ছয় বছরেও শেষ হয়নি বিস্ফোরক মামলার বিচার by নুরুজ্জামান লাবু
আজ
২৫শে ফেব্রুয়ারি ভয়াবহ বিডিআর বিদ্রোহের ৬ বছর পূর্ণ হলো। কিন্তু এখনও শেষ
হয়নি বিস্ফোরক মামলার বিচার। বর্তমানে বিশেষ বেসামরিক আদালতে বিস্ফোরক
মামলাটি চলমান রয়েছে। এ মামলায় আসামির সংখ্যা ৮৩৪ জন। এ পর্যন্ত এই মামলার
৩০ কার্যদিবসে ২৭ জন সাক্ষী দিয়েছেন। মামলাটির পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য
করা হয়েছে আগামী ১০ই মার্চ। তবে ইতিমধ্যে মর্মান্তিক এ ঘটনায় জড়িত থাকার
অভিযোগে ৯ হাজার সদস্যকে সাজাসহ চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। আর লঘুদণ্ড পাওয়া ৮
হাজার সদস্যকে চাকরিতে বহাল রাখা হয়েছে। হত্যা মামলায় ১৫২ জনকে মৃত্যুদণ্ড,
১৬১ জনকে যাবজ্জীবন ও বিভিন্ন মেয়াদে ২৬২ জনকে সাজা দেয়া হয়। বিশেষ
আদালতের হত্যা মামলা এবং অধিনায়কের সামারি ট্রায়ালের মাধ্যমে এসব সাজার রায়
হলেও বিশেষ বেসামরিক আদালতে বিস্ফোরক মামলা এখনও চলমান রয়েছে। এদিকে
বিভীষিকাময় এই ঘটনার ৬ বছর পরে বাহিনীতে সম্পূর্ণ স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে
এসেছে বলে জানিয়েছেন বিজিবি’র শীর্ষ কর্মকর্তারা।
২০০৯ সালের এই দিনে তখনকার বাংলাদেশ রাইফেলস-বিডিআরের বিপথগামী সদস্যরা বিদ্রোহ করে। এ সময় তারা ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জনকে নির্মমভাবে হত্যা করে। বিদ্রোহীদের হাতে বিডিআর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদ, তার স্ত্রী, বাসার কাজের মেয়ে ও বেড়াতে আসা আত্মীয়রাও নিহত হন।
বিজিবি সূত্র জানায়, বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় অভিযুক্তসহ ১৭ হাজার ৩১১ (বিডিআর সদস্য ও বেসামরিক ব্যক্তি) জনকে বিচারের মুখোমুখি করা হয়। তাদের মধ্যে ৬ হাজার ৪১ জনকে বিশেষ আদালত ও ১১ হাজার ২৬৫ জনকে অধিনায়ক সামারি কোর্টের মাধ্যমে বিচার করা হয়। আসামিদের মধ্যে ৯ হাজার ১৯ জনকে বিভিন্ন সাজাসহ চাকরিচ্যুত করা হয়। বাকি ৮ হাজার ২৮৭ জন সরাসরি বিদ্রোহে সম্পৃক্ত না থাকায় তাদের লঘুদণ্ড (তীব্র ভর্ৎসনা, বেতন কর্তন, ডিমোশন ইত্যাদি) দিয়ে চাকরিতে বহাল রাখা হয়েছে। আর হত্যা মামলায় অভিযুক্ত ৮৫০ জনের ১৫২ জনকে ফাঁসি, ২৬০ জনকে যাবজ্জীবন ও ২৫৬ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেয়া হয়। এছাড়া, ২০ জন আসামি পলাতক রয়েছে। পলাতক আসামিদের ব্যাপারে গোয়েন্দা সংস্থা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সতর্ক রয়েছে বলে জানিয়েছেন বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
এদিকে পিলখানা হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডসহ অন্যান্য দণ্ডপ্রাপ্তদের বিষয়ে আপিলের জন্য প্রধান বিচারপতি কর্তৃক সুপ্রিম কোর্টের তিন বিচারপতির সমন্বয়ে বিশেষ বেঞ্চ গঠন করা হয়েছে।
বিজিবি মহাপরিচালক আজিজ আহমেদ গতকাল সাংবাদিকদের বলেন, ঐ ঘটনায় দায়ের করা হত্যা মামলায় ইতিমধ্যে বিচারের রায় হয়েছে। ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্তদের ডেথ রেফারেন্সে শুনানি চলছে। গত দুই বছর ধরে তিনি এ বাহিনীর প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এই বিদ্রোহে যারা জড়িত ছিলেন তাদের সাজা হয়েছে। যারা জড়িত নয় তারা সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। বিজিবি পুনর্গঠনের ব্যাপারে তিনি বলেন, বিজিবি’র গোয়েন্দা শাখার দুর্বলতার দিকগুলোকে পুনর্গঠন করা হয়েছে। বিজিবি পুনর্গঠনে যেসব সুপারিশ করা হয়েছে তার সবকিছুই বাস্তবায়ন করা হয়েছে। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বিজিবি সদস্যদের অংশগ্রহণের ব্যাপারে তিনি বলেন, বিষয়টি জাতিসংঘ সদর দপ্তরকে অনুরোধ করা হয়েছে। যদি কখনও কোন দেশে শান্তিরক্ষার জন্য সীমান্ত বাহিনী প্রয়োজন হয়, তবে তারা বাংলাদেশের বিজিবি’র কাছে চাহিদাপত্র পাঠাবে।
বিজিবি সূত্র আরও জানায়, ২০০৯ সাল পর্যন্ত বিজিবি’র জনবল ছিল ৪৪ হাজার। ২০১০ সাল থেকে এখন পর্যন্ত এ সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫০ হাজার। গঠন করা হয়েছে ৪টি রিজিওনাল হেডকোয়ার্টার্স ও ৪টি সেক্টর হেডকোয়ার্টার্স। বিজিবি পরিচালিত স্কুল, কলেজে সেকশন বৃদ্ধির মাধ্যমে অনেক শিক্ষার্থী ভর্তির ব্যবস্থা করা হয়েছে। এখন বিজিবি’র যে কোন সদস্য সুপারিশ করলেই তাদের সন্তানকে এসব স্কুলে ভর্তি করা হচ্ছে। আদালতের পর্যবেক্ষণে ২৫ ভাগ ঝুঁকি ভাতা দেয়ার কথা বলা হয়েছিল। সেখানে ৩০ ভাগ ঝুঁকি ভাতা (সীমান্ত ভাতা) দেয়া হচ্ছে। শতভাগ রেশন সুবিধাও দেয়া হচ্ছে। আগে বিজিবি সদস্যদের সন্তানদের ২২ বছর পর্যন্ত রেশন সুবিধা দেয়া হতো। এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৫ বছরে। এছাড়া প্রতিবন্ধী সন্তানদের চাকরির মেয়াদের পুরো সময় রেশন সুবিধা দেয়া হচ্ছে।
কর্মসূচি: বেদনাবিধুর এ দিবসটি পালনের লক্ষ্যে বিজিবি ও বিভিন্ন রাজনৈতিক-সামাজিক সংগঠনও নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। দিনের কর্মসূচি অনুুযায়ী শহীদ ব্যক্তিবর্গের রুহের মাগফিরাতের উদ্দেশে পিলখানাসহ বিজিবি’র সব রিজিয়ন, সেক্টর, প্রতিষ্ঠান ও ইউনিটের ব্যবস্থাপনায় বাদ ফজর খতমে কোরআন এবং বিজিবি’র সব মসজিদে এবং বিওপি পর্যায়ে শহীদদের রুহের মাগফিরাত কামনা করে দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ব্যবস্থাপনায় সকাল ৯টায় বনানী সামরিক কবরস্থানে প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীর প্রতিনিধি, স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর প্রতিনিধি, তিন বাহিনীর প্রধানগণ (সম্মিলিতভাবে), স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ও বিজিবি মহাপরিচালক (একত্রে) শহীদদের স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। বুধবার বিকাল সাড়ে ৪টায় পিলখানার বীরউত্তম ফজলুর রহমান খন্দকার মিলনায়তনে (সাবেক দরবার হল) শহীদ ব্যক্তিদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ দোয়া ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে। বিএনপি’র পক্ষ থেকেও কর্মসূচি পালন করা হবে বলে দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
২০০৯ সালের এই দিনে তখনকার বাংলাদেশ রাইফেলস-বিডিআরের বিপথগামী সদস্যরা বিদ্রোহ করে। এ সময় তারা ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জনকে নির্মমভাবে হত্যা করে। বিদ্রোহীদের হাতে বিডিআর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদ, তার স্ত্রী, বাসার কাজের মেয়ে ও বেড়াতে আসা আত্মীয়রাও নিহত হন।
বিজিবি সূত্র জানায়, বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় অভিযুক্তসহ ১৭ হাজার ৩১১ (বিডিআর সদস্য ও বেসামরিক ব্যক্তি) জনকে বিচারের মুখোমুখি করা হয়। তাদের মধ্যে ৬ হাজার ৪১ জনকে বিশেষ আদালত ও ১১ হাজার ২৬৫ জনকে অধিনায়ক সামারি কোর্টের মাধ্যমে বিচার করা হয়। আসামিদের মধ্যে ৯ হাজার ১৯ জনকে বিভিন্ন সাজাসহ চাকরিচ্যুত করা হয়। বাকি ৮ হাজার ২৮৭ জন সরাসরি বিদ্রোহে সম্পৃক্ত না থাকায় তাদের লঘুদণ্ড (তীব্র ভর্ৎসনা, বেতন কর্তন, ডিমোশন ইত্যাদি) দিয়ে চাকরিতে বহাল রাখা হয়েছে। আর হত্যা মামলায় অভিযুক্ত ৮৫০ জনের ১৫২ জনকে ফাঁসি, ২৬০ জনকে যাবজ্জীবন ও ২৫৬ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেয়া হয়। এছাড়া, ২০ জন আসামি পলাতক রয়েছে। পলাতক আসামিদের ব্যাপারে গোয়েন্দা সংস্থা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সতর্ক রয়েছে বলে জানিয়েছেন বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
এদিকে পিলখানা হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডসহ অন্যান্য দণ্ডপ্রাপ্তদের বিষয়ে আপিলের জন্য প্রধান বিচারপতি কর্তৃক সুপ্রিম কোর্টের তিন বিচারপতির সমন্বয়ে বিশেষ বেঞ্চ গঠন করা হয়েছে।
বিজিবি মহাপরিচালক আজিজ আহমেদ গতকাল সাংবাদিকদের বলেন, ঐ ঘটনায় দায়ের করা হত্যা মামলায় ইতিমধ্যে বিচারের রায় হয়েছে। ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্তদের ডেথ রেফারেন্সে শুনানি চলছে। গত দুই বছর ধরে তিনি এ বাহিনীর প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এই বিদ্রোহে যারা জড়িত ছিলেন তাদের সাজা হয়েছে। যারা জড়িত নয় তারা সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। বিজিবি পুনর্গঠনের ব্যাপারে তিনি বলেন, বিজিবি’র গোয়েন্দা শাখার দুর্বলতার দিকগুলোকে পুনর্গঠন করা হয়েছে। বিজিবি পুনর্গঠনে যেসব সুপারিশ করা হয়েছে তার সবকিছুই বাস্তবায়ন করা হয়েছে। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বিজিবি সদস্যদের অংশগ্রহণের ব্যাপারে তিনি বলেন, বিষয়টি জাতিসংঘ সদর দপ্তরকে অনুরোধ করা হয়েছে। যদি কখনও কোন দেশে শান্তিরক্ষার জন্য সীমান্ত বাহিনী প্রয়োজন হয়, তবে তারা বাংলাদেশের বিজিবি’র কাছে চাহিদাপত্র পাঠাবে।
বিজিবি সূত্র আরও জানায়, ২০০৯ সাল পর্যন্ত বিজিবি’র জনবল ছিল ৪৪ হাজার। ২০১০ সাল থেকে এখন পর্যন্ত এ সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫০ হাজার। গঠন করা হয়েছে ৪টি রিজিওনাল হেডকোয়ার্টার্স ও ৪টি সেক্টর হেডকোয়ার্টার্স। বিজিবি পরিচালিত স্কুল, কলেজে সেকশন বৃদ্ধির মাধ্যমে অনেক শিক্ষার্থী ভর্তির ব্যবস্থা করা হয়েছে। এখন বিজিবি’র যে কোন সদস্য সুপারিশ করলেই তাদের সন্তানকে এসব স্কুলে ভর্তি করা হচ্ছে। আদালতের পর্যবেক্ষণে ২৫ ভাগ ঝুঁকি ভাতা দেয়ার কথা বলা হয়েছিল। সেখানে ৩০ ভাগ ঝুঁকি ভাতা (সীমান্ত ভাতা) দেয়া হচ্ছে। শতভাগ রেশন সুবিধাও দেয়া হচ্ছে। আগে বিজিবি সদস্যদের সন্তানদের ২২ বছর পর্যন্ত রেশন সুবিধা দেয়া হতো। এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৫ বছরে। এছাড়া প্রতিবন্ধী সন্তানদের চাকরির মেয়াদের পুরো সময় রেশন সুবিধা দেয়া হচ্ছে।
কর্মসূচি: বেদনাবিধুর এ দিবসটি পালনের লক্ষ্যে বিজিবি ও বিভিন্ন রাজনৈতিক-সামাজিক সংগঠনও নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। দিনের কর্মসূচি অনুুযায়ী শহীদ ব্যক্তিবর্গের রুহের মাগফিরাতের উদ্দেশে পিলখানাসহ বিজিবি’র সব রিজিয়ন, সেক্টর, প্রতিষ্ঠান ও ইউনিটের ব্যবস্থাপনায় বাদ ফজর খতমে কোরআন এবং বিজিবি’র সব মসজিদে এবং বিওপি পর্যায়ে শহীদদের রুহের মাগফিরাত কামনা করে দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ব্যবস্থাপনায় সকাল ৯টায় বনানী সামরিক কবরস্থানে প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীর প্রতিনিধি, স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর প্রতিনিধি, তিন বাহিনীর প্রধানগণ (সম্মিলিতভাবে), স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ও বিজিবি মহাপরিচালক (একত্রে) শহীদদের স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। বুধবার বিকাল সাড়ে ৪টায় পিলখানার বীরউত্তম ফজলুর রহমান খন্দকার মিলনায়তনে (সাবেক দরবার হল) শহীদ ব্যক্তিদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ দোয়া ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে। বিএনপি’র পক্ষ থেকেও কর্মসূচি পালন করা হবে বলে দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
No comments