শিক্ষা ভবনে গোলাগুলি- নেপথ্যে কোটি টাকার টেন্ডার by নুর মোহাম্মদ
গত বুধবার শিক্ষা ভবনে ছাত্রলীগ-যুবলীগের গোলাগুলির ঘটনার পেছনে ছিল কোটি টাকার টেন্ডার। সম্প্রতি দু’টি মাদরাসা নির্মাণকাজের দেড় কোটি টাকার টেন্ডার প্রক্রিয়াধীন। এ ছাড়া আগামী কয়েক দিন পর সেকায়েপ, পাবলিক
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণসহ কয়েক কোটি টাকার টেন্ডার আহ্বান করা হবে। গত কয়েক মাসে মাদারীপুরে শেখ হাসিনা উইমেন স্কুল, যশোরের দু’টি মাদরাসা, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডসহ বিভিন্ন নির্মাণ, প্রিন্টিং ও আসবাবপত্রের প্রায় পৌনে ৩ কোটি টাকার টেন্ডার আহ্বান করা হয়েছে। শিক্ষা ভবনের টেন্ডার নিয়ন্ত্রণে রয়েছে দু’টি গ্রুপ। একটি নিয়ন্ত্রণ করছে ছাত্রলীগের সাবেক নেতা মিজানুর রহমান। অপর গ্রুপের নেতৃত্ব দিচ্ছেন যুবলীগ নেতা শফিকুল ইসলাম শফিক। শিক্ষা ভবনের টেন্ডার নিয়ন্ত্রণে এ দুই পক্ষের মধ্যে স্নায়ুযুদ্ধ চলে আসছে দীর্ঘদিন থেকে।
দু’টি গ্রুপই তাদের ভবনে তাদের আধিপত্য বিস্তার ধরে রাখতে নিয়মিত মহড়া দেয়। আগামী মাসে বড় কয়েকটি টেন্ডারকে এককভাবে নিয়ন্ত্রক করতে কয়েক দিন ধরে দুই পক্ষই মহড়া দিচ্ছে সর্বশক্তি দিয়ে। বুধবার এরই অংশ হিসেবে টেন্ডার শফিকের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আশরাফুর রহমান ও আরেক নেতা সোহেল রানার নেতৃত্বে গড়ে ওঠা গ্রুপটি শিক্ষা ভবনে মহড়া দিতে আসে। এ সময় মিঠুর নেতৃত্ব ৩০-৩৫ জন সশন্ত্র ক্যাডারকে দেখা যায়। এর মধ্যে ছিলেন মোফাজ্জল হোসেন মাসুদ, শহিদুল, শাহজাহানপুর ছাত্রলীগের নেতা রতন মৃধা সে কিছুদিন আগে জেল থেকে ছাড়া পেয়েছে। ইয়াবা ও অস্ত্র ব্যবসার অভিযোগে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরা সবাই ছাত্রলীগের বর্তমান ও সাবেক নেতা। একই সময় মিজান গ্রুপের কয়েকজন সেখানে মহড়া দেয়। এ সময় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ বেধে যায়। মিজানুর রহমান অভিযোগ করে বলেন, সোহেল রানা মিঠুর এক ভাই পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগে (ডিবি) মতিঝিল জোনের সহকারী কমিশনার হিসেবে কর্মরত। ভবনে মহড়া চলাকালে তারই (সোহেলের ভাই) নির্দেশে ডিবির একটি গাড়ি ঘটনাস্থলে মহড়া দেয়। ওই গাড়ি দেখে তার (মিজান) গ্রুপের অনেকেই আড়ালে চলে যায়। এ সুযোগে তাদের ওপর হামলা হয়। এতে মিজানের মাথায় আঘাত লাগে। পরে আমাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপতালে ভর্তি করা হয়। তিনি জানান, এ ঘটনায় শাহবাগ থানায় মামলা করার চেষ্টা করলেও মামলা নেয়নি। বিষয়টি সমঝোতা করতে নানা তৎপরতা চালায় মিঠু। এ ব্যাপারে সোহেল রানা মিঠু বলেন, নিজেদের মধ্যে একটা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। আমরা বসে ঠিকঠাক করে নিয়েছি। তিনি বলেন, ঘটনাকালে পুলিশের কোন গাড়ি শিক্ষা ভবন এলাকায় ছিল কিনা আমার জানা নেই। আমার ভাই কোন পুলিশ পাঠায়নি।
শফিকুল ইসলাম শফিক ছাত্রজীবনেই স্বীকৃতি পেয়েছিলেন চাঁদাবাজ ও টেন্ডারবাজ হিসেবে। ২০০০ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের সময় শিক্ষা ভবনে টেন্ডারবাজি করতে গিয়ে পিটুনি খেয়েছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি সাহিত্যের ছাত্র ও তৎকালীন মুহসীন হল ছাত্রলীগের সভাপতি শফিকুল। গ্রেপ্তার অবস্থায় পত্রিকায় তার ছবি ছাপা হয়েছিল। এরপর রাজনৈতিক পটপরিবর্তন হয়েছে। আবারও আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেছে। কিন্তু শিক্ষা ভবন ছাড়েননি শফিক। সেই শফিক এখন শিক্ষা ভবনের টেন্ডারবাজির প্রধান নিয়ন্ত্রক।
শুধু শিক্ষা ভবন নয় এর আশপাশে সরকারি ভবনে রয়েছে তার একগুচ্ছ তৎপর। শিক্ষা ভবন, সড়ক ভবন, মৎস্য ভবন, বিদ্যুৎ ভবন, ঢাকা সিটি করপোরেশন, সর্বত্রই তাদের আনাগোনা। এসব ভবন থেকে সারা দেশের বিভিন্ন খাতের উন্নয়নকাজ ও কেনাকাটা সরকারি সিদ্ধান্তে বাস্তবায়ন করা হয়। ওই গ্রুপটির মাধ্যমেই সব ধরনের ঠিকাদারি কাজের বিলি-বণ্টন হয়। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ২০১১ সালের ২৬শে এপ্রিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুহসীন হলে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে অন্তত ৬০ জন আহত হন। একপক্ষের নেতাকর্মীরা আরেক পক্ষকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে-পিটিয়ে জখম করেন। গুলি ও ককটেলের বিস্ফোরণও ঘটানো হয়। বর্তমানে যুবলীগের বিজ্ঞানবিষয়ক সম্পাদক শফিক সেই সময় টেন্ডারবাজিতে আধিপত্য বজায় রাখতে তার অনুসারী নেতাদের দিয়ে অবাধ্যদের শায়েস্তা করতে গেলে এ রক্তপাত ঘটে। সেই ঘটনায় শফিকুলকে প্রধান আসামি করে মামলা করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এর পরও তার কিছুই হয়নি। এ মামলাটিও তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পেয়েছে পুলিশ, কিন্তু আসামি পায়নি। অবশেষে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছেন তদন্ত কর্মকর্তা। ওই ঘটনার পর গত বছরের সেপ্টেম্বরে আইসিটির মাধ্যমে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরে শিক্ষার প্রচলন প্রকল্পের জন্য ২০ হাজার ৫০০টি মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর সরবরাহের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়। সেই দরপত্রে অংশ নিতে গিয়ে শফিকুলের অনুসারীদের দ্বারা হেনস্তা হন সরকারি টেলিফোন শিল্প সংস্থার (টেশিস) কর্মকর্তারা।
এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে শফিকুল ইসলাম শফিক বলেন, শিক্ষা ভবন নিয়ন্ত্রণের কিছু নেই। ৭০-৮০টি করে টেন্ডার ফেলা হয়। আমি প্রথম শ্রেণীর ঠিকাদার। আমি খোঁজও নিতে যাই না।
শিক্ষা ভবন সূত্র জানায়, শফিক নিজে না গেলেও তার নিয়ন্ত্রিত গ্রুপের লোকজন তার হয়ে কাজ করে থাকে। জানা গেছে, শফিকের নেতৃত্বাধীন আশরাফ-সোহেল গ্রুপকে শিক্ষা ভবনে অবস্থিত শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের (ইইডি) এক শ্রেণীর প্রকৌশলী ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন একটি বিতর্কিত প্রকল্পের পরিচালক (পিডি) সরাসরি মদত দিচ্ছেন। এ প্রকল্প পরিচালকের বিরুদ্ধে ইতিপূর্বে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) ও আইএমইডি তদন্ত করে প্রকল্পে দুর্নীতির প্রমাণ পেয়েছে। এ নিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তদন্ত করছে। এসব নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে একাধিক প্রতিবেদনও প্রকাশিত হয়। এর পরও রহস্যজনক কারণে ওই পিডি বহাল তবিয়তে রয়েছেন।
অন্যদিকে শিক্ষা ভবনে মিজানুর রহমানের উত্থানও টেন্ডার শফিকের হাত ধরে। একসময় শফিকের সেকেন্ড ইন কমান্ড ছিলেন মিজান। তাকে দিয়ে শিক্ষা ভবনের সব টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ করতেন শফিক। কিছুদিন আগে ভাগবাটোয়ারা নিয়ে শফিক ও মিজানের মধ্যে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়। এরপর মিজান ছাত্রলীগ নেতা মিলকানের নেতৃত্বে আলাদা একটি গ্রুপ তৈরি করেন। শফিককে ঠেকাতে যুবলীগের একটি প্রভাবশালী গ্রুপ মিজানকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দিচ্ছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। যদিও মিজান দাবি করেছেন, তিনি একজন ঠিকাদার হিসেবেই শিক্ষা ভবনে যান।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণসহ কয়েক কোটি টাকার টেন্ডার আহ্বান করা হবে। গত কয়েক মাসে মাদারীপুরে শেখ হাসিনা উইমেন স্কুল, যশোরের দু’টি মাদরাসা, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডসহ বিভিন্ন নির্মাণ, প্রিন্টিং ও আসবাবপত্রের প্রায় পৌনে ৩ কোটি টাকার টেন্ডার আহ্বান করা হয়েছে। শিক্ষা ভবনের টেন্ডার নিয়ন্ত্রণে রয়েছে দু’টি গ্রুপ। একটি নিয়ন্ত্রণ করছে ছাত্রলীগের সাবেক নেতা মিজানুর রহমান। অপর গ্রুপের নেতৃত্ব দিচ্ছেন যুবলীগ নেতা শফিকুল ইসলাম শফিক। শিক্ষা ভবনের টেন্ডার নিয়ন্ত্রণে এ দুই পক্ষের মধ্যে স্নায়ুযুদ্ধ চলে আসছে দীর্ঘদিন থেকে।
দু’টি গ্রুপই তাদের ভবনে তাদের আধিপত্য বিস্তার ধরে রাখতে নিয়মিত মহড়া দেয়। আগামী মাসে বড় কয়েকটি টেন্ডারকে এককভাবে নিয়ন্ত্রক করতে কয়েক দিন ধরে দুই পক্ষই মহড়া দিচ্ছে সর্বশক্তি দিয়ে। বুধবার এরই অংশ হিসেবে টেন্ডার শফিকের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আশরাফুর রহমান ও আরেক নেতা সোহেল রানার নেতৃত্বে গড়ে ওঠা গ্রুপটি শিক্ষা ভবনে মহড়া দিতে আসে। এ সময় মিঠুর নেতৃত্ব ৩০-৩৫ জন সশন্ত্র ক্যাডারকে দেখা যায়। এর মধ্যে ছিলেন মোফাজ্জল হোসেন মাসুদ, শহিদুল, শাহজাহানপুর ছাত্রলীগের নেতা রতন মৃধা সে কিছুদিন আগে জেল থেকে ছাড়া পেয়েছে। ইয়াবা ও অস্ত্র ব্যবসার অভিযোগে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরা সবাই ছাত্রলীগের বর্তমান ও সাবেক নেতা। একই সময় মিজান গ্রুপের কয়েকজন সেখানে মহড়া দেয়। এ সময় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ বেধে যায়। মিজানুর রহমান অভিযোগ করে বলেন, সোহেল রানা মিঠুর এক ভাই পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগে (ডিবি) মতিঝিল জোনের সহকারী কমিশনার হিসেবে কর্মরত। ভবনে মহড়া চলাকালে তারই (সোহেলের ভাই) নির্দেশে ডিবির একটি গাড়ি ঘটনাস্থলে মহড়া দেয়। ওই গাড়ি দেখে তার (মিজান) গ্রুপের অনেকেই আড়ালে চলে যায়। এ সুযোগে তাদের ওপর হামলা হয়। এতে মিজানের মাথায় আঘাত লাগে। পরে আমাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপতালে ভর্তি করা হয়। তিনি জানান, এ ঘটনায় শাহবাগ থানায় মামলা করার চেষ্টা করলেও মামলা নেয়নি। বিষয়টি সমঝোতা করতে নানা তৎপরতা চালায় মিঠু। এ ব্যাপারে সোহেল রানা মিঠু বলেন, নিজেদের মধ্যে একটা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। আমরা বসে ঠিকঠাক করে নিয়েছি। তিনি বলেন, ঘটনাকালে পুলিশের কোন গাড়ি শিক্ষা ভবন এলাকায় ছিল কিনা আমার জানা নেই। আমার ভাই কোন পুলিশ পাঠায়নি।
শফিকুল ইসলাম শফিক ছাত্রজীবনেই স্বীকৃতি পেয়েছিলেন চাঁদাবাজ ও টেন্ডারবাজ হিসেবে। ২০০০ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের সময় শিক্ষা ভবনে টেন্ডারবাজি করতে গিয়ে পিটুনি খেয়েছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি সাহিত্যের ছাত্র ও তৎকালীন মুহসীন হল ছাত্রলীগের সভাপতি শফিকুল। গ্রেপ্তার অবস্থায় পত্রিকায় তার ছবি ছাপা হয়েছিল। এরপর রাজনৈতিক পটপরিবর্তন হয়েছে। আবারও আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেছে। কিন্তু শিক্ষা ভবন ছাড়েননি শফিক। সেই শফিক এখন শিক্ষা ভবনের টেন্ডারবাজির প্রধান নিয়ন্ত্রক।
শুধু শিক্ষা ভবন নয় এর আশপাশে সরকারি ভবনে রয়েছে তার একগুচ্ছ তৎপর। শিক্ষা ভবন, সড়ক ভবন, মৎস্য ভবন, বিদ্যুৎ ভবন, ঢাকা সিটি করপোরেশন, সর্বত্রই তাদের আনাগোনা। এসব ভবন থেকে সারা দেশের বিভিন্ন খাতের উন্নয়নকাজ ও কেনাকাটা সরকারি সিদ্ধান্তে বাস্তবায়ন করা হয়। ওই গ্রুপটির মাধ্যমেই সব ধরনের ঠিকাদারি কাজের বিলি-বণ্টন হয়। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ২০১১ সালের ২৬শে এপ্রিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুহসীন হলে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে অন্তত ৬০ জন আহত হন। একপক্ষের নেতাকর্মীরা আরেক পক্ষকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে-পিটিয়ে জখম করেন। গুলি ও ককটেলের বিস্ফোরণও ঘটানো হয়। বর্তমানে যুবলীগের বিজ্ঞানবিষয়ক সম্পাদক শফিক সেই সময় টেন্ডারবাজিতে আধিপত্য বজায় রাখতে তার অনুসারী নেতাদের দিয়ে অবাধ্যদের শায়েস্তা করতে গেলে এ রক্তপাত ঘটে। সেই ঘটনায় শফিকুলকে প্রধান আসামি করে মামলা করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এর পরও তার কিছুই হয়নি। এ মামলাটিও তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পেয়েছে পুলিশ, কিন্তু আসামি পায়নি। অবশেষে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছেন তদন্ত কর্মকর্তা। ওই ঘটনার পর গত বছরের সেপ্টেম্বরে আইসিটির মাধ্যমে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরে শিক্ষার প্রচলন প্রকল্পের জন্য ২০ হাজার ৫০০টি মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর সরবরাহের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়। সেই দরপত্রে অংশ নিতে গিয়ে শফিকুলের অনুসারীদের দ্বারা হেনস্তা হন সরকারি টেলিফোন শিল্প সংস্থার (টেশিস) কর্মকর্তারা।
এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে শফিকুল ইসলাম শফিক বলেন, শিক্ষা ভবন নিয়ন্ত্রণের কিছু নেই। ৭০-৮০টি করে টেন্ডার ফেলা হয়। আমি প্রথম শ্রেণীর ঠিকাদার। আমি খোঁজও নিতে যাই না।
শিক্ষা ভবন সূত্র জানায়, শফিক নিজে না গেলেও তার নিয়ন্ত্রিত গ্রুপের লোকজন তার হয়ে কাজ করে থাকে। জানা গেছে, শফিকের নেতৃত্বাধীন আশরাফ-সোহেল গ্রুপকে শিক্ষা ভবনে অবস্থিত শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের (ইইডি) এক শ্রেণীর প্রকৌশলী ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন একটি বিতর্কিত প্রকল্পের পরিচালক (পিডি) সরাসরি মদত দিচ্ছেন। এ প্রকল্প পরিচালকের বিরুদ্ধে ইতিপূর্বে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) ও আইএমইডি তদন্ত করে প্রকল্পে দুর্নীতির প্রমাণ পেয়েছে। এ নিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তদন্ত করছে। এসব নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে একাধিক প্রতিবেদনও প্রকাশিত হয়। এর পরও রহস্যজনক কারণে ওই পিডি বহাল তবিয়তে রয়েছেন।
অন্যদিকে শিক্ষা ভবনে মিজানুর রহমানের উত্থানও টেন্ডার শফিকের হাত ধরে। একসময় শফিকের সেকেন্ড ইন কমান্ড ছিলেন মিজান। তাকে দিয়ে শিক্ষা ভবনের সব টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ করতেন শফিক। কিছুদিন আগে ভাগবাটোয়ারা নিয়ে শফিক ও মিজানের মধ্যে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়। এরপর মিজান ছাত্রলীগ নেতা মিলকানের নেতৃত্বে আলাদা একটি গ্রুপ তৈরি করেন। শফিককে ঠেকাতে যুবলীগের একটি প্রভাবশালী গ্রুপ মিজানকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দিচ্ছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। যদিও মিজান দাবি করেছেন, তিনি একজন ঠিকাদার হিসেবেই শিক্ষা ভবনে যান।
No comments