পদ্মায় ফের লঞ্চডুবি
ঝড় নেই, ঝঞ্ঝা নেই, এমনকি কুয়াশাও নেই, দিনদুপুরে পদ্মায় যাত্রীবাহী লঞ্চ ডুবে গেছে কার্গোর ধাক্কায়। প্রাণে বেঁচে যাওয়া প্রত্যক্ষদর্শী যাত্রীদের ভাষ্যে জানা যায়, বেলা সাড়ে ১১টায় দুশতাধিক যাত্রী নিয়ে এমভি মোস্তফা-৩ পাটুরিয়া থেকে দৌলতদিয়ার উদ্দেশে যাত্রা করে। মাঝ নদীতে সিরাজগঞ্জের বাঘাবাড়ী থেকে ছেড়ে আসা কাজীরহাট অভিমুখী নার্গিস-১-এর সঙ্গে সংঘর্ষে ১০ সেকেন্ডের মধ্যে তলিয়ে যায় লঞ্চটি। যাত্রীবাহী লঞ্চটির ৩৫-৪০ জন যাত্রী প্রাণ বাঁচাতে পারলেও বেশির ভাগ যাত্রীরই সলিল সমাধি ঘটেছে। এই মৃত্যু মর্মান্তিক।
সাধারণত বর্ষা মৌসুমে, প্রবল ঝড়-ঝঞ্ঝায় দেশে লঞ্চডুবির ঘটনা ঘটে। কিন্তু শুকনো মৌসুমে প্রায় ঢেউহীন নদীবক্ষে এমন দুর্ঘটনা খুবই মর্মপীড়াদায়ক। মৃত্যু এদেশের ভাগ্যহীন মানুষের অতি স্বাভাবিক নিয়তি। তাকে দুর্ভাগ্য বলাও মূঢ়তা হয়ে উঠেছে যেন। এই লঞ্চডুবিতে নিহতদের বেলাতেও এটা সত্য হয়ে উঠেছে। দুর্ঘটনার পর উদ্ধারকারী জাহাজ রুস্তম ঘটনাস্থলে পৌঁছে রাত ১২টায়। তার আগেই ঘিওর ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এবং স্থানীয় জনসাধারণ উদ্ধার অভিযান শুরু করে। ঢাকা থেকে ডুবুরি দল গিয়ে যোগ দেয় উদ্ধার অভিযানে। এ সম্পাদকীয় লেখা পর্যন্ত উদ্ধার করা হয় ৬৯টি লাশ। নিখোঁজ যাত্রীদের উদ্বিগ্ন স্বজনরা ছুটে বেড়াচ্ছেন।
ইতিমধ্যে উদ্ধার অভিযান সম্পন্ন ঘোষণা করা হয়েছে। তাহলে নিখোঁজ মানুষগুলোর হদিস কে দেবে? কী সান্ত্বনা পাবেন নিখোঁজ ব্যক্তিদের আত্মীয়-স্বজনরা? সংশ্লিষ্ট তিনটি সংস্থা তিনটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। তিনটি তদন্ত প্রতিবেদনও হয়তো জমা পড়বে তদন্তের জন্য বেঁধে দেয়া কার্যসময়ে। কিন্তু অভিজ্ঞতা বলে, সেই রিপোর্ট অনুযায়ী প্রতিকারের কোনো পদক্ষেপ যেমন নেয়া হবে না, তেমনি দোষীদের বিরুদ্ধেও নেয়া হবে না কোনো ব্যবস্থা। ইতিপূর্বে পিনাক দুর্ঘটনারও কোনো সুরাহা হয়নি। নেয়া হয়নি দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা। তাহলে বিষয়টি শেষ পর্যন্ত কী দাঁড়াচ্ছে? রবীন্দ্রনাথের ছোটগল্পের নায়ক ফটিক জাহাজের খালাসিদের জল মাপার যে মন্ত্র জ্বরের ঘোরে আওড়ায়- এক বাঁও মেলে না, তেমনি ভাগ্যহীন মানুষের জীবনও এক বাঁও না মেলা সংখ্যা হয়ে যাচ্ছে কেবলই। শুধু টাকার অংকে ক্ষতিপূরণের সংস্কৃতি দেশের মানুষের জীবনকে ধারাবাহিকভাবে নিুে ঠেলে দিচ্ছে। দায়িত্ববোধ, কর্তব্য পালন ও জবাবদিহিতার বিষয়গুলো সমাজ ও সংস্কৃতি থেকে হারিয়ে যাচ্ছে। এটা কোনো সুস্থতার লক্ষণ নয়।
লঞ্চডুবি, সড়ক দুর্ঘটনাসহ যে কোনো অনাকাক্সিক্ষত মৃত্যু ও হত্যার ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটিগুলোর প্রতিবেদন অনুযায়ী দোষী ও দায়ী ব্যক্তিদের আইনের আওতায় শাস্তি প্রদান করা না হলে কোনো দিনও এসব মৃত্যুর এক বাঁও মিলবে না। তাই ভবিষ্যতে অনাকাক্সিক্ষত মৃত্যু রোধে সরকার লঞ্চডুবির ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে এবং নিখোঁজ ব্যক্তিদের উদ্ধারে সর্বোচ্চ তৎপরতা চালাবে, এটাই সবাই আশা করে।
সাধারণত বর্ষা মৌসুমে, প্রবল ঝড়-ঝঞ্ঝায় দেশে লঞ্চডুবির ঘটনা ঘটে। কিন্তু শুকনো মৌসুমে প্রায় ঢেউহীন নদীবক্ষে এমন দুর্ঘটনা খুবই মর্মপীড়াদায়ক। মৃত্যু এদেশের ভাগ্যহীন মানুষের অতি স্বাভাবিক নিয়তি। তাকে দুর্ভাগ্য বলাও মূঢ়তা হয়ে উঠেছে যেন। এই লঞ্চডুবিতে নিহতদের বেলাতেও এটা সত্য হয়ে উঠেছে। দুর্ঘটনার পর উদ্ধারকারী জাহাজ রুস্তম ঘটনাস্থলে পৌঁছে রাত ১২টায়। তার আগেই ঘিওর ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এবং স্থানীয় জনসাধারণ উদ্ধার অভিযান শুরু করে। ঢাকা থেকে ডুবুরি দল গিয়ে যোগ দেয় উদ্ধার অভিযানে। এ সম্পাদকীয় লেখা পর্যন্ত উদ্ধার করা হয় ৬৯টি লাশ। নিখোঁজ যাত্রীদের উদ্বিগ্ন স্বজনরা ছুটে বেড়াচ্ছেন।
ইতিমধ্যে উদ্ধার অভিযান সম্পন্ন ঘোষণা করা হয়েছে। তাহলে নিখোঁজ মানুষগুলোর হদিস কে দেবে? কী সান্ত্বনা পাবেন নিখোঁজ ব্যক্তিদের আত্মীয়-স্বজনরা? সংশ্লিষ্ট তিনটি সংস্থা তিনটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। তিনটি তদন্ত প্রতিবেদনও হয়তো জমা পড়বে তদন্তের জন্য বেঁধে দেয়া কার্যসময়ে। কিন্তু অভিজ্ঞতা বলে, সেই রিপোর্ট অনুযায়ী প্রতিকারের কোনো পদক্ষেপ যেমন নেয়া হবে না, তেমনি দোষীদের বিরুদ্ধেও নেয়া হবে না কোনো ব্যবস্থা। ইতিপূর্বে পিনাক দুর্ঘটনারও কোনো সুরাহা হয়নি। নেয়া হয়নি দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা। তাহলে বিষয়টি শেষ পর্যন্ত কী দাঁড়াচ্ছে? রবীন্দ্রনাথের ছোটগল্পের নায়ক ফটিক জাহাজের খালাসিদের জল মাপার যে মন্ত্র জ্বরের ঘোরে আওড়ায়- এক বাঁও মেলে না, তেমনি ভাগ্যহীন মানুষের জীবনও এক বাঁও না মেলা সংখ্যা হয়ে যাচ্ছে কেবলই। শুধু টাকার অংকে ক্ষতিপূরণের সংস্কৃতি দেশের মানুষের জীবনকে ধারাবাহিকভাবে নিুে ঠেলে দিচ্ছে। দায়িত্ববোধ, কর্তব্য পালন ও জবাবদিহিতার বিষয়গুলো সমাজ ও সংস্কৃতি থেকে হারিয়ে যাচ্ছে। এটা কোনো সুস্থতার লক্ষণ নয়।
লঞ্চডুবি, সড়ক দুর্ঘটনাসহ যে কোনো অনাকাক্সিক্ষত মৃত্যু ও হত্যার ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটিগুলোর প্রতিবেদন অনুযায়ী দোষী ও দায়ী ব্যক্তিদের আইনের আওতায় শাস্তি প্রদান করা না হলে কোনো দিনও এসব মৃত্যুর এক বাঁও মিলবে না। তাই ভবিষ্যতে অনাকাক্সিক্ষত মৃত্যু রোধে সরকার লঞ্চডুবির ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে এবং নিখোঁজ ব্যক্তিদের উদ্ধারে সর্বোচ্চ তৎপরতা চালাবে, এটাই সবাই আশা করে।
No comments