থে তিনি এখন সমঝোতা করছেন। সবকিছু জেনেবুঝে চুপ থাকছেন।
একজন সক্রিয় রাজনীতিবিদ হিসেবে সু চিকে বাস্তবমুখী হতে হবে। তাঁকে মনে রাখতে হবে—নানা জটিলতা ও প্রতিকূলতা সত্ত্বেও সারা বিশ্বের অনেক মানুষ তাঁর সংগ্রামের প্রতি উচ্চকণ্ঠে সমর্থন জানিয়েছে।
হয়তো মিয়ানমারের পরিস্থিতি ভিন্ন। কিন্তু পরিস্থিতিগত ভিন্নতা সত্ত্বেও বিশ্বে কিছু চিরন্তন সত্য ও সর্বজনীন অধিকার আছে, যা রাজনীতির ঊর্ধ্বে। বিশ্ববাসী এমন বীরকেই চায়, যিনি এসব সর্বজনীন বিষয়ে দ্বিধাহীনভাবে উচ্চকিত থাকবেন। বিবিসি অবলম্বনে
বছরের পর বছর ধরে অনেক পশ্চিমাদের চোখে সু চি এক বীর নারী। স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের পক্ষের এবং জান্তাবিরোধী অহিংস আন্দোলনের এক মূর্ত প্রতীক হিসেবে তাঁর ভূয়সী প্রশংসা রয়েছে। গৃহবন্দী থাকাকালে সু চিকে দেখা বিবিসির সাংবাদিক জিল ম্যাকগাইভারিংয়ের ভাষ্যে, ওই সময় এক অদম্য সাহসী নারীকে (সু চি) দেখেছেন তিনি, দাবির পক্ষে যিনি ছিলেন অনড়। যুক্তরাজ্যে থাকা স্বামী-সন্তানের সঙ্গে মিলিত হতে দেশ ত্যাগ করতে পর্যন্ত নারাজ ছিলেন তিনি। ওই দিনগুলোতে সু চি ছিলেন একজন মহীয়সী নারী। এরপর ধীরে ধীরে মিয়ানমারের পরিস্থিতি বদলাতে শুরু করে। সু চি আবার সাধারণ মানুষে রূপান্তরিত হয়েছেন।
মিয়ানমারে, বিশেষ করে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের ওপর নিপীড়ন, গোষ্ঠীটির সদস্যদের দলে দলে দেশত্যাগ, সাগরে ভাসমান জীবন—এসব অমানবিক দৃশ্য বিশ্ববিবেককে নাড়া দিয়েছে। এ নিয়ে পশ্চিমা দেশসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় সরব। কিন্তু সু চি চুপ।
রোহিঙ্গা বিষয়ে সু চির এই নীরবতা নিয়ে প্রকাশ্যে তাঁর সমালোচনা করেছেন শান্তিতে আরেক নোবেলজয়ী দালাই লামা। তাঁর ভাষ্য, সু চির সঙ্গে একান্ত বৈঠকে রোহিঙ্গাদের প্রসঙ্গ দুবার তুলেছেন তিনি। তখন সু চি তাঁকে বলেছেন, বিষয়টি খুবই জটিল। তারপরও দালাই লামার প্রত্যাশা ছিল, এ বিষয়ে সু চি কিছু একটা করতে পারবেন।
দালাই লামার মতো সবারই প্রত্যাশা, রোহিঙ্গা বিষয়ে সু চি কিছু বলুক। একটা অবস্থান গ্রহণ করুক।
কিন্তু সবাইকে হতাশ করেছেন সু চি। রোহিঙ্গাদের নিয়ে নিশ্চুপ তিনি। বিষয়টি নিয়ে তাঁর নিজের অবস্থানও অস্পষ্ট। জান্তার অভ্যন্তরীণ দমন-পীড়ন নিয়েও আগের মতো কিছু বলছেন না তিনি। এখনো মিয়ানমারে অনেক উদারপন্থী রাজনীতিক, মুক্তমনা সাংবাদিক, ছাত্রনেতা জেলের ঘানি টানছেন। জান্তা নিয়ন্ত্রিত সরকার বার বার প্রতিশ্রুতি দিয়েও তাঁদের মুক্তি দিচ্ছে না। গণতন্ত্রের লেবাস পরে প্রভাবশালী সামরিক কর্মকর্তারাই এখনো জনগণের কাঁধে সওয়ার হয়ে হাসিল করে যাচ্ছে নিজ নিজ স্বার্থ। এরপরও সু চি কেন নীরব?
উত্তরে অনেকেই বলেন, ভোট হারাতে চান না এনএলডি দলের নেত্রী। এসব নিয়ে কথা বললে নিজ দেশেই তাঁর রাজনৈতিকভাবে নিঃশেষ হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হতে পারে।
সম্প্রতি চীন সফর করেছেন সু চি। তাঁর এই সফরকে ঐতিহাসিক বলে বর্ণনা করা হয়েছে। একদলীয় শাসনের বিরুদ্ধে কথা বলায় সেখানকার কারাগারে আছেন শান্তিতে আরেক নোবেলজয়ী লি জিয়াবো। তাঁর জন্য সু চি কোনো কথা বলেছেন বলে জানা যায় না। অথচ, এই সু চিই নাকি গণতন্ত্রের প্রতীক! রাজনৈতিক স্বার্থে তিনি এখন সমঝোতা করছেন। সবকিছু জেনেবুঝে চুপ থাকছেন।
একজন সক্রিয় রাজনীতিবিদ হিসেবে সু চিকে বাস্তবমুখী হতে হবে। তাঁকে মনে রাখতে হবে—নানা জটিলতা ও প্রতিকূলতা সত্ত্বেও সারা বিশ্বের অনেক মানুষ তাঁর সংগ্রামের প্রতি উচ্চকণ্ঠে সমর্থন জানিয়েছে।
হয়তো মিয়ানমারের পরিস্থিতি ভিন্ন। কিন্তু পরিস্থিতিগত ভিন্নতা সত্ত্বেও বিশ্বে কিছু চিরন্তন সত্য ও সর্বজনীন অধিকার আছে, যা রাজনীতির ঊর্ধ্বে। বিশ্ববাসী এমন বীরকেই চায়, যিনি এসব সর্বজনীন বিষয়ে দ্বিধাহীনভাবে উচ্চকিত থাকবেন। বিবিসি অবলম্বনে
No comments