অমর্ত্য সেনের বক্তৃতা
বিশ্ববরেণ্য অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন সোমবার রাজধানীর কৃষিবিদ মিলনায়তন ইন্সটিটিউট মিলনায়তনে অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও মানবিক প্রগতি শীর্ষক যে উন্মুক্ত বক্তৃতা দিয়েছেন, তা কিছু বিষয়ে আমাদের নতুন করে ভাবনার উদ্রেক ঘটায়। তার বক্তব্যের সার কথাটি হল, মানবিক প্রগতি ছাড়া অর্থনৈতিক প্রগতি অর্জন কঠিন। উন্নয়নের ক্ষেত্রে এ দুটি অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত, আবার কখনও তা দ্বান্দ্বিকও হতে পারে। তবে উন্নয়নের সব ক্ষেত্রে মানবিক প্রগতির বিষয়টি বিবেচনায় না নিলে থেমে যেতে পারে অর্থনৈতিক অগ্রগতি। বস্তুত অমর্ত্য সেনের এ কথার মধ্যে অর্থনৈতিক উন্নতির সুফল গোটা সমাজে পৌঁছে দেয়ার প্রয়োজনীয়তাই প্রতিধ্বনিত হয়েছে। একটি দেশের অর্থনীতির সূচকগুলো ওপরের দিকে থাকতে পারে; কিন্তু শুধু এটিই জনসাধারণের আর্থ-সামাজিক উন্নতির নিশ্চয়তা দেয় না। সর্বস্তরের মানুষ অর্থনৈতিক উন্নয়নের সুফল তখনই পেতে পারে, যখন সম্পদের সুষম বণ্টন নিশ্চিত হবে এবং কমে যাবে বৈষম্য। এতে দারিদ্র্যও হ্রাস পাবে। এটিই মানবিক প্রগতির মূল কথা।
আমরা অর্থনৈতিক উন্নয়ন চাই। এজন্য চাই ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগের সম্প্রসারণ। এক্ষেত্রে বেসরকারি খাতের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সন্দেহ নেই। এ প্রসঙ্গে অমর্ত্য সেন বলেছেন, অর্থনৈতিক উন্নয়নে বাণিজ্যের প্রসার ঘটবে, এটিই স্বাভাবিক। এতে বেসরকারি খাত সমৃদ্ধ হবে। বাড়বে সরকারের রাজস্ব। কিন্তু এক্ষেত্রে মানবিক উন্নয়নের দিকে সরকারের নজর না থাকলে এর বাণিজ্যিকীকরণ ঘটবে। এর ফলে বেড়ে যাবে সেবার মূল্য, যা সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে যাবে। ফলে স্বাস্থ্য, শিক্ষাসহ সেবা খাতগুলো গণমানুষের চাহিদা পূরণে ব্যর্থ হবে। ধনীরা সেবা পেলেও বঞ্চিত হবে দরিদ্র মানুষ। অর্থাৎ অর্থনীতির উন্নতি হলেও এতে গণমানুষের উন্নতি হবে না। যে উন্নতির সুফল পাবে সর্বস্তরের মানুষ, সেটিই মানবিক প্রগতি। এটি নিশ্চিত করতে হবে সরকারি উদ্যোগে। এজন্য বেসরকারি খাতের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে একটি গ্রহণযোগ্য উপায় খুঁজে বের করতে হবে। একটি রাষ্ট্রের শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য জনগণের যে সন্তুষ্টির প্রয়োজন, মানবিক প্রগতি অর্জনের মাধ্যমে তা নিশ্চিত হতে পারে।
অমর্ত্য সেনের এ জ্ঞানগর্ভ বক্তব্যগুলো আমাদের অনুধাবন করতে হবে। তিনি অবশ্য বলেছেন, মানবিক প্রগতি অর্জনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ভারতের চেয়ে ভালো অবস্থানে রয়েছে। নারী উন্নয়ন, স্বাস্থ্য ও শিক্ষার মতো বিষয়গুলোতে বাংলাদেশ এগিয়ে গেছে। তবে এ নিয়ে আÍতৃপ্তির সুযোগ নেই। আমাদের সমাজে আয় ও সম্পদের বৈষম্য অত্যন্ত প্রকট। উন্নতির সুফল ভোগ করে মুষ্টিমেয় মানুষ। এক্ষেত্রে পরিবর্তন আনা জরুরি।
অমর্ত্য সেন গণতন্ত্রের নানা দিক ও সীমাবদ্ধতা নিয়েও বক্তব্য রেখেছেন। এক্ষেত্রে তার একটি উক্তি প্রণিধানযোগ্য। তিনি বলেছেন, গণতন্ত্রে আলোচনা না করলে কোনো কিছু বদলানো সম্ভব হয় না। এ আলোচনার জায়গাটা ভারতবর্ষজুড়েই সংকীর্ণ হয়ে গেছে। এ বাস্তবতায় বিদ্যমান গণতন্ত্রে যেটুকু মঙ্গলজনক তা গ্রহণ করে কীভাবে এ গণতন্ত্রকে আরও উন্নত করা যায় তার জন্য বিতর্কের সুযোগ কিংবা পরস্পরের আলোচনার সুযোগ তৈরি করতে হবে। একই সঙ্গে চালিয়ে যেতে হবে উন্নয়ন। আমরা আশা করব, অর্মত্য সেনের এসব বক্তব্যের সারমর্ম অনুধাবনে সচেষ্ট হবেন সবাই। অর্থাৎ গণমানুষের সার্বিক মঙ্গলের মধ্যেই নিহিত আছে প্রকৃত উন্নয়ন। মুষ্টিমেয় মানুষের উন্নতি রাষ্ট্রের প্রকৃত উন্নতি নয়।
আমরা অর্থনৈতিক উন্নয়ন চাই। এজন্য চাই ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগের সম্প্রসারণ। এক্ষেত্রে বেসরকারি খাতের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সন্দেহ নেই। এ প্রসঙ্গে অমর্ত্য সেন বলেছেন, অর্থনৈতিক উন্নয়নে বাণিজ্যের প্রসার ঘটবে, এটিই স্বাভাবিক। এতে বেসরকারি খাত সমৃদ্ধ হবে। বাড়বে সরকারের রাজস্ব। কিন্তু এক্ষেত্রে মানবিক উন্নয়নের দিকে সরকারের নজর না থাকলে এর বাণিজ্যিকীকরণ ঘটবে। এর ফলে বেড়ে যাবে সেবার মূল্য, যা সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে যাবে। ফলে স্বাস্থ্য, শিক্ষাসহ সেবা খাতগুলো গণমানুষের চাহিদা পূরণে ব্যর্থ হবে। ধনীরা সেবা পেলেও বঞ্চিত হবে দরিদ্র মানুষ। অর্থাৎ অর্থনীতির উন্নতি হলেও এতে গণমানুষের উন্নতি হবে না। যে উন্নতির সুফল পাবে সর্বস্তরের মানুষ, সেটিই মানবিক প্রগতি। এটি নিশ্চিত করতে হবে সরকারি উদ্যোগে। এজন্য বেসরকারি খাতের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে একটি গ্রহণযোগ্য উপায় খুঁজে বের করতে হবে। একটি রাষ্ট্রের শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য জনগণের যে সন্তুষ্টির প্রয়োজন, মানবিক প্রগতি অর্জনের মাধ্যমে তা নিশ্চিত হতে পারে।
অমর্ত্য সেনের এ জ্ঞানগর্ভ বক্তব্যগুলো আমাদের অনুধাবন করতে হবে। তিনি অবশ্য বলেছেন, মানবিক প্রগতি অর্জনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ভারতের চেয়ে ভালো অবস্থানে রয়েছে। নারী উন্নয়ন, স্বাস্থ্য ও শিক্ষার মতো বিষয়গুলোতে বাংলাদেশ এগিয়ে গেছে। তবে এ নিয়ে আÍতৃপ্তির সুযোগ নেই। আমাদের সমাজে আয় ও সম্পদের বৈষম্য অত্যন্ত প্রকট। উন্নতির সুফল ভোগ করে মুষ্টিমেয় মানুষ। এক্ষেত্রে পরিবর্তন আনা জরুরি।
অমর্ত্য সেন গণতন্ত্রের নানা দিক ও সীমাবদ্ধতা নিয়েও বক্তব্য রেখেছেন। এক্ষেত্রে তার একটি উক্তি প্রণিধানযোগ্য। তিনি বলেছেন, গণতন্ত্রে আলোচনা না করলে কোনো কিছু বদলানো সম্ভব হয় না। এ আলোচনার জায়গাটা ভারতবর্ষজুড়েই সংকীর্ণ হয়ে গেছে। এ বাস্তবতায় বিদ্যমান গণতন্ত্রে যেটুকু মঙ্গলজনক তা গ্রহণ করে কীভাবে এ গণতন্ত্রকে আরও উন্নত করা যায় তার জন্য বিতর্কের সুযোগ কিংবা পরস্পরের আলোচনার সুযোগ তৈরি করতে হবে। একই সঙ্গে চালিয়ে যেতে হবে উন্নয়ন। আমরা আশা করব, অর্মত্য সেনের এসব বক্তব্যের সারমর্ম অনুধাবনে সচেষ্ট হবেন সবাই। অর্থাৎ গণমানুষের সার্বিক মঙ্গলের মধ্যেই নিহিত আছে প্রকৃত উন্নয়ন। মুষ্টিমেয় মানুষের উন্নতি রাষ্ট্রের প্রকৃত উন্নতি নয়।
No comments