অভিবাদন অস্ট্রেলিয়া!

অভিবাদন আর প্রশংসার বৃষ্টিতে ভিজছে অস্ট্রেলিয়ানরা। সাত বছর পর অ্যাশেজের ভস্মাধার পুনরুদ্ধার করা অসিদের প্রশংসায় সবাই পঞ্চমুখ। টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়ার সবচেয়ে বড় বিজয়কে সকলেই চিহ্নিত করছেন অনন্য অর্জন হিসেবে। প্রশংসাকারীদের দলে রয়েছে অসি মিডিয়াও। কীর্তিমানদের কৃতিত্বও যথার্থ মর্যাদা পাচ্ছে। বিজয়ীর মুকুটে প্রশংসার পালকই সবচেয়ে বেশি শোভা পায়! টেস্ট ক্রিকেটের ১৩৭ বছরের ইতিহাসে অস্ট্রেলিয়া ইংল্যান্ডকে এর আগেও দু'বার হোয়াইটওয়াশ করেছে। কিন্তু তৃতীয়বার মাইকেল ক্লার্কের অস্ট্রেলিয়া যা করেছে তা অতীতকেও ছাড়িয়ে গিয়েছে। ১৯২০-২১ মৌসুমে ওয়ারউইক আর্মস্ট্রংয়ের অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ইংল্যান্ড করেছিল ৯৮ উইকেটে ২,৭৭৯ রান। রিকি পন্টিংদের বিপক্ষে ২০০৬-০৭ সালে করেছিল ৯৬ উইকেটে ২,৫৩০ রান। কিন্তু অস্ট্রেলিয়া পাঁচ ম্যাচের সিরিজে ইংল্যান্ডকে শুধু ধরাশায়ীই করেনি; ইংলিশদের ১০ ইনিংসে ১০০ উইকেটই তুলে নিয়ে শতভাগ শিকারের অনন্য নজির গড়েছে ইতিহাসে প্রথমবার। তুলনায় ইংল্যান্ড রান করেছে অতীতের ওই দুই সিরিজের চেয়েও কম। মাত্র ২০.৩০ গড়ে ২,০৩০! সিরিজ জিততে ক্লার্কের অস্ট্রেলিয়ার সময় লেগেছে ২১ দিন। পন্টিংয়ের লেগেছিল ২২ দিন। আর্মস্ট্রংয়ের ২৪ দিন। এই অস্ট্রেলিয়া নিঃসন্দেহে বাহবা পাওয়ার মতো শ্রেয়তম ও যোগ্যতম দল। ১০০ উইকেট তুলে নেওয়ার কথাটা দ্য সিডনি ডেইলি টেলিগ্রাফ লিখেছে এভাবে_ 'টেস্ট ক্রিকেটের ১৩৭ বছরের ইতিহাসে এর আগে অস্ট্রেলিয়া এত পরিপূর্ণভাবে কখনোই ইংল্যান্ডকে হারায়নি। তিন দিনেই পঞ্চম টেস্ট শেষ জয় করে সিরিজে ১০০টি ইংলিশ উইকেট নেওয়া এবারই প্রথম।' তারা প্রশংসা করেছে অস্ট্রেলিয়ার অপরিবর্তনশীল একাদশ ও মানসিকতারও, 'ম্যান অব দ্য সিরিজ মিচেল জনসন ও পুরস্কারটার জন্য তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ব্র্যাড হ্যাডিনকে পুনরায় ডাকা হয়েছিল এবং তাদেরকে নিয়েই অস্ট্রেলিয়া পুরো পাঁচটা টেস্টেই কাজটা করল অপরিবর্তনশীল একাদশ হিসেবে।' দ্য অস্ট্রেলিয়ান নিউজপেপারে এই জনসন-হ্যাডিনদেরই প্রশংসা, 'স্বাগতিকরা কাজটা করল পুনর্গঠিত ওপেনার ক্রিস রজার্স, পুনঃউত্থিত ফাস্ট বোলার মিচেল জনসন ও পুনর্ভিষিক্ত উইকেটকিপার ব্র্যাড হাডিন এবং ক্রিকেট খেলার পুনঃআবিষ্কৃত অস্ট্রেলিয়ান মস্তিষ্ক দিয়ে।' অন্যদিকে মাইকেল ক্লার্ক অ্যাশেজ জয়ের পেছনে তার দলের পরিকল্পনার কথা বলেছেন। 'আমরা সিরিজ শুরুর আগে কথা বলেছিলাম এবং প্রতিটি ব্যাটসম্যানের বিপক্ষেই আমরা পরিকল্পনা করেছি। তবে পরিকল্পনা করা সহজ। কিন্তু কার্যকর করাটা কঠিন। সিরিজ শুরুর আগে আমি তাদেরকে বলেছিলাম যে, তোমরাই বিশ্বের শ্রেষ্ঠ আক্রমণভাগ এবং আমার মনে হয় পাঁচটি টেস্টেই তারা সেটা প্রমাণ করেছে।' বিশেষত অসি পেসাররা ক্লার্ককে সত্য প্রমাণ করে ইংলিশদের চার ভাগের তিন ভাগ (৭৫) উইকেট নিয়েছেন।

No comments

Powered by Blogger.