প্রাচীনতম প্যারিসবাসীর জীবাশ্মের খোঁজ?
শিল্পীর তুলিতে অাঁকা এক নিয়ানডার্থাল। রয়টার্স |
ফ্রান্সের সেইন নদীর কাছে পললভূমি খুঁড়ে অতি বিরল ধরনের প্রাচীন মানব-জীবাশ্ম (ফসিল) উদ্ধার করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, এই জীবাশ্ম প্রায় দুই লাখ বছর আগের। খবর বিবিসির। জীবাশ্মে পরিণত দেহাংশটি মানুষের বাঁ হাতের হাড়। এটি কোনো নিয়ানডার্থালের (বিলুপ্ত প্রাচীন মানব প্রজাতি) বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে গবেষকেরা জানিয়েছেন, সেখানে অন্য কোনো ফসিল না পাওয়া গেলে এ ব্যাপারে পরিপূর্ণ বিবরণ দেওয়া সম্ভব হবে না। ইউরোপের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে এর আগে নিয়ানডার্থাল মানুষের এত পুরোনো দেহাবশেষ খুব কমই পাওয়া গেছে। নৃবিজ্ঞানী ব্রুনো মরেই ও তাঁর সহযোগী গবেষকেরা ওই উদ্ধারকাজে অংশ নেন। এ-সংক্রান্ত একটি গবেষণা প্রতিবেদন প্লস ওয়ান সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়েছে। মরেই বলেন, ‘প্যারিসের কাছাকাছি এলাকায় পাওয়া সব ফসিলের মধ্যে এগুলোই সবচেয়ে পুরোনো। বলা যেতে পারে, এগুলো প্রাচীনতম প্যারিসবাসীর দেহাবশেষ।’ প্যারিস থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার দূরে তুরভিল-লা-রিভিয়ের এলাকায় মাটি খুঁড়ে হাতের ওপরের দিকের তিনটি হাড় পাওয়া যায়। এগুলো বেশ শক্ত। তাই গবেষকেরা ধারণা করছেন, হাড়গুলো কোনো কিশোর বা তরুণ নিয়ানডার্থালের হতে পারে। তবে একটি হাড়ে ক্ষতচিহ্ন রয়েছে।
সম্ভবত বারবার কোনো কিছু ছুড়ে মারার মতো কঠোর অভ্যাসের কারণে ওই নিয়ানডার্থালের কাঁধের হাড়ে ক্ষতচিহ্ন তৈরি হয়। সংশ্লিষ্ট গবেষকেরা বলছেন, পেশাদার ক্রীড়াবিদদের কাঁধের হাড়ে অনেকটা এ রকম চিহ্ন দেখা যায়। যুক্তরাজ্যের লন্ডনে অবস্থিত জাদুঘর ন্যাচারাল হিস্ট্রি মিউজিয়ামের গবেষক ক্রিস স্ট্রিংগার বলেন, হিউমেরাস নামে হাড়টির ত্রিকোণ অংশে বড় ধরনের পরিবর্তনের চিহ্ন সঠিকভাবে ব্যাখ্যা করা হলে ইউরোপে দুই লাখ বছর আগে বর্শা নিক্ষেপের প্রচলনের ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ ইঙ্গিত মিলতে পারে। কাছাকাছি পাল্লায় মুখোমুখি শিকারের সময় নিয়ানডার্থালসহ আদিম মানুষ বর্শা নিক্ষেপ করত এবং কেবল আধুনিক মানুষই নিখুঁতভাবে দূরপাল্লার অস্ত্র নিক্ষেপ করতে শেখে বলে যে ধারণা প্রচলিত রয়েছে, তা এখন প্রশ্নবিদ্ধ হতে পারে।
No comments