চার তরুণের স্বপ্ন 'ড্রোন'
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন শিক্ষার্থীর স্বপ্ন আগামী পহেলা বৈশাখে বাংলার আকাশে উড়বে তাদের তৈরি ড্রোন |
নির্দিষ্ট
গন্তব্যে পেঁৗছে স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিজেই ফিরে আসছে চালকবিহীন বিমান।
যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি এ ধরনের বিমান ড্রোন নামে সুপরিচিত। তবে আশার কথা
হচ্ছে, দেশের শিক্ষার্থীরা ইতিমধ্যে পরীক্ষামূলক আকাশে উড়িয়েছে আমাদের
ড্রোন। তরুণ স্বাপি্নক ড্রোন উদ্ভাবকদের কথা লিখেছেন ইমদাদুল হক দেশের
আকাশে উড়ছে চালকবিহীন বিমান ড্রোন। দেশের তরুণ শিক্ষার্থীরাই তৈরি করছে এমন
বিমান। ইতিমধ্যে পরীক্ষামূলকভাবে খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের [কুয়েট]
শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ আল মামুন খান আকাশে উড়িয়েছেন 'বাংলার ড্রোন-কুয়েট'।
গত বছরের ১০ জুলাই তিনি প্রথমবারের মতো স্বয়ংক্রিয় বিমান আকাশে ওড়াতে সমর্থ
হন। সম্প্রতি শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন
শিক্ষার্থীও ড্রোন তৈরির ঘোষণা দিয়েছেন। রেজওয়ানুল হক নাবিল, রবি কর্মকার
এবং মারুফ হোসেন রাহাত উদ্ভাবিত ড্রোনের নাম 'বিডি-শাস্ট-০১'।
বাংলার ড্রোন-কুয়েট
তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশল বিভাগ থেকে সদ্য স্নাতক শেষ করেছেন আবদুল্লাহ আল মামুন খান। কুয়েটে স্নাতক করার সময় ড্রোনটি তৈরির কাজে হাত দেন কুমিল্লার উত্তর হাজতিয়া নামক গ্রাম থেকে উঠে আসা তরুণ মামুন। থিসিস সুপারভাইজার অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ শাহজাহানের পরামর্শে প্রথমে একটি কপ্টার তৈরির পরিকল্পনা করেন। কাজের শুরুতে বন্ধু রিজভী আহমেদ কপ্টারের ফ্রেম তৈরির প্রয়োজনীয় হিসাব-নিকাশে সাহায্য করেন। বিমানের চূড়ান্ত ফ্রেমটি বন্ধুর সঙ্গে বসেই অ্যাসেম্বল করেন তিনি। বন্ধু জিএম সুলতান মাহমুদ রানার সহায়তার কথাও জানান তিনি। তবে
চালকবিহীন বিমান তৈরির স্বপ্ন প্রথমবারেই মুখ থুবড়ে পড়ে। প্রথম কপ্টারটি আকাশে ওড়ানোর সময়ই সেটি ভূপাতিত হয়। এরপর যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন বড় ভাইয়ের সহায়তায় ড্রোন তৈরির কাজে আবার মনোনিবেশ করি। টানা সাড়ে তিন মাস কাজ করার পর অবশেষে রিমোট দিয়ে ড্রোনটি ওড়াতে সক্ষম হই। মামুনের তৈরি ড্রোন গুগল আর্থের ম্যাপের সাহায্যে নির্ধারিত গতিপথে উড়তে পারে। পরিভ্রমণ শেষে এটি আবার ফিরে আসে স্বয়ংক্রিয়ভাবেই রিমোট ছাড়া। নজর রাখতে পারে ৩৫০ ফুট ওপর থেকে।
দীপের তৈরি বর্গাকৃতির [২ ফুট বাই ২ ফিট]। ওজন ১৮০০ গ্রাম। এটি দেড় কেজি ওজনের যে কোনো কিছু নিয়ে উড়তে সক্ষম। তবে যদি কেউ এর চেয়ে ওজনের বস্তু বহন করতে চায় তাহলে এর মোটর আর প্রপেলার চেঞ্জ করলেই চলবে বলে জানালেন উদ্ভাবক। স্বয়ংক্রিয়ভাবে ড্রোনটি পরিচালনের জন্য এতে ব্যবহার করা হয়েছে জিপিএস ও ম্যাগনেটো মিটার। সংযুক্ত আছে ওয়্যারলেস ট্রান্সরিসিভার। উড়ন্ত অবস্থায় এর মাধ্যমে ড্রোনের ব্যাটারি ভোল্টেজ, অবস্থান, উচ্চতা এবং আবহাওয়া মনিটর করা যায়। একই সঙ্গে এই ড্রোন থেকে লাইভ ভিডিও পাঠানো যাবে যা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে স্টোর হয়।কুয়েটের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ শাহজাহান জানান, মামুনের তৈরি ড্রোনে পরিপূর্ণ সুবিধা পেতে এটিতে 'ইমেজ প্রসেসিং কার্ড' ব্যবহার করতে হবে। তবে এটি ব্যয়সাপেক্ষ এবং সাধারণের ব্যবহারের জন্য সচরাচর বিক্রি করা হয় না। তাই বাণিজ্যিকভাবে না হলেও মামুনের কপ্টারটিকে মিনিয়েচার ড্রোন বলা যায়। প্রকৌশলী বাবা দৌলত খান এবং গৃহিনী মায়ের স্বপ্নও মামুন পরিপূর্ণ চালকবিহীন বিমান তৈরি করতে সক্ষম হবে। মামুন তার স্বপ্ন পূরণে যুক্তরাষ্ট্রে অ্যারোনটিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে উচ্চতর ডিগ্রি অজর্ন করতে চান। মামুন স্বপ্ন দেখেন তার উদ্ভাবিত ড্রোনটি দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব অক্ষুণ্ন রাখার পাশাপাশি জরুরি প্রয়োজনে ওষুধ পরিবহন, দুর্গত এলাকায় মানবিক সহায়তায় ব্যবহৃত হবে।
শাবি শিক্ষার্থীদের ড্রোন-ঘুড়ি
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের [শাবি] পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী রেজওয়ানুল হক নাবিল, একই বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র রবি কর্মকার এবং দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র মারুফ হোসেন রাহাত মিলে তৈরি করছেন চালকবিহীন বিমান ড্রোন-ঘুড়ি। তারা তিনজনই বিশ্ববিদ্যালয়ের রোবটিক্স অ্যারোনোটিক্স অ্যান্ড ইন্টারফেসিং রিসার্চ গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। ড্রোন তৈরিতে তাদের প্রেরণা অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল। ইতিমধ্যে দলটি ৫০ হাজার টাকা খরচে পরীক্ষামূলকভাবে ড্রোন বানিয়েছেন। অবকাঠামো তৈরির কাজ শেষ হয়েছে। এটি তৈরি করা হয়েছে অনেকটা ই৫২ বোমারু বিমানের নকশায়। আকার হবে ৩ বাই ৪ ইঞ্চি। দুই পাখায় দুটি লাল-সবুজের পতাকা। তবে এটি কোনো ঘুড়ি নয়, মানুষবিহীন বিমান! দেশেই তৈরি ৃহচ্ছে এই ড্রোন! এটি ব্যবহার করা যাবে তীক্ষষ্ট নজরদারির কাজে। চলবে নিজস্ব প্রযুক্তিতে। ওয়্যারলেস ট্রান্সরিসিভারের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করা হবে তথ্য পাঠানোর কাজে। তাই ভূপাতিত হলেও নজরদারির তথ্য থাকবে সুরক্ষিত। দুর্ঘটনায় পতিত হলেও সমস্যায় পড়তে হবে না। কেবল নজরদারি নয়, ড্রোনটি বহুমুখী কাজ করতে সক্ষম। আবহাওয়ার খবরও জানাতে পারবে। একটু আপগ্রেড করলে, ঝুঁকিপূর্ণ স্থান থেকে সরাসরি ভিডিও পাঠাতে সক্ষম হবে। তবে এ জন্য স্বাভাবিক কাজের ব্যবহৃত 'এফপিভি' ক্যামেরার বদলে জুড়ে নিতে হবে 'ডিএসএলআর'।
তবে অর্থ সংকট আর যন্ত্রাংশের সহজলভ্যতার অভাবে একটু সময় লাগছে। সব ঠিকঠাক থাকলে পহেলা বৈশাখে আকাশে উড়বে 'বিডি-শাস্ট-০১' নামের মাইক্রো ড্রোনটি।
বাংলার ড্রোন-কুয়েট
তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশল বিভাগ থেকে সদ্য স্নাতক শেষ করেছেন আবদুল্লাহ আল মামুন খান। কুয়েটে স্নাতক করার সময় ড্রোনটি তৈরির কাজে হাত দেন কুমিল্লার উত্তর হাজতিয়া নামক গ্রাম থেকে উঠে আসা তরুণ মামুন। থিসিস সুপারভাইজার অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ শাহজাহানের পরামর্শে প্রথমে একটি কপ্টার তৈরির পরিকল্পনা করেন। কাজের শুরুতে বন্ধু রিজভী আহমেদ কপ্টারের ফ্রেম তৈরির প্রয়োজনীয় হিসাব-নিকাশে সাহায্য করেন। বিমানের চূড়ান্ত ফ্রেমটি বন্ধুর সঙ্গে বসেই অ্যাসেম্বল করেন তিনি। বন্ধু জিএম সুলতান মাহমুদ রানার সহায়তার কথাও জানান তিনি। তবে
চালকবিহীন বিমান তৈরির স্বপ্ন প্রথমবারেই মুখ থুবড়ে পড়ে। প্রথম কপ্টারটি আকাশে ওড়ানোর সময়ই সেটি ভূপাতিত হয়। এরপর যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন বড় ভাইয়ের সহায়তায় ড্রোন তৈরির কাজে আবার মনোনিবেশ করি। টানা সাড়ে তিন মাস কাজ করার পর অবশেষে রিমোট দিয়ে ড্রোনটি ওড়াতে সক্ষম হই। মামুনের তৈরি ড্রোন গুগল আর্থের ম্যাপের সাহায্যে নির্ধারিত গতিপথে উড়তে পারে। পরিভ্রমণ শেষে এটি আবার ফিরে আসে স্বয়ংক্রিয়ভাবেই রিমোট ছাড়া। নজর রাখতে পারে ৩৫০ ফুট ওপর থেকে।
দীপের তৈরি বর্গাকৃতির [২ ফুট বাই ২ ফিট]। ওজন ১৮০০ গ্রাম। এটি দেড় কেজি ওজনের যে কোনো কিছু নিয়ে উড়তে সক্ষম। তবে যদি কেউ এর চেয়ে ওজনের বস্তু বহন করতে চায় তাহলে এর মোটর আর প্রপেলার চেঞ্জ করলেই চলবে বলে জানালেন উদ্ভাবক। স্বয়ংক্রিয়ভাবে ড্রোনটি পরিচালনের জন্য এতে ব্যবহার করা হয়েছে জিপিএস ও ম্যাগনেটো মিটার। সংযুক্ত আছে ওয়্যারলেস ট্রান্সরিসিভার। উড়ন্ত অবস্থায় এর মাধ্যমে ড্রোনের ব্যাটারি ভোল্টেজ, অবস্থান, উচ্চতা এবং আবহাওয়া মনিটর করা যায়। একই সঙ্গে এই ড্রোন থেকে লাইভ ভিডিও পাঠানো যাবে যা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে স্টোর হয়।কুয়েটের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ শাহজাহান জানান, মামুনের তৈরি ড্রোনে পরিপূর্ণ সুবিধা পেতে এটিতে 'ইমেজ প্রসেসিং কার্ড' ব্যবহার করতে হবে। তবে এটি ব্যয়সাপেক্ষ এবং সাধারণের ব্যবহারের জন্য সচরাচর বিক্রি করা হয় না। তাই বাণিজ্যিকভাবে না হলেও মামুনের কপ্টারটিকে মিনিয়েচার ড্রোন বলা যায়। প্রকৌশলী বাবা দৌলত খান এবং গৃহিনী মায়ের স্বপ্নও মামুন পরিপূর্ণ চালকবিহীন বিমান তৈরি করতে সক্ষম হবে। মামুন তার স্বপ্ন পূরণে যুক্তরাষ্ট্রে অ্যারোনটিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে উচ্চতর ডিগ্রি অজর্ন করতে চান। মামুন স্বপ্ন দেখেন তার উদ্ভাবিত ড্রোনটি দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব অক্ষুণ্ন রাখার পাশাপাশি জরুরি প্রয়োজনে ওষুধ পরিবহন, দুর্গত এলাকায় মানবিক সহায়তায় ব্যবহৃত হবে।
শাবি শিক্ষার্থীদের ড্রোন-ঘুড়ি
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের [শাবি] পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী রেজওয়ানুল হক নাবিল, একই বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র রবি কর্মকার এবং দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র মারুফ হোসেন রাহাত মিলে তৈরি করছেন চালকবিহীন বিমান ড্রোন-ঘুড়ি। তারা তিনজনই বিশ্ববিদ্যালয়ের রোবটিক্স অ্যারোনোটিক্স অ্যান্ড ইন্টারফেসিং রিসার্চ গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। ড্রোন তৈরিতে তাদের প্রেরণা অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল। ইতিমধ্যে দলটি ৫০ হাজার টাকা খরচে পরীক্ষামূলকভাবে ড্রোন বানিয়েছেন। অবকাঠামো তৈরির কাজ শেষ হয়েছে। এটি তৈরি করা হয়েছে অনেকটা ই৫২ বোমারু বিমানের নকশায়। আকার হবে ৩ বাই ৪ ইঞ্চি। দুই পাখায় দুটি লাল-সবুজের পতাকা। তবে এটি কোনো ঘুড়ি নয়, মানুষবিহীন বিমান! দেশেই তৈরি ৃহচ্ছে এই ড্রোন! এটি ব্যবহার করা যাবে তীক্ষষ্ট নজরদারির কাজে। চলবে নিজস্ব প্রযুক্তিতে। ওয়্যারলেস ট্রান্সরিসিভারের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করা হবে তথ্য পাঠানোর কাজে। তাই ভূপাতিত হলেও নজরদারির তথ্য থাকবে সুরক্ষিত। দুর্ঘটনায় পতিত হলেও সমস্যায় পড়তে হবে না। কেবল নজরদারি নয়, ড্রোনটি বহুমুখী কাজ করতে সক্ষম। আবহাওয়ার খবরও জানাতে পারবে। একটু আপগ্রেড করলে, ঝুঁকিপূর্ণ স্থান থেকে সরাসরি ভিডিও পাঠাতে সক্ষম হবে। তবে এ জন্য স্বাভাবিক কাজের ব্যবহৃত 'এফপিভি' ক্যামেরার বদলে জুড়ে নিতে হবে 'ডিএসএলআর'।
তবে অর্থ সংকট আর যন্ত্রাংশের সহজলভ্যতার অভাবে একটু সময় লাগছে। সব ঠিকঠাক থাকলে পহেলা বৈশাখে আকাশে উড়বে 'বিডি-শাস্ট-০১' নামের মাইক্রো ড্রোনটি।
No comments