ইবাদতের কাজে প্রতারণা বন্ধ করুন by আবদুল কুদ্দুস মাখন
হজ নিয়ে যারা ব্যবসায় করেন, তারা হাজীদের কাছ থেকে ধন্যবাদ পাওয়ার কথা। কারণ, এটি একটি সেবামূলক কাজ। এরা ধন্যবাদের পরিবর্তে মানুষের ধিক্কার পাচ্ছেন। ইবাদতের আড়ালে কত অজানা প্রতারণা রয়েছে তা এহেন কাজে যুক্ত না হলে অভিজ্ঞতা হয় না। হজের সময় আসলে পত্রপত্রিকায় হজ ও ট্রাভেল এজেন্সিগুলোর নানা ধরনের চটকদার বিজ্ঞাপন দেখতে পাই। প্যাকেজ-এ, প্যাকেজ-বি, প্যাকেজ-সি ইত্যাদি। এ, বি, সি এর অর্থ হলো সবচেয়ে কাছে, একটু দূরে, বেশি দূরে থাকার ব্যবস্থাপনা। বাংলাদেশে বসে যখন এসব প্যাকেজের ব্যাখ্যা দেয়া হয় তখন বলা হয় পবিত্র হেরেম থেকে ৫০০ গজ থেকে শুরু করে ২ বা ৩ কিলোমিটার পর্যন্ত দূরত্ব; কিন্তু পবিত্র হেরেমে পৌঁছার পর দেখা যায় সে ৫০০ গজ হয়ে যায় ৫ মাইলের ও অধিক। এ তো গেল থাকার ব্যাপার।
থাকার মান নিয়েও প্রশ্ন আছে। এসি, নন-এসি; একরুমে ৫-৭ জন, বিল্ডিং এর ওপরে না নিচে। এভাবে বাসস্থান থেকে শুরু করে খাওয়া-দাওয়া, যাতায়াতব্যবস্থা প্রতিটি স্তরে প্রতারণার জাল বিস্তীর্ণ রয়েছে। যেখানে কথা ও কাজের কোনো মিল নেই। শুধু লোক ম্যানেজ করতে পারলেই হয়। ধন্যবাদ তো সেসব হাজী সাহেব দিতেই পারেন যারা সঠিক সময়ে হজের টিকিট পেয়েছেন, বিমানের শিডিউল অনুযায়ী ফাইটে চড়ে সৌদি আরব পৌঁছেছেন; কিন্তু দুর্ভাগ্য তো সেসব হতভাগাদের জন্য যারা স্ত্রী-পুত্র, শ্বশুর-শাশুড়ি, নাতি-নাতনী, পাড়া-প্রতিবেশীর কাছ থেকে বিদায় নিয়ে বড় বড় লাগেজ-ট্রলিসহ আশকোনা হজক্যাম্পে এসে দেখলেন তার ফাইটের কোনো খোঁজ নেই। আদৌ তিনি হজে যেতে পারবেন কি পারবেন না। তার সঙ্গী সাথীরা সবাই চলে গেছে। হায়রে কপাল! মাথায় হাত! বুকে যন্ত্রণা! এসব হজপ্রত্যাশী মানুষের আর্তনাদ কে দেখে?
যাত্রীদের কোনো ত্রুটি নেই। সহজ সরল মানুষ। এরা পড়েছেন দালালদের খপ্পরে। কম খরচে বেশি সুযোগের প্রলোভন দেখিয়ে দালালরা তাদের হজে নেয়ার কথা বলে পাসপোর্ট নিয়েছিল; কিন্তু সৌদি আরব পর্যন্ত সব খরচের হিসাব মিলাতে না পেরে তারা উধাও। মড়ার ঘা এসে পড়েছে এসব সরল মানুষের ঘাড়ে। অবশেষে দেখা যায় এ সকল বিপদে পড়া মানুষগুলো আর হজেও যেতে পারেন না, টাকাও ফেরত পান না। শুধু তা-ই নয় হজ ও ওমরার কথা বলে কেউ কেউ দেশ ত্যাগ করে। আবার কোনো কোনো ব্যবসায়ী তাদের সুযোগ করে দেয়। এর মাধ্যমে কোনো কোনো চক্র বড় অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নেয়। কারণ এসব ব্যবসায়ী তারা নিজেরাও জানেন এমন কিছু লোক আছে যারা হজের নামে বিদেশ গিয়ে চাকরি করবে। এরা আর দেশে ফিরে আসবে না। তাতে কী? লাইসেন্স বাতিল হলে হোক। তার তো মুনাফা হবে। হজ এজেন্টদের নিকট আহ্বান। আপনারা ইবাদতের কাজে সহজ-সরল মানুষদের কষ্ট দেবেন না। যারা আল্লাহর সান্নিধ্য লাভের আশায় হজ বা ওমরাহর নিয়ত করে পবিত্র কাবা তাওয়াফ করতে চান তাদের সাথে প্রতারণা থেকে বিরত থাকুন।
আবদুল কুদ্দুস মাখন
লেখক : পিএইচডি গবেষক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
smakhon@gmail.com
থাকার মান নিয়েও প্রশ্ন আছে। এসি, নন-এসি; একরুমে ৫-৭ জন, বিল্ডিং এর ওপরে না নিচে। এভাবে বাসস্থান থেকে শুরু করে খাওয়া-দাওয়া, যাতায়াতব্যবস্থা প্রতিটি স্তরে প্রতারণার জাল বিস্তীর্ণ রয়েছে। যেখানে কথা ও কাজের কোনো মিল নেই। শুধু লোক ম্যানেজ করতে পারলেই হয়। ধন্যবাদ তো সেসব হাজী সাহেব দিতেই পারেন যারা সঠিক সময়ে হজের টিকিট পেয়েছেন, বিমানের শিডিউল অনুযায়ী ফাইটে চড়ে সৌদি আরব পৌঁছেছেন; কিন্তু দুর্ভাগ্য তো সেসব হতভাগাদের জন্য যারা স্ত্রী-পুত্র, শ্বশুর-শাশুড়ি, নাতি-নাতনী, পাড়া-প্রতিবেশীর কাছ থেকে বিদায় নিয়ে বড় বড় লাগেজ-ট্রলিসহ আশকোনা হজক্যাম্পে এসে দেখলেন তার ফাইটের কোনো খোঁজ নেই। আদৌ তিনি হজে যেতে পারবেন কি পারবেন না। তার সঙ্গী সাথীরা সবাই চলে গেছে। হায়রে কপাল! মাথায় হাত! বুকে যন্ত্রণা! এসব হজপ্রত্যাশী মানুষের আর্তনাদ কে দেখে?
যাত্রীদের কোনো ত্রুটি নেই। সহজ সরল মানুষ। এরা পড়েছেন দালালদের খপ্পরে। কম খরচে বেশি সুযোগের প্রলোভন দেখিয়ে দালালরা তাদের হজে নেয়ার কথা বলে পাসপোর্ট নিয়েছিল; কিন্তু সৌদি আরব পর্যন্ত সব খরচের হিসাব মিলাতে না পেরে তারা উধাও। মড়ার ঘা এসে পড়েছে এসব সরল মানুষের ঘাড়ে। অবশেষে দেখা যায় এ সকল বিপদে পড়া মানুষগুলো আর হজেও যেতে পারেন না, টাকাও ফেরত পান না। শুধু তা-ই নয় হজ ও ওমরার কথা বলে কেউ কেউ দেশ ত্যাগ করে। আবার কোনো কোনো ব্যবসায়ী তাদের সুযোগ করে দেয়। এর মাধ্যমে কোনো কোনো চক্র বড় অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নেয়। কারণ এসব ব্যবসায়ী তারা নিজেরাও জানেন এমন কিছু লোক আছে যারা হজের নামে বিদেশ গিয়ে চাকরি করবে। এরা আর দেশে ফিরে আসবে না। তাতে কী? লাইসেন্স বাতিল হলে হোক। তার তো মুনাফা হবে। হজ এজেন্টদের নিকট আহ্বান। আপনারা ইবাদতের কাজে সহজ-সরল মানুষদের কষ্ট দেবেন না। যারা আল্লাহর সান্নিধ্য লাভের আশায় হজ বা ওমরাহর নিয়ত করে পবিত্র কাবা তাওয়াফ করতে চান তাদের সাথে প্রতারণা থেকে বিরত থাকুন।
আবদুল কুদ্দুস মাখন
লেখক : পিএইচডি গবেষক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
smakhon@gmail.com
No comments